নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর রবি

নূর রবি

নূর রবি

সাধাসিধা মানুষ।একজন প্রকৌশলের ছাত্র।রুয়েটে পড়ি তড়িৎকোশল নিয়ে।ব্লগে এত অসাধারন সব মানষ,তাদের অসাধারন চিন্তা চেতনা আমাকে মুগ্ধ করছে প্রতিনিয়ত।মনের উৎকর্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যম যেন।মায়ায় জড়িয়ে গেছি ইতোমধ্যে

নূর রবি › বিস্তারিত পোস্টঃ

দুর্লভ সুখ

২২ শে মে, ২০১৩ সকাল ১১:১৭

দুপুর বেলা রিক্সার সিটে বসে সিগারেট খাচ্ছে মকবুল,লাল শেখ সিগারেট।ভীষণ রোদ আজ,হিপহপ মার্কা এক ছেলে এসে বলল,

-মামা,নিউমার্কেট যাবা?



ছেলেটার আগাগোড়া চোখ বুলিয়ে নিল মকবুল,যা দেখল তার সারমর্ম অনেকটা এরকমঃ

"ছেঁড়া ফাটা জিন্সের প্যান্ট,হাবিজাবি কঙ্কাল আঁকা টি শার্ট,হাতে চুড়ির মত কি যেন পরা,গলায় মালা,কানে এয়ারফোন,দুই সেকেন্ডে পর পর একবার করে মাথে ঝাকাচ্ছে সে,স্টাইল আছে ছেলের,বড়লোকের পোলা বোঝা যায়।"



মকবুল কিছু একটা ভাবছে এমন ভঙ্গি করে যেতে রাজী হলো,যা ভাড়া তার চেয়ে বিশ টাকা বেশি চাইলো সে।ছেলেটা কোন কথা না বলে রিক্সায় উঠে পরলো।মকবুল রিক্সা চালাচ্ছে,পিছনে বসা ছেলেটা একটু পর সিগারেট ধরালো,কেমন যেন মিস্টি একটা ঘ্রাণ সিগারেটের,নরমাল সিগারেটের মত না ঘ্রাণটা।মকবুল কি মনে করে ছেলেটাকে সিগারেটের নাম জিজ্ঞেস করলো,ছেলেটা নাম বললো 'গুদাং গারাম'।

মকবুল আরও জানল যে বিদেশী সিগারেট হলেও এটা বাংলাদেশের সিগারেটের দোকানেই পাওয়া যায়,একটা সিগারেটের দাম বিশ টাকা।বিশ টাকা শুনে মকবুলের কোমড়টা মোঁচড় দিয়ে উঠলো।তবুও মনে মনে সিদ্ধান্ত নিল ভাড়ার এই বাড়তি বিশ টাকা দিয়ে আজকে একটা গুদাম গারাম সিগারেট খাবে সে।



রাতে বাসায় ফেরার পথে মকবুল বিদেশী সিগারেট পাওয়া যায় এমন দোকানে গেল,সারাদিন জপ করে করে অনেক কষ্টে সে নামটা মনে রেখেছে।দোকানের সামনে গিয়ে গুদাং গারাম এর বদলে সে তার লাল শেখ সিগারেটের কথাই বলে ফেললো।কারন,

গুদাং গারাম চাওয়ার মাত্র তিন সেকেন্ড আগে তার চোখের সামনে তার বউ রহিমার আইসক্রিম খাওয়ার দৃশ্য ভেসে উঠেছিলো!তখনি সে সিদ্ধান্ত বদলে ফেললো যে, এই বিশ টাকা দিয়ে সে রহিমার জন্য আইসক্রিম কিনবে।অনেকদিন হয়েছে রহিমাকে সে আইসক্রিম কিনে দেয়নি।রহিমা আইসক্রিম অনেক পছন্দ করে।



আইসক্রিম নিলে এদিক থেকেই নিতে হবে, সামনে আর আইসক্রিমের দোকান নেই।বউয়ের জন্য সে কাপ আইসক্রিম কিনলো,তারপর জোরে জোরে প্যাডেল মেরে দশ মিনিটের রাস্তা পাঁচ মিনিটে পারি দিয়ে বাসায় আসলো। রহিমা রান্নাঘরে ছিল,মকবুলকে দেখেই প্লাস্টিকের গ্লাসে করে পানি নিয়ে আসলো সে।

মকবুল আইসক্রিম টা রহিমার হাতে দিল,আইসক্রিম পেয়ে রহিমার চোখে প্রচণ্ড খুশির এক ঝলক দেখা গেলো, সেটা দেখে মকবুলের সারাদিনের ক্লান্তিটা হটাত যেন হাওয়ায় মিলিয়ে গেলো।



কিন্তু আইসক্রিম যে ততক্ষণে গলে গেছে! এটা দেখেও রহিমার যেন কোন ভাবান্তর নেই, সে গলে যাওয়া আইসক্রিম কাপ থেকে চা খাওয়ার মত চুমুক দিয়েই খেতে লাগলো।একটু খেয়েই মকবুলকে খাওয়াতে চাইল সে,কিন্তু মকবুল খেতে চাইলো না,কিন্তু রহিমা তাকে জোর করেই আইসক্রিম খাওইয়িয়ে ছাড়ল

কিছুক্ষণের মধ্যেই শুরু হল ঝুম বৃষ্টি, কিন্তু ওরা কেউ ঘরে গেলো না।সামান্য কিন্তু অতি দুর্লভ এই আনন্দে বৃষ্টির জল ও তাদের চোখের জল মিশে গেল যেন।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে মে, ২০১৩ রাত ৯:৫৮

মহামহোপাধ্যায় বলেছেন: দারুণ লিখেছেন। লিখে যান। হ্যাপি ব্লগিং :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.