![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বিচারপতি নিয়োগ এবং অপসারণ উভয় পদ্বতি মোটামূটি এখন ৭২ এর সংবিধান মোতাবেকই হয়। নিয়োগ পদ্বতি আগে থেকেই ৭২ এর সংবিধান মত হলেও অপসারন পদ্বতি সম্প্রতি ষোড়শ সংশোধনির মাধ্যমে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল বাতিলের মাধ্যমে ৭২ এর সংবিধানে ফিরে গেছে। এবং এই সংক্রান্ত বিধান অনুচ্ছেদ ৯৫ ও ৯৬ দ্রস্টব্য। আমাদের দেশে সুপ্রিম কোর্ট এ কোন বিচারপতি নিয়োগ হলেই মোটামূটি তা আপামর জনসাধারণ এর আগ্রহের একটা বিষয়ে পরিনত হয়। অনেকে আবার বিষয়টি নেতিবাচক মনে করে। এইটাও ঠিক যে আমাদের সংবিধানে মোট ১৫৩ টি অনুচ্ছেদ থাকলেও কেন জানি বিচারপতি নিয়োগ সংক্রান্ত বিধান সম্বলিত অনুচ্ছেদ ৯৫ টিই শুরু হয়েছে নেতি বাচক ভাবে যদিও আর কোন অনুচ্ছেদ নেতিবাচক ভাবে শুরু হয়নি। সাধারনত আইনে যখন কোন পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোন যোগ্যতার শর্ত আরোপ করা হয় এবং তা যদি নেতিবাচক বা অযোগ্যতা দিয়ে শুরু হয় তবে যোগ্যতা বিষয়টির উপর বেশী গুরুত্ব আরোপ করা হয়। ঠিক এই ৯৫ অনুচ্ছেদেও আসলে বলা হয়েছে কে বা কারা বিচারপতি হতে পারবেন না। বাং গালী জাতি এতটাই পজিটিভ, এর থেকেই বুঝে নিয়েছে কে বা কারা বিচারপতি হওয়ার যোগ্য। আমরা সবাই জানি বিচারপতি হতে গেলে কি যোগ্যতা লাগে। সুপ্রিম কোর্ট এর উকিল হলে ১০ বছরের ওকালতির অভিজ্ঞতা লাগবে যদিও তার প্রাকটিস হচ্ছে বাস্তব অভিজ্ঞতা না থাকলেও চলবে কাগুজে অভিজ্ঞতাই অতীতে নিয়োগকত অনেক বিচারপতিরই এক মাত্র ভরসা। ২য়ত: জুডিশিয়ারির কেউ হলে বা বিচারবিভাগীয় পদের অধিকারী ব্যাক্তি হলে তারও লাগবে ১০ বছরের উক্ত বিভাগে চাকরির অভিজ্ঞতা যদিও কোন বিচারপতি জেলাজজ না হয়ে সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি নিয়োগ পান নাই এবং এতে একজন বিচারিক কর্মকর্তার বিচারপতি হতে গেলে ন্যুনতম ২০- ২৫ বছর লেগে যায়। এই পর্যন্ত অতিতে নিয়োগপ্রাপ্ত যত বিচারপতিদের কথা বলেছি তারা সবাই আগে হয় সুপ্রিম কোর্ট এর উকিল ছিলেন অথবা নিম্ন আদালতের বিচারক ছিলেন। কিন্তু একটা জিনিস কি কেউ কখনো ভেবেছেন কিনা জানিনা বা খেয়াল করেছেন কিনা জানিনা? আমাদের সংবিধানের দোহাই দিয়ে এমনও বিচারপতি হয়তো ভবিষ্যতে আসতে পারে যাদের আগের ওই দুইটা গুনের কোনটাই নাই অর্থাৎ আইন জগতের কেউ না হয়েও বিচারপতি বনে যেতে পারেন। তখন আশ্চর্য হওয়ার কিছু থাকবেনা এবং তা হবে নিতান্তই সংবিধানসম্মত।
এইবার আপনাদের দেখার সুবিধার্থে আমাদের সংবিধানের ৯৫ অনুচ্ছেদটি হুবহু তুলে ধরা হলঃ
৯৫। (১) প্রধান বিচারপতি রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিযুক্ত হইবেন এবং প্রধান বিচারপতির সহিত পরামর্শ করিয়া রাষ্ট্রপতি অন্যান্য বিচারককে নিয়োগদান করিবেন।
(২) কোন ব্যক্তি বাংলাদেশের নাগরিক না হইলে, এবং
(ক) সুপ্রীম কোর্টে অন্যূন দশ বৎসরকাল এ্যাডভোকেট না থাকিয়া থাকিলে; অথবা
(খ) বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় সীমানার মধ্যে অন্যূন দশ বৎসর কোন বিচার বিভাগীয় পদে অধিষ্ঠান না করিয়া থাকিলে; অথবা
(গ) সুপ্রীমকোর্টের বিচারক পদে নিয়োগলাভের জন্য আইনের দ্বারা নির্ধারিত যোগ্যতা না থাকিয়া থাকিলে ;
তিনি বিচারকপদে নিয়োগ লাভের যোগ্য হইবেন না।
এইটাও সম্ভব একেবারে আমাদের সংবিধান মতেই সম্ভব যদি আপনারা একটু মনযোগ দিয়ে সংবিধানের ৯৫(২)(গ) অনুচ্ছেদটি দেখেন তাইলেই বুঝতে পারবেন। কোন ব্যাক্তি বাংলাদেশের নাগরিক হইলে এবং অনুচ্ছেদ ৯৫(২) এর (ক) (খ) এবং (গ) এর যেকোন একটি যোগ্যতা থাকলেই বিচারপতি হতে পারবেন। এখন সরকার যদি বিচারপতি হওয়ার জন্য সংবিধানের ৯৫ অনুচ্ছেদের ২ (ক) ও ২(খ) এর বাইরে গিয়ে আলাদা কোন যোগ্যতা ঘোষনা করে আইন করে এবং সেই খানে যদি নিজেদের ইচ্ছা মত যে কাউকেই বিচারপতি হওয়ার যোগ্য বলে ঘোষনা করা হয় ওই আইনগত যোগ্যতা অনুচ্ছেদ ৯৫(২) এর (ক) এবং (খ) এর বিকল্প হিসাবে কাজ করবে এবং উক্ত অবাঞ্চিত ব্যাক্তি টি সংবিধান সম্বত ভাবেই বিচারপতি হবার যোগ্য হইবেন। কারন বিচারপতি হওয়ার যোগ্যতা হচ্ছে প্রথমত বাংলাদেশের নাগরিক হওয়ার আবশ্যিকতা তার সাথে অবশ্যই অনুচ্ছেদ ৯৫(২) এর (ক) অথবা (খ) অথবা (গ) এই তিনটার মধ্যে একটা যোগ্যতা পুরন করতে হবে। কারন এইখানে (ক) এর বিকল্প (খ) অথবা এই দুইটারই বিকল্প (গ) এবং এই তিনটা যোগ্যতাকে আলাদা করা হয়েছে মাঝখানে “অথবা” দিয়ে তাই এইখানে একটির বিকল্প আরেকটি বা তৃতীয়টি।
©somewhere in net ltd.