![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি মহিউদ্দিন খালেদ। পেশায় ইঞ্জিনিয়ার। পড়তে ভালোবাসি। নিজের একটা চিন্তা জগত আছে। সেখানে চারপাশের অনেক কিছু নিয়ে অনেক নিঃশব্দ আলোচনা হয়! সেই আলোচনা গুলোর সাথে বৃহত্তর জগতের সংযোগ ঘটাতে ইচ্ছে করে!
আমার ছোট্ট সোনামণির বার্থ সার্টিফিকেটে ডাক্তার লিখে দিয়েছে জন্মের আঠাশ দিনের দিন কোনাকিয়ন(২ মিগ্রা) টিকা ভেঙ্গে খাওয়াতে। আগামীকাল সোনামণির আঠাশ দিন পুর্ন হবে। আমি আমার মেঝ আপাকে ফোন করলাম। আমার মেঝ আপা সবাস্থ্যবিভাগে চাকরি করেন। এসব বিষয়ে ভাল জানেন। মেঝ আপা বললেন- এই টিকাটা ফার্মেসি’তে দুরকমের কিনতে পাওয়া যায়। একটা দেশি, আরেকটা বিদেশি।
‘একটা দেশি, আরেকটা বিদেশি’, এতটুকু শোনার সাথে সাথে আমার মন বলল- আমার সোনামণির জন্য অবশ্যই বিদেশিটা কিনব!
প্রিয় পাঠক, থামুন!চোখ বন্ধ করুন! লেখার পরবর্তি অংশ পড়ার আগে উপরে বর্নিত ঘটনাটাকে আপনার নিজের জীবনের ঘটনা বলে কল্পনা এবং অনুভব করুন। আপনার মনের অনুভূতি যদি আমার মত হয় তাইলে পরের অংশ টা পড়ুন। নইলে পরের অংশটা না পড়ার জন্য বিনীত ভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি।
আমার মনে তখন পরপর কয়েকটা প্রশ্ন আসল।
প্রথম প্রশ্ন, আমি কি আমার দেশ কে ভালোবাসি?
জবাব পেলাম, আমার মনের গভীরে দেশের জন্য ভালোবাসায় কোন ঘাটতি নাই।
দ্বিতীয় প্রশ্ন, আমরা যারা দেশকে ভালোবাসি তারা নিজেকে বাদ দিয়ে দেশের অন্য মানুষগুলোকেও কি ভালোবাসি?
এবার অসম্ভব ব্যাথা আমার বুকের ভেতরটাকে নীল করে দিল!
ধরুন আমাদের দেশের যেকোন পণ্য উৎপাদনকারী একটা প্রতিষ্ঠান। সে প্রতিষ্ঠান যে পণ্য উৎপাদন করে তার ভোক্তা হচ্ছে দেশের সাধারণ মানুষ। সেই পণ্যটিতে সঠিক উপাদান সমূহ সঠিক অনুপাতে দিলে সেটা আমাদের শরীরের জন্য ঔষধ। আর তা না দিলে সেটা বিষ। সঠিক উপাদান সঠিক অনুপাতে মেশানো আছে কিনা সেটা যাচাই করার জন্য নির্দিষ্ট যাচাইকারী প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এখন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের মানুষেরা যদি দেশের মানুষকে ভালোবাসে তারা কোনকিছুর বিনিময়েই দেশের মানুষের জন্য বিষ তৈরি করবে না। তখন যাচাই কারী প্রতিষ্ঠানের কাজ হবে শুধুই আনুষ্ঠানিকতা। যদি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের মানুষেরা দেশের মানুষের চেয়ে নিজেদের মুনাফা কে বেশি ভালোবাসে তাইলে তারা মুনাফা হবে দেখতে পেলে ঔষধের পরিবর্তে বিষ তৈরি করবে এবং সেই বিষ তৈরিতে সহায়তা করার জন্য মুনাফার একটা অংশ যাচাইকারী প্রতিষ্ঠানকে অফার করবে। যাচাইকারী প্রতিষ্ঠানের মানুষেরা যদি দেশের মানুষকে ভালোবাসে তাইলে তারা দেশের মানুষ হত্যার বিনিময়ে এই তুচ্ছ অবৈধ উপার্জন কে প্রত্যাখ্যান করবে এবং মানুষের প্রতি ভালোবাসা নেই এমন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে! আর তারাও যদি দেশের মানুষের চেয়ে নিজেদের মুনাফাকে বেশি ভালোবাসে তাইলে টাকার বিনিময়ে ‘বিষ প্রস্ততকারী প্রতিষ্ঠানে’র প্রতি সার্বিক সহযোগিতার কালো হাত প্রসারিত করবে!
পাঠক, এবারের প্রশ্নটা তাইলে খুব পরিষ্কার। আমাদের দেশের উৎপাদনকারী এবং যাচাইকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সাধারণ একটা মানদণ্ড যদি আমরা নির্ধারন করি তাইলে তারা ‘দেশের মানুষকে ভালোবাসে কিনা’ এই ব্যাপারে কি আমরা শতভাগ নিশ্চিত হতে পারি?
যদি নাই হতে পারি তাইলে অনিশ্চিত একটা মন নিয়ে প্রাণের চেয়ে প্রিয় সন্তান কে খাওয়ানোর জন্য আপনি ‘দেশে তৈরি টিকা’ কিভাবে কিনবেন??
দেশের মানুষকে ভালো না বেসে যদি আমরা দাবী করি দেশকে ভালোবাসি তাইলে সেই দাবী কি সত্য?
সততার সাথে সম্পর্কহীন ‘মুখ সর্বস্ব ভালোবাসার বুলি’ যে ‘ভালোবাসা’ শব্দটাকেই অপমান করে এবং জাতি হিসেবে বিশ্ব জনতার কাছে আমাদের নিঃস্ব করে দেয় সেই সত্যের উপর আমাদের মন কি কখনোই আলো ফেলবে না?
২| ১১ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১:৪৩
হঠাৎ ধুমকেতু বলেছেন: প্রিয় ঘূনপোকা, আপনার মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১|
১১ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১:২৭
একজন ঘূণপোকা বলেছেন: পাঠক, এবারের প্রশ্নটা তাইলে খুব পরিষ্কার। আমাদের দেশের উৎপাদনকারী এবং যাচাইকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সাধারণ একটা মানদণ্ড যদি আমরা নির্ধারন করি তাইলে তারা ‘দেশের মানুষকে ভালোবাসে কিনা’ এই ব্যাপারে কি আমরা শতভাগ নিশ্চিত হতে পারি?
--- ঠিক