নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মতামত প্রকাশ

দিদারুল আলম তাহের

দিদারুল আলম তাহের › বিস্তারিত পোস্টঃ

সীমান্তে বিএসএফের হাতে বাংলাদেশী হত্যা বন্ধ হবে কবে?

০২ রা নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৫৫

বাংলাদেশ নামক রাষ্ঠ্রের জন্ম ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে হানাদার পাকিস্তানীদের পরাজিত করার মাধ্যমে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশকে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামরিক সবদিক দিয়েই ভারত সাহায্য করে। সেজন্য বাংলাদেশ আজীবন ভারতের কাছে ঋণী। বন্ধু ও প্রতিবেশী রাষ্ঠ্র হিসেবে তাদের অবদান শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে।
কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের আচরণ মোটেও বন্ধুসূলভ নয়। সীমান্তে নিরস্ত্র বাংলাদেশী নাগরিকদের গুলি, হত্যা, আহত করা, বাংলাদেশী নাগরিকদের গ্রেফতার, আটক, অপহরণ, নির্যাতন করা, বিজিবি সদস্যদের উপর আক্রমণ, নাজেহাল করা, সীমান্ত লংঘন, অবৈধভাবে আন্তর্জাতিক সীমান্ত অতিক্রম ও চোরাচালানসহ নানা ধরণের কাজ করছে বিএসএফ। বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ এক্ষেত্রে একেবারে নীরব ভূমিকা পালন করছে।

বিভিন্ন পরিসংখ্যান থেকে পাওয়া যায় গত পাঁচ বছরে সীমান্তে প্রায় ১১০০ জন নিরীহ নিরপরাধ বাংলাদেশীদের গুলী করে হত্যা করেছে বিএসএফ। ২০১২ সালে ৪৮ জন বাংলাদেশী নিহত হয় বিএসএফের হাতে। এছাড়া ১০৬ জন আহত এবং ১৪০ জন অপহরণ হয়। ২০০১ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত বিএসএফের হাতে ৯৪৫ জন নিহত, গুরুতর আহত ৯২৩ জন, অপহরণের শিকার ৯৩৩ জন, নিখোঁজ ১৮৬ জন এবং ধর্ষনের শিকার হয়েছেন ১৫ জন নারী।
বিএসএফের গুলী করে হত্যার পাশাপাশি হাতবোমা নিক্ষেপ, ঘরে ঢুকে নির্যাতন, গাছে ঝুলিয়ে পেটানু, বেয়নেটে খুঁচিয়ে জখম, হাত-পা ভেঙ্গে দেয়া, উলঙ্গ করে পেটান এবং কুপিয়ে হত্যার মতো জঘন্য কাজ করে। কিন্তু এগুলোর কোন বিচার বা সুরাহা হয় না।

তবে ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি কুড়িগ্রাম সীমান্তে ফেলানি নামের এক কিশোরীকে হত্যা করে লাশ ‘হাই বোল্টেজে' কাঁটাতারের বেড়ার সাথে ঝুলিয়ে রেখেছিল। সেই ছবি মিডিয়াতে প্রকাশ হওয়ার সাথে সাথেই বিএসএফের বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় উঠে। তখন বিএসএফের নিজস্ব আদালতে দোষী বিএসএফের সদস্য অমিয় ঘোষের বিরুদ্ধে মামলা হলেও তা থেকে খালাস পান সেই সদস্য।

আশা ছিলো বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে দীর্ঘ ৬৮ বছর ধরে ঝুলে থাকা ছিটমহল সমস্যার সমাধান হওয়ার পর বিএসএফের সীমান্তে বাংলাদেশী হত্যা বন্ধ হবে। কিন্তু অতিসম্প্রতি পত্রিকার পাতা উল্টালেই দেখা যাচ্ছে সীমান্তে বিএসএফের হাতে বাংলাদেশী খুন হয়েছে বা বিএসএফ ধরে নিয়ে গেছে।
বাংলাদেশের কিছু মানুষ ভারতের গরু পাচার করে জীবিকা নির্বাহ করে এ কথা সত্য। ভারত সম্প্রতি গরু পাচার বা রপ্তানির ব্যাপারে কঠোর হওয়ায় ভারত থেকে গুরু আসা বন্ধ হয়েছে। কিন্তু বিএসএফের হাতে বাংলাদেশী হত্যা বন্ধ হচ্ছে না।
সীমান্তে বাংলাদেশী হত্যা বন্ধে বিজিবি-বিএসএফের মহাপরিচালক পর্যায়ে অনেকবার বৈঠক হয়েছে। প্রতিটি বৈঠকে সীমান্তে বাংলাদেশী হত্যা বন্ধের জন্য আহ্বান করা হয়েছে। কিন্তু বিএসএফ আশ্বাস দিলেও তা কাজে পরিণত করেনি কোনদিন।
ফলে বিগত কয়েক বছরের বিজিবির কার্যক্রমে সীমান্ত রক্ষায় বিজিবি’র সক্ষমতা নিয়ে সন্দিহান হয়ে পড়াই স্বাভাবিক। আগে সীমান্তে বিডিআর-এর যে দক্ষতা, সক্ষমতা ও কার্যকারিতা ছিল, বিজিবি নামে নতুনরূপ লাভ করার পর সেই শক্তি খর্ব হয়েছে বলে মনে হচ্ছে।

যার ফলে বিজিবির সদস্য সুবেদার মিজানুরকে লাশ হতে হয়েছে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর হাতে। আবার নাসাকা বাহিনীর হাতে অপহৃত হতে হয়েছে বিজিবি সদস্য রাজ্জাককে। আসলে কি তাদের প্রতিবাদ করার সামর্থ্য নাই না তারা বিএসএফে বা নাসাকার মতো শক্তিশালী নয়?
বিজিবি সীমান্তে বাংলাদেশীদের উপর আক্রমণ ঠেকাতে যথেষ্ট সামর্থ্য। তারা এর আগেও বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বিএসএফের আক্রমণ রুখে দিয়েছে। আমাদের সিলেটের পাদুয়া আর কুড়িগ্রামের বড়াইবাড়ির কথা মনে আছে। আমাদের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর নাম ও পোশান বদলের কারণে কমে যায়নি তাদের শক্তি সামর্থ্য। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমরা নতজানু পররাষ্ট্রনীতি চাই না। বন্ধু রাষ্ঠ্রের ধোয়া তুলে যারা আমাদের বাবা, মা, ভাই বোনদের হত্যা করছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর হন।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.