নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি মুহাম্মদ এনামুল হক আপনাদেরই লোক

ঢাকার লোক

বাংলা ভালোবাসি

ঢাকার লোক › বিস্তারিত পোস্টঃ

উপার্জন রোজগার কামাই আল্লাহরই দান

১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ২:০৭

দিন কয় আগে আমার "হজ্ব ও ওমরায় হুইল চেয়ার কিভাবে পাবেন" লেখায় আমাদের সবার প্রিয় ভাই রাজীব নূর মন্তব্য করতে গিয়ে লিখেছেন হজের মাসের উপার্জন দিয়ে সৌদিরা সারা বছর চলে ।

উপার্জন রোজগার কামাই সবই রিয্ক যা আল্লাহর দান করেন । আল্লাহর একটি নাম রাজ্জাক অর্থাৎ রিযক দানকারী। আল্লাহ পাক কোরানে বিভিন্ন আয়াতে বলেছেন রিয্ক আল্লাহই দেন,
الَّذِينَ يُؤْمِنُونَ بِالْغَيْبِ وَيُقِيمُونَ الصَّلاةَ وَمِمَّا رَزَقْنَاهُمْ يُنفِقُونَ
যারা অদেখা বিষয়ের উপর বিশ্বাস স্থাপন করে এবং নামায প্রতিষ্ঠা করে। আর আমি তাদেরকে যে রুযী দান করেছি তা থেকে ব্যয় করে ।(সূরা বাকারা আয়াত ৩)

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ أَنفِقُواْ مِمَّا رَزَقْنَاكُم مِّن قَبْلِ أَن يَأْتِيَ يَوْمٌ لاَّ بَيْعٌ فِيهِ وَلاَ خُلَّةٌ وَلاَ شَفَاعَةٌ وَالْكَافِرُونَ هُمُ الظَّالِمُونَ
হে ঈমানদারগণ! আমি তোমাদেরকে যে রুযী দিয়েছি, সেদিন আসার পূর্বেই তোমরা তা থেকে ব্যয় কর, যাতে না আছে বেচা-কেনা, না আছে সুপারিশ কিংবা বন্ধুত্ব। আর কাফেররাই হলো প্রকৃত যালেম। (সূরা বাকারা আয়াত ২৫৪ )

هُوَ الَّذِي جَعَلَ لَكُمُ الْأَرْضَ ذَلُولًا فَامْشُوا فِي مَنَاكِبِهَا وَكُلُوا مِن رِّزْقِهِ وَإِلَيْهِ النُّشُورُ
তিনি তোমাদের জন্যে পৃথিবীকে সুগম করেছেন, অতএব, তোমরা তার কাঁধে বিচরণ কর এবং তাঁর দেয়া রিযিক আহার কর। তাঁরই কাছে পুনরুজ্জীবন হবে। (সূরা মূলক , আয়াত ১৫)

أَمَّنْ هَذَا الَّذِي يَرْزُقُكُمْ إِنْ أَمْسَكَ رِزْقَهُ بَل لَّجُّوا فِي عُتُوٍّ وَنُفُورٍ
তিনি যদি রিযিক বন্ধ করে দেন, তবে কে আছে, যে তোমাদেরকে রিযিক দিবে বরং তারা অবাধ্যতা ও বিমুখতায় ডুবে রয়েছে। (সূরা মূলক , আয়াত ২১)

সাধারণ ভাবে মনে হয় আমরা আমাদের বিদ্যা বুদ্ধি জ্ঞান খাটিয়ে যে রোজগার করি তার কৃতিত্ব সবটাই আমাদের । একটু ভেবে দেখলে দেখবো আমাদেরএই বিদ্যা বুদ্ধি জ্ঞানও আল্লাহ্রই দান ! আমরা যদি আমাদের চার পাশে লক্ষ্য করি দেখবো আমারই সমান বা কম বিদ্যা বুদ্ধি জ্ঞান থাকা সত্বেও কেউ আমার চেয়ে বেশি রোজগার করছে আবার কেউ সমান বা বেশি বিদ্যা বুদ্ধি জ্ঞান নিয়েও আমার চেয়ে কম রোজগার করছে । স্কুল বা কলেজে যে ছেলে সবার চেয়ে বেশি নম্বর পেতো তার অবস্থা ততটা ভালো নয়, আবার যে ছেলেটি ফেল করে লেখা পড়া ছেড়ে দিয়ে ব্যবসা ধরেছিলো সে আজ কোটিপতি ! একই এলাকায় একই ধরণের ব্যবসা করে একজন মাসে লক্ষ টাকা রোজগার করছে আরেকজন লোকসান দিয়ে ফতুর হয়ে গেছে , পাশাপাশি দোকানের একটায় খরিদ্দার সামলাতে পারছে না আরেকটায় মালিক কর্মচারী খবরের কাগজ পড়ে সময় কাটাচ্ছে !

অনেকে মনে করেন রিয্ক জমিন থেকে আসে, যার জমিন বেশি তার রোজগার বেশি। রিয্ক জমিন থেকে আসে না, উপর থেকে আসে ! আমাদের বাংলাদেশের কথাই ধরুন, স্বাধীনতার আগে লোকসংখ্যা ছিল ৫ কোটি, এখন ১৬ কোটি, আবাদি জমির আয়তন বাড়েনি, বরং কমেছে ; পরিবারে লোক সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে আবাদি জমিতে ঘর তুলতে হয়েছে, কমেছে চাষযোগ্য ভূমির পরিমান । আজ সাধারণ মানুষের অবস্থা আগের তুলনায় সন্দেহাতীত ভাবে ভালো, আয় রোজগার বেড়েছে, ক্রয় ক্ষমতা বেড়েছে ! বলছি না, না খাওয়া লোক একেবারে নেই , তবে কিছু লোক না খেয়ে ছিল ষাটের দশকেও যখন চালের মণ ২৪ টাকা ছিল!

শুন্য পেটে যে পাখি সকালে নীড় ছেড়ে বের হয় সন্ধ্যায় ভর পেটে ফিরে আসে আল্লাহরই প্রদত্ত খাবার খেয়ে । না তাকে হাল চাষ করতে হয় না ব্যবসা বাণিজ্য ! উমার (রা) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (স) কে বলতে শুনেছি , " আল্লাহর উপর যেমন ভরসা করা উচিত তেমন যদি করতে পার তিনি তোমাদেরও তেমনি রিযক দিবেন যেমন করে পাখিকে দেন । পাখি ভোরে খালি পেটে বের হয় এবং সন্ধ্যায় ভরা পেটে ফিরে আসে ।" (তিরমিজি সংগৃহিত)
রিযক্ব আল্লাহ দেন , কাকে বেশি দিবেন কাকে কম দিবেন তার ইচ্ছা; ক্ষমতা সম্মান ও রিজকেরই অন্তভুক্ত এবং সেও আল্লাহরই দান ,
قُلِ اللَّهُمَّ مَالِكَ الْمُلْكِ تُؤْتِي الْمُلْكَ مَن تَشَاء وَتَنزِعُ الْمُلْكَ مِمَّن تَشَاء وَتُعِزُّ مَن تَشَاء وَتُذِلُّ مَن تَشَاء بِيَدِكَ الْخَيْرُ إِنَّكَ عَلَىَ كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ
বলুন ইয়া আল্লাহ! তুমিই সার্বভৌম শক্তির অধিকারী। তুমি যাকে ইচ্ছা রাজ্য দান কর এবং যার কাছ থেকে ইচ্ছা রাজ্য ছিনিয়ে নাও এবং যাকে ইচ্ছা সম্মান দান কর আর যাকে ইচ্ছা অপমানে পতিত কর। তোমারই হাতে রয়েছে যাবতীয় কল্যাণ। নিশ্চয়ই তুমি সর্ব বিষয়ে ক্ষমতাশীল। (সূরা আল ইমরান, আয়াত ২৬ )

আল্লাহ যাকে ইচ্ছা বেহিসাব রিযিক দান করেন,
تُولِجُ اللَّيْلَ فِي الْنَّهَارِ وَتُولِجُ النَّهَارَ فِي اللَّيْلِ وَتُخْرِجُ الْحَيَّ مِنَ الْمَيِّتِ وَتُخْرِجُ الَمَيَّتَ مِنَ الْحَيِّ وَتَرْزُقُ مَن تَشَاء بِغَيْرِ حِسَابٍ
তুমি রাতকে দিনের ভেতরে প্রবেশ করাও এবং দিনকে রাতের ভেতরে প্রবেশ করিয়ে দাও। আর তুমিই জীবিতকে মৃতের ভেতর থেকে বের করে আন এবং মৃতকে জীবিতের ভেতর থেকে বের কর। আর তুমিই যাকে ইচ্ছা বেহিসাব রিযিক দান কর।(সূরা আল ইমরান, আয়াত ২৭ )

সূরা তালাকে আল্লাহ বলেন তিনি একজনকে রিয্ক এমন জায়গা থেকে দিতে পারেন যা সে কল্পনা করতেও পারেনি ,
وَيَرْزُقْهُ مِنْ حَيْثُ لَا يَحْتَسِبُ وَمَن يَتَوَكَّلْ عَلَى اللَّهِ فَهُوَ حَسْبُهُ إِنَّ اللَّهَ بَالِغُ أَمْرِهِ قَدْ جَعَلَ اللَّهُ لِكُلِّ شَيْءٍ قَدْرًا
এবং তাকে তার ধারণাতীত জায়গা থেকে রিযিক দেবেন। যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর ভরসা করে তার জন্যে তিনিই যথেষ্ট। আল্লাহ তার কাজ পূর্ণ করবেন। আল্লাহ সবকিছুর জন্যে একটি পরিমাণ স্থির করে রেখেছেন। (সূরা তালাক আয়াত ৩ )

কারো রিজকের বেশি কমের সাথে আল্লাহ তাকে বেশি বা কম ভালোবাসেন এমন মনে করার কোনো কারণ নেই । কাউকে আল্লাহ কম রিযক দিয়ে পরীক্ষা করেন , কাউকে বেশি দিয়ে !

Bottom line is রিযক্ব আল্লাহ দেন , কাকে বেশি দিবেন কাকে কম দিবেন তার ইচ্ছা, আরেকজনের বেশি আছে বলে ঈর্ষা করা যাবে না, আল্লাহর কাছে নিজের রিয্ক বৃদ্ধির জন্য প্রার্থনা করতে হবে আর তার জন্য চেষ্টা করে যেতে হবে । বিনা চেষ্টায় আল্লাহ কাউকে রিযক দিতে পারেন না তা নয়, তবে তা তার দস্তুর নয়। সূরা নিসার ৩২ নং আয়াতে আল্লাহ বলেন ,
وَلاَ تَتَمَنَّوْاْ مَا فَضَّلَ اللّهُ بِهِ بَعْضَكُمْ عَلَى بَعْضٍ لِّلرِّجَالِ نَصِيبٌ مِّمَّا اكْتَسَبُواْ وَلِلنِّسَاء نَصِيبٌ مِّمَّا اكْتَسَبْنَ وَاسْأَلُواْ اللّهَ مِن فَضْلِهِ إِنَّ اللّهَ كَانَ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمًا
আর তোমরা আকাঙ্ক্ষা করো না এমন সব বিষয়ে যাতে আল্লাহ তাআলা তোমাদের একের উপর অপরের শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন। পুরুষ যা অর্জন করে সেটা তার অংশ এবং নারী যা অর্জন করে সেটা তার অংশ। আর আল্লাহর কাছে তাঁর অনুগ্রহ প্রার্থনা কর। নিঃসন্দেহে আল্লাহ তাআলা সর্ব বিষয়ে জ্ঞাত।

সৌদি আরব কাউকে হজ করতে ধরে নিয়ে যায়না, যারা যান স্বেচ্ছায় যান। যাতায়াত খরচ, ফী খাওয়াদাওয়ার খরচ ইত্যাদি জেনে বুঝেই যান । সৌদি আরব হজের সময় বিভিন্ন ফী বাবদ অনেক টাকা রোজগার করে, সে আল্লাহরই দান ! প্রায় ৩ মিলিয়ন হাজীদের হজ নিরাপদে সম্পন্ন করতে তাদের খরচও আছে অনেক। তাছাড়া বাংলাদেশি সহ অসংখ্য বিদেশি সেদেশে কাজ করে আয় রোজগার করছে । অনেক বাঙালি /পাকিস্তানিকে দেখেছি সেলুনে চুল কাটছে, ওমরার পর মাথা কমাতে বিশ/ত্রিশ রিয়াল ( চার থেকে ছয় শ টাকা) করে নিচ্ছে, যেখানে ঢাকার খিলগাঁওয়ে হয়তো মাত্র ৫০ টাকায় মাথা কমানো যায় ! হজের উছিলায় সবার এই রোজগারের ব্যাবস্থা আল্লাহরই দান !
وَاللَّهُ خَيْرُ الرَّازِقِينَ আল্লাহ সর্বোত্তম রিযিকদাতা ((সূরা জুমুআ , আয়াত ১১ )

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ২:৪৩

চাঁদগাজী বলেছেন:



এখানে বাংলাতে যা লেখা হয়েছে, সেটা আপনি লিখেছেন; আর আরবীতে যে বাক্যগুলো লেখা হয়েছে, সেগুলো আপনার মতো কোন আরব লিখেছেন। আপনার মতো অনেক বাংগালী আছেন, যারা নিজের নামও লিখতে পারেন না; এই হলো পর্থক্য।

২| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ৯:২৬

রাজীব নুর বলেছেন: উপার্জন রোজগার কামাই আমার কিছুই নাই। এটা কার অভিশাপ??

৩| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ৯:৪২

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: বিশ্বাস হারাতে বসা মানুষ বস্তুবাদের সব সত্য খোঁজে!
অথচ ভুলে যায় বা বোঝে না- বস্তুরচূড়ান্ত লয়ের পরই বিশ্বাসের যাত্রা শুরু হয়।

পোষ্টে ভাল লাগা

+++



৪| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ১১:০১

রাশিয়া বলেছেন: হজ্জের সময় মাথা কামাতে ৩০/৪০ রিয়াল নেয়া তো এক ধরণের জুলুম। হজ্জের সুযোগে এইভাবে সম্মানিত হজ্জযাত্রীদেরকে হয়রানি করে কি আল্লাহ্‌র কাছে পার পাওয়া যাবে? কামাই করে করুক - জুলুম করার অধিকার তো কারও নাই।

৫| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ১১:১৮

নেওয়াজ আলি বলেছেন: ভালো লাগলো।

৬| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১২:২৫

নতুন বলেছেন: সৌদি আরব কাউকে হজ করতে ধরে নিয়ে যায়না, যারা যান স্বেচ্ছায় যান। যাতায়াত খরচ, ফী খাওয়াদাওয়ার খরচ ইত্যাদি জেনে বুঝেই যান । সৌদি আরব হজের সময় বিভিন্ন ফী বাবদ অনেক টাকা রোজগার করে, সে আল্লাহরই দান ! প্রায় ৩ মিলিয়ন হাজীদের হজ নিরাপদে সম্পন্ন করতে তাদের খরচও আছে অনেক। তাছাড়া বাংলাদেশি সহ অসংখ্য বিদেশি সেদেশে কাজ করে আয় রোজগার করছে । অনেক বাঙালি /পাকিস্তানিকে দেখেছি সেলুনে চুল কাটছে, ওমরার পর মাথা কমাতে বিশ/ত্রিশ রিয়াল ( চার থেকে ছয় শ টাকা) করে নিচ্ছে, যেখানে ঢাকার খিলগাঁওয়ে হয়তো মাত্র ৫০ টাকায় মাথা কমানো যায় ! হজের উছিলায় সবার এই রোজগারের ব্যাবস্থা আল্লাহরই দান !

ধম` নিয়ে খুবই চমতকার একটা ব্যবসা হয় দুনিয়াতে।

সরকার সকল ব্যবসার পেছনে বড় অংকের ফি ধরে তাই সকল ব্যবসায়ী মানুষের কাছ থেকে বেশি আদায় করে।

সৌদি সরকার ইয়মেনে মানুষ মারছে আর মক্কায় হজ্জের আয়জন করে জনগনের সেবা করছে..... :) জনগনও কিছু বলেনা।

৭| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ দুপুর ২:২৭

নীল আকাশ বলেছেন: খুব সুন্দর লিখেছেন। আমি আপনাকে অভিনন্দন জানাতে চাই।
কারও কারও ইসলামের ব্যাপারে দৃষ্টিভঙ্গিরও সমস্যা আছে। মিডিয়া প্রোপাগান্ডাও অনেক কাজ করে।
কেউ কাউকে জোর করে হজ্জ্ব করতে নিয়ে যায় না।
ধন্যবাদ।

৮| ০৫ ই এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ১:২৪

খায়রুল আহসান বলেছেন: উপযুক্ত উদ্ধৃতিসহ চমৎকার কিছু ব্যাখ্যা দিয়েছেন। আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ। + +

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.