![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সভ্যতার উষা কাল থেকেই মানুষ বিনোদন খুজেছে ।বিনোদন খুজেছে চিত্র শিল্পের মাধ্যমে ,সঙ্গীত এর মাধ্যমে ,নৃত্যের মাধ্যমে, কিম্বা সাহিত্যের মাধ্যমে।(অধুনা কালে ব্লগের মাধ্যমে )
চিত্র শিল্প ,নৃত্য ,সাহিত্য কিম্বা সঙ্গীত ,সবার প্রথমে মানুষ বিনোদন খুঁজে পেয়েছে চিত্র শিল্পের মাধ্যমে ।প্রাচীন কালের গুহা চিত্র গুলি তার প্রমান ।তারপর একে একে এসেছে গান ,নাচ এবং সবশেষে সাহিত্য ।আদিম মানুষ ঠিক কোন সময় প্রকৃতি কে দেখে আপন মনে গান গেয়ে উঠেছে ,তার কোনো স্পষ্ট তথ্য পাওয়া যায় না ।কিন্তু গান কে বিজ্ঞান সম্মত উপায়ে বাধার প্রচেষ্টা শুরু হয়েছিল প্রাচীন গ্রিস দেশে এবং প্রাচীন ভারতে প্রায় আজ থেকে ৪৫০০-৫০০০ বছর আগে ।চলুন একটু ঘুরে আসি টাইম মেশিন এ চরে ,ঠিক কি ভাবে তৈরি হয়েছিল স্বরগম ।
প্রাচীন ভারতে সৃষ্ট চারটি বেদের মধ্যে সাম বেদে শুধু মাত্র সঙ্গীত নিয়ে কথা বার্তা আছে ।সেখানে সঙ্গীত কে চার রকম ভাবে ভাগ করা হয় ,যার মধ্যে দু ধরণের গান ছিল সমবেত সঙ্গীত ,আর বাকি দু ধরণের ছিল একা একা গাইবার জন্য ।সাম বেদে মোট ৪৯ রকমের তাল ,২১ রকমের মূর্ছনা আর ৭ টা বেসিক সুর বা নোট এর উল্লেখ আছে ।
সাম বেদের মন্ত্র গুলি সাধারনত গীত হত ,তাই প্রথম অবস্থায় ৩ টি নোট দিয়েই কাজ চলে যেত ।সেই তিনটি নোট হল -সা , রে ,গা ।মন্ত্র উচ্চারণের স্বরগম ও ছিল সহজ
যেমন - গা গা -রে রে -সা সা সা ।
এর মধ্যে রে উচ্চারণ করতে গেলে জিভের নিচের তালু থেকে বের হয় ,তাই এর নাম ছিল অনুদাত্ত
গা উচ্চারণ করতে গেলে জিভের উপরের তালু থেকে বের হয় ,তাই এর নাম ছিল উদাত্ত
আর সা হলো এই দুই এর মাঝা মঝি মানে ৫০-৫০।এর নাম ছিল স্ভারিতা
কিন্তু শুধু মাত্র এই তিনটি নোট দিয়ে কাজ চলছিল না ।প্রাচীন ঋষি রা প্রকৃতি কে ভালোভাবে শুনলেন ।বিভিন্ন পশুপাখির আওয়াজ কে শুনে তারা তৈরি করলেন সাত টা নোট ।
যথাক্রমে
সাদ্জা (সা ),রিশাভা (রি),গান্ধারা (গা ),মধ্যমা (মা ),পঞ্চম (পা ),ধাইবাতা (ধা ),নিশাধ (নি )
সাদ্জা (সা ) এসেছিল ময়ুর এর ডাক থেকে ।
রিশাভা (রি)এসেছিল বুল এর ডাক থেকে ।
গান্ধারা (গা )এসেছিল ছাগল এর ডাক থেকে ।
মধ্যমা (মা )এসেছিল বক এর ডাক থেকে ।
পঞ্চম (পা )এসেছিল কোকিল এর ডাক থেকে ।
ধাইবাতা (ধা )এসেছিল ঘোড়া এর ডাক থেকে ।
নিশাধ (নি )এসেছিল হাতি এর ডাক থেকে ।
উইকি থেকে একটা ছবি দিলাম পুরো ব্যাপার টা একবারে বোঝার জন্য ।
সাত টা বেসিক নোট আবিস্কার হয়ে যাবার পর যেটা শুরু হলো, তাকে একটা কথা তেই বলা যায় - সংগীতের বিপ্লব ।যেটাকে ভালো ভাবে তুলে ধরেছেন dr নীলমনি মিশ্র ।
এর পরের উল্লেখযগ্য পরিবর্তন গুলি ছিল -
১)সাত টা বেসিক নোট থেকে জন্ম নিল আরো পাচ টা উপ নোট ।মোট নোটের সংখ্যা দাড়ালো ১২ তে ।ছবিতে ওয়েস্টার্ন নোট সাথে ভারতীয় নোট এর সম্পর্ক দেখানো হলো ।এই দুই ধরণের ভিন্ন টাইপ এর পুরো মিল দেখে মনে হয় কেউ কারুর টা কপি করেছে ।
২)জন্ম নিল মোট ৭২ টা রাগ ।
৩)প্রতিটি রাগ কে ৪৮৪ টি উপ রাগে ভেঙ্গে ফেলা হলো ।
৪)ফলে মোট (৬৮৪*৭২) ৩৪৭৭৬ রকমের মিউসিক তৈরি হলো ।
এবং জন্ম নিল ভারতীয় ধ্রুপদী সঙ্গীত ।
আর সবচেয়ে মজার কথা টা হলো আপনি এই ২০১৩ তে বসে আধুনিক যেকোনো বাদ্য যন্ত্র ই বাজান না কেন ,তা ওই ৩৪৭৭৬ রকমের বাইরে যাবে না ।
সপ্তক অর্থাৎ স রে গা মা পা ধ নি এর মধ্যে গা আর পা কে বলা হয় সয়ম্ভু ।সয়ম্ভু কথার প্রতিশব্দ হছে ইশ্বর অর্থাৎ যা নিজে থেকেই সৃষ্ট ।এর থেকে বোঝা যায় স্বরগম এর রে আর গা পেতে প্রাচীন ঋষি দের কষ্ট করতে হয় নি ।খুব সহজেই পেয়ে গেছেন ,তাই নাম রেখে দিলেন সয়ম্ভু ।
এইবার একটা এক্ষ্পেরিমেন্ট করা যাক ।ধরা যাক আপনি আপনার গিটার বা তানপুরা তে সা বাজালেন ।দেখা গেল ১০০ hz এ গিয়ে সা বাজলো ।(মানে গিটার এর তার টা সেকেন্ড এ ১০০বার কাপছিল )।তাহলে গা আর পা বাজবে যথাক্রমে ১২৫ এবং ১৫০ hz এ ।এদের অনুপাত হলো ৪:৫:৬।
মানে সা :গা:পা =৪:৫:৬
আবার পা:নি :রে =৪:৫:৬
তাহলে দরকার শুধু একটা ফ্রিকোয়েন্সি মিটার আর তাই দিয়ে সা এর ফ্রিকোয়েন্সি মাপতে পারলেই আমরা পুরো স্বরগম এর ফ্রিকোয়েন্সি মাপতে পারব ।
মনে রাখতে হবে ,আমরা যে স্কেলে "সা" বাজাই তার ফ্রিকোয়েন্সি যদি ১০০ hz হয়ে থাকে তবে তার উপরের স্কেল তা ২০০ hz তে বাজবে ।
এটা আমার শব্দ ,ধ্বনি,এবং সঙ্গীত বিষয়ক তৃতীয় এবং আপাতত শেষ পোস্ট ।পরে এই নিয়ে আরো বিস্তারিত লেখার ইচ্ছা রইলো ।
২০ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ৯:২১
সিদ্ধার্থ. বলেছেন: ধন্যবাদ ।শুভ সন্ধ্যা ।
২| ২০ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ৮:৫৭
লুকার বলেছেন:
এশিয়া আর ইউরোপ- কে কার থেকে নকল করেছে তা তো খোলাসা হলো না!
ডো রে মি- সা রে গা-C D E, মিড অক্টেভে সা এর ফ্রিকোয়েন্সি 440 Hz.
২০ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ৯:২৬
সিদ্ধার্থ. বলেছেন: নকল করেছে এটা বলা যায় না ।ওটা আমার ব্যক্তিগত অভিমত ।আসলে দুটো সিস্টেমই হুবুহু এক ।তখন সন্দেহ তো চলেই আসে ।
"সা " এর ফ্রিকোয়েন্সি ওরকম ভাবে বলা যায় না ।সেটা নির্ভর করে আপনি আপনার বাদ্য যন্ত্র কেমন ভাবে টেউন করবেন তার উপরে ।
৩| ২০ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ৯:২৪
বোকামন বলেছেন:
সম্মানিত লেখক,
গবেষণাধর্মী একটি পোস্টের জন্য ধন্যবাদ ...
দ্বিতীয় ভালোলাগা ...
এই নিয়ে আরো বিস্তারিত পোস্টের অপেক্ষায় রইলাম
২০ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ৯:২৮
সিদ্ধার্থ. বলেছেন: আমি কোনো গবেষণা করি নি ।আসলে এই বিষয়ে ইন্টারেস্ট ছিল তাই লিখলাম ।
ধন্যবাদ ।শুভ সন্ধ্যা ।
৪| ২০ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ৯:৩৫
শিপু ভাই বলেছেন:
আনন্দদায়ক জ্ঞানার্জন হল!!!
এই ব্যাপারগুলো আমার কাছে দুর্বোধ্য হলেও আপনি খুব সহজ করে লিখেছেন। ভাল লাগল।
++++++++++++++++ প্রিয়তে!!!
২০ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ৯:৪৫
সিদ্ধার্থ. বলেছেন: ধন্যবাদ শিপু ভাই ।শুভ সন্ধ্যা ।
৫| ২০ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ১১:১৫
হাসান মাহবুব বলেছেন: খাইছে সেইরাম ইন্টারেস্টিং পোস্ট। +++++
২১ শে মার্চ, ২০১৩ সকাল ১০:৩৬
সিদ্ধার্থ. বলেছেন: ওয়াও থেঙ্কু ।
শুভ সকাল হাসান মাহবুব
৬| ২২ শে মার্চ, ২০১৩ বিকাল ৪:১৭
স্পাইসিস্পাই001 বলেছেন: ওয়াও দারুন তো ...... ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য.....
+++++
ভাল থাকবেন ভ্রাতা
২২ শে মার্চ, ২০১৩ বিকাল ৫:১৫
সিদ্ধার্থ. বলেছেন: আপনাদের ভালো লাগলেই আমার শান্তি ।
শুভ বিকেল ।
৭| ০৮ ই মে, ২০১৩ বিকাল ৩:২১
তুরাগ হাসান বলেছেন: প্রিয় তে
০৯ ই মে, ২০১৩ বিকাল ৫:৪৬
সিদ্ধার্থ. বলেছেন: না আপনি প্রিয়তে নেন নি ।এটা কি ঠিক ?
৮| ১১ ই জুন, ২০১৩ বিকাল ৩:৩৮
মোহাম্মদ আনোয়ার বলেছেন: পশু পাখীর ডাক দিয়ে কি সুরের কোন নোট ঠিক করা যায় ?
আপনি কি জানেন, হারমোনিয়ামের প্রতিটি রিড ই 'সা', প্রতিটি রিডই 'রে', প্রতিটি রিডই 'গা'........................ইত্যাদি। আপনি হারমোনিয়ামের সি শার্পের 'সা' চেপে 'সা' গান, সেটিও যেমন ঠিক, আবার 'সা' চেপে 'রে' গান, সুরের ক্ষেত্রে সেটিও ঠিক হবে। তাছাড়া 'রে' এর পূর্বে 'সা' পাওয়া যাবে।
কাজেই কোন পশু পাখীর শব্দ দিয়ে সা রে গা মা এর উত্পত্তি হতে পারেনা।
১৩ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ১২:১৬
সিদ্ধার্থ. বলেছেন: আপনি হারমোনিয়াম এর যেকোনো প্রান্তিক বোতামের কথা চিন্তা করুন ।হ্যা এটা ঠিক যে , ওই বোতাম দিয়ে আপনি সব কিছু বাজাতে পারেন ।মনে করুন ওই বোতাম দিয়ে "রে" বাজালেন ।তবে তার আগের ফ্রিকুএন্সি এর "সা "এর বোতাম আপনি খুঁজে পাবেন না ।মানে আপনি হারমোনিয়াম এর প্রতিটা রিড এ প্রতিটা অষ্টক বাজাতে পারেন ।তবে সমস্ত ফ্রিকুএন্সির অষ্টক বাজাতে পারবেন না ।তখন স্কেল এর ব্যাপার চলে আসবে ।
মনে করুন আপনি ১০০ Hz এ "সা " বাজালেন ।তাহলে রে গা মা পা ধ নি সা কোন ফ্রিকুএন্সি তে বাজবে সেটা কিন্তু নির্দিষ্ট ।এখানে একটা নির্দিষ্ট অনুপাত আছে ।এই অনুপাতটা আসলো কি করে ?কারণ ওটা শ্রুতি মধুর ।আর সেই সময় কোনটা শ্রুতি মধুর তা জানার জন্য প্রকৃতির উপর ভরসা করতে হত ।
©somewhere in net ltd.
১|
২০ শে মার্চ, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:০৩
এম হুসাইন বলেছেন: অসাধারণ গবেষণাধর্মী একটি পোস্ট, যদিও সঙ্গিত নিয়ে জ্ঞান খুবই সীমিত।
প্রথম ভাললাগা ও ++++++++
শুভকামনা জানবেন।