![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মুসলমান হিসেবে এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে,আমরা শব-ই-ক্বদর বা শব-ই- বরাত এর রাত যতটা গুরুত্ত সহকারে পালন করি,ঈদের রাত ততটা গুরুত্ব সহকারে পালন করি না। অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটা রাত আমরা হেলায় কাটিয়ে দেই।
ঈদ মানে খুশি, আনন্দ। ঈদ আমাদের মাঝে যেমন আনন্দের বারতা নিয়ে আসে, তেমনি নিয়ে আসে আল্লাহর নৈকট্যলাভের মহাসুযোগ। বিশেষত ঈদের রাত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং ফজিলতমণ্ডিত। তাই ঈদের রাতে জেগে থাকা এবং ইবাদত করার গুরুত্ব, মাহাত্ম্য এবং ফজিলত বহু হাদিসেই বর্ণিত হয়েছে।
হযরত আবু উমামা [রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু] হতে বর্ণিত, নবী করিম [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেন, “যে ব্যক্তি দুই ঈদের রাত জাগবে শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য, যেদিন [হাশরের দিন] সবার অন্তর মারা যাবে, সেদিন তার অন্তর মরবে না”।
>>>হাদিসের মর্মার্থ তো এই, কেয়ামতে ভয়াবহ তাণ্ডবের সময় প্রতিটি মানুষের অন্তর যখন হাশরের ময়দানে ভয় আশঙ্কা অস্থিরতায় মৃতপ্রায় হয়ে থাকবে। মানুষের হুশ-জ্ঞান বলতে থাকবে না কিছু। ঈদের রাতে আমলকারীর হৃদয় তখনও সজীব ও সতেজ থাকবে। সেদিন তার অন্তর মারা পড়বে না। বরং থাকবে সদা প্রফুল্ল।
‘হযরত মুআজ ইবনে জাবাল [রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু] হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেন, “যে ব্যক্তি পাঁচ রাত জেগে থাকবে তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব। পাঁচটি রাত হলো—
এক. জিলহ্বজ মাসের আট তারিখের রাত।
দুই. জিলহ্বজের ৯ তারিখের রাত।
তিন. ঈদুল আযহার রাত।
চার. ঈদুল ফিতরের রাত।
পাঁচ. ১৫ই শাবানের রাত”।
ঈদের রাতের আরেকটি বড় প্রাপ্তি হলো, এ রাতে দোয়া কবুল করা হয়। কোনো দোয়া ফিরিয়ে দেয়া হয় না। বরং আল্লাহ তায়ালার দরবারে তা সরাসরি কবুল হয়। তাই আমরা আমাদের ইবাদতের সঙ্গে সঙ্গে ঈদের রাতে আল্লাহ তায়ালার কাছে আমাদের প্রয়োজনগুলো চাইতে পারি। আল্লাহ তায়ালার কাছে ক্ষমা কামনা, কবরের আজাব থেকে মুক্তি, জাহান্নামের আগুন থেকে রেহাই চেয়ে নিয়ে পরদিন সকালে একেবারে নিষ্পাপ মাসুম বাচ্ছার মতো পবিত্র ঈদের মাঠে আল্লাহর পুরস্কার গ্রহণ এবং প্রতিদান লাভের শ্রেষ্ঠ সুযোগ অন্য কোনো রাতে আছে কি? নেই। সুতরাং এই দুনিয়ার যাবতীয় কল্যাণ লাভ এবং মঙ্গল কামনা করা সেই সঙ্গে কামনা করে জাহান্নাম থেকে মুক্তি লাভের এই তো মহাসুযোগ!
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, পাঁচ রাতে নিশ্চিতভাবে দোয়া কবুল হয়-
এক. রজব মাসের পহেলা রাত,
দুই. বরাতের রাত,
তিন. ক্বদরের রাত,
চার. ঈদুল ফিতরের রাত
পাঁচ. ঈদুল আযহার রাত।
মুজাদ্দিদে আযম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী ,তিনি হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার ক্বওল শরীফ উল্লেখ করে বলেন, একদা ঈদুল ফিতরের দিনে হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হযরত উমর ফারুক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার নিকট গেলেন। গিয়ে দেখলেন, ঘরের দরজা বন্ধ করে তিনি কাঁদছেন। হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি আরজ করলেন, হে আমীরুল মুমিনীন! আপনি কাঁদছেন অথচ লোকেরা ঈদের আনন্দে মুখর! হযরত উমর ফারুক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বললেন, “আনন্দে মুখর ব্যক্তিরা যদি জানতো, তাহলে তারা আনন্দ-উৎসব করতো না। অতঃপর পুনরায় তিনি কাঁদতে কাঁদতে বললেন, তাদের আমল যদি কবুল হয়ে থাকে তবে তারা আনন্দ করুক। আর যদি কবুল না হয়ে থাকে তথা বর্জিত হয়ে থাকে তবে তারা কাঁদুক। কিন্তু আমি জানি না, আমার আমল কবুলের পর্যায়ভুক্ত না বর্জিতের অন্তর্ভুক্ত।”
‘হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর [রাজিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু] থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এমন পাঁচটি রাত আছে, যে রাতে কোনো দোয়া ফিরিয়ে দেয়া হয় না। রাতগুলো হলো—
এক. জুমার রাত। দুই. রজব মাসের প্রথম রাত। তিন. শাবান মাসের ১৫ তারিখের রাত। চার. ঈদুল ফিতরের রাত। পাঁচ. ঈদুল আজহার রাত।
পটকা ফুটানো, আতশবাজি করা, হৈ-হুল্লোড় আর দাপাদাপিতে পার করে দেই আমাদের ঈদের রাত। অনেকে সারা রাত মার্কেটিং করে শেষ করি। কিন্তু একবারও আল্লাহর ইবাদতের কথা মনে করি না। একজন মুসলমানের এমনটি কখনও কাম্য হতে পারে না। আসুন! আমরা ফটকাবাজিতে কিংবা ঈদ-মার্কেটে নয় বরং সুন্দর, মার্জিত ও শালীন উল্লাসের সঙ্গে সঙ্গে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য ইবাদত করে ঈদের রাতটা পার করি।
Click This Link
আল্লাহতা’লা আমাদেরকে ঈদের রাতে ইবাদত করার তওফিক দান করুন।
আমিন।
©somewhere in net ltd.
১|
১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:৩৩
শামীম জিপসী বলেছেন: ঈদের রাত আসলেই গুরুত্বপুর্ন রাত। এই রাতে সবার ইবাদত করা উচিত। আল্লাহ আমাদের হেদায়েত দান করুন।