নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পড়ি এবং লেখি

সৃষ্টিশীল আলিম

ক্ষুদে সাহিত্যিক, সৃষ্টির নেশায় উন্মুখ

সৃষ্টিশীল আলিম › বিস্তারিত পোস্টঃ

অন্যরকম এক ভালোলাগার মানুষ মুক্তিযোদ্ধা কাজলেন্দু পাল: সিরিজ – ২

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:৫৫






কাজলেন্দু পাল ১৯৫৫ সালের ২২ জুলাই জকিগঞ্জ উপজেলার মোঙ্গলপুর গ্রামে এক মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বাস্তব জীবনে যেমন সহজ-সরল তেমনি ব্যবহারের দিক দিয়ে অমায়িক। বড় পরিবারের সন্তান হওয়ায় অনেক চাওয়া-পাওয়ারই অপূর্ণতা থেকে যায়। অবশ্য এ নিয়ে কাজলেন্দু পালের কোন দুঃখ নেই। খুব ছোটবেলা থেকেই তিনি ছিলেন অন্যরকম এক খোলামেলা মনের মানুষ।
কাজলেন্দু পাল তখন ঠিক এগার বছরের উঠন্তি কিশোর। মোঙ্গলপুর গ্রামের আর দশজন কিশোরেরা যেভাবে বেড়ে উঠছিলেন তিনি মোটেও তাদের মতো ছিলেন না; না স্বভাবে, না দুরন্তপনায়! এটার নেপথ্যে যেমন পারিবারিক কারণ জড়িত তেমনি তার স্বভাবগত ব্যাপারও অন্যতম প্রধান বলে ধরে নেওয়া যায়। খুব ছোটবেলা থেকেই তিনি ছিলেন একটু ডানপিটে স্বভাবের। সাহসিকতার দিক থেকেও তিনি মোটেও পিছিয়ে ছিলেন না। বরং এইখানেই তিনি তার সম বয়সী বন্ধুদের থেকে এগিয়ে ছিলেন। ৬ ভাই ২ বোনসহ মোট ৮ জনের সংসার। পরিবারে এমনিতেই একটু টানাপোড়েন ছিল। তবুও কোনমতে চলেই যাচ্ছিল। হঠাৎ দেশের পরিস্থিতি খারাপ হতে শুরু করলো। অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিল। এর প্রভাব পড়তে শুরু করলো শহরে ও গ্রামে। হঠাৎ দেশের পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার মতোই শাররীক অসুস্থ হয়ে পড়লেন তার বাবা অশ্চিনী মোহন পাল। নানাদিক থেকে ডাক্তার বদ্যি দেখানো হলো। কিন্তু কোন কিছু্তেই কাজ হলো না। ক্রমেই অবনতি হতে লাগলো। এক সময় জাগতিক অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ অপূর্ণ রেখেই তাকে ভবলীলা সাঙ্গ করতে হলো।

পিতা অশ্চিনী মোহন পাল মারা গেলেও তিনি তখনো পারিবারিক টানাপোড়েন খুব একটা ভালো বোঝেন না, তবে তার মাথার ওপর থেকে যে ছাতা স্বরূপ পিতা চিরবিদায় হয়েছেন সে শূন্যতা যে পূরণের নয়, তা তিনি ছোট হলেও বুঝতে সক্ষম হলেন। বড় ভাইয়েরা সংসার চালানোর দায়িত্ব নিলেন। সেই সাথে তার লেখাপড়ার। এভাবেই এগিয়ে চলল তার পড়াশোনা।

তিনি তখন নবম শ্রেণির ছাত্র। বয়স ১৬ বছর ২ মাস। সারা দেশের পরিস্থিতি খুবই খারাপ। পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীরা এদেশের নিরীহ জনগণের ওপর অতর্কিতে আক্রমণ চালাচ্ছে, সেই সাথে নারী নির্যাতন –নিপীড়ন। তিনি রেডিওতে শোনতেন, বড়দের মুখে শোনতেন। কিন্তু এই চিত্র যে সহসাই তার গ্রাম মোঙ্গলপুর বা জকিগঞ্জে ঘটবে এ তিনি কল্পনাতেও আনেননি। না আনারই কথা।

এর কারণও আছে। শহরে যে কোন ঘটনা যেমন খুব দ্রুত ছড়ায় তেমনি তার ইতিবাচক বা নেতিবাচক দিকগুলোও ছড়ায়। শহরের তুলনায় গ্রামে এর প্রতিক্রিয়া তুলনামূলক কম। কিন্তু একেবারেই যে পড়বে না, এটা বলা যায় না। তিনি দুরন্ত কিশোর। দেশের ও গ্রামের অস্থির পরিস্থিতি তাকে ভাবিয়ে তুলে। তিনি স্থির করেন দেশের হয়ে যুদ্ধ করবেন। যারা অন্যায়ভাবে গ্রামের সাধারণ জনতাকে নির্যাতন নিপীড়ন করছেন, দেশের মানুষকে হত্যা করছে তিনি তাদের বিরুদ্ধে মনে মনে যুদ্ধ ঘোষণা করলেন। কিছু একটা করতেই হবে। এই অবস্থা চলতে দেওয়া যায় না। যে কথা সেই কাজ। মুক্তিযুদ্ধে যাওয়ার জন্য তিনি স্থির সিদ্ধান্ত নিলেন।

যে কথা বলে ট্রেইনিংয়ে যাত্রা করলেন:
মা সুভাষিণী বালা পালকে তিনি একদিন বললেন- মা আমারে কিছু টাকা দাও শিলং থেকে ঘুরে আসবো। মা ছেলের অস্থিরতা বোঝার চেষ্টা করলেন। তারপর ১০ টাকার একটি নোট দিয়ে দিলেন। কিন্তু মা সুভাষিণী বালা পাল কোনভাবেই বুঝতে পারলেন না যে, সে যুদ্ধে যাচ্ছে। আর কাজলেন্দুও স্পষ্ট করে যুদ্ধের কথা বলেননি। হয়ত বললে যেতে দিবেন না-আর এ কারণেই সে মায়ের কাছে যুদ্ধের কথা বলেননি। এমনিতেই তার বাবা নেই, তার ওপর যদি সেও যুদ্ধে যেতে চায় তবে তার মা বারণ করবে এটাই স্বাভাবিক। এমনো নানাবিধ চিন্তাভাবনা করেই তিনি মায়ের কাছে কথাটি গোপন রাখলেন।

যারা প্রেরণা যোগাতেন:
শহর থেকে কলেজের প্রফেসর, ছাত্রনেতারা গ্রামে এসে গ্রামের কিশোর-যুবকদের সুসংগঠিত করে তাদেরকে দেশের হয়ে কাজ করার জন্য নিরলসভাবে উদ্বুদ্ধ করতে থাকেন। অন্যায়ের প্রতিবাদ করার জন্য ধীরে ধীরে তাদের মনকে চাঙ্গা করতে থাকেন। পরবর্তীতে সময়-সুযোগ বুঝে মানসিক ও শাররীকভাবে প্রস্তুত হওয়ার জন্য বলামাত্রই সে ও তার বন্ধুরা প্রস্তুত হয়ে যায়।

যেভাবে যুদ্ধে যাত্রা করলেন:
বৃহত্তর জকিগঞ্জও পার্শবর্তী এলাকার অনেক ছেলে-বুড়ো সেদিন জড়ো হলেন। উদ্দেশ্য যুদ্ধে যাওয়ার আগে প্রশিক্ষণ গ্রহণ। একটি খোলা ট্রাক সেদিন কানায় কানায় পূর্ণ হয়েছিল। বিশেষ করে কিশোর ও তরুণদের সংখ্যাই বেশি ছিল। আনুমানিক ১২৫ জনের মতো কিশোর ও তরুণ প্রশিক্ষণ গ্রহণের জন্য ট্রাকে চড়ে ভারতের উদ্দেশ্যে রওনা দিল।

ক্যাম্প:
ভারতের আসাম প্রদেশের পানিভরা অঞ্চলের ইয়াদ ক্যাম্পে তারা সকলেই মিলিত হয়। সেখানে তাদের মেডিকেল করা হয়। উল্লেখ্য যে, মেডিকেলে তাদের সকলেই ফিট হলেও তাকে আনফিট করা হল। তার গায়ে ছলং ছিল। এই অজুহাত দেখিয়ে তাকে বাদ দেওয়া হয়। পরে তার বড় ভাই কাননব্রত পাল মেডিকেল অফিসারকে বুঝিয়ে বলেন যে, তাদের আর ফিরে যাওয়ার পথ নেই। তাছাড়া দুভাই পাশাপাশি থাকলে নিজেদের মনোবলও শক্ত থাকবে। কানব্রত পালের অনুরোধে পরবর্তী সময়ে তাকে ফিট ঘোষণা করা হল। মেডিকেল শেষ হলে তাদের প্রত্যেককে কাছার অঞ্চলের লোহারমল ট্রেইনিং সেন্টারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

মোট কোম্পানি:
কাছারে ৭, ৮, ৯ নামের মোট তিনটি কোম্পানি ছিল। তিনি ছিলেন ৮ নং কোম্পানিতে। প্রতি কোম্পানিতে প্রশিক্ষণার্থী সংখ্যা ছিল প্রায় ১১০জন। এই কোম্পানিগুলো আবার বিভিন্ন প্লাটুনে বিভক্ত ছিল। তবে সাধারণত তিনটি প্লাটুন নিয়ে একটি কোম্পানি গঠিত হত। প্রতি প্লাটুনে ৩৩/৩৪ জন করে সৈন্য থাকত।

প্লাটুন ইন্সট্রাকটর:
অতুল চন্দ্র দাস প্লাটুন ইন্সট্রাকটরের দায়িত্ব পালন করতেন। তিনি মূলত ভারতীয় নাগরিক। যদিও জন্ম আসাম প্রদেশে তবুও তার প্রধান ভাষা হিন্দি। বাংলাতে তিনি খুব একটা দক্ষ ছিলেন না। তবে একজন আদর্শ ইন্সট্রাকটর হিসেবে যেসব গুণ থাকা দরকার তার সবগুলোই ছিল।
ট্রেইনিংয়ের মোট সময়:
কাজলেন্দু পালসহ অন্যান্যরা মোট ৩০ দিন ট্রেইনিং গ্রহণ করেন। ১৮ মাসের ট্রেইনিংয়ের মূল নির্যাস তাদের ৩০ দিনেই রপ্ত করতে হয়েছে। ফলে তাদের ওপর অনেকটাই ধকল গেছে। মূলত তাদের ট্রেইনিং ছিল গেরিলা ট্রেইনিং।

ট্রেইনিং চলাকালীন খাদ্য:
গেরিলা মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বমোট দুইবেলা খানি দেওয়া হত। সকাল বারোটায় চা এর সাথে রুটি আর বিকেল ৬টায় ভাতের সাথে বিভিন্ন ধরনের সবজি, মাছ অথবা মাংস।

বিনোদন:
টেইনিংয়ে বিশেষ কোন বিনোদনের ব্যবস্থা ছিল না। কঠোর পরিশ্রমই ছিল তাদের ব্রত। তবু প্রায়শ রাতের বেলা ইন্সট্রাকটর প্লাটুনের সবাইকে নিয়ে গানের আয়োজন করতেন। তবে সে গানগুলোর মধ্যে গণজাগরণমূলক গানগুলোই মুখ্য ছিল।

শপথ:
মৌখিকভাবে সব সৈন্যদের শপথ করানো হয়।

স্মরণীয় ঘটনা:
তিনি সর্বমোট ৬ মাস যুদ্ধক্ষেত্রে অবস্থান করেন। একবার তারা কানাইঘাটের লক্ষ্মীপাশার এক ব্রীজ দখল করার অপারেশনে বের হয়। এ অভিযানে নেতৃত্ব দেন লেফটেন্যান্ট গিয়াস উদ্দিন। তিনি মূলত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন। মানুষ হিসেবেও ছিলেন বেশ অমায়িক। সেকেন্ড ল্যাফটেন্টান্ট ছিলেন নির্মল ভট্টাচার্য। তিনিও যেমন সৎ সাহসী ছিলেন তেমনি ছিলেন ধর্মপরায়ণ। সেদিনের সে অপারেশনে তাদের অভিযানে অংশ নেওয়া মোট ২৭০ জনের মধ্যে চার জন শহীদ হন। এই চারজনই ছিল কাজলেন্দু পালের খুব কাছের মানুষ। তবে বড়লেখার নীলমণি সরকার ও কানাইঘাটের অলিউর রহমানের সাথেই তার বেশি সখ্য ছিল।

এই অভিযানে দুইজন রাজাকারসহ তাদের ১৯ জন হানাদার বাহিনী মারা যায়। সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট নির্মল ভট্টাচার্য নীলমণি সরকারের লাশ দাহ করার ব্যবস্থা করেছিলেন। পাশ্ববর্তী লোভাছড়া চাবাগানের কুলিদের সহযোগিতা নিয়ে তিনি দাহের কাজটি সম্পন্ন করেন।

পোস্টিং:
দীর্ঘ একমাস ট্রেইনিং শেষ করে তাদের ভারতের জালালপুর পাঠিয়ে দেওয়া হয়। মূলত বৃহত্তর সিলেট তখন ৪টি সাব সেক্টরে বিভক্ত ছিল। যথা:
1. জালালপুর,
2. কৈলাশপুর
3. মহিসাশন
4.
এই চারটি সাব সেক্টরের মধ্যে জালালপুর ছিল অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এখানে পুরো তিন কোম্পানিই চলে আসে। তিন কোম্পানি মিলে হয় উইং। অর্থাৎ জালালপুরে এক উইং ছিল। এক উইংয়ে ৯০০ এর অধিক সৈনিক থাকত।

সাবসেক্টর কমান্ডার ও সেক্টর কমান্ডার:
প্রত্যেকটি সাব সেক্টরের জন্য ছিল আলাদা আলাদা সাব সেক্টর কমান্ডার। জালালপুরের সাবসেক্টর কমান্ডারের নাম সাদিকুর রহমান সাদি। তিনি মূলত হবিগঞ্জ জেলার বাসিন্দা। সেক্টর কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করতেন চিত্তরঞ্জন দত্ত। সাব সেক্টর কমান্ডার হিসেবে সাদিকুর রহমান ছিলেন অত্যন্ত নির্ভীক ও দরদী।

প্রথম অপারেশন:
ট্রেইনিং শেষে তার প্রথম অপারেশন ছিল কানাইঘাটের থানার কারাবাল্লায়। মুখ্য উদ্দেশ্য পাকিস্তানীদের ব্যাংকার দখল ও কানাইঘাটকে হানাদারমুক্ত করা। সে অভিযানে কমান্ডিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করেন মাসুক আহমদ চৌধুরী। সেখানে তাদের আগমনের বার্তা পেয়েই পাক হানাদারবহিনীর সদস্যরা পালিয়ে যায়। অনেকটা বিনাযুদ্ধেই তারা কারাবাল্লার ব্যাংকার দখল করে ফেলে।

স্থানীয় রাজাকার:
এসময়ে উল্লেখযোগ্য স্থানীয় রাজাকার ছিল মকবুল। গ্রামের মুক্তিযোদ্ধাদের গতিবিধি বলে দেওয়া ও সুন্দরী মেয়েদের পাকিস্তানী ক্যাম্পে চালান করাই ছিল তার মূল কাজ।

মোট অপারেশন:
তিনি মোট ৬টি অপারেশনে অংশগ্রহণ করেন। সবগুলোই কানাইঘাট থানার চতুল, দরবস্ত, পিপিঅল, খাদিম, কারাবাল্লায় হয়েছে। সব অপারেশনেই তারা সফল হয়েছেন। অপারেশন চলাকালীন সময় তাদের খাদ্যের যোগান দিত সাধারণ জনগণ।

অস্ত্র জমা:
ডিসেম্বর মাসের শেষ দিকে সিলেট জামিয়া স্কুলে তাদের কোম্পানিসহ সিলেটের সকল মুক্তিযোদ্ধাই অস্ত্র জমা দিয়েছেন। জেনারেল আতাউল গণি ওসমানীর নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধাদের কাছ থেকে অস্ত্র জমা নেওয়া হয়।

পাকিস্তানীদের আত্মসমর্পণ:
১৫ ডিসেম্বর পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর সকলেই এমসি কলেজে আত্মসমর্পণ করে। মোট ৬১২৪ জন পাকিস্তানী সেনা ইন্ডিয়ান যৌথবাহিনীর প্রধান অরারা সিংহের কাছে আত্মসমর্পণ করেন।

কাজলেন্দু পালের মুক্তিযোদ্ধা গেজেট নং: ০৫০১০৪০১৮১
মুক্তিবার্তা নং: ৯৫৫৪

এক নজরে তাঁর বাবা অশ্চিনী মোহন পালের পরিবারবর্গ:
স্ত্রী: সুভাষিণী বালা পাল
সন্তান: ছেলে ৬ জন মেয়ে ২ জন
অমিয় ভূষণ পাল (৬ ছেলে ২ মেয়ে)
স্ত্রী: প্রতিভাবোণী পাল
অজিত বন্ধু পাল (২ ছেলে ৩ মেয়ে)
স্ত্রী: রিনা বালা পাল
ফটিক চন্দ্র পাল (১ ছেলে ১ মেয়ে)
স্ত্রী: গৌড়ি রানি পাল
কৈল্যান ব্রত পাল (২ ছেলে ৩ মেয়ে)
স্ত্রী: অলি রানি পাল
মুক্তিযোদ্ধা কাননব্রত পাল (৫ ছেলে ২ মেয়ে)
স্ত্রী: বিভা রাণী পাল
কাজলেন্দু পাল (৪ ছেলে ১ মেয়ে)
স্ত্রী: মিঠুরাণী পাল
মেয়ে:
আশা রাণী পাল
স্বামী: মৃত নরেশচন্দ্র পাল
আনন্দ রাণী পাল
স্বামী: মৃত সুসেন্দ্র পাল


এক নজরে মুক্তিযোদ্ধা কাজলেন্দু পালের পরিবারবর্গ:

স্ত্রী: মিঠুরাণী পাল
সন্তান: ৪ ছেলে ১ মেয়ে
1. কৃপকময় পাল (২৬)
2. কুশল কুমার পাল (২৪)
3. রাজু কুমার পাল (২২)
4. জয়দ্রত পাল (১৭)
5. মেয়ে: উমা রাণী পাল (১৪)

যুদ্ধের বিভাগ:
যুদ্ধক্ষেত্রের সৈনিকরা তিনটি বিভাগে বিভক্ত হয়ে যুদ্ধ পরিচালনা করেছিল। যেমন:
1. এমএফ বাহিনী: আনছার, মোজাহিদ, পুলিশদের নিয়ে এই বাহিনী গঠিত।
2. এফএফ বাহিনী: ফ্রিডম ফাইটার বা মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে এই বাহিনী গঠিত।
3. বেঙ্গল রেজিমেন্ট: নিয়মিত ট্রেইনিংপ্রাপ্ত বাহিনী নিয়ে এই রেজিমেন্ট গঠিত।

যাপিত জীবন:
৫ সন্তানের মোটামুটি মাঝারি এক সংসার। নিজের ছেলেমেয়েদের এখনো কোন সরকারি চাকুরি ধরাতে পারেননি বলে অনেকটাই টানাপোড়েনের মধ্য দিয়ে তাদের সংসার চলে। কালিগঞ্জ বাজের কাজলেন্দুর ছোট্ট একটি মুদির দোকান আছে। সে দোকানের ওপর নির্ভর করেই তাদের পরিবার চলে।


বিয়ে:
কাজলেন্দু পাল ৩৫ বছর বয়সে বিয়ে করেন। কনে পাশ্ববর্তী আমলশিদ গ্রামের মিঠুরাণী পাল। কনের বয়স ছিল তখন ২৫ বছর। যতদূর জানা যায় স্ত্রীর শিক্ষার দৌরাত্ম্য ছিল প্রাইমারি পর্যন্ত।


শিক্ষা:
কাজলেন্দু পাল যুদ্ধের কারণে লেখাপড়ায় অনিয়মিত হয়ে পড়েন। তবুও ১৯৭২ সালে ইছামতি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করেন।

প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি:
তিনি মনে করেন তার সন্তানরা সরকারি কোন চাকরি পেলে সংসারের অভাব অনটন কিছুটা হলেও মিটবে। মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তার প্রত্যাশা- এই দেশে এখনো অনেক প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা রয়েছে যাদের নাম এখনো তালিকাভূক্ত হয়নি। সরকারের একটু সুদৃষ্টি হলে ঐসব বাদপড়া মুক্তিযোদ্ধারাও লিস্টের অন্তর্ভুক্ত হতে পারে। তাছাড়া সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষদের ওপর সরকারের আরও একটু কৃপাদৃষ্টি প্রত্যাশা করেন।




---------------
মুনশি আলিম
জাফলং, সিলেট
১৫.০৯.২০১৫- ১৮.০৯.২০১৫

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:২৮

রেসিমিক সিরামিক বলেছেন: ভাল লাগলো।

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৩৪

সৃষ্টিশীল আলিম বলেছেন: কেবলি ভালোবাসা

২| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:২৬

হামিদ আহসান বলেছেন: একটি মহৎ প্রচেষ্টা৷ অাশা করি চলতে থাকবে ....।

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৩৩

সৃষ্টিশীল আলিম বলেছেন: আমিও আশাবাদী বৃহত্তর সিলেটের সকল মুক্তিযোদ্ধাদের জীবনী ধীরে ধীরে তোলে আনতে পারবো।

আপনাকে ধন্যবাদ

৩| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:১৮

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: ভাল উদ্যোগ ।

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৩৩

সৃষ্টিশীল আলিম বলেছেন: ধন্যবাদ

৪| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:২৫

জেন রসি বলেছেন: ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৩৫

সৃষ্টিশীল আলিম বলেছেন: আপনার প্রতিও শুভ কামনা রইল।

৫| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ ভোর ৬:৪৭

শামছুল ইসলাম বলেছেন: প্রশংসনীয় উদ্যোগ।
ভাল পোষ্ট।

৬| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:০৪

সৈয়দ জায়েদ আহমদ বলেছেন: ভালো লাগলো

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.