নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আধুনিক ও উত্তরাধুনিক কবিতার বৈশিষ্ট্যের কিছু তুলনামূলক আলোচনা নিম্নে দেওয়া হল:
বিষয়কেন্দ্রিকতার অভাব। অধুনান্তিক কবিতায় কোন নির্দিষ্ট বিষয়কেন্দ্র, ভাবনাকেন্দ্র, cebtral theme নেই।
পোস্ট মর্ডান কবিতায় যুক্তি কাঠামো অনুপস্থিত থাকবে। কবিতাটি হবে। কবিতা শেষ হলেও মনে হবে শেষ হয় নি।
অধুনান্তিক কবিতা বহুরৈখিক,বহুকৌণিক,বহুত্তবাদী ও বিদিশাময়। যে কোন দিকে ছড়িয়ে পড়ার অভিমুখ খোলা।
সাম্রাজ্যবাদী চিন্তাচেতনা থেকে উত্তরাধকিার সূত্রে প্রাপ্ত আধুনিক কবিতা ছিল ব্যক্তিকেন্দ্রিক। অধুনান্তিক কবিতায় সেই আমি-র অনুপস্থিতি।
জীবনের যে কোন এলাকা থেকে অধুনান্তিক কবিতায় কবি তার মালমশলা ও উপাদান সংগ্রহ করে নিতে পারেন। এটা কবিতায় চলবে না, ওটা কবিতায় চলবে না এই মান্যতা এই মান্যতা কবি বা পাঠক আর আগ্রাহ্য করবে না।
পোস্টমর্ডান কবি জানেন বাস্তবকে নকল করা যায় না। ফলে পোস্টমর্ডান হাইপাররিয়েলিটি সৃষ্টি করে চলেছে।
অনেকই আজকাল কবিতাকে এমনভাবে শেষ করেন যাতে বোঝা যায় কবিতাটি অসমাপ্ত।
জীবনের যে কোন বাকফসলই ডিসকোর্স। আধুনিক কবিতায় এই ডিসকোর্সের ডিকনস্ট্রাকশন বা অবিনির্মান করা হয়।
অধুনান্তিক কবিতায় প্রতীক এড়িয়ে যাওয়া বা প্রতীক ভেঙ্গে যাওয়ার ঝোঁক।
অধুনান্তিক কবিতায় কোন আদর্শ খাড়া করতে চায় না। সে কোন যাত্রার সংকেত দেয়।
অধুনান্তিক সম্ভাবনার পরিসর খোলা রাখে।হিউরোটোপিয়ার কথা বলে।
অধুনান্তিকতা কোনপূর্ব নির্ধারিত তত্ত্ব নয়। জীবনকে দেখে শুনে তার লক্ষণগুলোর যোগসূত্র ঠাউরে নিয়ে অধুনান্তিকতার যাত্রার ঝুলি। অধুনান্তিকতা কোন আন্দোলন নয়, একটি কালখণ্ডের প্রবণতা।
পোস্টমর্ডান কবিতায় ভাষার নিজস্ব গুরুত্ব মান্য করা হয়।
পোস্টমর্ডান কবিতার একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ যুক্তিফাটল বা লজিক্যাল ক্র্যাক বা লজিক্যাল ক্লেফটের উপস্থিতি।
আধুনিতা যদি সাজানো বাগান হয় তাহলে পোস্টমর্ডান কবিতা হল রাইজোম্যাটিক অর্থাৎ ঘাসের মত।
পোস্টমর্ডান কবিতায় ইমেজ তৈরি সম্ভব নয়।
পোস্টমর্ডান কবিতা যে কোন সীমাকে ছাপিয়ে যেতে চায়। ফলে কোন নির্দিষ্ট সংজ্ঞায় তাকে ধরে রাখা সম্ভব নয়।
কবির রাজনৈতিক মতাদর্শের সঙ্গে কবিতাকে যুক্ত করা আর সম্ভব নয়।
পোস্টমর্ডান কবিতা অভেদ, অখণ্ডতা মহাসাম্যের দ্বারা প্রতিস্থাপিত। বাইনারি অপোজিট বা বৈপরীত্যবোধ দিয়ে তাকে চিহ্নিত করা সম্ভব নয়।
আধুনিক কবিতায় ছিল হিউম্যানিস্ট চেতনার প্রতিফলন। যেখানে মানুষের জয়গান গাওয়া হয়েছে। আজ কীটপতঙ্গ, পশুপাখি, গুল্মলতা, কাপ-ডিস-চামচ, ফ্রিজ, ডিনার, টেবিল, অ্যাসট্রে, নাকছবি, ওয়েবসাইট, আলুচাষ, যতিচিহ্ন সবই কবিতার বিষয়। একটি মাত্র দিক তার লক্ষ্য নয়। কবি বিদিশামণ্ডল।
উৎস: পোস্টমর্ডান বাংলা কবিতা, ভূমিকা- প্রভাত চৌধুরী
উত্তরাধুনিক কবিতা (সম্পাদনা)- অমিতাভ গুপ্ত
উত্তরাধুনিক চেতনার ভূমিকা- ঐ
পোস্টমর্ডান ভাবনা ও অন্যান্য –পার্থপ্রতিম বন্দ্যোপাধ্যায়
পোস্টমর্ডান ও উত্তরাধুনিক বাংলা কবিতা পরিচয় – নিতাই জানা
উত্তর আধুনিক কবিতা (সম্পাদনা) বীরেন্দ্র চক্রবর্তী
কবিতার অন্তর্যামী- খোন্দকার আশরাফ হোসেন।
(চলবে )
©somewhere in net ltd.