নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি ক্যাপিটেল পালিসমেন্টের বিরুদ্ধে ।মানবতা মানুষের পরিচয় ।।জনগণের বাণীই ঈশ্বরের বাণী । প্রকৃতির সবচে বড় ভুল মানুষ সৃষ্টি । পৃথিবীতে যত অধিকারের আন্দোলন হয়েছে তাতে কিন্তু মানুষকে মানুষ বানাবার আন্দোলন ক্কখোনও হয়নি ৷• বিজ্ঞানে ঈশ্বর নেই । কিন্তু সৃষ্টি আছে •O lf there is no god , create one , সাহিত্য পত্রিকা ※ http://nkkh10.blogspot.com
।। লজ্জা ।। অনুগল্প ।।
সেদিন দুপুর বেলা রোহিত শেষ গানটা গেয়েছিল , “ আমার মুক্তি আলয়....”
রোহিত আজ বৃষ্টির মত ঝড়ে পড়ছে । গানের অর্থ রোহিতের চোখ ধুয়ে দিচ্ছে । বুকের মধ্যে আদর মাখা বিরামহীন সুরের শব্দগুলো নগ্ন বুক কে ভিজিয়ে দিচ্ছে । রোহিত বুঝতে পারল । দেশ বদলে গেলে কষ্টও বদলে যায় । আজ রোহিতের দেশ ত্যাগের বিদয়ি জন্মদিন পঁচিশতম বছর । রোহিত আজ সারাদিন একা একটা ঘরে বসে বসে গান গাইবেন । নিজের চোখের জল কে আড়াল করতে ।
তখন একাত্তরের যুদ্ধ চলছিল । রোহিতের বয়স তখন পাঁচ । পথের মাঝে পাকিস্তানি সৈন্যদের গাড়ি দেখে । রোহিতরা ঝোপের মধ্যে লুকিয়ে গিয়েছিল । আর কিছু লোক বাঁচার জন্য দৌড়াচ্ছিল । কোথা থেকে একটা গুলি এসে রোহিতের দু’পায়ের এফোড়-ওফোড় হয়ে যায় । তারপর থেকে রোহিত প্রতিবন্ধী ।
রোহিত 1993 সালে নিজ জন্মভূমি ছেড়ে প্রতিবেশি দেশে চলে আসে । তার আগের বছরে বাবরিমসজিদ নিয়ে তার জন্মভূমিতে সাম্প্রদায়িক তান্ডব হয়ে যায় । বেশ কিছুদিন জুড়েই তান্ডবটা চলেছিল । যদিও রোহিতদের শহরে তেমন কিছু হয়নি সে বার। যদি হতো তবে রোহিতের কি হতো কে জানে । রোহিতের এক মুসলিম বন্ধু অবশ্য বলেছিল , “ কিছু হলে আমার বাড়িতে চলে আসিস্ ।” রোহিত এই পালিয়ে বাঁচাকে মেনে নিতে পারে নি । তাই কিছু হতে পারে ভেবেও রোহিত বাড়ি ছেড়ে কারু বাড়িতে আশ্রয় নেয় নি । সে যাত্রায় অবশ্য কিছু হয় না । তবুও বেশ কিছুদিন একটা মানসিক ভয়ের মধ্যে কাটাতে হয়েছিল ।
রোহিত ঘরে বসে বসে রেওয়াজ করছিল । এটা রোহিতের প্রতিদিনের নিয়ম । তখন বিকেল পড়ন্ত বেলা । হঠাৎ দরজার শব্দে রোহিতের সুর থেমে যায় । দরজায় তাকাতেই বাবাকে দেখতে পায় । রোহিতের বাবা পাশের চেয়ারে বসে রোহিতের দিকে তাকায় । রোহিত তরল সুরে বলে ,“ কি ব্যপার , কিছু বলবে ?”
কথাটা শেষ করে বাবার মুখের তাকিয়ে । তারপর গানের খাতাটা বন্ধ করে ।
এ দিকে রোহিতের বাবা চাপা কন্ঠে রোহিতকে বললো , “ হুম । তোর সাথে কিছু কথা আছে ।
রোহিত বাবার দিকে তাকিয়ে বলল ,“ বলো ...”
রোহিতের বাবা ক্ষেদযুক্ত গলায় বলল,“ রোহিত এদেশে আর থাকব না ?”
রোহিত চমকে উঠে । বাবার চোখের দিকে গোলগোল করে তাকিয়ে বললো ,“ কোথায় যাবে ? কেনো কি হয়েছে । হঠাৎ এসব বলছো ?”
-“ ভারতে চলে যাব ।” কথাটা বলে বড়ো করে একটা দীর্ঘ শ্বাস নিলো রোহিতের বাবা ।
রোহিত বাবার মুখের দিকে তাকিয়ে বললো , “ কেনো ?”
-“ আমাদের শহরে যদি কখনও জাতিগত দাঙ্গা হয় । তবে আমরা তোকে বাঁচাতে পারব না । তাই আমি ভেবেছি এদেশে আর থাকব না ।”
রোহিত আর কিছু বলতে পারে নি । কয়েক দিন আগের ঘটনায় রোহিত ভীত । জন্মভূমিতে এই অনিশ্চিত জীবনকে রোহিত মেনে নিতে পারে না । স্বাধীন দেশ । তবে কেনো পরাধীনতার গ্লানি পায়ে পায়ে চলবে ! কেনো নাগরিক অধিকার নিয়েবাঁচা যাবে না ! কেনো এক বিশেষ জাতিকে টার্গেট করা হবে অন্যায় ভাবে ! তাই রোহিত বাবাকে “ না ” বলতে পারে নি ।
রোহিত জানত না । কিভাবে এত বড়ো সত্যকে সহজেই মেনে নিতে হয় । বাবরি মসজিদকে কেন্দ্র করে তার জন্মভূমি বাংলাদেশ ক্ষেপেছিল । রোহিত হিসেব মিলাতে পারে নি । কেনো এই তান্ডব হয়েছিল । বাবরি মসজিদ তো ছিল ভারতের ব্যপার । তবে.....কেনো রোহিতের জীবনকে অনিরাপদ করেছিল ? হিসেব নেই । উত্তর নেই । এই সব সহজ সরল প্রশ্নের । তবুও উত্তর খোঁজে রোহিত ।
আজ রোহিতের দেশ ত্যাগের বিদায়ি জন্মদিন ছিল । এই দিনে রোহিত সারা দিন মুক্তির গান গায় । শিকল ভাঙ্গার গান গায় । সব শেষে চোখের অশ্রু দিয়ে বিদায়ি জন্মদিনের সমাপ্তি টানে ।
২| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:৪৭
সামিয়া বলেছেন: ভালো লিখেছেন, তবে মনে হচ্ছিলো আত্ম স্মৃতিকথন। তাই কি দাদা??
৩| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৪:৩৩
রাতু০১ বলেছেন: ধর্মের নামে অনেক সর্বনাশ হয়েছে। ধর্মকে সম্পত্তি করে সাম্প্রদায়িক হিংসাকে উস্কে দিয়ে গোটা ভারত-বর্ষকে লণ্ড-ভণ্ড করে দেওয়া হয়েছে। আর এটা চলতেই থাকবে। শুভকামনা আপনার জন্য।
৪| ১৪ ই অক্টোবর, ২০১৭ সকাল ৯:০০
অভিজিৎ দাস বলেছেন: মন ছুঁয়ে গেল শেষটায় । খুব ভালো ।
©somewhere in net ltd.
১| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:২০
বিলিয়ার রহমান বলেছেন: কবিদের গল্পও কিছুটা কাব্যিকই হয়ে যায়।