নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সামাজিক নাটক
ওটিসটিক/ প্রতিবন্ধী
Autistic
চরিত্রলিপি:
শিশু:
জীবন ....... ........................ রাশেদার ছেলে
ন্ধদয় ....... ........................ বন্ধু ঐ
মিলন ....... ........................ স্কুল পড়–য়া ছেলে
নয়ন ....... ........................ স্কুল পড়–য়া ছেলে
পুষ্পা ....... ........................ স্কুল পড়–য়া মেয়ে
টুম্পা ....... ........................ স্কুল পড়–য়া মেয়ে
পুরুষ:
মজিদ মোল্লা ....... ........................ মাতুব্বর
জাফর ....... ........................ সহযোগী
রবিন ....... ........................ রাশেদার দেবর/ ছোট ভাই
আরিফ চৌধুরী ....... ........................ ভাই ঐ
সৈকত ....... ........................ প্রাইভেট টিউটর
অজিদ চন্দ্র ....... ........................ জনৈক হিন্দু ব্যক্তি
ভিুক
পুলিশ: ....... ........................ ইন্সপেক্টর,ও কনসটেবল
নারী:
রাশেদা ....... ........................ জীবনের মা।
জমিলা/ময়না ....... ........................ (কাজের বুয়া)
রমেলা ....... ........................ (কাজের বুয়া)
প্রথম দৃশ্য
রমেলা: ময়না বু ও ময়না বু! বাসায় আছ?
ময়না: (চাল থেকে ধান বাছতে বাছতে) হ, কেডা কেডায় অমুন কইরা ডাকতাছে।
(রমেলার ভিতরে প্রবেশ)
Ñ ও রমেলা !
ওমেলা: হ বুবু ,আমি। কত দিন অয় তোমাওে দেহি না। তোমাওে দেখবার লিগা পরাণডার মধ্যে জানি খালি কেমুন কওে। সোময়ও বেশি পাই না। আগে তুই মেসে কাম করতাম অহন আরও একটা মেসের নতুন কাম রাখছি।
এয়না: তিন মেসের রান্না করস কেমনে? সোময়ে কি মিলাইবার পারস?
ওমেলা: মাঝে মইধ্যে মেসের মামাগো লগে মিছা কতা কই, এই যেমুন ধর জ্বরের কতা,পেট ব্যথা,মাথা ব্যথা এই রকম আরও নানান বাহানার কতা! . . . বুবু এমনিতেই বাসায় কাম কইরা দেখছি, টেহা পয়সায় পুষে না।
এয়না: মেসে পুষে?
রমেলা: বুবু না পুসলেও . . .
ময়না: বুঝছি, কিছু দুই নাম্বারি করস।
রমেলা: বুবু যে কি কওনা! মনে অয় আমি একলাই করি, কেন তুমি কর না। ওইযে হেদিন যে দেকলাম কতগুলা পিয়াজ রসুন আদা আরও কত কি আনস!
ময়না: দুর পাগলি,এইগুলান জোওে কয়না। মাইনসে হুনলে খারাপ কইবো।
রমেলা: বুবু, অহনও তুমি ঐ হাবাগুবা পোলাগো বাসায় কাম কর? একদিন জানি ওর নাম কি কইছিলা?
এয়না: আমি ডাহি না। ত্বয় ডাক্তরের মুখে কইতে হুনছি অটিস . . .
ওমেলা: অটিস না ইটিসপিটিস?
এয়না: না বুকা! ও ও ও মনে অইে ছ অটিসটিকস।
যাই কস, এই পোলাডার নিগা আমার খুব মায়া লাগে কিন্তু জানস -?
রমেলা: কী
ময়না: পোলার মা ডা মোডেই বালো না। সারাদিনই পোরাডার লগে কেসকেস করবো,আর যেটুকু সোময় পায় খালি মাইনসের লগে কতা কইবো।
রমেলা: কতা কইলে দোসের কী বুবু?
ময়না: কামের কতা দশটা কেন হাজার কইলেও তো দোসের না, কিন্তু হেই মহিলা কী কওে জানস?
রমেলা: না।
ময়না: আয় কাছে আয়, কেউরে কিন্তুক কইস না (বেডিয়ে মাইনসের লগে মোবাইল দেহা করার কতা কয়, আরও কি খবিস খবিস কতা কয়Ñ)
রমেলা: কও কি?
ময়না: হ্ ; খালি ইই ডাই শেষ না মাইজে মাইজে উপরের বাসার ঐ হিন্দু বেডা একলা থাকলে তার ঘওে যায়
রমেলা: কও কি?
ময়না: আরে হ্ ; তার যে দেওর আছে না রবিন না কি নাম ,হেইডার ভাবসাবও বেশি বাল মুনে অয় না । মুনে অয়. . . বেডির লেেগ কেমুন কেমুন করে!!
রমেলা: (জিহ্বা কামর দিয়ে) আইচ্ছা বু , ঐ বেডির জামাই এইসব টের পায় না?
ি ময়না: ক জানি? বেডারে আমি ঠিক বুজি না। বেডায় যে কোন জগতের মানুষ!
রমেলা: বড় নোকের কারবার,ঐ যে কতায় কয়না Ñ বড় নোকের গরে বদমাস/নোচ্চা ঢুকলে কয় কুত্তা ঢুকছে খেদায় হেই হেই. . .আর আমাগো গরীবগো গওে অইলে ঢুকলে কুত্তা ঢুকলেও কয় বদমাস/নোচ্চা ঢুকছে। আকাশের মেঘ আর ওগর লীরাখেলা বুজা বড় মুশকিল । আইচ্ছা বু, আমি অহন যাই। আরেক মেসে যাওন লাগবো।
ময়না: কিছু খাবি না।
না।
সোনা বইন এহন তোওে যা কইলাম কেউওে কিন্তুক কইস না। যুদি তারা হুনে তাইলে তাগর সংসাওে আগুন লাগবো আর আমার কামডা হাতছারা অইয়া যাইবো।
আইচ্ছা
চল আমার ও যাওনের সময় অইছে ।
(উভয়ের প্রস্থান)
২য় দৃশ্য:
[মঞ্চে রাশেদা একা এদিক-সেদিক পায়চারি করতে থাকবে]
রাশেদা: জীবন, জীবন! কই গেলি বাবা?
(জীবন: নিরুত্তর)
রাশেদা: (এদিক ওদিকে তাকিয়ে আরও জোরে জোরে) জীবন, জীবন! জীবন!
(বই খাতা হাতে মিলনের প্রবেশ)
রাশেদা: এই যে বাবা, আমার জীবনরে দেখেছ?
মিলন: জ্বী না Ñ কেন খালা কী হয়েছে?
রাশেদা : ও তো গত পরশু দিন থাইক্যা স্কুলে যাইবার চাইতাছে না। স্কুলের সময় হইলেই এইদিক সেইদিক পলায়। দিনে দিনে পোলাডা আমার স্কুল বিমুখ অইয়া যাইতাছে! কী যে হইল বুঝবার পারতাছি না!
মিলন: খালা একটা কথা বলি ?
রাশেদা: হ্যাঁ, কও।
মিলন: স্কুলে জীবনকে নিয়ে তার সহপাঠীরা নানা রকম বিদ্রুপ করে। নানা রকম খারাপ আচরণ করে।
রাশেদা: স্কুলের স্যারেরাও তার লগে খারাপ আচরণ করে?
মিলন: খারাপ আচরণ করেনা,আবার ভাল আচরণও কওে না।
রাশেদা: কথাডা বুঝলাম না বাবা;
মিলন: স্কুলের বিমল স্যার,মতিন স্যার,রফিক স্যার প্রায় সময়ই ছাত্রদের পড়া না পারলে ব্রেঞ্চির উপর কানে ধরে দাঁড় করিয়ে রাখে। আবার কোন কোন সময় লম্বা লম্বা বেত দিয়েও জোরে জোরে মারে।
শুনছি তাকেও নাকি কানে ধরে সেদিন এক পায়ে দাঁড় করিয়ে রেখেছিল।
রাশেদা: এইসব বিষয় তো আগে কোনদিন জানতাম না।
মিলন: কোন দিন কি জিজ্ঞেস করেছিলেন?
রাশদা: না।
মিলন: আমি অহন যাই খালা,আমার স্কুলের সময় অইয়া গেছে।স্লামুআলাইকুম।
(প্রস্থান)
রাশেদা: ওয়ালাইকুম. . . (কিছুণ দাঁড়িয়ে থেকে পুনরায়) জীবন, জীবন,বাবা জীবন!
(প্রস্থান)
পর্দা
৩য় দৃশ্য
[ বই খাতা নিয়ে নয়ন, পুষ্পা, টুম্পার, প্রবেশ]
নয়ন: এই জানিস টুম্পা, এই যে একটু আগে যে মহিলা গেল,ওনার ছেলের নামই জীবন। যে কাসে নখ খায়,পায়ের মরা চামরা তুলে তুলে খায়।
সকলে: পায়ের চামরা খায়?
নয়ন: শুধুতাই ই নয়,বেশির ভাগ সময় কুত্তার মত জিহ্বা বাহির কওে থাকে। আমাদেও কাসে ঐ একজনই অটিসটিকস। ছেলে হাবাগুবা হলে কি হবে তার নাম কিন্তু চমৎকার Ñ জীবন!
পুষ্পা: বুঝলি! পোলা অইলো গিয়া অটিসটিকস,আর নাম রাখছে লিপিসটিকস!!! (হাসির ধূম)
টুম্পা: জানিস,রনি না ওকে ভয় দেখানোর জন্য ওর ব্যাগের মধ্যে গাঢ় ব্যাঙ আর তেলাপোকা রেখেছিল।
নয়ন: হ্যাঁ, হ্যাঁ, মনে পড়ছে; বেচারা! যা ভয় পেয়েছিলÑ ভয়ে তো পরের তিনদিন স্কুলেই আসে নি। শুনেছিলাম ভয়ে শরীরে জ্বর এসেছিল। (ব্যাঙ্গ স্বর)
পুষ্পা: জীবনকে নকল করলো. . .(নয়নের দিকে হাত দিয়ে দেখিয়ে) । [হাসির ধূম]
(মজিদ মাতব্বর ও জাফর এর প্রবেশ)
মজিদ: জাফর!
জাফর: জ্বী হুজুর।
মজিদ: দেখছতনি, আইজ কাইলকার পোলাপান কিলাখান বেয়াদ্দপ অই গেছে। সালাম,আদাপ কুচ্চু নাই।
জাফর: জ্বী অয়,জ্বী অয়।
মজিদ: জ্বী অয়!
জাফর: জ্বী না, জ্বী না।
মজিদ: ইতার মনে খয় বাপ মাও খারাফ;
জাফর: জ্বী অয়,জ্বী অয়।
মজিদ:জ্বী অয়!
নয়ন: জ্বী না,জ্বী না। বাপ মা খারপ অইত কেনে ? ইতায় খারাফ!
মজিদ: তরেও আমি মাজে মাজে বুজিয়া উঠতাম ফাড়ি না। তুইনও ঐ বেয়াদপ বাচ্চাইনতর লাখান . . . .?
জাফর: জ্বী অয়,জ্বী অয়। . . . জ্বী! জ্বী! জ্বী না,জ্বী না,জ্বী না। ইতা কিতা খইনÑঅস্তাগফিরুল্লা! অস্তাগফিরুল্লা!
ইতা অইল গিয়া ডিজিটাল পোলাপাইন;মানে অইল গিয়া কম্পুটার পোলাপাইন। যন্ত্র পোলাপাইন;ইতার আবার আদব কাদপ কিতা! আর আমি অইলাম গিয়া হুজুর আপনার . . . ।
মজিদ:বুঝতাম ফারছি।
[বাজারের ব্যাগ হাতে অজিদের প্রবেশ]
অজিদ: আদাব,
মজিদ: আদাব, বালা আছ নি বা?
অজিদ: জ্বী, বালা।
মজিদ: তোমার প্রতিবেশীর লগে টেখা পয়ছার বেজাল শেষ অইছে নি?
অজিদ: জ্বী না।
মজিদ: তাইলে Ñ বিকেলে একবারতা দেখা খইরো।
অজিদ: জ্বী আইচ্ছা।
(অজিদের প্রস্থান)
জাফর: হুজুর, আইউক্কা আমরার বিচারের সময় যারগি। জামালের পাঁচ আজার ঘুসের টেকার বিচার! বুলি গেছইন নি?
মজিদ: (লাঠি দিয়ে গলায় গুতা মেরে)? বেয়াদ্দপ! ইতা অত জোরে মাতা লাগে নি?
জাফর: জ্বী অয়, জ্বী অয়।
মজিদ: (চোখ বড় করে তাকাবে)
জাফর: জ্বী না, জ্বী না।
৪র্থ দৃশ্য
স্থান: রাশেদা বেগমের গৃহ
উপকরণ: টেবিল, চেয়ার, খাতা
আরিফ চৌধুরী: (চেয়ারে বসে মুজা খুলতে খুলতে ) রাশেদা, রাশেদা !
(রাশেদার প্রবেশ)
রাশেদা: ডাকছনি?
আরিফ: জীবন স্কুলে গেছে নি?
রাশেদা:না
আরিফ: দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে এই টেখাগুলান আলমারিত রাখ।
রাশেদা: কত?
আরিফ: পাঁচ লাখ
ওাশেদা: এত টাকা!(আরিফ মুচকি হাসবে)
(টাকা নিয়ে হাত দিয়ে একটু বাহির করে দেখার চেষ্টা করবে,হঠাৎ মোবাইলে কল আসবে,আড়চোখে স্বামীর দিকে তাকাবে,দ্রুত প্রস্থান হতে থাকবে )
... আমাকে একগ্লাস ঠাণ্ডা পানি দিও তো
আইচ্ছা।
(রাশেদার প্রস্থান)
রবিন, রবিন ;
নেপথ্যে উত্তর : জ্বী
আরিফ: অবায় এখটু আওছায়।
ভার্সিটিতে গেছলায় নি।
রবিন: জ্বী অয়।
(দাঁড়িয়ে দুজনে কথা বলবে অতঃপর প্রস্থান )
৫ম দৃশ্য
মঞ্চে ২টি চেয়ার ১টি টেবিল থাকবে
সৈকত ধীর পায়ে মঞ্চে এসে চেয়ারে বসবে। রাশেদা বেগম একবার এসে দেখে যাবে।
সৈকত: আপু, জীবন কি বাসায় নাই?
রাশেদা: আছে। আপনি বসেন আমি পাঠিয়ে দিচ্ছি।
মঞ্চের কর্ণার থেকে ডাক দিবে।
রাশেদা: জীবন,কই তুইন, পড়াত আয়।
নেপথ্যে উত্তর: না আ আ আইজ ফ ফ ফড়তাম নায়
ওাশেদা: খেনে পড়তে নায়?
জীবন:নিরুত্তর।
রাশেদা: কালখেও পড়ছত না, আইজও পড়তে নায় ইতা তুইন ডং পাইছত নি। জলদি পড়াত আয়।
জীবন: না, আ আ আইজ ফ ফ ফড়তাম নায়
রাশেদা: কুত্তার বাচ্চা, প্রত্যেক দিন তর একটা না একটা বাহানা থাকে। তর আইজ পড়তে অইব। রবিন,রবিন?
নেপথ্যে উত্তর: জ্বী,
রাশেদা: অবায় আওছায়; ই কুত্তার বাচ্চারে পাতকুলে করিয়া ধরিয়া পড়াত আন Ñ আবার পড়তে নায়Ñ তুইনও পড়াত বইবে তর বাপও পড়াত বইব। আমারে তো তুইন চিনছত নায়।
জীবনের প্রবেশ
জীবন: তা তা ইলে বা আ ফপরেও পড়াত বওয়াও। আ আ আমি বইতাম নায়।
রবিন:আমারে ডাকছইন নি?
রাশেদা: অগুওে দরিয়া পড়াত বআও। (নিজে বেত হাতে নিবে,ওড়না কোমওে শক্ত কওে পেচিয়ে।)
(রবিন,জীবনকে ধরবে। জীবন চিৎকার কওে বলতে থাকবে ফ ফ ফ ড়তাম নায় রাশদা খুব মারতে থাকবে )
সৈকত: আপু, ও যখন পড়তে চাচ্ছে না তখন থাক। ওর মনের বিরুদ্ধে কিছু করা ঠিক হবে না।
রাশেদা : কিতা খইন আফনে, প্রত্যেকদিন ইতা করলে পড়া অইব নি?
সৈকত: প্রত্যেকদিন তো করে না ,মাঝে মাঝে করে। আফা এমনিতেই তো ওর মানসিক বিকাশ সম্পূর্ণ হয়নি, তাছাড়া এরকম বাচ্চাদের মারও ঠিক নয়। যতদূর সম্ভব বুঝিয়ে পড়তে বসাতে হবে। প্রতি মুহূর্তে আপনাকে নতুন নতুন কৌশলের আশ্রয় নিতে হবে। মনে রাখবেন,ওদের সাথে যদি ফ্রেন্ডলি আচরণ করা যায়,পর্যাপ্ত মায়া মমতা দেওয়া যায় তবে হয়ত পড়াশুনাতে আরও একটু ভাল করত। ওর প্রতি আমাদের আরও একটু সহনশীল হওয়া উচিত।
ওবিন:আর কত সহনশীল অইতাম?
সৈকত:দেখুন আমার কথায় আপনারা কষ্ট পান তা আমি চাই না,শুধু এইটুকু আপনাদেও বলব, প্রতি মুহূর্তে এই অটিটিসটিকস ছেলেটা ঘরে-বাইওে অবহেলার শিকার হচ্ছে। আপনার কি একটু খোঁজ নিয়ে দেখেছেন, জীবনের সাথে তার কোন সহপাঠিরা মিশতে চায় না। সে কোন বেঞ্চিতে বসলে অন্যেরা সেখান থেকে ওঠে যায়!
তার সাথে খেলাধূলা করা করার তো দূরের কথা ভাল করে তার সাথে কেউ কথাও বলতে চায় না। মনোবিজ্ঞানীরা বলেন পর্যাপ্ত পরিমাণে স্নেহ ভালবাসা পেলে এদের অনেকেই পরিপূর্ণ সুস্থ হয়ে ওঠে।
(রাশেদা ও রবিন এক অপরের দিকে তাকাবে।)
সৈকত: মাফ করবেন। যদি মনে করেন যে আমি আপনাদেও জ্ঞান দিচ্ছি । কেবল সত্য জিনিসটাই আপনাদেও সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। প্রতিনিয়ত মানসিক ও শাররীক নির্যাতন নিপীড়ন, আর চারপাশের চেনা জগৎ থেকে অবহেলা তাদেও একাকিত্বটাকে আরও বাড়িয়ে দেয়, তারা আরও বেশি অর্ন্তমুখী হয়ে উঠতে থাকে।
. . . আপু, বেয়াদবি নিবেন না,আর একটি অপ্রিয় সত্য কথা বলি, জীবনকে প্রতিদিনই স্কুলে না যাওয়ার জন্য অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয়। কিন্তু একবারও যাচাই কওে দেখেছেন এই ছেলেটি কেন স্কুল বিমুখ?
ওাশেদা: না,আমি ইখান খইতাম ফারতাম নায়, রবিনে জানে কারণ হেযই মাঝে মাঝে তাওে স্কুলে নিয়া যাইত;
সৈকত: আমি জানি না আমার কথাগুলো কতটুকু সত্য, তবে আমার মনে হয় স্কুলেও সে পড়ার ভাল পরিবেশ পাচ্ছে না।
রবিন: পরিবেশ তো ভাই নিজে তৈরি খরিয়া নেওয়া লাগে।
সৈকত: ভাই রবিন! স্কুল গেটে ঢুকার মুহূর্ত থেকে অর্থাৎ,দাঁড়োয়ান থেকে শুরু করে আয়া, সহপাঠি এমন কি শিকদের নিকট থেকেও সে ভাল আচরণ পায় না। শুনেছি কোন কোন শিক নাকি তাকে প্রায়ই কান ধরিয়ে একপায়ে দাঁড় করিয়ে রাখতো।আর তা দেখে অন্য বাচ্চারা হাসতো। ওর দোস কী জানেন? Ñ ওর দোষ হল এই যে মাঝে মাঝে মুখ ভেঙচানোর মত করে আর তা দেখে শিক মণ্ডলীরা মনে করত যে েেস তাদেরকে শ্লেজিং কওে অমনটি করছে।
ওাশেদা: আশ্চর্য! ইলাখান খবর তো আমরা আগে ফাইছি না।
সৈকত:জানেন না বলছেন? কিন্তু আপনারই জানা উচিত ছিল;আপনার একবার ওর স্কুলের শিকদেও সাথেও সৌজন্য সাাত করা উচিত, ওর অটিজম সম্পর্কে বিস্তারিত খুলে বলা উচিত। বাচ্চারা যখন আনন্দময় শিার পরিবেশ থেকে বঞ্চিত হয় তখনই কেবল তারা স্কুল বিমুখ হয়।
গেলাম আপু, কাল আসব।
স্লামুআলাইকুম।
[রবিন সৈকতের পিছু পিছু চলে যাবে। রাশেদা জীবনকে আদও করতে যাবে কিন্তু জীবন তার হাত ছুওে মারবে। বুয়াকে ডেকে কথা বলবে।]
ওাশেদা: বুয়া
বুয়া জ্বে আম্মা
রাশেদা: কাজ শেষ ?
জমিলা/ময়না:পরায় শেষ।
ওাশেদা: জীবনকে একটু সেবলন লাগিয়ে চলে যেও।
বুয়া: জ্বে আইচ্ছা।
আস আমার সাথে।
(বুয়া ও রাশেদার প্রস্থান)
জীবন ব্যথা স্থানে হাতাতে থাকবে আঙুল দিয়ে নখ কাটবে, পায়ের নখ কাটবে,আবার তা খাওয়ার চেষ্টা করবে,এক কর্ণারে)
[বুয়ার পুনঃ প্রবেশ] পিয়াজ দুটি একটি রসুন মেরে দিবে। তার কোচ ভরবে ,দর্শক তা দেখবে।
ঊুয়া: এই পতিবন্দী পোলা কী দেইখা ফালাইর নাকি? . . . না না দেখে নাই ।
আসেন আপনাওে ওসুদ লাগাই দেই।
জীবন: না।
বুয়া: আমার লগে রাগ করেন কেন? আমি কি আফনারে মারছি? যে মারছে তার লগে রাগ কইরেন। এই ওসুদ নেন।
জীবন: না ,তু তু তুইন লাগা।
ঊুয়া: তাইলে ওসুদ রাইক্যা গেলাম। লাগায়া নিয়েন।
(প্রস্থান)
[জীবন একটু কান্নাকাটি করবে অতঃপর ঔষধ লাগাবে]
ভিুকের প্রবেশ
ভিুক:
একটা পয়সা দেনগো অন্ধরে
টেকা দিয়া যান গো বন্দরে
এই অন্ধরে যে টেকা দিব
তার সব দুঃখ দূর অইব।
সেলামালাইকুম,ছোটসাব। আমি জগতের মধ্যে সবচাইতে অসহায়। কানা মানুষ। মাইনসে আমারে গালিও দেয় কানার বাচ্চা কানা। (জীবন মুখ টিপে হাসবে) আমার খুব দুঃখ।
জীবন: আ আ আমারও।
ভিুক: বুঝবার পারসি Ñ আপনার আব্বা -আম্মা কেউ আফনারে আদর করে না,খালি আফনারে গাইলল্যায়, মারে, কেউ আফনাওে খেলায় নেয় না, কোন মিটিংয়ে বইলে তুইলা দেয়,দূর দূর কইরা খেদায়া দেয়, তাই না ?
জীবন: অ অ অয়।
ভিুক:আফনার আম্মার লগে আফনার আব্বার পরায় পরায় ঝগরা অয়,আপনার আম্মা খুব জোওে জোওে চিল্লায়,তাই না?
জীবন: অ অ অয়।আমারে যারা বেশি টেকা দিয়া সাহায্য করছে তাগো সব দুঃখ দূর অইছে।
জীবন: তা তা তাইলে আমিও তোমারে দিমু।
ভিুক: আমি আপনাওে একটা তাবিজও দিমু। এইডা আপনার কব্জিতে গোপনে লাগায়ে রাখবেন। তাইলে দেকবেন কেউ আপনাওে মারবো না,গাইল্লায়বোও না । আপনাওে নিয় খারাপ মশকরাও করব না।
জীবন : (খুশি হয়ে) স স সত্যি?
ভিুক: হ, এই যে তাবিজ।
(জীবন তাবিজ নিতে চাইবে,কিন্তু ভিুক দিবে না)
আগে টেকা আনেন, নইলে আমার তাবিজে কাম করব না। আমি আপনার কত বড় উপকার করতাছি একবার চিন্তা কইরা দেহেন!
জীবন: আ আ আইচ্ছা তুমি অন বউ, মাতিও না। আমি টেকা আনিয়া দিরাম।
(এদিক সেদিক তাকিয়ে) (সন্তপর্ণে প্রস্থান )
ভিুক: (মুখ নানা ভাবে ভঙ্গি করে) মনে অয় বালা একটা সুবিধা অইব।
(টাকার থলেসহ হাতেজীবনের প্রবেশ)
জীবন: এ এ এই নেও টেকা। টাকা দিবে। (ভিুক টাকা দেখে খুব আশ্চর্য হবে) তা তা তাবিজ খই?
ডভুক: এই নাও। কোন সময় যুদি তোমার আব্বা আম্মার ঝগরা বিবাদ শুরু তহন একটা তাবিজের মধ্যে একটা মন্ত্র পড়বা Ñ ‘চিকা কাঞ্চি গেতু চোকা ’ দেখবা জাদুর মত কাম করবো ।
জীবন : কী মন্ত্র?
ডবুক: চিকা কাঞ্চি গেতু চোকা Ñ আমি এহন যাই। . . . )টেকা বাহির কইরা দেখবে) কার মুখ দেইখা যে বাইর অইছিলাম Ñ সালেহা! সালেহা! আইজ থেইক্যা বিার পথ ফাঁকা ÑÑÑ চিকা কাঞ্চি গেতু চোকা।
(বিুকের প্রস্থান)
(জীবন প্রলাপের স্বরে চিকা কাঞ্চি গেতু চোকা পড়তে থাকবে )
(ন্ধদয়ের প্রবেশ)
ন্ধদয়:কিতারে কিতা করস?
জীবন: নিরুত্তর . . . (চোখ বন্ধ করে একটু পর শব্দ), চিকা কাঞ্চি গেতু চোকা।
(চলবে...........)
©somewhere in net ltd.