নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি চিন্তা, চেতনা, মনন, বিশ্বাস ও প্রকাশে একজন মুসলমান।

ডেণ্টিস্ট সাইফ

আমি পেশায় ডেন্টিস্ট, হিজামা থেরাপিস্ট ও ইসলামের দায়ী।

ডেণ্টিস্ট সাইফ › বিস্তারিত পোস্টঃ

হিজামা বা শিঙ্গা বা Cupping Therapy: নতুন রূপে সুন্নাহ চিকিৎসা

৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:৩৭

হিজামা (Cupping) কি?

হিজামা শব্দটি আরবি হাজামা বা হাজ্জামা ক্রিয়া থেকে এসেছে যার অর্থ হচ্ছে কমিয়ে ফেলা, আসল আকারে ফিরিয়ে নেয়া, বা আকারে ছোট করে ফেলা ইত্যাদি।
আরবিতে তারা বলে যে এক লোক সমস্যাটা ছোট করে ফেলেছে- এর অর্থ হচ্ছে “সে সমস্যাটা আগে অবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে গেছে।”
আরও একটা ভার্ব বা ক্রিয়া আছে “আহজামা” যার মানে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পিছিয়ে আসা বা অস্ত্র সংবরণ করা।
তার মানে, যে হিজামা করে (অর্থাৎ হাজ্জাম) সে রোগকে বাধা দেয় বা সংবরণ করে রোগীকে আক্রান্ত করা থেকে।
আমাদের শরীরে প্রতিনিয়ত মেটাবলিক বাই-প্রোডাক্ট তৈরি হচ্ছে। রোগ-জীবাণুর আক্রমণে বা ব্যাবহার এর কারণে বিভিন্ন রক্তকণিকা ও টিস্যুর ক্ষতিসাধন হচ্ছে। মানুষের বয়স যত বাড়তে থাকে মানুষের শরীরের বিভিন্ন স্থানে মাসল ও টিস্যুর মধ্যে এই মেটাবলিক বাই প্রোডাক্ট ট্র্যাপ হচ্ছে। এর একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ হচ্ছে আমরা যদি জোরে হাটতে বা দৌড়াতে থাকি তবে কিছুক্ষণের মধ্যেই আমাদের পায়ে ব্যাথা শুরু হয়ে যায়। এর কারন হচ্ছে মেটাবলিক বাইপ্রোডাক্ট আমাদের মাসলে জমা হয়ে নার্ভ এন্ডিং গুলোর পেইন রিসেপ্টরে স্টিমুলেশান দেয়। আবার কিছুক্ষণ রেস্ট নিলে এই পেইন কমে যায়, কারন বাই প্রোডাক্টগুলোকে ব্লাড ফ্লো করে ডাইলিউট করে দেয় এবং কিডনি বা লিভার বা
ঘর্মগ্রন্থি তাদের নিজস্ব প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এগুলোকে পুনরায় ব্যাবহার্য্য করে অথবা সেটা সম্ভব না হলে শরীর থেকে বের করে দেয়।
আমাদের শরীরে ছোট ছোট রক্তনালী (ক্যাপিলারি ও ভেনিউলস) ও নার্ভ (নিউরন) জালিকার মত বিছিয়ে রয়েছে। বিভিন্ন জীবাণুর আক্রমণে বা বিভিন্ন শরীরবৃত্ত্বীয় প্রকৃয়ায় আমাদের রক্তকণিকা ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এগুলো অনেক ক্ষেত্রেই এইসব ছোট ছোট রক্তনালীতে ট্র্যাপ হয়ে পড়ে এবং রক্ত প্রবাহে বাঁধার সৃষ্টি করে।
আরও পড়ুন: http://hijama.com.bd/what-is-hijama/

হযরত আবু হুরাইরা রদিয়াল্লহু আনহু থেকে বর্ণিত : রসূলুল্লাহ সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “জিবরীল আমাকে জানিয়েছেন যে, মানুষ চিকিৎসার জন্য যতসব উপায় অবলম্বন করে, তম্মধ্যে হিজামাই হল সর্বোত্তম।” আল-হাকিম, হাদীছ নম্বর : ৭৪৭০

হিজামার পদ্ধতি

হিজামাতে শরীরের নির্দিষ্ট কিছু অংশ থেকে মেশিনের সাহায্যে রক্ত চুষে নেওয়া হয়। উল্লেখ্য, হিজামায় আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা উত্তম এবং প্রত্যেকের চিকিৎসায় ভিন্ন ভিন্ন সরঞ্জাম ব্যবহার করা উচিত যাতে, রক্তজীবাণুর মাধ্যমে রোগ সংক্রমিত হতে না পারে।



হিজামার ব্যাপারে বর্ণিত কতিপয় হাদীছ শরীফ

হযরত আনাস রদিয়াল্লহু আনহু থেকে বর্ণিত : রসূলুল্লাহ সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “কেউ হিজামা করতে চাইলে সে যেন আরবী মাসের ১৭, ১৯ কিংবা ২১ তম দিনকে নির্বাচিত করে। রক্তচাপের কারণে যেন তোমাদের কারো মৃত্যু না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখবে (হিজামা)।” সুনানে ইবনে মাজা, হাদীছ নম্বর : ৩৪৮৬

হযরত আনাস রদিয়াল্লহু আনহু থেকে বর্ণিত : রসূলুল্লাহ সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “আমি মেরাজের রাতে যাদের মাঝখান দিয়ে গিয়েছি, তাদের সবাই আমাকে বলেছে, হে মুহাম্মদ, আপনি আপনার উম্মতকে হিজামার আদেশ করবেন।” সুনানে তিরমিযী হাদীছ নম্বর : ২০৫৩

হযরত আনাস রদিয়াল্লহু আনহু থেকে বর্ণিত : রসূলুল্লাহ সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “গরম বৃদ্ধি পেলে হিজামার সাহায্য নাও। কারণ, কারো রক্তচাপ বৃদ্ধি পেলে তার মৃত্যু হতে পারে।” আল-হাকিম, হাদীছ নম্বর : ৭৪৮২



হযরত জাবির রদিয়াল্লহু আনহু থেকে বর্ণিত : রসূলুল্লাহ সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “নিশ্চয় হিজামায় শেফা রয়েছে।” ছহীহ মুসলিম, হাদীছ নম্বর : ২২০৫হযরত আবদুল্লাহ বিন উমর রদিয়াল্লহু আনহু থেকে বর্ণিত : রসূলুল্লাহ সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “খালি পেটে হিজামাই সর্বোত্তম। এতে শেফা ও বরকত রয়েছে এবং এর মাধ্যমে বোধ ও স্মরণশক্তি বৃদ্ধি পায়।” সুনানে ইবনে মাজা, হাদীছ নম্বর : ৩৪৮৭



হযরত আবদুল্লাহ্ বিন আব্বাস রদিয়াল্লহু আনহু থেকে বর্ণিত : রসূলুল্লাহ সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “হিজামাকারী কতই উত্তম লোক। সে দূষিত রক্ত বের করে মেরুদন্ড শক্ত করে ও দৃষ্টিশক্তি প্রখর করে।” সুনানে তিরমিযী, হাদীছ নম্বর : ২০৫৩

হিজামার প্রকারভেদ

এক. স্বাভাবিক অবস্থায় যেভাবে করবে। যথা :
ক. আরবী মাসের ১৭, ১৯ ও ২১ তারিখের কোন একটি নির্বাচন করবে।



খ. সোম, মঙ্গল ও বৃহস্পতিবারের কোনটিকে নির্বাচন করবে। উল্লেখ্য, তারিখ ও দিনের মধ্যে বিরোধ হলে তারিখকে অগ্রাধিকার দিবে।
গ. খালি পেটেই হিজামা করবে। সকালে খালি পেটে হিজামা করা উত্তম।
ঘ. ফজরের পর হতে দুপুর ১২টার মধ্যে করবে।
ঙ. হিজামার আগের ও পরের দিন সঙ্গম না করা উত্তম।

দুই. জরুরী অবস্থায় যেভাবে করবে। এতে মাস ও দিনের কোনো ধর্তব্য নেই। যখনই সমস্যা তখনই করা যেতে পারে। একসময় রসূলুল্লাহ (ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ঘোড়া থেকে পড়ে পায়ে আঘাত পাওয়ায় হিজামা করেছিলেন।



হিজামার সুন্নত স্থানসমূহ

১. মাথার উপরিভাগ তথা মধ্যভাগ

২. মাথার ঠিক মাঝখানে।
৩. ঘাড়ের উভয় পাশে।

৪. ঘাড়ের নীচে উভয় কাঁধের মাঝখানে।
৫. উভয় পায়ের উপরিভাগে।
৬. মাথার নীচে চুলের ঝুটির স্থলে।

ইহরাম ও রোযায় হিজামা

মুহরিম ও রোযাদারের জন্য হিজামা বৈধ। হযরত আবদুল্লাহ বিন আব্বাস রদিয়াল্লহু আনহু থেকে বর্ণিত : তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুহরিম ও রোযাদার অবস্থায় হিজামা করেছেন।” সুনানে তিরমিযী হাদীছ নম্বর : ৭৭৫

হিজামা (Cupping) এর মাধ্যমে যে সব রোগের চিকিৎসা করা হয়ে থাকেঃ

১। মাইগ্রেন জনিত দীর্ঘমেয়াদী মাথাব্যথা
২। রক্তদূষণ
৩। উচ্চরক্তচাপ
৪। ঘুমের ব্যাঘাত (insomnia)
৫। স্মৃতিভ্রষ্টতা (perkinson’s disease)
৬। অস্থি সন্ধির ব্যাথা/ গেটে বাত
৭। ব্যাক পেইন
৮। হাঁটু ব্যাথা
৯। দীর্ঘমেয়াদী সাধারন মাথা ব্যাথা
১০। ঘাড়ে ব্যাথা
১১। কোমর ব্যাথা

১২। পায়ে ব্যাথা
১৩। মাংসপেশীর ব্যাথা (muscle strain)
১৪। দীর্ঘমেয়াদী পেট ব্যথা
১৫। হাড়ের স্থানচ্যুতি জনিত ব্যাথা
১৬। থাইরয়েড গ্রন্থির সমস্যা
১৭। সাইনুসাইটিস
১৮। হাঁপানি (asthma)
১৯। হৃদরোগ (Cardiac Disease)
২০। রক্তসংবহন তন্ত্রের সংক্রমন
২১। টনসিলাইটিস
২২। দাঁত/মুখের/জিহ্বার সংক্রমন
২৩। গ্যাস্ট্রিক পেইন
২৪। মুটিয়ে যাওয়া (obesity)
২৫। দীর্ঘমেয়াদী চর্মরোগ (Chronic Skin Diseses)
২৬। ত্বকের নিম্নস্থিত বর্জ্য নিষ্কাশন
২৭। ফোঁড়া-পাঁচড়া সহ আরো অনেক রোগ।
২৮। ডায়াবেটিস (Diabetes)
২৯। ভার্টিব্রাল ডিস্ক প্রোল্যাপ্স/ হারনিয়েশান
৩০। চুল পড়া (Hair fall)
৩১। মানসিক সমস্যা (Psycological disorder)...
এবং আরও অনেক রোগ।

হিজামা থেরাপী ও প্রশিক্ষনের জন্য যোগাযোগ করুনঃ

হিজামা প্ল্যানেটঃ ট্রিটমেন্ট, ট্রেইনিং এ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার
বাড়িঃ ৯১/১, রোডঃ ১১এ,
ধানমন্ডি, ঢাকা।

ফোনঃ
+88.0161.2877464 (Dhanmondi)
+88.01610.445262 (Banani)
+88.01841.445262 (Chittagong)
+88.01842.787924 (Jhalokati, Barisal)
+88.0184.2877464 (Bogra)
+1(716)495-4435 (Buffalo, New York, USA)

ইমেইলঃ
[email protected]
ফেইসবুক পেইজঃ
https://www.facebook.com/bangladesh.hijama.clinic/
https://www.facebook.com/hijama.com.bd
https://www.facebook.com/hijama.planet.banani/

ওয়েবসাইটঃ
http://www.hijama.com.bd
http://www.cupping.com.bd

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.