নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নারী সকল যুগেই আলোচিত। প্রয়োজনের তাগিদে নারীর স্তুতি করতে পুরুষ যেমন পিছপা হয়নি, তেমনি প্রয়োজনের শেষে রাক্ষুসী বা কুলটা বলে আপাঙক্তেয় করে তুলতেও বিন্দুমাত্র কুন্ঠাবোধ করেনি। হুমায়ুন আজাদ নারীর সামগ্রিক রূপ বোঝাতে বলেন- কেউ নারী হয়ে জন্ম নেয় না, ক্রমশ নারী হয়ে ওঠে। পুরষের এক মহৎ প্রতিনিধি, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছেন,
‘শুধু বিধাতার সৃষ্টি নহ তুমি নারী!
পুরুষ গড়েছে তোরে সৌন্দর্য সঞ্চারি।’
... নারী সৃষ্টিতে তিনি বিধাতার সাথে পুরুষের ভাগ দাবি করেছেন; এবং অস্বীকার করেছেন নারীর সম্পূর্ণ বাস্তবতাকে ‘অর্ধেক মানবী তুমি অর্ধেক কল্পনা’ ব’লে। ( নারী ; ২০১০ : ১৯)
এটা অপ্রিয় সত্য যে, নারীদের আমরা এখনও কৌশলে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করি। এ চেষ্টা প্রাগৈতিহাসিক কাল থেকে বহমান। বৈষয়িক সম্পত্তিগুলোকে যেভাবে সংজ্ঞায়ন করি ‘আমার’ বলে তেমনি নারীদেরও বলি। সভ্যতার প্রভূত উন্নতি হওয়ার পর পুরুষের মন-মানসিকতার কিছুটা পরিবর্তন হলেও নারীরা এখনও পিছিয়ে।
নারী জাগরণের অগ্রদূত রোকেয়া। পুরুষেরা তাঁর ভক্ত। নারীরাও তাঁকে ভক্তি করে তুলেছেন বেগম রোকেয়া নামে, যদিও তাঁর নামে কখনো বেগম ছিলো না। তাঁর নাম ছিলো রোকেয়া বা রুকাইয়া খাতুন। বিয়ের পর নানা কারণে পশ্চিমা পুরুষতান্ত্রিক প্রথাও তিনি মেনে নেন। নিজের নামের সাথে যুক্ত করেন স্বামীর নাম। ফলে তার নতুন নামকরণ হলো-রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন!
হুমায়ুন আজাদ নিজে নারীবাদী। সৈয়দ শামসুল হকও। কিন্তু উভয়েই তাদের স্ত্রীদের নামের সাথে নিজের নাম যুক্ত করে তাদের নিজস্ব পরিচয়কেও খর্ব করে দিলেন!
আধুনিক পুরুষরাও সন্তান জন্মের পর তাদের নামের সাথে নিজেদের নাম জুড়ে দিচ্ছে অনায়াসে। বর্তমানে এটা প্রায় অনেকটা ট্রেড মার্কের মতো হয়ে উঠছে। পুরুষরা জ্ঞাত সারে কিংবা অজ্ঞাতসারে কিংবা গড্ডলিকা প্রবাহে গা ভাসিয়ে দিয়ে সিল মারার মতো ভাবী সন্তানদেরও সিলে মেরে দিচ্ছে; যেখানে নারী এখনও উপেক্ষিত!
নারীর পূর্ণ স্বাধীনতার জন্য নারীকেই আগে সচেতন হতে হবে। অন্যের স্বাধীনতা আনয়নের আগে নিজের স্বাধীনতা প্রয়োজন। তা যেমন পুরষের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য তেমনি নারীর ক্ষেত্রেও।
নারী দিবসে সকল নারীর প্রতিই রইলো শ্রদ্ধা।
০৮.০৩.২০১৭
মুনশি আলিম
সিলেট
©somewhere in net ltd.
১| ০৮ ই মার্চ, ২০১৭ দুপুর ১২:৩৯
আহা রুবন বলেছেন: নামের সঙ্গে পিতা বা স্বামীর নাম যুক্ত করা হয় মূলত পরিচিতির জন্য। সামাজিক বাস্তবতা এমনই যে সাধারণভাবে নারীর চেয়ে পিতা বা স্বামীর পরিচিতি বেশি থাকে। দিন বদল হলে রীতি্ও বদলে যাবে। অনেকেই আছে মাতার পদবী গ্রহণ করে - বিলওয়াল ভুট্টো জারদারি... আমি দু একজনকে চিনি যারা বিয়ের পর স্ত্রীর ধর্ম গ্রহণ করে তার পদবী ধারণ করেছে।