নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পড়ি এবং লেখি

সৃষ্টিশীল আলিম

ক্ষুদে সাহিত্যিক, সৃষ্টির নেশায় উন্মুখ

সৃষ্টিশীল আলিম › বিস্তারিত পোস্টঃ

ছোটগল্প (রম্যরচনা) পাত্রী দেখা

১৯ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ৯:০০

ছোটগল্প (রম্যরচনা)

পাত্রী দেখা



হঠাৎ করে মামা রুবজ এ রহমান বললেন , “ভাগনা, চল রাঙামাটি যাব। আমি কিছুটা বিষ্ময়ী দৃষ্টি নিয়ে জিজ্ঞেস করলাম- কেন? মামা বললেন–পাত্রী দেখতে।

মুহূর্তেই যেন মনের মধ্যে অদৃশ্য সুখের পরশা হাতছানি দিয়ে গেল। মনের মধ্যে বসন্ত জেগে ওঠল। আসলে কেউ বিয়ের কথা না বলতে বলতে ভুলেই গিয়েছিলাম আমারও যে বসন্ত আছে! মনের গোপন হিসাব-নিকাশ যত সহজেই বুঝা যায় তত সহজে কিন্তু বুঝানো যায় না। সেই কবেই বিয়ের বয়স হয়েছে কিন্তু একটিবারের জন্যও যদি আব্বাজানে বিয়ের কথা বলতো তবে এই খুশিতে হয়ত হেঁটে হেঁটে উলুপাড়ার মত নরকেও যাওয়া যেতো!

আমি বললাম মামা,কখন যাবেন?

– বিকেল বেলাতেই রওয়ানা দেব।

– বেশ, তাই হবে। তবে...?

– তবে কী?

– আমাদের সাথে যদি স্মৃতিকাতরপাড়ার শহীদ ভাই ও অচিনপাড়ার গীতিকার রুমন ভাইকে নেওয়া যেত। তবে মনে হয় আরও ভাল হত। কারণ....

– কী?

– ওনারা এইসব ব্যাপার ভাল বুঝে!

– আমরা কী কম বুঝি? গাধা কোথাকার! কাউকে লাগবে না। শুধু আমি আর তুমি যাব।

এরপর মামার চোখের দিকে আর তাকাতে সাহস পাই নি। কারণ, মামা রেগে গেলে ওনার চোখ হাতির মত হয়ে যায়! তখন আশেপাশে থাকার মত আর সাহস হয় না। যাইহোক, মামা একটু একরোখা টাইপের। যদি বলেন কোন কাজ করবেন তো সেটা যে কোনভাবেই করে ছাড়েন। যদিও মামা প্রায় সময়ই মিথ্যে কথা বলেন কিন্তু কোন কাজের ক্ষেত্রে তিনি খুব সিরিয়াস হয়ে ওঠেন।

যেই কথা সেই কাজ। বিকেল বেলা আমরা দুজন বাসা থেকে বের হয়েছি। বের হওয়ার সময় মামি একগ্লাস দুধ নিয়ে এসে বললেন, বাবা খাও।

আমি বললাম, মামি দুধ তো খাওয়া যায় না!

উনি স্মিত হেসে বললেন, তবে পান কর। মামির হাসিটা খুবই মিষ্টি। একেবারে মোনালিসার মত। ওনার বিয়ে হয়েছে কয়েক বছর হবে কিন্তু এখনো ওনার শরীরের গাঠনিক স্কেল এত সুন্দর যে, একবার তো এক রিক্সাওয়ালা মামির দিকে তাকাতে তাকাতে খাদেই পড়ে গেল। বেচারা!

এলাকার অনেক বখাটে ছেলেরাও প্রায়ই বাসার পাশে এসে নিরর্থক শিস দিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করতো। কতবারই বা ওদের বারণ করা যায়! মামারও তো কাজ থাকে; এজন্য তিনি বাধ্য হয়ে বাসায় ১৪৪ ধারা জারি করলেন। কোন অবস্থাতেই যেন মামি গৃহের বাইরে না যান। এই বিষয়টা তদারকির ভার পড়ল আমার ওপর। আমি তো মহা খুশি। এ যেন বিরাট দায়িত্ত্ব! ঠিক যেন পুলিশের আইজি আইজি মনে হতে লাগলো নিজেকে। যদিও পুলিশ পেশাকে আমি সুনজরে দেখি না! থাক সে কথা পরে হবে।

মামির দিকে তাকিয়ে আমি এক নিঃশাসে সবটুকু দুধ সাবার করে ফেললাম। এরই মধ্যে একটি কথা বলে রাখছি- এইসব পাত্রি সংক্রান্ত বিষয়ে আব্বু আম্মুকে আমরা কিছুই বলিনি, বলার সাহস পাই নি বলে। সেদিন আকাশের অবস্থাও ছিল চোখে পড়ার মত। সাদা মেঘের ভেলার ছুটাছুটি যেন অন্যরকম এক আবহ সৃষ্টি করে তুলছে। যা কেবলি শিল্পের সুষমায় দৃষ্টি নন্দিত মনে হচ্ছে।

দুজনে হাঁটছি মেঠোপথ ধরে। আঁকাবাকা মেঠোপথ। চারদিকে শুধু সবুজ ফসলের সমারোহ। যতদূর দৃষ্টি যায় সবুজের স্নিগ্ধ আল্পনায় চোখ জুড়িয়ে আসে। ধান ক্ষেতের সরু আইলের উপর দিয়ে হাঁটছি আর মাঝে মাঝে সবুজ ধানের শিষে ভাললাগার পরশ মেখে হাত বুলিয়ে দিচ্ছি। আমি সামনে আর মামা পিছনে।



কিছুদূর যেতেই আমি বললাম মামা, নিচে একটু দেখে আসবেন, ময়লা আছে। মামা কী যেন মনে করল বুঝতে পারলাম না। আকাশের মত মাঝে মাঝেই আমি উনাকে বুঝে উঠতে পারি না, বড় অচেনা মনে হয়! কেবল এইটুকুই বুঝলাম যে, আমার কথায় উনি বিশেষ গুরুত্ব দেন নি। ফলে যা হবার তাই হল। উনি যেই না উনার ডান পা ময়লার উপর ফেলেছেন আর অমনিই সেই ময়লা ওনার সারা শরীররে ছিটকে একেবারে লেপ্টে গেল। মামা তাকিয়ে দেখেন ওনার সারা শরীরে গু লেপ্টে গেছে! সত্যি সত্যিই গু কি না তা বুঝার জন্য ওনি হাত দিয়ে দেখার চেষ্টা করলেন, পরে নাকের কাছে নিলেন। সর্দি থাকার কারণে বোধহয় ঘ্রাণশক্তি নিতে ব্যর্থ হলেন। হেরে যাওয়ার পাত্র উনি নন। পরে তা ওনার জিহ্বার আগায় দিলেন পরখ করার জন্য। দেওয়া মাত্রই বিদ্যুৎ গতিতে বললেন- এ যে গু... !!! ওয়াক থু !!!

ততক্ষণে আমার শরীরের কাঁপুনি ওঠে গেছে। মামা তার চোখ রক্তবর্ণ করে শুধু আমাকে বললেন, দুইদিন ধরে প্রফেসারি শিখিয়া এখন গু’য়েরে কস ময়লা- না? বেয়াদ্দপ! আমি তখন বুঝে ফেললাম এর পরের ঘটনা কী হতে পারে। তাই উপায়ন্তর না দেখে বাসার দিকে দিলাম ভূদৌড়!!! আমারে নাগাল আর পায় কে !

..................................

১৯.০৭.২০১৪

বোরহানবাগ আ/এ, টিলাগড়, সিলেট

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ১২:৩৫

মামুন রশিদ বলেছেন: খুব খ্রাপ :D

২০ শে জুলাই, ২০১৪ ভোর ৫:০০

সৃষ্টিশীল আলিম বলেছেন: হা হা হা..... ভাইজান, খারাপের মধ্যেই যে ভাল কিছু খুঁজে নিতে হয়।
অনেক অনেক অনেক ভাল থাকুন। নিরন্তর শুভ কামনা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.