নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সাইবার অভিযাত্রী

যাদের হাতে দলীল প্রমাণ কম তারা গালি দেয় বেশি

সাইবার অভিযত্রী

সাইবার অভিযত্রী › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাংলাদেশের জনগণ বিপুল পরিমাণে অশিক্ষিত আর অর্ধশিক্ষিত বলেই হুমায়ূন আহমেদের এত প্রচণ্ড জনপ্রিয়তা : তসলিমা নাসরীন

২৭ শে নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:৫৭

বাংলাদেশের জনগণ যদি এত বিপুল পরিমাণে অশিক্ষিত আর অর্ধশিক্ষিত না হত, হুমায়ূন আহমেদের পক্ষে এত প্রচণ্ড জনপ্রিয়তা অর্জন করা সম্ভব হত না। বাংলার প্রকাশকরা, হুমায়ূনের বন্ধু সাহিত্যিক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, সমরেশ মজুমদাররা বছরের পর বছর প্রবল চেষ্টা করেও পাশের রাজ্য পশ্চিমবঙ্গে হুমায়ূন আহমেদকে জনপ্রিয় করে তুলতে পারেননি। এর কারণ সম্ভবত একটিই, ওই রাজ্যে শিক্ষিতের মানটা বাংলাদেশের চেয়ে তুলনায় সামান্য বেশি। বলেছেন তসলিমা নাসরীন । তিনি আরো বলেন :

অর্ধশিক্ষিত পাঠকদের জন্য পৃথিবীর সব দেশেই কিছু লেখক আছেন, তাঁরা জনপ্রিয় বই লেখেন। তাঁদের প্রায় সবারই মান হুমায়ূন আহমেদের চেয়ে অনেক ওপরে।





তসলিমার লেখাটিঃ...................



হুমায়ূন আহমেদের লেখা আমি পড়তাম আমার কিশোরী বয়সে। যখন থেকে আমি বাংলায় এবং অন্যান্য ভাষায় উন্নতমানের সাহিত্য পড়তে শুরু করেছি, হুমায়ূন আহমেদ পড়া আমার পক্ষে আর সম্ভব হয়নি, এবং যখন থেকে আমার ভালো নাটক দেখার রুচি বোধ গড়ে উঠলো, আমার পক্ষে সম্ভব হয়নি হুমায়ূন আহমেদের নাটক দেখা। কিন্তু কী করে লক্ষ লক্ষ মানুষ হুমায়ূন আহমেদের শত শত রম্য রচনা পড়ে গেছে যুগের পর যুগ? এর উত্তর হতে পারে, তারা রম্য রচনারই পাঠক, রম্য রচনা ছাড়া আর কোনও রচনার যোগ্য নয় তারা, অথবা পাঠক হিসেবে তাদের বিবর্তন ঘটেনি, অথবা অল্প শিক্ষিত বলে হুমায়ূন আহমদের বই আর নাটকের ছোটো ছোটো সুখ দুঃখ আর সহজ সরল কৌতুক বোঝা তাদের জন্য সুবিধে। বাংলাদেশের জনগণ যদি এত বিপুল পরিমাণে অশিক্ষিত আর অর্ধশিক্ষিত না হত, হুমায়ূন আহমেদের পক্ষে এত প্রচণ্ড জনপ্রিয়তা অর্জন করা সম্ভব হত না। বাংলার প্রকাশকরা, হুমায়ূনের বন্ধু সাহিত্যিক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, সমরেশ মজুমদাররা বছরের পর বছর প্রবল চেষ্টা করেও পাশের রাজ্য পশ্চিমবঙ্গে হুমায়ূন আহমেদকে জনপ্রিয় করে তুলতে পারেননি। এর কারণ সম্ভবত একটিই, ওই রাজ্যে শিক্ষিতের মানটা বাংলাদেশের চেয়ে তুলনায় সামান্য বেশি।



হুমায়ূন আহমেদের সঙ্গে আমার পরিচয় তিনি বেজায় রকম বিখ্যাত হওয়ার আগে। তার যে গুণটি আমার প্রথমেই চোখে পড়েছে, তা হল তিনি গল্প বলে ঘরোয়া আসর জমিয়ে রাখতে পারেন। অসাধারণ স্টোরি টেলার। একবার তিনি আমাদের ময়মনসিংহের বাড়িতে হঠাৎ চলে এলেন। বললেন, নেত্রকোণা গিয়েছিলেন, ঢাকায় ফেরার পথে ভাবলেন আমার সঙ্গে দেখা করে যাবেন। আমাদের বাড়িটা কল্পনা করে নিয়েছেন ব্রহ্মহ্মপুত্রের পাড়ে একটা লাল বাড়ি। সেই কল্পনার বাড়িটি তিনি খুঁজছিলেন, যত লাল বাড়ি আছে নদীর পাড়ে, দরজা ধাক্কিয়ে ওদের জিজ্ঞেস করেছেন, আমি আছি কি না। শেষে নাকি তার রিক্সাওয়ালাই নিয়ে এলো ঠিক বাড়িটিতে। সারাদিন ছিলেন হুমায়ূন আহমেদ। একাই গল্প বলে গেলেন, বাড়ির সবাই মুগ্ধ হয়ে হুমায়ূন আহমেদের গল্প শুনেছিল। আমার বিশ্বাস তিনি যদি সারারাতও ঠিক ওভাবে গল্প বলে যেতেন, সবাই মুগ্ধ হয়ে ওভাবেই শুনতো আর থেকে থেকে ঘর ফাটিয়ে হেসে উঠতো। হাসাতে জানতেন। অনেক গুণ ছিল হুমায়ূন আহমেদের। ইস্কুলের সিলেবাসের বাইরে কোনও বই পড়ার অভ্যেস যাদের নেই, লক্ষ লক্ষ সে সব সাধারণ মানুষকে তিনি তাঁর বই পড়িয়ে ছেড়েছেন। অনেকে আছে জীবনে একটিই গল্পের বই পড়েছে, গল্পের বইটি হুমায়ূন আহমেদের। এক সময় ভাবা হত, হুমায়ূন আহমেদ পাঠক তৈরি করেছেন। তাঁর বই পড়ে পড়ে পাঠকের বই পড়ার অভ্যেস গড়ে উঠবে, বোধোদয় হবে, রুচি পাল্টাবে, তখন আর হুমায়ূন আহমেদ না পড়ে অন্য লেখকের বই পড়বে। ভাবনাটি ভুল ছিল। হুমায়ূন আহমেদ পাঠক তৈরি করেছেন, তবে সেই পাঠককে জীবনভর নিজের বই পড়ার জন্যই তৈরি করেছেন, অন্য কারও বই পড়ার জন্য নয়। তাঁর পাঠককূল খুব কমই বিবর্তিত হয়েছে।



হুমায়ূন আহমেদের ‘নেই’-কে ‘নাই’ লেখাটা আমাকে বরাবরই বড় পীড়া দিয়েছে। জানি না পরে তিনি ‘নাই’ এবং আরও কিছু ভাষার দোষ কাটিয়ে উঠতে পেরেছিলেন কি না। অর্ধশিক্ষিত পাঠকদের জন্য পৃথিবীর সব দেশেই কিছু লেখক আছেন, তাঁরা জনপ্রিয় বই লেখেন। তাঁদের প্রায় সবারই মান হুমায়ূন আহমেদের চেয়ে অনেক ওপরে। স্টিফেন কিং, টেরি প্র্যাটচেট। বাংলা ভাষার লেখক ‘শংকর’-এর চটি বইয়ের মানের কথাই ধরা হোক না কেন। ভাষার তুলনা চলুক। শংকর অনেক ওপরে। ভাষায় দক্ষতা না থাকলে ভালো সাহিত্যিক হওয়া যায় না। ঘরের আসর মাতিয়ে রাখতে পারা, বা প্রকাশকের চাপে এক সপ্তাহে বা দু’রাত্তিরে একটা বই লিখে ফেলতে পারা বা তিন দশকে বইয়ের সংখ্যা তিনশ’র বেশি করে ফেলতে পারা মানেই বড় সাহিত্যিক হওয়া নয়। আজ অবশ্য অনেকে হুমায়ূন আহমেদকে ‘বাংলা সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ কথাসাহিত্যিক’ ইত্যাদি বলছেন। বাংলা ভাষা এবং এর সাহিত্য কে এই অপমানটি কি না করলেই নয়! ‘ম্যাজিক রিয়ালিজম’-এর কথাও উঠছে। আহ, ওরা যদি জানতো ম্যাজিক রিয়ালিজম ঠিক কাকে বলে!

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:০২

সাইবার অভিযত্রী বলেছেন: পুরাণ লেখা, পুরাণ পোষ্ট । কিন্তু একজন তসলিমা ভক্তের কথা দেখে মনে হল রিপোষ্টের প্রয়োজন এখনও আছে !


তাসলিমা নাসরিন আগে থেকেই বিখ্যাত। তার নাম হালের বিশ্বখ্যাত সব লেখকই জানেন। অরহান পামুক, সালমান রুশদী ভি এস নাইপল তারা সবাই তাসলিমা নাসরিনের নাম জানে।......


.. হুমায়ূন আহমেদকে বাংলা ভাষাভাষি ছাড়া কেউ চেনে না। কাজেই হুমায়ূনকে সমালোচনা করে তাসলিমা কেন আলোচিত হতে যাবে?

Click This Link পোষ্টের ৪ নং কমেন্ট -এ ।

২| ২৭ শে নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:১১

সাইবার অভিযত্রী বলেছেন: সাইবার অভিযাত্রীর ক্যাচাল সমগ্র ! ( এভারেষ্ট, ড: ইউনুস, তসলিমা, কোয়ান্টাম সহ বিষয় ভিত্তিক ডজন ডজন ক্যাচাল লিন্ক ) ২য় সংস্করণ

Click This Link

৩| ২৭ শে নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:২৪

বাগসবানি বলেছেন: তসলিমা নাসরিনের অনেক জ্ঞান আছে, জানতাম । কিন্তু উনার মনে হয় মার্কেটিং নলেজের সর্টেজ আছে । হুমায়ুন আহমেদের পাঠক সেগমেন্ট কোনটা সেটা না জেনে মন্তব্য করা একদমই ঠিক হয়নি । প্রথমত উনার টার্গেট ছিল বাংলাদেশ, ইন্ডিয়া বা বাকি বিশ্ব না । তাহলে তো উনি ইংরেজীতেই লিখলে পারতেন । আর দিত্বীয়ত্ব, উনি পিএইচডি ডিগ্রী প্রাপ্ত পাঠকের জন্যে রম্যরচনা লিখতেন না । তাহলে, আমাদের বাড়ির কাজের মেয়েরটার জন্যে ঔ গল্পগুলা অনুধাবন করা কষ্ট হয়ে যেত । তবে এতটুকু আশ্বাস যে, তসলিমা নাসরিন বিশ্বাস করেন যে হুমায়ুন আহমেদের অনেক গুণ আছে । খারাপ কি ? :D

২৭ শে নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:৫১

সাইবার অভিযত্রী বলেছেন: ভাই অনেক যৌক্তিক কথা বললেন, কিন্তু লেখিকা কি আপনার কথা অনুধাবন করতে সক্ষম হবেন ?

টুইটারে ওনাকে আপনার কথাগুলো বলে ডেখটে পারেন !

লেখিকা আরো ইন্তারেষ্টিং কিছু ডেলিভার করে ফেলটে পারেন !

৪| ২৭ শে নভেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:২৫

বাগসবানি বলেছেন: ভাই, আমি অনেক গৌণ মানুষ । আমার কথার দাম যদি শুধু আমি নিজেই দিই, তাতে আমি নিজেই ধন্য হয়ে যাই । আর সেলিব্রেটিরা কেন শুধু শুধু সবার কথার দাম দিতে যাবে । এগুলো ইথিক্সের ব্যাপার । বলে কয়ে কাউকে কিছু শিখানো যায় না । মানুষ হিসেবে বা ব্যক্তিগত জীবনে তসলিমা নাসরিন কেমন আমি জানি না । তেমনি হুমায়ুনের সেই বিতর্কিত দিকগুলোও নিয়েও মাতামাতি করার কিছু দেখি না । আমাদের টিভিচ্যানেলগুলাতে ৭-৮ বছর যাবৎ লেবুকচলানি টকশো চালু হইছে, লোকজন ঘন্টার পর ঘন্টা সেটার দিকে তাকায় কি বুঝার চেষ্টা করে, তাও আমার বোধগম্য না । তর্ক করলেই বিতর্ক হবে ।

২৭ শে নভেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৩২

সাইবার অভিযত্রী বলেছেন: হুম, আমি আবার ক্যাচাল ব্যাপারী । ক্যাচাল ভাল পাই, এইখানের ক্যাচাল সেইখানে, সেখানেরটা এি খানে এইভাবে কপি পেষ্ট মাইরা ব্লগ দিয়া ইন্তারনেট চালাই :D :D

৫| ২৭ শে নভেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫১

অকপট পোলা বলেছেন: চালুনী বলে, সূচ তোর পাছায় ফুটো!

তসলিমা না জানি কতো বড়ো লেখিকা! সে তো শ্রেফ চটি লিখেই আলোচনায় এসেছে! তার পুঁতিময় লিখায় সাহিত্য মান কি আছে?! হুমায়ুন যা মন তাই হোক, তসলিমার সমালোচনা করার যোগ্যতা হয় নাই। আর কিছু না হোক হুমায়ুনের গল্প বলে মুগ্ধ করার ক্ষমতা অন্তত: ছিলো।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.