![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
-পৃথিবীর ডিম্বাকৃতির (অস্ট্রিচ পাখি) ধারণা,(কোরআন:সূরা ৭৯ : আয়াত ৩০)
এই অংশে এসে চোখ আটকে গেলো। surprised পৃথিবীর "ডিম্বাকৃতি ধারণা" সম্পর্কে এই প্রথম জানলাম।
কোনো নতুন তথ্য জানলে রেফারেন্স চেক করা আমার মুদ্রাদোষ। সোর্স চেক করলাম। আরবী বুঝি না, তাই অনুবাদই ভরসা:
Sahih International
And after that He spread the earth.
Muhsin Khan
And after that He spread the earth;
Pickthall
And after that He spread the earth,
Yusuf Ali
And the earth, moreover, hath He extended (to a wide expanse);
Shakir
And the earth, He expanded it after that.
Dr. Ghali
And the earth, after that He flattened it (for life).
Bangla
পৃথিবীকে এর পরে বিস্তৃত করেছেন।
এখানে অস্টৃচ পাখির ডিম্ব আকৃতির কথা ঠিক কোথায় বলা হচ্ছে? নাকি এই ৭/৮ জন পন্ডিত সবাই ভুল বুঝেছেন, আর জনৈক ডিজুস ব্লগার রিয়েল মারফতী গূঢ় সত্যটি টের পেয়েছেন? (তাছাড়া, আমি তো জানতাম কিন্ডারগার্টেনের শিশুদের পৃথিবীর আকৃতি কমলা সদৃশ বলে প্রথম পাঠ দেয়া হয় - "অস্টৃচ ডিম্ব" আসলেই জীবনে প্রথম শুনলাম big_smile)
বরং আপাত:দৃষ্টিতে মনে হচ্ছে সে জমানায় প্রচলিত ফ্ল্যাট আর্থ ধারণাটিকেই কনফার্ম করা হয়েছে। কিছু মিস করছি কিনা জানার জন্য সামগ্রিক কন্টেক্সট-টাও পড়লাম। এখানেও এক্সট্রা-অর্ডিনারী কোনো তথ্য পেলাম না। প্রাচীন কালের মানুষ ভাবতো পৃথিবীটা সমতল, আকাশটা ঘরের ছাদের মত, আর পাহাড়গুলো হচ্ছে স্টেডী পিলার - পাহাড় না থাকলে স্কাই ইয ফলিং! আর শুধুমাত্র মানুষের জন্য এই বিশাল জাগতিক এ্যাকুরিয়াম সৃষ্টি করেছেন একজন অদেখা, অজানা, অপ্রমাণিত সত্বা, অটল আসমানের ৭টি স্তরের আড়ালে যাঁর বসবাস।
গ্যালিলেও, কোপার্নিকাস এঁরা এসে এই ভ্রান্ত ধারণা বাতিল করে দেন। আধুনিক বিজ্ঞানের কল্যাণে আকাশ কি বস্তূ আমরা জানি... (শুধু জানিই না, এর মধ্যে উড়ে বেড়াতেও পারি, নাসার কল্যাণে কিছু ভাগ্যবান আদমসন্তান আবার ফি বছর আকাশের স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার আয়োনোস্ফিয়ার-মিয়ার ফুঁড়ে ফাটিয়ে ওপাড়ের বেহেশতী শূন্যতায়ও ট্যুর মেরে আসছেন - সো ফার, নো স্কাই-গড ফাউন্ড লিভিং আউট দেয়ার)। পাহাড় কিভাবে কেন সৃষ্টি হয় তাও জিওলজিস্টরা জানছেন। জেনেছি, স্টেবিলিটির জন্য অতিপ্রাকৃত কেউ পাহাড় তৈরী করেন নি, বরং ঐ অন্চলের জিওগ্রাফিক ইনস্টেবিলিটির কারণে মিলিয়ন বছর ব্যাপী টেকটনিক প্লেট শিফটিং, ভলক্যানিক রক ডিপোযিট ইত্যাদি প্রাকৃতিক মেকানিজমে পাহাড় সৃষ্টি হয়েছে।
কীথ লিওন মূরের ব্যাপারে অনেক আগে (সম্ভবত: মরিস বুকাই-এর বইয়ে) পড়েছিলাম, থাই প্রফেসরের ব্যাপারে আজ প্রথম জানলাম। যাকগে, এ্যানশিয়েন্ট এমবৃওলজী সম্পর্কে আমার নিজেরই কিছু পড়াশোনা করে নিতে হবে। এটুকু জানি - ইসলাম আবির্ভাবের ৩৫০০ বছর আগের ব্যাবীলন, ২০০০ বছর আগের ভারত, ১২০০ বছর আগের গৃসের অধিবাসীরা এমবৃওলজী নিয়ে গবেষণা করেছে। কোরানে যেসব এমবৃওলজীকাল তথ্য আছে, তা কোনোটিই গ্রাউন্ড-ব্রেকিং এক্সক্লুসিভ না। সহস্রাব্দের প্রাচীন বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থ/দর্শনবিদ্যায় একই ধরণের ধারণা লিপিবদ্ধ আছে। এমবৃওলজীকাল রেফারেন্সকে যদি প্রমাণের বেন্চমার্ক ধরতে চান, তাহলে যে ধর্ম/দর্শন-তত্বটি এ সাবজেক্টে পায়োনীয়ার ছিলো সেটাই মেনে নেয়া যুক্তিযুক্ত নয় কি? তবে এখানেও তো সমস্যা - প্রাচীন গৃক, রোমান, ব্যাবীলনীয়, পারস্যের ধর্মগুলোর জানাজা বহু শতাব্দী আগেই পড়ে ফেলা হয়েছে, শুধু হিন্দু ধর্মটিই এখনো টিকে আছে। তার উপর কোরানিক, ব্যাবীলনীয়, ভারতীয়, এ্যারিস্টটলীয়, গ্যালেনিক এমবৃওলজী-তে কিছু ফ্যাকচুয়াল এরর আছে (যেমন মাসলের আগে বোনস সৃষ্টি হওয়া, আরো কিছু আছে মনে পড়ছে না)। আপনি যেসব তথ্য আধুনিক এমবৃওলজী কনফার্ম করে শুধু সেগুলোই চেরী পিক করে দাবী ঠুকে দিলেন "X" ধর্ম সত্য, আর যেগুলোকে কন্ট্রাডিক্ট করে সেসব ভ্রান্ত রেফারেন্সগুলো সম্পূর্ণ চেপে গেলেন (বা বললেন এগুলো বোঝার মত সাবালক বিজ্ঞান এখনো হয় নাই) - ইন্টেলেকচুয়াল ফ্রড হয়ে যাচ্ছে নয় কি?
ইনভারব্রাস ভাই আধুনিক বিজ্ঞান যদি এতো উন্নত হয় তবে কেন মানুষের মতো কিছু বানাতে পারছে না। খেলনা সদৃশ্য রোবট পর্যন্ত তাদের জ্ঞ্যান? উত্তর যদি এই হয় যে আধুনিক বিজ্ঞান এখনো সেই লেভেলে পৌছায় নি তবে কি করে ভাবছেন এই জ্ঞ্যানের পরিধি দিয়ে কুরআনের সবগুলো বিষয় চ্যালেঞ্জ করা সম্ভব? কুরআনের ধোয়াটে বিষয়গুলো বড় করে তুলে ধরছেন কিন্তু বলছেন না ১৪০০ বছর আগে এমন অনেক বিষয় কিভাবে কুরআনে এসেছে যা কিছুদিন আগে মাত্র বিজ্ঞান প্রমান করেছে?
হেয়দ্রাবাদী বিরিয়ানী খেতে গেলে প্রচুর সময় ব্যয় করে আগে রান্নাটা তো করতে হবে রে ভাই। চাল ডাল মাংসের টুকরা পাতিলে ফেলে দিলাম, আর অমনি ইনস্ট্যান্ট বিরিয়ানী তৈরী হয়ে গেলো - এমন তো নয়।
পৃথিবী সৃষ্টি হয়েছে ৪.৫ বিলিয়ন বছর আগে। প্রাণের উদ্ভব হয়েছে সেও কম সে কম ১.৫-২ বিলিয়ন বছর হবে। আধুনিক বুদ্ধিমান মানুষ (ক্রো ম্যাগনন - হোমো স্যাপিয়েন্স) এসেছে ১ থেকে ২.৫ লাখ বছর আগে। কার্ল স্যাগানের কোনো একটি বইয়ে পড়েছিলাম, পৃথিবীর (মহাবিশ্বের না, শুধু পৃথিবীর) সৃষ্টি থেকে এই মূহুর্ত পর্যন্ত সময়কে যদি ২৪ ঘন্টার স্কেলে পরিমাপ করেন, তাহলে কসমিক এই নাটকে মানবজাতি চরিত্রটির আবির্ভাব রাত ১১:৫৯ মিনিটের শেষ ২/১ সেকেন্ডে!
নিকোলাস কোপার্নিকাস জন্মেছিলেন ১৪ শতাব্দীতে।
গ্যালিলেও গ্যালীলেই জন্মেছিলেন ১৫ শতাব্দীতে।
চার্লস রবার্টস ডারউইন জন্মেছিলেন মাত্র ১৫০ বছর আগে।
আর আমাদের যে আবিষ্কারটির ফজিলতে আধুনিক বিজ্ঞান গড-স্পীডে আগাচ্ছে, সেই গড-মেশিন গণকযন্ত্র আবিষ্কৃত হয়েছে মাত্র ৫০/৬০ বছর আগে।
আশা করি আপনার প্রশ্নের উত্তর পেয়ে গেছেন... tongue
বিজ্ঞানের সাথে আব্রাহামিক ধর্মগ্রন্থগুলো সাংঘর্ষিক কি কারণে? কারণ এই ধর্মতত্বগুলো (এখানে শুধুমাত্র ইসলাম, কৃস্চিয়ানিটী এবং জুডাইজম নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে - অন্যান্য ধর্ম এক্সক্লুডেড) দাবী করে এরা এবং শুধুমাত্র এরাই ফুল এ্যান্ড ফাইনাল, কম্পলিট, নো ভার্সন.নেক্সট। আমাদের সাথে বনছেনা? যাও নিজে একটা ধর্ম বানিয়ে নাও গিয়ে। জনৈক কাঠমিস্ত্রি সাহেবের জুডাইজম ভালো লাগছে না? যাও বাছা, আরেকটা ধর্ম চালু করে দাও গিয়ে। আরে? ৬০০ বছর পরে জুডাইজম বা কৃস্চিয়ানিটী কোনোটাই ভালো লাগে না? টাইম ফর ভার্সন ৩। দুর ছাই! বিংশ শতাব্দিতে এসে এগুলোর কোনোটাই পছন্দ হচ্ছে না? নো প্রোবলেমো, কমপাদ্রে... ক্লোন করা এখন তো আরো সহজ! মরমনিযম, সাইন্টোলজী, চার্চ অব ল্যাটার ডে সেইন্টস, রায়েলিজম... এ্যান্ড নট টু ফরগেট চার্চ অব দি ফ্লাইং স্প্যাগেটী মনস্টার! tongue
বিজ্ঞান তো এমন দাবী করে না। প্রতি নিয়ত পুরণো তত্বগুলো ফাইনটিউনড হচ্ছে, এমনকি (রেয়ারলী) কোনো তত্ব সমূলে বাতিল হবার সম্ভাবনাও জাগছে। ৫০ বছর আগে পিটার হিগস তাঁর আইডিয়া পাবলিশ করেই দাবী করেন নি যে তাঁর ৫৯.৯৯ পাউন্ড দামের কেতাবটিই থিওরিটিকাল ফিজিক্সের ঐশী ফাইনাল এডিশন। তাঁর ইউনিভার্সিটি ফতোয়া জারী করেনি যে আমাদের পন্ডিতের বাণী মানলে মানো, নাইলে ফুটো। আলটিমেট ট্রুথ ধর্ম-গুলোর এ্যারোগেন্স-এর বিপরীতে সদা-পরিবর্তনশীল বিজ্ঞানের হিউমিলিটি অস্বীকার করবেন কি করে?
ডারউইন তো তুলনামূলকভাবে আরামেই ছিলেন, কিন্তু কোপার্নিকাস, গ্যালিলেও, মেন্ডেলরা ভ্যাটিকানের হাতে নিদারুণভাবে নিগৃহীত হয়েছিলেন। সমাজচ্যুত করা হয়েছিলো এদেরকে। শতশত বছর এদের নাম মুখে নেওয়াও ট্যাবু ছিলো।
আর আজ? ১৯৬৬ সালে এদের নিষিদ্ধ বইগুলো ব্ল্যাক লিস্ট থেকে তুলে নিতে বাধ্য হয়েছে ভ্যাটিকান। ১৯৯৮ সালে এসে রোমান ক্যাথোলিক চার্চ মাথা নত করে স্বীকার করে নিচ্ছে - গ্যালিলেও-ই সঠিক ছিলেন, আমরা ভুল ছিলাম।
গড অব দ্যা গ্যাপস। এককালের নিরুপায় মানুষ দুর্বোধ্য বিষয়গুলো দুর্বোধ্য অতিপ্রাকৃতিক সত্বার নিদর্শন বলে ব্যাখ্যা করতে বাধ্য হতো। সমস্যার কথা, গ্যালিলেও, ডারউইনের মত ঘাড়ত্যাড়া লোকেরা গ্যাপগুলো ফিল আপ করে চলেছেন। dontsee
বুকাইলিবাদ (Bucailleism) হল কোরআন শরীফের মধ্যে বৈজ্ঞানিক বিস্ময়ের জন্য অনুসন্ধান – আধুনিক যুগের নতুন আবিষ্কার যেগুলো দুর্বোধ্যভাবে কোরআন শরীফে ভবিষ্যদ্বানী করা হয়েছে। এখানে বুকাইলিবাদের একটি সাধারন উদাহরণ দেওয়া হলো—
চাঁদের আলো হচ্ছে প্রতিফলিত আলো - আগের সভ্যতাগুলোর ধারণা ছিল, চাঁদের নিজস্ব আলো আছে। কিন্তু বিজ্ঞান বর্তমানে আমাদেরকে বলে যে, চাঁদের আলো হচ্ছে প্রতিফলিত আলো। এ সত্যটি কোরআন আমাদেরকে আজ থেকে ১৪শ বছর আগে বলেছে নিম্ন আয়াতে:
“কত মহান তিনি যিনি নভোমণ্ডলে সৃষ্টি করিয়াছেন রাশিচক্র এবং উহাতে স্থাপন করিয়াছেন প্রদীপ ও জ্যোতির্ময় চন্দ্র।”
(সূরা ফুরকান ২৫:৬১)
আরবীতে সূর্যকে ‘শাম্স’ বলে। ‘সিরাজ’ শব্দ দ্বারাও সূর্য বুঝানো হয়েছে... চাঁদের আরবী প্রতিশব্দ হল ‘ক্বামার’ এবং কোরআনে চাঁদকে ‘মুনীর’ বলেছে। এর অর্থ হল ‘নূর’-আলো দানকারী, অর্থাৎ প্রতিফলিত আলো দেয়... এর দ্বারা বুঝা যায় যে, কোরআন সূর্য ও চাঁদের আলোর মধ্যকার পার্থক্যকে স্বীকার করে।
ঠিক তেমনভাবে দাবি করা হয়েছে যে কোরআনে কৃষ্ণ বিবর (black holes), ভ্রূণতত্ত্ব, ভূতত্ত্ব, এবং জ্যোতির্বিদ্যার আশ্চর্য বর্ণনা পাওয়া যায়।
বুকাইলিবাদ সম্পর্কে বিভিন্ন মুসলিম বুদ্ধিজীবীর ধারণা
কোরআন শরীফে এইভাবে দুর্বোধ্য বৈজ্ঞানিক বিস্ময়গুলোকে খুঁজে বেড়ানো ইসলামের ইতিহাসে খুব অল্পদিনের একটি ধারা। রক্ষণশীলদের মধ্যে বুকাইলিবাদ খুব জনপ্রিয়তা পেলেও মুসলিম বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে তেমন সমর্থন পায় নি। ভারতের সুপরিচিত ইসলামিক ধর্মতত্ত্ববিদ ও বেহেশ্তী জেওর-এর রচয়িতা, মাওলানা আশরাফ আলী থানভী (রহঃ) চারটি কারণে বুকাইলিবাদ পন্থার বিরোধিতা করেন।একইভাবে, পশ্চিমা ও মধ্যপ্রাচ্যের প্রধান মুসলিম বিজ্ঞানীরা বুকাইলিবাদ প্রচেষ্টা দেখে শুধু লজ্জিত হয়। লন্ডনের বিখ্যাত মুসলিম চিন্তাবিদ জিয়াউদ্দিন সরকার, তার বই Explorations in Islamic Science এই ‘বৈজ্ঞানিক বিস্ময়’ যুক্তিকে বলে “apologia of the worst type” [আত্মপক্ষসমর্থনের সবচেয়ে খারাপ প্রকার]। বিশিষ্ট বুকাইলিবাদ সমালোচক Penn State বিশ্ববিদ্যালয়ের মুসলিম ইতিহাসবিদ নোমানুল হক অনুযায়ী বুলাইলিবাদের বৃদ্ধির মূল কারণ হলো ঔপনিবেশিকতাবাদে লজ্জিত এবং ইসলামি বিজ্ঞানের হারানো গৌরব আবার অধিকার করতে ইচ্ছুক মসলমানদের মধ্যে “একটি গভীর, গভীর হীনমন্যতাবোধ।”আরেকজন মুসলিম বুকাইলিবাদের সমালোচক হল মুজাফফর ইকবাল, যিনি কানাডার অ্যালবার্টায় অবস্থিত Center for Islam and Science সংস্থার প্রেসিডেন্ট।
বুকাইলিবাদের বিরুদ্ধে একটি বই লিখেছেন (وهم الإعجاز العلمى অর্থাৎ ‘কোরআনে কি সত্যি বিজ্ঞানের বিস্ময় রয়েছে?”) মিসরের মুসলমান বুদ্ধিজীবী ডা. খালেদ মন্তাসের, এবং মিসরের বিখ্যাত আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক গ্র্যান্ড ইমাম শেখ মাহ্মুদ শালতুত এই ‘কোরআন-বিজ্ঞান’ এর বিরোধীতা করতেন।
পাকিস্তানের বিশিষ্ট পারমাণবিক পদার্থবিজ্ঞানী পারভেজ হুডভয় লিখেছেন—
the problem with such claims to ownership is that they lack an explanation for why quantum mechanics, molecular genetics, etc., had to await discovery elsewhere. Nor is any kind of testable prediction ever made. No reason is offered as to why antibiotics, aspirin, steam engines, electricity, aircraft, or computers were not first invented by Muslims. But even to ask such questions is considered offensive.
[এই রকম মালিকানার দাবীর সমস্যা হল, কোয়ান্টাম মেক্যানিক্স, মলিকিউলার জেনেটিক্স, ইত্যাদি কেন অন্য জায়গায় আবিস্কারের জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে এই প্রশ্নের কোন উত্তর দিতে পারে না। । আবার বিভিন্ন গবেষণা বা পরীক্ষা করে প্রমাণ করার মতো কোন বৈজ্ঞানিক ভবিষ্যদ্বাণী কোরআনে কখনো করাও হয়নি। কোরআনে যদি বৈজ্ঞানিক নানা ভবিষ্যদ্বাণী থেকেই থাকে তাহলে কেনই বা সবার আগে মুসলমানরা এন্টিবায়োটিক, এসপিরিন, বাষ্প-ইঞ্জিন, বিদ্যুৎ, বিমান কম্পিউটার উদ্ভাবন করে নি। কিন্তু এই ধরণের প্রশ্ন উঠলেই কেবল সেটাকে আক্রমণাত্মক বলে মনে করা হয়।]
তুরস্কের মুসলিম দার্শনিক ও পদার্থবিজ্ঞানী তানের এদিস লিখেছেন—
“Quran-science is pathetic, but this is realized by many Muslims as well. It does not characterize Islam any more than the Institute for Creation Research typifies Christianity. Yet, even with that important qualification, the ridiculous extreme I described above can illustrate the ambiguous relation between modern science and orthodox Islam. While most believers are content to ignore the issue and declare full scientific compatibility for the Quran, some intellectuals take a cognitive relativist path, or insist that science be structured by Islam so as to comply with an Islamic view of nature.
[“কোরআন-বিজ্ঞান (বুকাইলিবাদ) বিষয়টি হাস্যকর, কিন্তু অনেক মুসলমানেরা তা-ও জানেন। সেটা ইসলামকে বিশেষভাবে প্রতিনিধিত্ব করে না যেমনই ক্রিয়েশন রিসার্চ ইন্সটিট্যুট খ্রিষ্টধর্মকে প্রতিনিধিত্ব করে না। কিন্তু সেই গুরুত্বপূর্ণ শুদ্ধিকরণ দিয়েও, উপরোক্ত যে হাস্যকর চরমমাত্রা আমি বর্ণনা করেছি দেখায় আধুনিক বিজ্ঞান ও গোঁড়া ইসলামের দ্ব্যর্থক/অনিশ্চিত সম্পর্ক। যেখানে অধিকাংশ ঈমানদার আসল বিষয়টা অবহেলা করে কোরআনের জন্য পরিপূর্ণ বৈজ্ঞানিক সুসংগতি ঘোষণা দিতে তৃপ্ত, কিছু কিছু বুদ্ধিজীবী কগ্নিটিভ্ রেলাটিভিস্ট্ পথ অবলম্বন করে, অথবা বলে যে বিজ্ঞান ইসলাম অনুসারে নির্মিত হওয়া উচিত যেন ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে খাপ খায়।”]
ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয় ডিগ্রিধারী মুসলিম জনপ্রিয় বক্তা আবু আম্মার ইয়াসির ক্বারী তার বই An Introduction to the Sciences of the Quran তে লিখেছেন:
"In other words, there are not scientific allusions buried under every third verse in the Qur'aan, waiting to be unearthed by some over-zealous, highly-imaginative Muslim!"
[অন্য কথায়, কোরআনের প্রতি তিনটি আয়াত অন্তর অন্তর এমন কোন বৈজ্ঞানিক ইঙ্গিত লুকিয়ে নেই যা কোন অতি-কল্পনাপ্রবণ ও অতি-আগ্রহী মুসলমানের দ্বারা উন্মোচনের অপেক্ষায় আছে।]
পুরো “ইসলামী বিজ্ঞান” বিষয়ে পাকিস্তানী নোবেলপ্রাপ্ত পদার্থবিজ্ঞানী ডঃ আব্দুস সালাম লিখেছেন:
“There is only one universal science; its problems and modalities are international and there is no such thing as Islamic science just as there is no Hindu science, nor Jewish science, no Confucian Science, nor Christian Science.”৭
[কেবলমাত্র একটি সার্বজনীন বিজ্ঞান রয়েছে; বৈজ্ঞানিক সমস্যা এবং পন্থাগুলো সবই আন্তর্জাতিক ও সার্বজনীন। যেহেতু হিন্দু বিজ্ঞান, ইহুদী বিজ্ঞান, কনফুসিয়াস বিজ্ঞান ও খ্রীষ্টান বিজ্ঞান বলে কিছু নেই সেহেতু ইসলামিক বিজ্ঞান বলে কিছু নেই। ]
বুকাইলিবাদের সমস্যাগুলো
বুকাইলিবাদ অনুযায়ী, আল্লাহ্ কোনকিছু অতি পরিষ্কার বলতে ব্যর্থ, তর্কাতীত স্পষ্ট হতে অক্ষম। উদাহরণস্বরূপ, যদি আল্লাহ সত্যই কোরআনে বোঝাতে চাইতেন যে পৃথিবী গোলাকার, তাহলে তিনি কেন একটা আয়াতে স্পষ্ট করে এইভাবে লেখেন না: “তুমি কী বিবেচনা করনি, আমি কীভাবে পৃথিবীকে সমতল নয় বরং গোলাকার বানিয়েছি, এবং সূর্যের চারপাশে ঘুর্ণায়মান করে পৃথিবীকে তৈরি করেছি?” অথবা আল্লাহ যদি টেলিভিশন নিয়ে একটি ভবিষ্যদ্বাণী করতে চাইতেন, তিনি কি সুস্পষ্ট করে বলতে পারতেন না যে: “মানব জাতি এক সময় তাদের ঘরে বাক্সের ভিতরে ছবি দেখবে।” অন্য প্রসঙ্গে তো আল্লাহ কিন্তু অতি পরিষ্কার করে কথা বলেছেন! যেমন আল-ইমরান ২ আয়াত:
“আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কোন ইলাহ্ নাই, তিনি চিরঞ্জীব, সর্বসত্ত্বার ধারক।”
এই আয়াতটি তো পানির মতো পরিষ্কার, কোন তর্কাতর্কির অবকাশ নেই। যদি আল্লাহ চাইতেন যে আধুনিক বিজ্ঞানের কিছু জিনিস কোরআনে বর্ণনা করবেন তাহলে তিনি কাউকে সমালোচনার সুযোগ না দিয়ে পরিষ্কার ভাবেই তা পেশ করতেন।
দ্বিতীয়ত, মাওলানা থানভী সতর্ক করেন যে আমরা কিতাবের সত্যতা বিপদগ্রস্ত করি যদি আমরা তার আয়াতগুলো বর্তমান বৈজ্ঞানিক তত্ত্বগুলোর সঙ্গে সংযুক্ত করি, কারণ সেগুলো দশ বছর পর ভুল প্রমাণিত হতে পারে। উদাহরণসরূপ, কোরআনে মহা বিস্ফোরণ অর্থাৎ বিগ ব্যাংগের সুস্পষ্ট বর্ণনা রয়েছে যেহেতু আজ পর্যন্ত বৈজ্ঞানিক সমাজ এই তত্ত্বের সত্যতা সম্পর্কে একমত নয়, তাহলে দশ বছর পর যদি সেটা ভুল বলে প্রমাণিত হয় তাহলে কোরআনে এই সুস্পষ্ট তত্ত্বের ব্যাপারে আমরা কী বলবো? তাহলে বুকাইলিবাদ কী ধরে নিবে যে কোরআন ভুল?
বুকাইলিবাদের ইতিহাস
এই পুরো নিরর্থক ধারণা চালু করেছেন একজন অ-মুসলিম ফরাসি ডাক্তার, মরিস বুকাইলি। সৌদি বাদশাহ্ ফয়সালের পারিবারিক ডাক্তার হিসেবে নিযুক্ত করার পর, বুকাইলি ‘বাইবেল, কোরআন ও বিজ্ঞান’ বইটা প্রকাশ করে দাবি করেন যে কোরআন বিস্ময়করভাবে বিজ্ঞানসম্মত কিন্তু বাইবেল তা নয়। মরিস বুকাইলির পরে, ইয়েমেনের শেখ আব্দুল মাজিদ জিদানী নামে একজন চৌকস রাজনীতিবাদ সৌদি আরবে অবস্থিত Commission on Scientific Signs in the Qur’an and Sunnah প্রতিষ্ঠা করেন এবং বিশ্বব্যাপী বুকাইলিবাদ প্রচারের প্রধান উদ্যোক্তা হয়ে উঠে। ইদানিংকালে জিদানীর ধারণা ও তত্ত্ব ধর্মীয় টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে ছড়িয়ে দিচ্ছে ভারতে জাকির নায়েক এবং মিসরে যাঘলৌল এল-নাগার। ফ্রি প্রথম শ্রেণীর বিমান টিকিট, ৫-স্টার হোটেল বুকিং, ১,০০০ ডলার পারিশ্রমিক এবং বড় বড় নেতাদের সাথে সাক্ষাৎ দিয়ে জিদানীর কমিশন কিছু পশ্চিমা বিজ্ঞানীদের তাদের কনফারেন্সগুলোতে টেনে আনলেন। জিদানী বিজ্ঞানীদের “সম্পূর্ণ” নিরপেক্ষ থাকার আশ্বাস দেন এবং মিষ্টি কথায় ভুলিয়ে স্বীকার করতে বাধ্য করেন যে কোরআনের বিভিন্ন আয়াতে ঐশ্বরিক অনুপ্রেরণা রয়েছে।
এই কনফারেন্সের ভিডিও ফুটেজ দিয়ে জিদানী একটি ভিডিও উপস্থাপন করেন যেখানে গর্ব করা হয় যে পশ্চিমা বিজ্ঞানীরা সুনিশ্চিত করেছে যে কোরআনের মধ্যে বৈজ্ঞানিক বিস্ময় রয়েছে। সেই কনফারেন্স অংশগ্রহণকারী অনেকেই তাদেরকে এই রকম উক্তি করতে প্ররোচিত করায় সন্তোষ প্রকাশ করেন। অংশগ্রহণকারী বিজ্ঞানী উইলিয়াম হেয় মন্তব্য করেন, “I fell into that trap and then warned other people to watch out for it” [“আমি সেই ফাঁদে পা দিয়েছিলাম এবং পরে অন্যদের সাবধান করে দিলাম”]। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের একটি প্রবন্ধ এইভাবে বর্ণনা করেন:
Gerald Goeringer, an embryologist retired from Georgetown University, says he urged the commission to try some verification: hire an independent scholar to see whether the Quran’s statements could have been taken from Aristotle, the Greek philosopher-scientist who preceded the book by nearly 1,000 years. After his request was denied, Goeringer says, he stopped going to the conferences for fear of being associated with fanaticism.
“It was mutual manipulation,” he says. “We got to go places we wouldn’t otherwise go to. They wanted to add some respectability to what they were publishing.”৯
[জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত ভ্রুণবিদ্যার বিশেষজ্ঞ জেরাল্ড গরিঙ্গার বলেন তিনি জিদানীর কমিশনকে কিছু সত্যাসত্য নির্ধারণ করতে অনুরোধ করেছেন – একজন নিরপেক্ষ গবেষককে নিযুক্ত করা উচিত, যিনি গবেষণা করবেন কোরআনের উদ্ধৃতিগুলো কোরআনের লেখার ১০০০ বছর আগে গ্রীক দার্শনিক-বিজ্ঞানী এরিস্টটোলের কাছ থেকে নেওয়া হয়েছে কী না তা যাচাই করতে। তার এই অনুরোধ না রাখাতে তিনি সেই কমিশনে যাওয়া বন্ধ করে দেন, এই ভয়ে যেন তিনি অযৌক্তিক গোঁড়ামীর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হয়ে না পড়েন।
“এটি ছিল দুপক্ষ পরস্পরকে নিজ সুবিধায় ব্যবহার করা,” তিনি বলেন। “আমরা তাদের খরচে নতুন নতুন দেশে ভ্রমণ করতে পেরেছি। তারা যে তথ্য প্রকাশ করছিল তা আমাদের দিয়ে সম্মান বাড়াতে চাচ্ছিল।]
এই জিদানী ওসামা বিন লাদেনের একজন ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও উপদেষ্টা ছিলেন। বিন লাদেন নিজেই ছিলেন বুকাইলিবাদের অন্যতম প্রথম ভক্ত, এবং এর ‘গবেষণার’ অর্থযোগানদাতা। জিদানী ও কিথ মওরের ভ্রূণতত্ত্ব পাঠ্যপুস্তকে অর্থ সাহায্যদানকারী লোকদের তালিকায় প্রধান দাতা হিসেবে বিন লাদেনের নাম রয়েছে। ইউসুফ বোডানস্কি, বিন লাদেনের জীবনীকার, লিখেছেন যে পৃথিবীর এই মোস্ট ওয়ান্টেড ম্যান, তার পরিকল্পিত সন্ত্রাসী হামলাগুলো ইসলামের সাথে সুসংগত কিনা তা জানতে নিয়মিত জিদানীর পথনির্দেশ মেনে চলতেন। হাসান এ.এ. বাহাফ্জাল্লাহ্ জিদানী ও বিন লাদেনের সম্পর্কের বিষয়ে বলেন, “আমি যেটুকু জানি আফগানিস্তানে জিহাদ চলাকালে জিদানী বিন লাদেনকে মাঝে মাঝে দেখতে যেতেন”। ১৯৯৫ সালে জিদানী তার কমিশন থেকে সরে আসেন এবং বর্তমানে ইয়েমেনে ইসলামী আইন চালু করার কাজে ব্যস্ত।
বেদ ও অন্যান্য ধর্মগ্রন্থের মধ্যে “বৈজ্ঞানিক বিস্ময়”
ধর্মগ্রন্থে আধুনিক বিজ্ঞান খুঁজে বেড়ানো কেবল ইসলামের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়- আমরা সেই একই প্রচেষ্টা হিন্দু ধর্মালম্বীদের মধ্যেও দেখি। কিছু কিছু হিন্দু রক্ষণশীলদের মতে বেদ শাস্ত্রের মধ্যে রয়েছে কোয়ার্ক, পার্টিকাল থিওরী এবং কোয়ান্টাম মেক্যানিক্সের বর্ণনা। জে.সি. চট্টোপাধ্যায়ের লিখিত The Wisdom of the Vedas বইতে এই ধরনের দাবি করা হয়েছে। পদ্ধতি ঠিক বুকাইলিবাদের মতো, কিন্তু ধর্ম ও ধর্মগ্রন্থ আলাদা হলেও ফলাফলটা একই।
ধর্মীয় কট্টোরপন্থী লোকদের বাইরে, বুকাইলিবাদকে আরও বেশি অবজ্ঞা করা হয়। একজন সমালোচক একটি হাস্যকর প্যারডি সংকলন করেছেন, ল্যাটিন পৌত্তলিক কবি ভার্জিলের জোর্জিকা রচনার প্রথম মাত্র ক’য়েক লাইনে তিনি দুর্বোধ্য বৈজ্ঞানিক বিস্ময়ের পর বৈজ্ঞানিক বিস্ময়ের প্রমান দেখায়।
কিছু বৈজ্ঞানিক বিস্ময়ের বিশ্লেষণ
আমরা যদি সমস্ত দাবি করা বৈজ্ঞানিক বিস্ময়ের উদাহরণ দেখি, এগুলো সবই ভিত্তিহীন বলে প্রমাণিত হয়। এই বিশ্লেষণ কোরআনকে আক্রমণ করছে না; এ বিশ্লেষণ শুধু কোরআন শরীফের আধুনিক অপব্যাখ্যা ভুলপ্রমান করছে। এইসব বৈজ্ঞানিক বিস্ময়ের ভুলপ্রমাণ করার ঝুঁকি হল যে অনেক মুসলমান মনে করেন সেটা কোরআনের বিরুদ্ধে হামলা, যা আসলে ঠিক না। সেইজন্যেই মাওলানা থানভী কোরআনে বৈজ্ঞানিক বিস্ময়ের অনুসন্ধানে নিরুৎসাহিত করেছেন, কারণ সেগুলো যখন ভুলপ্রমাণ হয় তখন লোক হয়তো কোরআনও অস্বীকার করবে। এই রকম ধারণা প্রকৃত পক্ষে সবচেয়ে ভাল মুসলিম চিন্তাবিদরাই পোষণ করে থাকেন।
বৈজ্ঞানিক বিস্ময় #১ : চাঁদের আলো প্রতিফলিত আলো
তাহলে কোরআনে চাঁদের বিষয়ে বৈজ্ঞানিক বিস্ময় দিয়ে শুরু করি—
চাঁদের আলো হচ্ছে প্রতিফলিত আলো - আগের সভ্যতার মানুষদের ধারণা ছিল, চাঁদের নিজস্ব আলো আছে। কিন্তু বিজ্ঞান বর্তমানে আমাদেরকে বলে যে, চাঁদের আলো হচ্ছে প্রতিফলিত আলো। এ সত্যটি কোরআন আমাদেরকে আজ থেকে ১৪শ বছর আগে বলেছে নিম্ন আয়াতে:
“কত মহান তিনি যিনি নভোমণ্ডলে সৃষ্টি করিয়াছেন রাশিচক্র এবং উহাতে স্থাপন করিয়াছেন প্রদীপ ও জ্যোতির্ময় চন্দ্র।”
(সূরা ফুরকান ২৫:৬১)
আরবীতে সূর্যকে ‘শাম্স’ বলে। ‘সিরাজ’ শব্দ দ্বারাও সূর্য বুঝানো হয়েছে... চাঁদের আরবী প্রতিশব্দ হল ‘ক্বামার’ এবং কোরআনে চাঁদকে ‘মুনীর’ বলেছে। এর অর্থ হল ‘নূর’-আলো দানকারী, অর্থাৎ প্রতিফলিত আলো দেয়... এর দ্বারা বুঝা যায় যে, কোরআন সূর্য ও চাঁদের আলোর মধ্যকার পার্থক্যকে স্বীকার করে।
এই ব্যাখ্যার প্রধান সমস্যাটা হলো যে আরবী “নূর”(نُور) শব্দটার অভিধানিক অর্থ শুধু “আলো”; এই শব্দ দিয়ে যে, “প্রতিফলিত” হওয়া বোঝা তা কোন আরবী অভিধান বা শব্দকোষে নেই। কিন্তু যুক্তিতর্কের খাতিরে আমরা যদি শব্দার্থগুলো ধরে নিই, তাহলে এই কথাও বলতে হবে যে আল্লাহতা’লা যার উপাধি “আন-নূর”, তিনি হচ্ছে “প্রতিফলিত আলো” এবং মুহাম্মদ (সাঃ) (যাকে সূরা আহ্যাব ৪৬ আয়াতে বলা হয় “সিরাজ”) তিনি হচ্ছে আলোর উৎস। তাহলে এই শব্দার্থ ধরে নিলে আল্লাহ্ হচ্ছে শুধু প্রতিফলিত আলো এবং মুহাম্মদ হচ্ছে আসল আলোর উৎস। এই দূর্বল নতুন শব্দার্থ মেনে নিলে মুহাম্মদকে আল্লাহ্র উপরে তোলা হয়।
আবার ইতিহাস থেকে জানা যায় যে কোরআন নাজেলের এক হাজার বছর আগেও মানব সমাজ জানতো যে চাঁদের আলো প্রতিফলিত আলো। এরিস্টটল (৩৮৪-৩২২ খ্রীষ্টপূর্ব) পৃথিবী গোলাকার প্রমান করলেন এই যুক্তিতে, যে চন্দ্রগ্রহণের সময় চাঁদের গায়ে পৃথিবীর ছায়া দেখা যায়—চাঁদের আলো যে প্রতিফলিত আলো এরিস্টটলের কাছে সেটা সোজা জ্ঞান ছিল। মুহাম্মদ(স)-এর শত বছর আগে ইহুদীরাও জানতো যে চাঁদের কোন নিজেস্ব আলো নেই বরং সে সূর্যের কাছ থেকে “আলো ধার নেয়” (Philo, 1st century) এবং “চাঁদের আলো সূর্যের আলো থেকেই বের হয়ে আসে” (Midrash Hagadol, ~১০০ খ্রীঃ)
বৈজ্ঞানিক বিস্ময় #২ : মাতৃগর্ভে ভ্রুণের পর্যায়গুলো
ডঃ মরিস বুকাইলি আর ডঃ কিথ এল মুর, মাতৃগর্ভে মানব ভ্রুণ যে পর্যায়ক্রমে বৃদ্ধি পায় এবং কোরআন যে বিস্ময়কর ভাবে তার বর্ণনা দেয়, এই ধারণা জনসাধারণের কাছে জনপ্রিয় করে তুলেছেনঃ
“আমি তো মানুষকে সৃষ্টি করিয়াছি মৃত্তিকার উপাদান হইতে, অতঃপর আমি উহাকে শুক্রবিন্দুরূপে স্থাপন করি এক নিরাপদ আধাঁরে; পরে আমি শুক্রবিন্দুকে পরিণত করি “আলাক”-এ, অতঃপর আলাক্কে পরিণত করি পিণ্ডে এবং পিণ্ডকে পরিণত করি অস্থিপঞ্জরে; অতঃপর অস্থি-পঞ্জরকে ঢাকিয়া দেই গোশ্ত দ্বারা; অবশেষে উহাকে গড়িয়া তুলি অন্য এক সৃষ্টিরূপে। অতএব সর্বোত্তম স্রষ্টা আল্লাহ্ কত মহান!” (সূরা মু’মিনূন ২৩:১২-১৪)
তাহলে আমরা দেখি যে কোরআনে চারটি ধাপের বর্ণনা রয়েছে—
প্রথম ধাপ : নুৎফা (نُطْفَه) – বীর্য
দ্বিতীয় ধাপ : ‘আলাক্বা (عَلَق) - রক্তপিণ্ড
তৃতীয় ধাপ : মুদাঘা (مُضْغَه) - গোশতের খণ্ড বা পিণ্ড
চতুর্থ ধাপ : ‘আদাম (عَظَمَ) - হাড়
পঞ্চম ধাপ : গোশত দিয়ে হাড়কে ঢেকে দেওয়া।
দাবি করা হয় যে, যেহেতু মানব ভ্রূণের এই ধাপগুলো কেবলমাত্র গত শতকে আবিস্কার করা হয়েছে, তাই কোরআন শরীফ যে এই তথ্য ৬০০ খ্রীষ্টাব্দে উল্লেখ করেছে তা এক অলৌকিক বৈজ্ঞানিক বিস্ময়। কিন্তু যেহেতু ‘আলাক্বা (عَلَق) আরবী শব্দের প্রকৃত অর্থ “রক্তপিণ্ড” বলে ভ্রুণের কোন ধাপ নেই, বুকাইলি এই‘আলাক্বা শব্দের এক নতুন মানে উদ্ভাবন করেন যা হচ্ছে “কোন কিছু যা লেগে থাকে” অথবা “জোঁকের মতো বস্তু”।
এই আয়াতগুলো বৈজ্ঞানিক বিস্ময় হিসেবে প্রচারে অনেক সমস্যা রয়েছে—
১. ইতিহাস থেকে জানা যায় যে হযরত মুহাম্মদের সময়কালেও এই মানব ভ্রুণের এই ধাপগুলো অজানা ছিল না, বরং মধ্যপ্রাচ্যে অনেকাংশে এগুলো সাধারণ জ্ঞান ছিল। হিপক্রিতাস, এরিস্টটল১১ এবং গ্যালেনের প্রত্যেকেরই লেখাতে এই ধাপগুলোর বর্ণনা করেছেন:
প্রথম ধাপ : বীর্য
দ্বিতীয় ধাপ : মাসিক রক্ত
তৃতীয় ধাপ : মাংস
চতুর্থ ধাপ : হাড়
পঞ্চম ধাপ : গোশত দিয়ে হাড়কে ঢেকে দেওয়া
এই গ্রীক বিজ্ঞান আরবীয়দের কাছে পরিচিত ছিল। এমনকি হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর নিজের একজন সাহাবী, হারিস বিন কালাদ, জুনদি-শাপুর বিদ্যালয়ে গ্রীক মেডিসিন পড়েন এবং এভাবে হিপোক্রিতাস, এরিস্টটল এবং গ্যালেনের মেডিকেল শিক্ষার সাথে পরিচিত হন।
২. দ্বিতীয়ত, ‘আলাক্ব (عَلَق) শব্দটা “জোঁক” বা “ঝুলন্ত” দিয়ে অনুবাদ করা কেবলমাত্র আধুনিক একটা উদ্ভাবন। গত ১৪শ বছরে যতগুলো কোরআন অনুবাদ করা হয়েছে, সবগুলোতে “রক্তপিণ্ড” দিয়ে অনুবাদ করা হয়। বিখ্যাত আরবীয় মুসলিম চিকিৎসাবিদ ইবনে সিনা ও ইবনে কাইয়িম এই عَلَق শব্দকে জমাট রক্ত হিসেবেই ধরে নিয়েছেন, যেমনই ধরেছেন বিগত ১৪০০ বছরের প্রত্যেক কোরআন অনুবাদক।
৩. তৃতীয়ত, আধুনিক ভ্রূণবিদ্যা অনুযায়ী, মাংসপেশী (উপরোক্ত পঞ্চম ধাপ) তৈরী হয় হাড়ের আগেই (উপরোক্ত চতুর্থ ধাপ)। হাড়কে “মাংস দিয়ে ঢেকে দেওয়া” হয় না বরং মাংসপেশী সৃষ্টির পরে সেই মাংসপেশীর ভিতরে আস্তে আস্তে হাঁড় বেরিয়ে এসে শক্ত হয়।
৫. বোখারী ও মুসলিম শরীফে বর্ণিত এক সহীহ হাদিসে কোরআনের এই ধাপগুলোর বিস্তারিত ব্যাখ্যা আছে, যেখানে বলা হয় ভ্রূণ বৃদ্ধির প্রথম তিনটি ধাপের মেয়াদ হল ৪০ দিন করে। ডঃ বুকাইলিও মানতে বাধ্য হয়েছে যে, “এখানে ভ্রূণ সম্পর্কে যে তথ্য তুলে ধরা হয়েছে, তা আধুনিক বিজ্ঞানের প্রতিষ্ঠিত তথ্যের সাথে আদৌ সঙ্গতিপূর্ণ নয়।”
১২ শতাব্দীর আরবীয় বিজ্ঞানী ইবনে আল হাইতাম দাবী করেন যে পৃথিবী সমতল নয় বরং গোলাকার, যার কারণে শহরের ঈমামগণ বললেন যে তার লেখা কোরআনের শিক্ষার বিপরীত। তাকে ধর্মদ্রোহী বলে ঘোষণা করা হয় এবং তার জ্যোতিবিদ্যার নথিপত্র পুড়িয়ে ফেলা হয়, এবং কয়েক শত বছর ধরে তার অবদানগুলো অবহেলা করা হয় কারণ তার গোলাকার-পৃথিবী ধারণা মনে করা হত অধার্মিক এবং নাস্তিকতার একটি প্রতীক।
বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রায় ইসলামি বিশ্বের এক সময় স্বর্ণযুগ ছিল যা পরবর্তীতে ইউরোপীয় বিজ্ঞানের বিপ্লব ঘটতে সাহায্য করে। অষ্টম শতক থেকে শুরু করে ১৩ শতক পর্যন্ত, ইসলামিক সাম্রাজ্য বিশ্বের প্রধান জ্ঞান-বিজ্ঞানের কেন্দ্রবিন্দু ছিল। গ্রীস, চীন ও ভারত থেকে আসা বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক ধ্যান-ধারণার চর্চা শুরু হয় এবং এগুলোর উন্নতিও সাধন হয় এই যুগে। ইবনে-সিনা, ইবনে-রুশদ, আল-ফারাবি, ইবনে আল-হাইসাম, আল-খৈয়াম, আল-কিন্দি এবং আল-রাজির মতো বিখ্যাত পন্ডিতগণ আলোকবিজ্ঞান, চিকিৎসাবিদ্যা, রসায়ন, গণিত এবং জ্যোতির্বিজ্ঞানের মতো বিষয়ে নতুন মাত্রা যোগ করে ইউরোপীয় মহাজাগরণের (রেঁনেসা) জন্য রাস্তা প্রস্তুত করেন। এই ইসলামি স্বর্ণযুগে মুসলিম, খ্রীষ্টান এবং খ্রীষ্টান পন্ডিতগণ পাশাপাশি কাজ করে বিশ্বের জ্ঞান-বিজ্ঞানের তথ্য আরবী ও পারস্য ভাষায় অনুবাদ করেন এবং বাগদাদ, করদোবা এবং কায়রোর মতো শহর পান্ডিত্বের পাঠশালায় পরিণত হয়। সেকালের পন্ডিতগণ এরিস্টটল, ইউক্লিড, প্ল্যাটো এবং ভারতীয় ও চীনা দার্শনিকগণদের বিভিন্ন কাজ নিয়ে আরও গভীরভাবে গবেষণা শুরু করেন। ইউরোপীয় পুনরুজ্জীবন ভিত্তি হয়েছিল আরবী সাম্রাজ্য থেকে ফিরে পাওয়া প্রাচীন গ্রীক জ্ঞানবিজ্ঞানের উপরে, এবং তার সাথে ইবনে সিনা এবং ইবনে-রুশদের মতো আরবী পন্ডিতগণের লেখাগুলোও বেশ প্রভাবশালী ছিল।
আজকাল যেমন কিছু হিন্দু মৌলবাদী দাবি করেন যে জ্ঞানবিজ্ঞানের সব কিছুরই উৎপত্তি ভারতে, তেমনইভাবে কিছু মুসলিম প্রচারকগণও দাবি করেন যে বিজ্ঞানের সব উল্লেখযোগ্য অবদানগুলো ইসলাম থেকেই এসেছে। বাস্তবে, ইসলামের সেই স্বর্ণযুগ বিজ্ঞান ও আবিষ্কারের ক্রমবর্ধমান বৃদ্ধিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ, ঠিক যেমনটি করে গ্রীক, মিশরীয়, ভারত, চীন, রোম, ইউরোপ এবং শেষে বর্তমান বিশ্বও বিজ্ঞানের এই ধারায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। বিজ্ঞান এক সভ্যতা বা ধর্মের অবদান বলে দাবি করা কেবল বোকামি। ‘ইসলামি বিজ্ঞান’ সম্পর্কে সর্বপ্রথম মুসলিম নোবেল-পুরস্কারপ্রাপ্ত বিজ্ঞানী ডঃ আব্দুস সালাম বলেন:
“There is only one universal science; its problems and modalities are international and there is no such thing as Islamic science just as there is no Hindu science, nor Jewish science, no Confucian Science, nor Christian Science.” [শুধুমাত্র একটাই বিশ্বজনীন বিজ্ঞান আছে; এর সমস্যা ও ধরণগুলো আন্তর্জাতিক এবং ‘ইসলামি বিজ্ঞান’ বলে কিছু নেই যেমন করে হিন্দু বিজ্ঞান, ইহুদি বিজ্ঞা, কনফুশীয় অথবা খ্রীষ্টীয় বিজ্ঞান বলে কিছু নেই।”]
শেষে আবারও বলতে হবে যে ইসলামের স্বর্ণযুগ মানব ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করেছে, কিন্তু সেটা অন্যান্য সভ্যতার জ্ঞানের উপর নির্ভরশীল ছিল এবং অন্যান্য সভ্যতাকেও তেমনভাবে জ্ঞান যুগিয়েছে।
কেন এই স্বর্ণযুগের অবসান ঘটলো?
ইসলামী ইতিহাস পড়লে, গর্ব করার মতো অনেক কিছু আছে, সাহিত্য, জ্ঞান-বিজ্ঞান এবং সিদ্ধিলাভের একটি মহৎ সম্পত্তি। কিন্তু এসব সিদ্ধিলাভ (ইসলামী ইতিহাসের প্রথম কয়েক শতকে) হল ইসলামী সাম্রাজ্যের সবচেয়ে মুক্তমনার সময়ে যখন গ্রীক ও ভারতীয় সভ্যতার সহযোগিতায় এরা কাজ করতেন। এই যুগে মুসলিম পন্ডিতগণ অন্য সভ্যতার সাহিত্য, দর্শন ও জ্ঞানের প্রতি খুব কৌতুহলী ছিল, এবং এগুলো পড়ে ও অনুবাদ করে এরা অন্য সভ্যতার পন্ডিতদের সঙ্গে আলোচনা করতেন। ইসলামী ইতিহাসে সবচেয়ে মহৎ পন্ডিতগণ যেমন ইবন সিনা ও ইবন রুশদ অন্য সভ্যতার সংস্কৃতির প্রতি খুব কৌতুহলী ছিলেন, এবং এই কারণে ইমাম-উলেমা সম্প্রদায় তাদেরকে ধর্মদ্রোহী বলে দোষী করেন। আল-হাইসমের রচনাবলী ইমাম সম্প্রদায় পুড়িয়ে দিল সেগুলোর জ্যোতির্বিজ্ঞানের জন্য, এবং ইবন রুশদের তার অগতানুগতিক অমুসলিম দর্শন গ্রহণের কারণে তাকে নির্বাসিত করা হল।
“জাহিলিয়াত” এর প্রতি বিরোধিতা
ইমাম আল-গাজ্জালী সে স্বর্ণযুগের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পন্ডিতগণের বিরুদ্ধে একটি জ্বালাকর সমালোচনা লেখেন যে কোরআনের চেয়ে এরা “অমুসলিম” গ্রীক লেখাগুলো নিয়ে বেশী আগ্রহী ও কৌতুহলী ছিলেন। শেষে গাজ্জালীর পক্ষে জয়ী হয়ে ইমামগণ বাইরের সভ্যতার বিদ্যাকে “জাহিলিয়া” অজ্ঞতা ও প্রলোভন বলে বাদ দিয়ে ঘোষণা করে “খাঁটি” মুসলিম বিষয় ছাড়া যেন পড়ানো না হয়। ইমাম গাজ্জালী গণিত ও চিকিৎসাবিদ্যাকে বলেন ফার্দ-এ-কেফায়া ৩২এবং সুস্পষ্টভাবে তিনি এগুলো ধর্মীয় এলেমের পিছনে দ্বিতীয় স্থানে রাখেন। আমরা গাজ্জালীর এই মনোভাব আজকালেও দেখি বুকাইলিবাদ কট্টরপন্থীদের রূপে, যারা শুধুমাত্র কোরআনে ও ইসলামী ইতিহাসের মধ্যে বিজ্ঞান খোঁজে বেড়ান এবং অন্য ধর্মাবলম্বী ও সভ্যতাদের প্রতি বিরোধিতা দেখান।
ধর্ম বৈজ্ঞানিক উন্নতির উপর কী প্রভাব ফেলে? তা হল এই— আমরা যে উপায়ে আমাদের নিজ ধর্মগ্রন্থগুলো জানার প্রতি স্বচেষ্ট হই তা পরবর্তীতে বিজ্ঞান ভিত্তিক জ্ঞানলাভের জন্য প্রভাব ফেলে। আমরা যেভাবে ধর্মগ্রন্থ পড়ি সেভাবেই আমরা বিজ্ঞান পড়ব।
ইসলামে, কোরআন শরীফ মূল ব্যবহার হয় মুখস্থ করে সঠিক উচ্চারণে আরবীতে আবৃত্তি করা, সাধারণ বইয়ের মত পড়ে জ্ঞানলাভ করা বা ব্যক্তিগতভাবে ব্যাখ্যা করা নয়। ইজতেহাদ,অর্থাৎ ব্যক্তিগত ব্যাখ্যা, বড় ধর্মীয় ব্যাপারে নিষেধ করা হল.এমনকি, ১২ শতকে যখন “ইজতেহাদের দরজা বন্ধ হল” তখনই ইসলামী স্বর্ণযুগটির পতন হল, যখন বলা হত যে ব্যক্তিগত ব্যাখ্যার আর কোনো দরকার নেই। তাই প্রত্যেক ধর্মীয় বিশ্বাস ও রীতিনীতি সাধারন মানুষকে প্যাকেট করে দেওয়া হল, এবং সাধারন মানুষের দায়িত্ব শুধু মুখস্থ ও আবৃত্তি করা, ধর্মীয় নেতৃত্বকে চ্যালেঞ্জ করা নয়। সরাসরি কিতাব থেকে নিজের ব্যাখ্যা নেওয়া হত না। এই মনোভাব, যে “আর বলার কিছু নেই”, প্রকৃতিক পড়াশোনার ক্ষেত্রেও গেল, এবং অধিকাংশ বিদ্যালয়ে পড়াশোনা হয়ে গেল শুধুমাত্র প্রাচীন পণ্ডিতদের কথা “মুখস্থ ও আবৃত্তি” করা, ব্যক্তিগত গবেষণা ও আবিষ্কার নয়।
@ আরণ্যক
আমরা যখন আইনস্টাইনের কথা বলি, তখন সব সময়ই বলি, আইনস্টাইন একজন জার্মান বিজ্ঞানী, বা পরবর্তী সময়ে আমেরিকান। বা ধরুন, নিউটন-ডারউইন একজন ব্রিটিশ বিজ্ঞানী, নীটশে-মার্ক্স জার্মান দার্শনিক, রবীন্দ্রনাথ বাঙালি সাহিত্যিক, শেক্সপিয়র ইংরেজ সাহিত্যিক।
আমি কখনও কাউকে দাবি করতে শুনিনি, আইনস্টাইন একজন ইহুদী বিজ্ঞানী, নিউটন-ডারউইন খ্রিষ্টান বিজ্ঞানী, শেক্সপিয়র খ্রিষ্টান সাহিত্যিক ছিলেন। কিন্তু একটা বিশেষ ধরনের হিপোক্রেসী মুসলিম জনগোষ্ঠীর ভেতরে প্রায়শই দেখা যায়, যেটা হচ্ছে, তারা কোনো বিজ্ঞানী, দার্শনিক, সাহিত্যিকের নাম বলার সময় আরব দার্শনিক বা পারস্যের বিজ্ঞানী না বলে তাদেরকে 'মুসলিম' দার্শনিক বা বিজ্ঞানী বানিয়ে ফেলে!
এক ধরণের হীনমন্যতা তাড়িত করে নীল আর্মস্ট্রং থেকে শুরু করে নানান তারকাকে টানাহ্যাঁচড়া করে মুসলিম বানাবার, কালের কন্ঠের মত পত্রিকায় হাস্যকর সব নিউজ ছাপাবার, যেখানে দেখা যায়, বিভিন্ন বিজ্ঞানী ইসলাম গ্রহণ করে নূরের পথে আসছেন! নাসায় কোরান নিয়ে গবেষণা হচ্ছে, কোরানে বিজ্ঞান খুঁজে পেয়ে বিজ্ঞানীরা তা নিজেদের নামে চালিয়ে দিচ্ছে.কেমন হতো, যদি বলা হতো হিন্দু কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর??? সেটা না বলে বলা হচ্ছে বিশ্বকবি, যেখানে খুব সচেতনভাবেই মধ্যযুগের মধ্যপ্রাচ্যের কোনো দার্শনিক বিজ্ঞানীর নাম বললেই তার আগে মুসলিম শব্দটা জুড়ে দেবার দরকার কি.
জ্ঞান-বিজ্ঞান-দর্শন-সাহিত্য প্রভৃতি কোনো বিশেষ জাতিগোষ্ঠী বা সম্প্রদায়ের মালিকানাধীন নয়। একই সাথে, ধর্ম বা ধর্মগ্রন্থ কখনোই জ্ঞানবিজ্ঞানের পৃষ্ঠপোষক ছিল না। মধ্যপ্রাচ্যে একটা সময় চমৎকার জ্ঞানবিজ্ঞানের বিকাশ ঘটেছিল। তাঁরা গ্রীক এবং ভারতীয় দর্শনসহ নানান দর্শন গ্রহণ করে, তা চর্চার মাধ্যমে উৎকর্ষের দিকে নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেই সময়ের খলিফাদের চোখে ধীরে ধীরে তাঁরা পরিণত হন কাফের-নাস্তিক-মুরতাদে। তারা সেই সকল জ্ঞানীদের ক্রমশ হত্যা করে আরেক অন্ধকার যুগের সূচনা করে, যেটা এখন পর্যন্ত চলছে।
সেই সময়েই দার্শনিক আল কিন্দিকে ধর্মদ্রোহিতার অভিযোগে শাস্তি দেয়া হয়। সক্রেটিসের মত ইবনে বাজাকেও হত্যা করা হয়েছে বিষ প্রয়োগের মাধ্যমে, স্বাধীন মতবাদ এবং মুক্তচিন্তার অপরাধে, প্রচলিত মতবাদের বিরুদ্ধে কথা বলার অপরাধে। তিনি বলেছিলেন, "খাঁটি দর্শনের সঙ্গে ইসলামের সামঞ্জস্য হতে পারে না"; ইবনে রুশদকে কাফের এবং নাস্তিক খেতাব দেয়া হয়, নির্যাতন করা হয় নির্মমভাবে। ইবনে সিনা থেকে শুরু করে আল আল-রাজী সকলের বিরুদ্ধেই নানা ধরনের অভিযোগ ওঠে। আল রাজি সে সময়ে রচনা করেন কয়েকটি বই, যেগুলো হচ্ছে:
১. The Prophets' Fraudulent Tricks - ‘নবীর ভণ্ড চাতুরি’
২. The Stratagems of Those Who Claim to Be Prophets - ‘নবীর দাবিওয়ালাদের ছলচাতুরি
৩. On the Refutation of Revealed Religions ‘প্রত্যাদিস্ট ধর্মসমূহ খণ্ডন প্রসঙ্গে’
প্রায় প্রতিটি জ্ঞানী লোক নির্যাতিত হয়েছেন। ওমর খৈয়াম, আল্লামা ইকবাল, কাজী নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধেও ধর্মদ্রোহিতার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল।
বিজ্ঞানের ঠ্যাকা নাই কোরানে-বাইবেলে-গীতায় কি লেখা আছে তা দেখার। বিজ্ঞান নিজের পথেই চলবে, যুক্তি নিজের পথেই চলবে। কোরান-বাইবেলেরই নানা সময়ে অনুবাদ পালটে, আয়াত পালটে, শব্দার্থ পালটে বিজ্ঞানের সাথে সঙ্গতি রক্ষা করতে হবে, নিজেদের লজ্জা ঢাকতে হবে। নতুবা আধুনিক বিশ্ব তাদের নিয়ে হাসাহাসিই করে যাবে।
২| ১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:১৬
রুপবান বলেছেন: আবারো মুনিম ভাইয়ের সাথে বিতর্ক। আসলে সদালাপ ব্লগে অন্যদের তুলনায় আপনাকে রিজোনেবল মনে হয়, এজন্য এখানে আসা, ধন্যবাদ আপনাকে।
দেখুন- বিজ্ঞানে কার কি অবদান তা জ্ঞানি লোকেরা এমনিতেই বুঝতে পারে। বুদ্ধিমানের বিদ্যার দৌড় এতটা অল্প-ভয়ংকর-তাছ্ছিল্ল না যে বিজ্ঞানের কথা উঠলেই মরিশ বুকলি আর ইনবে সিনা কবিরাজের পিছে দৌড়াবে? যে কারনে পুরো ইসলামী বিজ্ঞান বিষয়ে মুসলিমদের একমাত্র নোবেল বিজয়ী পদার্থবিজ্ঞানী ডঃ আব্দুস সালাম লিখেছেন : "কেবলমাত্র একটি সার্বজনীন বিজ্ঞান রয়েছে- বৈজ্ঞানিক সমস্যা এবং পন্থাগুলো সবই আন্তর্জাতিক ও সার্বজনীন। যেহেতু হিন্দু বিজ্ঞান, ইহুদী বিজ্ঞান, কনফুসিয়াস বিজ্ঞান ও খ্রীষ্টান বিজ্ঞান বলে কিছু নেই সেহেতু ইসলামিক বিজ্ঞান বলেও কিছু নেই।"
তারপরও আপনি যে ভাবে চায়ের ছাকনি দিয়ে ছেকে বিখ্যাত-অগ্যাত-অক্ষাত সব মুসলিম বিজ্ঞানীদের তুলে এনে বিজ্ঞানের ঢোল মারছেন তাতে দুই কথা বলতেই হয়। জ্ঞান অর্জন বিষয়ে যারা মোহাম্মদী তরিকার নামগন্ধও শুনেনি তারাও যে মাহা বিজ্ঞানী হতে পারে সে বিষয়টি আপনাকে প্রথমেই স্মরন করে দিতে চাই। দ্বীনের নবী মোহাম্মদ সম্ভবত নিজেও সে সময়ে চীনের জ্ঞান বিজ্ঞানের কথা জানতেন, যে কারনে তিনি তার উম্মতকে সুদুর চীনদেশে যেয়ে জ্ঞান অর্জনের উপদেশ দিয়েছেন। সুতরাং বিজ্ঞানে কে কার জনক এ সরল সত্যটি আপনার নবী স্বয়ং বুঝতে পারলেও দুঃখজনক ভাবে আপনি তা বুঝতে পারেন্নি, আক্ষেপ। যদি বুঝতেন তা হলে আল জাবিরকে তাবত রসায়ন শাস্ত্রের জনক দাবি করতেন্না।
১। যেনে রাখা ভাল- প্রাক মধ্য-আধুনিক যুগের রসায়ন শাস্ত্রের কর্ণধার হছ্ছেন Antoine Lavoisier, Jan Baptist এবং Robert Boyle.................. এ নাম গুলো মনে রাখবেন আশা করি। এরপরে আসবে John Dalton, Jacob Berzelius, Gay-Lussac, Avogadro, Dmitri Mendeleev ...... এদের নাম, সুত্র : [url href="http://en.wikipedia.org/wiki/History_of_chemistry" target="_blank"]Click this link[/url]। তবে হাঁ, মেডিভেল রসায়নে অন্যদের সাথে আল জাবিরের নামও এসেছে। তারও আগে Chemistry বিষয়ে জানতে হলে আপনাকে পুরো লৌহ-যুগ খতিয়ে দেখতে হবে। প্রাচিন গ্রিক, চীনদেশ, মেডিভেল ইন্ডিয়া এবং জাপান..... এরাই মুলত রসায়ন শাস্ত্রের উদ্ভাবক। mineral ore, glass, soap, alloys, preservative, chemicals, blast furnace, cast iron, gun power, hydraulics, এবং double acting piston fluid সে সময় আবিস্কার হয়। ৩৪০ বিসিতে সর্বপ্রথম গ্রিক বিজ্ঞানি Leucippus বস্তুর সুক্ষ অনুর(এটম) ধারনা প্রদান করেন। এবং একই বিষয়ে একই ধারনা দিয়েছেন সমসাময়িক ভারতীয় বিজ্ঞানী কানাদা তার বিশেষ শিক্ষা সূত্রে(Vaisheshika sutras)। আর সে যুগে চীনের Confucian বিজ্ঞান যুগের ধারাবাহিকতায় রসায়ন শাস্ত্রের কথা বলে আপনাকে লজ্জা দিতে চাই না।
২। দেখুন- চিকিৎসা, গনিত, ভূগল, হাড্রলিকস, কম্পাস,ম্যাপ, অনু, পরামাণু, নিউক্লিয়ার, স্পেস................. এসব নিয়ে গ্রিক-ইউরোপিয়ানদের (আপনাদের ভাষায় ইহুদী-নাসারা) বিজ্ঞান-আবিস্কারের বিষয় নিয়ে একটি কথাও বলতে চাই না। কারন ১৯-২০ এ বিতর্ক হতে পারে, কিন্তু মুসলমানদের শুন্য(o)'র সাথে ইউরোপিয়ানদের ২০ এর তর্ক কারা মানে বিজ্ঞানকে লজ্জা দেয়া। আমি বরং সমসাময়িক চীন-ভারতের কথাই বলি। চীনের হাং ডাইনিষ্টি, সং ডাইনিষ্টি...... যুগ এবং পরবর্তি China's scientific revolution ব্লগের স্বল্প পরিসরে লেখে শেষ করা যাবে না। আপনি গুগল থেকে তা যাচাই করে নিয়েন, সূত্র : ( Click This Link)
একই অসস্থা সমসাময়িক ভারতে, সূত্র : ( Click This Link )
আপনি যে ভাবে অখ্যাত-বিখ্যাত মুসলিম পর্যটক, দরবেশ, কবিরাজ, বিজ্ঞানীদের ছেকে তুলেছেন, সৎসাহস থাকলে আমার দেয়া লিংক থেকেও অন্ততঃ কিছু তুলে এনে অপকটে তা প্রকাশ করবেন আশা করি। লজ্জা পাবেন্না, এটি মুসলিম-অমুসলিম বিতর্ক না, এটি আসলে বিজ্ঞান বিষয়ক।
সবশেষে মরিশ বুকুলি নিয়ে কিছু বলতেই হয়। আসলে নিঃবুদ্ধ মুসলমানরা সৌদি আরবের টাকায় আল কোরানের তথাকথিত বিজ্ঞান(!) কে এমন হাস্যকর এবং নেক্কার জনক উন্মচন করেছে তাতে কোরানের প্রতি বিশ্ব ফোরামের যে সামান্য শ্রদ্ধা ছিল, এখন তার আর অবশিষ্ট কিছু নেই।
একটি মাত্র উদাহরন দিছ্ছি ;
Sahih International
And after that He spread the earth.
Muhsin Khan
And after that He spread the earth;
Pickthall
And after that He spread the earth,
Yusuf Ali
And the earth, moreover, hath He extended (to a wide expanse);
Shakir
And the earth, He expanded it after that.
Dr. Ghali
And the earth, after that He flattened it (for life).
যার শুদ্ধ বাংলা : পৃথিবীকে এর পরে বিস্তৃত করেছেন।
এখানে অস্টৃচ পাখির ডিম্ব আকৃতির কথা ঠিক কোথায় বলা হচ্ছে? নাকি এই ৭/৮ জন পন্ডিত সবাই ভুল বুঝেছেন?? আমি তো জানতাম কিন্ডারগার্টেনের শিশুদের পৃথিবীর আকৃতি কমলা সদৃশ বলে প্রথম পাঠ দেয়া হয় - "অস্টৃচ ডিম্ব"(??) আসলেই জীবনে প্রথম শুনলাম।
বুকাইলিবাদ অনুযায়ী, আল্লাহ্ কোনকিছু অতি পরিষ্কার বলতে ব্যর্থ, তর্কাতীত স্পষ্ট হতে অক্ষম। উদাহরণস্বরূপ, যদি আল্লাহ সত্যই কোরআনে বোঝাতে চাইতেন যে পৃথিবী গোলাকার, তাহলে তিনি কেন একটা আয়াতে স্পষ্ট করে এইভাবে লেখেন না: “তুমি কী বিবেচনা করনি, আমি কীভাবে পৃথিবীকে সমতল নয় বরং গোলাকার বানিয়েছি, এবং সূর্যের চারপাশে ঘুর্ণায়মান করে পৃথিবীকে তৈরি করেছি?” অন্য প্রসঙ্গে তো আল্লাহ কিন্তু অতি পরিষ্কার করে কথা বলেছেন! যেমন তিনি বলেছেন ;
সুরা ৩১ : ২৯ ; "তুমি কি দেখ না যে, আল্লাহ রাত্রিকে দিবসে প্রবিষ্ট করেন এবং দিবসকে রাত্রিতে প্রবিষ্ট করেন? তিনি চন্দ্র ও সূর্যকে কাজে নিয়োজিত করেছেন। প্রত্যেকেই নির্দিষ্টকাল পর্যন্ত পরিভ্রমণ করে। তুমি কি আরও দেখ না যে, তোমরা যা কর, আল্লাহ তার খবর রাখেন?"
পরিস্কার ঝকঝকে কথা, যে ভাষাতেই বলেন্না কেন, কারো বুঝতে অসুবিধা আছে বলে হয় না। আসলে সুভংকের ফাকি হছ্ছে : রাতের পর দিন, দিনের পর রাত, চাঁদ-সুরুজ নির্দিষ্ট সময়ের জন্য যায় আবার আসে..................... এসব মামুলি বিষয় ৩ হাজার বছর আগে একজন নাবালক মানুষেরও জানা ছিল এবং সেটাই কোরানে এসেছে। কিন্তু সে সময়ের বিজ্ঞানহীন মানুষের পক্ষে কোন ভাবেই জানা সম্ভব ছিল না পৃথিবী গোলাকার, চাদ-সুরুজের মত পৃথিবীও হেলেদুলে নিজ কক্ষপথে অবিরাম ঘুড়ছে, সুর্য নয়, বরং পৃথিবীর ঘূর্ননের ফলেই দিবা-রাত্রি হয়। কিন্তু মহা বিজ্ঞান(!) আল কোরানে এসব কথা ঘুনাক্ষরেও বলা নেই। যে কারনে আল কোরানের অতি পরিস্কার ভাষায় বর্নিত সমতল পৃথিবীকে ঘোড়ার ডিম প্রমান করার জন্য বুকুলি/জাকির সাহেবরা আরবী অবিধান বদলে দিয়ে কোরানে বিম্ব বোজ্ঞান প্রমান করতে উঠেপরে লেগেছে। লজ্জা,লজ্জা..................।
আর সুর্য বিষয়ে ইসলামী বিজ্ঞান কি বলে তার নমুনা নিচের দুটি সহিহ হাদীস কি বলে দেখুন;
Sahih Bukhari 4:54:421
Narrated Abu Dhar: The Prophet asked me at sunset, "Do you know where the sun goes (at the time of sunset)?" I replied, "Allah and His Apostle know better." He said, "It goes (i.e. travels) till it prostrates Itself underneath the Throne and takes the permission to rise again, and it is permitted and then (a time will come when) it will be about to prostrate itself but its prostration will not be accepted, and it will ask permission to go on its course but it will not be permitted, but it will be ordered to return whence it has come and so it will rise in the west.
Sahih Muslim 1:297
It is narrated on the authority of Abu Dharr that the Messenger of Allah (may peace be upon him) one day said: Do you know where the sun goes? They replied: Allah and His Apostle know best. He (the Holy Prophet) observed: Verily it the Sun glides till it reaches its resting place under the Throne. Then it falls prostrate and remains there until it is asked: Rise up and go to the place whence you came, and it goes back and continues emerging out from its rising place and then glides till it reaches its place of rest under the Throne and falls prostrate and remains in that state until it is asked: Rise up and return to the place whence you came, and it returns and emerges out from it rising place and the it glides (in such a normal way) that the people do not discern anything ( unusual in it) till it reaches its resting place under the Throne. Then it would be said to it: Rise up and emerge out from the place of your setting, and it will rise from the place of its setting. The Messenger of Allah (may peace be upon him) said. Do you know when it would happen? It would happen at the time when faith will not benefit one who has not previously believed or has derived no good from the faith.
৩| ১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৩০
রুপবান বলেছেন: [img]http://www.bdtoday.net/blog/bloggeruploadedimage/bilkiss/1379075245.jpeg[/img]
আজ সকালে সম্পাদকের স্টিকি পোষ্টে থেকে জানা গেল বিডিটুডেকে বাংলাদেশে ব্লক করা হয়েছে, যে কারনে বাংলাদেশ থেকে টুডে ব্লগে ঢোকা যাছ্ছে না। বিষয়টি অবশ্যই সুখকর নয়, বরং নিন্দনিয়। এভাবে ব্লগ বন্ধ করে দেয়ার প্রবনতা মানুষের মুক্তচিন্তা বিকাশের অন্তরায়, কথা বলা এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতার গলা টিপে ধরার সামিল।
বাংলাদেশে ব্লগ বন্ধ কারর এ ধরনের ট্রেন্ড কিছু দিন আগেও ছিল না। তখন সব মত ও আদর্শের ব্লগ সবার জন্য উন্মক্ত ছিল। এই ব্লগগুলোই ছিল সব মতের মিলন মেলা। কিন্তু হটাৎ করেই তথাকথিত ধর্মানুভুতিতে আঘাত দেয়ার অজুহাত দেখিয়ে সরকার অনেক ব্লগ বন্ধ করে দেয়। শুধু তাই না, মুক্তচিন্তার চারজন ব্লগারকেও অত্যন্ত নেক্কার জনক ভাবে গ্রেপ্তার করা হয়। আসলে সরকারকে দোষ দিয়ে কি হবে!! এর জন্য আমরা ব্লগারাও পরক্ষভাবে দায়ি। সরকার যখন মুক্তমনা চার ব্লগারকে গ্রপ্তার করে অতন্ত জনপ্রিয় "ধর্মকারী ব্লগ" বন্ধ করে দেয় তখন আমরা কয়জনই বা এর প্রতিবাদ করেছি? বরং কচুপাতার পানি ধর্মানুভুতির আবেগ দেখিয়ে সরকারকে বাহাব্বা দিয়েছি। সরল হিসেবে- সমাজে একটি অন্যায় আস্কারা পেলে আরো দশটি অন্যায় মাথাচাড়া দিয়ে দাড়ায়। আর আজকে তারই করুন শিকার আমাদের প্রিয় টুডেব্লগ।
আসুন আমরা সবাই এ থেকে শিক্ষা নেই এবং সোচ্চার প্রতিবাদ জানাই। তথাকথিত ধর্ম এবং সামাজিকতার দোহাই দিয়ে- মানুষের মুক্তচিন্তা প্রকাশের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্লগ বন্ধকরা যাবে না, যাবে না, যাবে না, যাবে না...............................।
৪| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:৩৩
রুপবান বলেছেন: মোহাম্মদ ও ইসলাম পর্ব
http://mukto-mona.com/bangla_blog/?p=26512
৫| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ ভোর ৪:৫৭
রুপবান বলেছেন: @ আবদুল্লাহ সাঈদ খান ;
আপনারা দাবি করেন- পৃথিবীর তাবত বিজ্ঞানের একখানা কিতাব আপনাদের ধর্মে নাজিল হয়েছে এবং এই কিতাবেই আজন্ম মাথাগুজে আছেন। কিন্তু সেখানে বিজ্ঞানের কিকি মাথা-মুন্ডু লুকিয়ে আছে তার বিন্দু বিসর্গ আপনারা জানেন না। তবে মুক্তচিন্তার অনুসন্ধানী বিজ্ঞানীরা কোন কিছু আবিস্কার করার পর খুব সহজেই মালুম করতে পারেন " উহা আপনাদের কোরানে লুকায়িত বিজ্ঞানের অংশ বিশেষ"। যে কারনে আল কোরানে এত সহজ, সরল, সাবলিল আরবী ভাষায় বর্নিত গোলাকার(??) পৃথিবীর কথা বারবার বলার পরও উহা যে আসলেই গোল তা আপনারা বুঝতে পারেন্নি। শুধু আপনারা কেন, নবী সাহাবী আলেম ওলেমা থেকে শুরু করে সে আমলের গজিয়ে উঠা পোনা মাছের মত ঝাকবাধা মুসলিম বিজ্ঞানী(?) কুলও আল কোরানের ভিতর রসোগোল্লা আকৃতির কোন গোল্লা খুঁজে পায় নি। এর জন্য অপেক্ষা করতে হয় টানা ১২০০ বছর। যখন কোর্পানিকাস, গ্যালালিও প্রমান করলেন পৃথিবী আসলে সমতল নয়(পৃথিবীকে এর পরে বিস্তৃত করেছেন, সুরা- ৭৯:৩০) বরং গোলাকার। আর তখনই সুচতুর বুকুলি/জাকির.............. গং আল কোরানের ভিতর গোলাকার পৃথিবীর ন্যায় বিশাল এক ডিম্বের অস্তিত্ব অনুভব করলেন!!!!!!!!!!!! ধিক, মানুষ কতটা হিনমন, অসার, দেউলিয়া, নিলজ্জ হলেই কেবল তা করতে পারে।
আপনি বলেছেন- "মুসলমানরা তৎকালীন পৃথিবীর ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা 'বৈজ্ঞানিক জ্ঞান'কে একত্রিত করেছে এবং মুসলমানরাই 'আধুনিক বিজ্ঞান'-এর সূচনা করেছে।" আমার জানতে ইছ্ছে করে তা হলে সমসাময়িক চীন, ভারত, জাপান, ইউরোপরের মানুষ তখন কি করেছে? ঘাস খেয়েছে?? তাই বলছি- এসব বাজে কথা না বলে এখানে দেখুন(100 Scientists Who Shaped World History), জেনে রাখা ভাল এই ১০০ জনের তালিকায় হাকিম ইবনে সিনার নামটিই এসেছে মাত্র। লিংক : Click This Link
সত্যি কথা বলতে কি জানেন- মুসলমানদের আবিস্কারের জাহাজ এখন শুধুই ইহুদী-নাসারা-নাস্তিক আবিস্কৃত কম্পিউটার ওয়েব সাইটে www/dot আকারে ডুমুরের ফুলের সমারহ ছাড়া আর কিছু না। ধন্যবাদ।
৬| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ ভোর ৬:৫২
রুপবান বলেছেন: পোষ্টের শুরুতেই "সৃষ্টিতথ্য এবং বিজ্ঞান" এই শিরনামে কোরান থেকে অনেকগুলো আয়াত উল্লেখ করে আপনি ইসলামধর্মতত্বের বিজ্ঞান প্রমান করতে চেয়েছেন। ভাল কথা। আপনি তা করতেই পারেন, কারন অনুসন্ধানি মানুষ সব কিছুই যাচাই বাছাই করে মিলিয়ে দেখতে পছন্দ করে। সম্ভবত আপনিও অনুরুপ একজন অনুসন্ধানি। আমিও তাই। ধন্যবাদ আপনাকে।
তাহলে এবার দেখাযাক কি সে "সৃষ্টিতথ্য এবং বিজ্ঞান" লুকিয়ে আছে আল কোরানে? আপনি অনেক গুলো সুরা-কেরাতের উদাহরন দিয়েছেন। আসলে, ব্লগের স্বল্প পরিসরে সবগুলোর মেরিট-ডিমেরিট নিয়ে লিখতে গেলে অনেক সময় দরকার। আমি আপাতত কয়েকটি নিয়েই কিছু বলতে চাই।
১। "চন্দ্রটা আকের ছোট, সূর্যটা তাহার চাইতে বড়", সুরা- ৫৫:৫(??)। সুরা আর রহমানের ৫ আয়াতে এ কথা আপনি কোথ্থেকে পেয়েছেন! বিভিন্ন অনুবাদকের প্রায় ২০-২৫ টি কোরান ঘেটে কোথাও আমি এই তথ্য পাইনি। সত্যিকার অর্থে সুরা আর রহমান, ৫ আয়াতের সরল বাংলা- "সূর্য ও চন্দ্র হিসাবমত চলে"। এখানে বিজ্ঞান পেলেন কোথায়? অতি মামুলি কথা- সূর্য ও চন্দ্র যে হিসাবমত চলে তা সম্ভবত আল কোরান নাজিল হওয়ার ৩ হাজার বছর আগে বাংলাদেশে খেয়া নৌকার মাঝিদেরও জানা ছিল। সবাই দেখে/দেখে অভ্যস্ত- সুর্য সকালে উদয় হয় এবং একটি নিদ্দিষ্ট সময় পর সন্ধায় চলে যায়, চন্দ্রও তাই। আর আল কোরানে এই অতি মামুলি কথাটাই এসেছে, কি এমন আহমরি "সৃষ্টিতথ্য এবং বিজ্ঞান" আছে এই আয়াতে বলেন তো? শুনি।
২। ঘোরে পৃথিবী নিজ কক্ষে, সূর্য ঘুরে আপন অক্ষে, সুরা- ২৭:৮৮, ২১:৩৩, ৩৬:৪০(??)।
এখানেও অবাক কান্ড! নাকি কোরান কে বিজ্ঞান প্রমান করার জন্য চালাকির আশ্রয় নিয়েছেন!! আল কোরানে কোথায় পেলেন এই আজগুবি তথ্য? সুরা- ২৭:৮৮, ২১:৩৩, ৩৬:৪০ তন্ন/তন্ন করেও কোথাও "ঘোরে পৃথিবী নিজ কক্ষে" এমন কথা পাওয়া যায় না।
দেখাযাক সত্যিকার অর্থে আসলে কি লেখা ঐ আয়াত সমুহে :
সুরা ২৭:৮৮ ; "তুমি পর্বতমালাকে দেখে অচল মনে কর, অথচ সেদিন এগুলো মেঘমালার মত চলমান হবে। এটা আল্লাহর কারিগরী, যিনি সবকিছুকে করেছেন সুসংহত। তোমরা যা কিছু করছ, তিনি তা অবগত আছেন।"
(এক্কেবারেই পুরানো কথা, কোরান নাজিল হওয়ার বহু আগেই প্রায় সব ধর্মপুস্তকেই মহাপ্রলয়ের কথা বলা হয়েছে, যেমন- Buddhist eschatology, Christian eschatology, Hindu eschatology, Zoroastrian eschatology..........ইত্যাদিতে)
তো, এখানে "ঘোরে পৃথিবী নিজ কক্ষে" লেখা আছে কি??
সুরা ২১:৩৩ ; "তিনিই সৃষ্টি করেছেন রাত্রি ও দিন এবং সূর্য ও চন্দ্র। সবাই আপন আপন কক্ষপথে বিচরণ করে।" (সেই অতি পুরাতন মামুলি কথা, চাঁদ-সুরুজ এর এই খেলা একটা শিশুও বুঝে? মরুভূমির বালিতে দাড়িয়ে খালি চোখে চাঁদ-সুরুজ পর্যবেক্ষন করলে তাই তো মনে হয়। সুর্য সদা পুবে উদিত হয় অতপর আপন পথে বিচরন করে ধিরে/ধিরে পশ্চিমে চলে যায়, চাঁদের ও এই একই খেলা-মেলা)
এখানে বিজ্ঞানের কারিস্মা কোথায়?????
সুরা ৩৬:৪০ ; "সূর্য নাগাল পেতে পারে না চন্দ্রের এবং রাত্রি অগ্রে চলে না দিনের প্রত্যেকেই আপন আপন কক্ষপথে সন্তরণ করে।" (সুর্য যে চাঁদের নাগাল পায় না এটা আমার প্রি-স্কুল, ৫ বছর বয়সের অবজারভেশন। আর হটাৎ করেই দুপুর ১২ টায় রাত যে ঘনিয়ে আসেনা এটা কেনা জানে? আর আকাশে চাঁদ-সুরুজের সন্তরন? এটাতো সেই তিন হাজার বছর আগের রোমান্টিক প্রমিক-প্রেমিকার ডায়লগ থেকেই জানা যায়- আমি তোমার কাঁধে ভর করে হেটে যাব আর সেই সাথে এই রুপালী চাঁদটাও মেঘের কাঁধে ভর করে চলবে আমাদের দুজনার সাথে।)
তা হলে এবার আপনি বলুন কি এমন বিজ্ঞানের মাথা-মুন্ডু'র মুলধন লুকিয়ে আছে কোরানের এসব আয়াত সমুহে! সত্যিকার অর্থে এসব সে যুগের বিজ্ঞানহীন মানুষের অতি পুরাতন কথার চর্বিত চর্বন। কম্পিউটার প্রযুক্তির এই উন্মুক্ত তথ্যপ্রবাহের যুগে বোকার মত চালাকি-মিথ্যা-ধানাইপানাই এর আশ্রয় নিয়ে মধ্যযূগীয় কোরানের গায়ে বিজ্ঞানের চাদর বিছিয়ে দেয়া কি এতই সহজ???
সুরা- ৫৫:৫ ;
Muhammad Asad- "The sun and the moon run their appointed courses"
M. M. Pickthall- "The sun and the moon are made punctual."
Shakir- "The sun and the moon follow a reckoning."
Yusuf Ali- "The sun and the moon follow courses (exactly) computed"
Wahiduddin Khan- "The sun and the moon move according to a fixed reckoning"
Aisha Bewley- The sun and the moon both run with precision.
সুরা আর রহমানের ৫ নং আয়াতের আরো অনুবাদ এখানে এখানে দেখুন : Click This Link
ধন্যবাদ।
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:২৭
রুপবান বলেছেন:
এবারে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থের সাথে বিজ্ঞানের সংযোগ দেখি:
ভাগবত ২/১৬/১৭: হে মাতঃ হে স্বায়ম্ভুব মনুর কন্যা! আমি পূর্বেই বর্ণনা করিয়াছি যে, কাল হইতেছে পরমেশ্বর ভগবানের শক্তি, প্রকৃতির সাম্য, অব্যক্ত অবস্থা বিক্ষুব্ধ হওয়ার ফলে, যাঁহার থেকে সৃষ্টির শুরু হয়।
বিজ্ঞানঃ এই শ্লোকে বর্ণনা করা হয়েছে প্রকৃতির সাম্য, অব্যক্ত অবস্থা বিক্ষুব্ধ হওয়ার ফলে ব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টি শুরু হয়। বিক্ষুব্ধ শব্দটির অর্থ বিস্ফোরণ। বিজ্ঞানীরা বলছেন, একটি বৃহৎ বিস্ফোরণের ফলে মহাবিশ্বের শুরু হয়েছে। একে বিগব্যাঙ বলে।
ভাগবত ৩/২০/১৬: গর্ভোদকশায়ী বিষ্ণুর নাভী থেকে একটি সহস্র সূর্যের মতো উজ্জ্বল পদ্ম উদ্ভুত হয়েছিল। সেই পদ্মটি সমস্ত বদ্ধ জীবের অধিষ্ঠান স্বরূপ এবং প্রথম জীব সর্বশক্তিমান ব্রহ্মা সেই পদ্মটি থেকে আবির্ভুত হয়েছিলেন।
বিজ্ঞানঃ বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং কালের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস বইটির মহাবিশ্বের উৎপত্তি এবং পরিণতি অধ্যায়ে (১০০ পাতা) আলোচনা করেছেন যে, মনে করা হয় বিস্ফোরণের সময় মহাবিশ্বের আয়তন ছিল শুণ্য, সুতরাং উত্তাপ ছিল অসীম। মহাবিশ্ব সম্প্রসারিত হওয়ার সাথে সাথে তাপমাত্রা নেমে এসেছিল প্রায় এক হাজার কোটি ডিগ্রীতে। এ তাপ সূর্যের কেন্দ্রের তাপের চেয়ে প্রায় এক হাজার গুণ বেশী। ভাগবতে বর্ণনা করা হয়েছে বিস্ফোরণের পর তাপমাত্রার পরিমাণ ১০০০ জ্বলন্ত সূর্যের তাপের সমান, যেটি বিজ্ঞানীরাও এখন আবিস্কার করেছেন।
স্কন্ধ পুরাণম ৩৮/৫৪: হে ভরত বংশাবতংস মেঘ সকল ধুম ও সমুদ্রের বাষ্প হইতে বৃষ্টি হয়। সেজন্য এরা জলপূর্ণ হলে নীল বর্ণ হয়ে থাকে এবং বর্ষণ করতে পারে।
ঋকবেদ ৭/৩৬/১: যজ্ঞের সদন হতে স্ত্রোত্র প্রকৃষ্ট রুপে গমন করুক। সূর্য কিরণসমূহ দ্বারা বৃষ্টি সৃষ্টি করিয়াছেন।
বিজ্ঞানঃ আজকের বিজ্ঞানীরা বৃষ্টির কারণ হিসাবে যে পানিচক্রের কথা বলছেন, সেখানে এই সূর্যের তাপে প্রতিদিন সমুদ্র ও জলাশয়ের পানি বাষ্পীভুত হয়ে উপরে উঠে ঘনীভূত ও শীতলীভূত হয়ে মেঘে পরিণত হয়, যা ভারী হয়ে পরবর্তীতে বৃষ্টি হয়ে মাটিতে নেমে আসে। এটিই স্কন্ধ পুরাণ ও ঋকবেদের উপরের শ্লোকে বলা হয়েছে।
ভাগবত ২/৭/৩৭: কলিযুগে নাস্তিক অসুর স্বভাব মহাবিজ্ঞানীরা বৈদিক জ্ঞানে অত্যন্ত দক্ষ হয়ে মহাশূণ্য যানে চড়ে গগনমার্গে অদৃশ্যভাবে বিচরণ করবে….
বিজ্ঞানঃ এই শ্লোকে কলিযুগ সম্বন্ধে ভবিষ্যদ্বানী করে বলা হয়েছে কলিযুগে বিজ্ঞানীরা বৈদিক জ্ঞান অর্জন করে বিমান বা মহাশূণ্যযান তৈরী করবে। কলিযুগ মানে বর্তমান যুগ। সুতরাং বলা যায় বর্তমান যুগে বিজ্ঞানীরা যে বিমান তৈরী করেছেন, সে সম্পর্কে ভাগবতে লক্ষ লক্ষ বছর পূর্বে ভবিষ্যদ্বানী করা হয়েছে। ভাগবতে বেশ কয়েক রকমের মহাশূণ্য যানের বর্ণনা আছে।
এমন অনেক নমুনা দেখানো যেতে পারে, বাইবেলের বিজ্ঞানিকীকরণ নিয়েও কিছু নমুনা দেয়া যেতে পারে। মুসলিম পাঠকের কাছে এখানকার আলোচনাগুলো হাস্যকর, অবৈজ্ঞানিক, অবান্তর, অযৌক্তিক খুব সহজেই মনে হতে পারে; কিন্তু আদতে কোরানের সাথে বিজ্ঞানের যোগসূত্র বের করার আলোচনার সাথে এই আলোচনাসমূহের কোন পার্থক্য নেই। যে লাউ সে-ই কদু, এখানেও হয়েছে অনুবাদ ও ব্যাখ্যাগত বিচ্যুতি, আজকের বিজ্ঞান এসব কিচ্ছা-কাহিনীকে আর যাই হোক বিজ্ঞান হিসাবে স্বীকার করে না। আরেকটি তুলনামূলক নমুনা দেখিয়ে এ পরিচ্ছেদের আলোচনা শেষ করছি।
কোরান ২৩:১৩,১৪: তারপর আমরা তাকে বানাই শুক্রকীট এক নিরাপদ অবস্থান স্থলে। তারপর শুক্রকীটকে বানাই একটি রক্তপিণ্ড, তারপর রক্তপিণ্ডকে বানাই একতাল মাংসের তাল, তারপরে মাংসের তালে আমরা সৃষ্টি করি হাড়গোড়, তারপর হাড়গোড়কে ঢেকে দেই মাংসপেশী দিয়ে, তারপরে আমরা তাকে সৃষ্টি করি অন্য এক সৃষ্টিতে। সেইজন্য আল্লাহরই অপার মহিমা, কত শ্রেষ্ঠ এই স্রষ্টা।
বিজ্ঞানঃ সেই কোন আমলে কোরানেই মাতৃগর্ভে ভ্রুণ সৃষ্টি ভ্রূণ থেকে ধীরে মানব শিশুর আকৃতি লাভের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা আছে।
বায়ুপুরাণম ১৪/১৮, ১৯: গর্ভকালে শুক্র এবং শোনিত মিলিত হয়ে কলল আকার ধারণ করে। পরে কলল থেকে বুদবুদ আকার প্রাপ্ত হয়। চক্রের উপর মাটির পিণ্ড যেমন চক্রের ঘুর্ণন দ্বারা বিবর্তিত হয়ে ঘট, শরাদি বিভিন্ন নানাকার ধারণ করে, তদ্রূপ আত্মাও বায়ুদ্বারা পরিচালিত হয়ে কালবশে অস্থিযুক্ত বিবিধ মনঃসম্পন্ন মানুষরূপে উৎপন্ন করে।
ভাগবত ৩/৩১/২: সেই রেতকণা গর্ভে পতিত হলে, একরাত্রে শোনিতের সাথে মিশ্রিত হয়, পঞ্চ রাত্রিতে বুদ্বুদের আকার প্রাপ্ত হয় এবং ধীরে ধীরে তা মাংসপিণ্ডে বা অণ্ডে পরিণত হয়।
বিজ্ঞানঃ বৈদিক সাহিত্যে শুক্রাণুকে রেতকণা বা শুক্র, ডিম্বাণুকে শোনিত এবং জাইগোটকে কলল নামে অভিহিত করা হয়। আধুনিক বিজ্ঞান আজ অনুরূপ কথাই বলে।
উভয় আলোচনাই আধুনিক বিজ্ঞানকে টেনে নিজের শ্রেষ্ঠত্ব তুলে ধরার চেষ্টা করলেও, ধুনিক ভ্রূণতত্ত্ব অনুসারে অবশ্য কোরান বা ভাগবত ও বায়ুপুরাণের এসব ব্যখ্যা সম্পূর্ণ ভুল প্রমানিত!!
১৪০০ বছর আগের এক নিরক্ষরের গল্পঃ
এই ধরণের বিজ্ঞান আলোচনার পরে সকলের উদ্দেশ্যে প্রায়শই একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ছুড়ে দেয়া হয়ঃ "আজ হতে ১৪০০ বছর আগে যে আরবে একজন নিরক্ষর মানুষ এই কথাগুলো কিভাবে ভাবতে পেরেছিলেন তা কি কখনো চিন্তা করেছেন? আজ বিজ্ঞান যা আবিষ্কার করছে আজ হতে ১৪০০ বছর আগেই একজন মানুষ তা বললে তা কিভাবে তার মস্তিষ্ক প্রসূত হয়?" এভাবেই প্রমাণ হয়ে গেল কোরান মনুষ্য সৃষ্ট নয়, এটা ঐশী।
এখানেই গল্পের পরিসমাপ্তি ঘটলে ভালো হতো, কিন্তু যখন আমরা মানব ইতিহাসের কিছু দারুণ কিছু কর্মের সন্ধান পাই তখন বিস্ময়াভূত হয়ে যাই। সেই ১৪০০ বছরেরও আরো প্রায় ২ শতাধিক বছর পূর্বেই (কোপারনিকাসেরও সহস্র বছর পূর্বে) আর্যভট্ট (৪৭৬ খৃস্টাব্দ) বলেছেন, পৃথিবী গোলাকার, এটি নিজ অক্ষের চারদিকে ঘুরে এবং সাথে সাথে এটি সূর্যকেও প্রদক্ষিণ করে। ২ সহস্রাধিক বছর আগে (খৃষ্টের জন্মেরও ৩০০/ ৩৫০ বছর পূর্বে) এরিস্টোটল বলেছেন, বায়ুশূণ্য অবস্থায় বস্তু একই অবস্থানে থাকবে নতুবা সমগতিতে চিরকাল চলতে থাকবে। (এরিস্টোটল অবশ্য তার সিদ্ধান্তের পেছনে কোন প্রমাণ তো হাজির করতে পারেনই নি, বরং পরক্ষণেই তার সেই আবিস্কারকে অস্বীকার করেছেন এই ধারণা থেকে যে, বায়ুশূণ্য স্থান থাকতে পারে না, ফলে ইহা অসম্ভব)। ভাস্করাচার্য (২), নিউটনের মহাকর্ষ সূত্র প্রদানেরও ৫ শতাধিক বছর পূর্বে বলেছেন, পৃথবীতে বস্তুসমূহ পতিত হয় পৃথিবীর টানেই, এবং পৃথিবী, গ্রহসমূহ, জ্যোতিস্কসমূহ, চাঁদ ও সূর্য নিজ নিজ কক্ষে এই আকর্ষণের কারণেই অবস্থান করে।
এসব যখন দেখি তখন ভাবি, আল্লাহর পূর্বে মানুষই তো সঠিক জ্ঞান তো আমাদের দিতে পারলো। আর, আল্লাহ এমনভাবে পেচিয়ে পুচিয়ে যে জ্ঞান দিলেন, তাও দেখা যাচ্ছে অনেক জায়গায় ভুলে ভরা!! আফসোস তৈরী হয়, নিজ হাতে লেখার পরেও কেন আল্লাহ গোটা কোরানে একবারো সরাসরি উল্লেখ করতে পারলেন না যে, পৃথিবী গোলাকার, পৃথিবী সূর্যের চারদিকে ঘোরে।
৭| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৩:১২
রুপবান বলেছেন: তৃতীয় ঘটনাটি বেশ উপভোগ্য। প্রায় ডজন খানেক স্ত্রীকে সম অধিকার দিতে গিয়ে নবীকে পালা করে প্রত্যেক স্ত্রীর ঘরে এক রাত করে কাটাতে হয়। যে দিনের ঘটনা সেদিনের পালা ছিলো ওমরের মেয়ে হাফসার । এর কিছুদিন আগেই মিশরের অমুসলিম শাসক নবীকে খুশি করার জন্য দুজন সুন্দরী ক্রীতদাসীকে উপহার হিসেবে পাঠিয়েছিলেন নবীর কাছে। নবী যাতে মিশর আক্রমন না করেন সেজন্য। গনিমতে মাল এবং ক্রীতদাসীদের ভোগ করার সার্টিফিকেট (ওহী ) তিনি আগেই আল্লার কাছে থেকে নিয়ে রেখেছিলেন। সেখানে সমস্যা ছিলো না। সমস্যা ছিলো ঘর নিয়ে। কারণ নবীর হেরেমে অতগুলো ঘর ছিলো না। দুজন সুন্দরী দাসীর একজনকে অন্য এক সাহাবীকে দিয়ে তিনি নিজের জন্য রেখেছিলেন মারিয়া কিবতিয়া নামক মিশরিয়ান সুন্দরীকে। নিজের বাড়িতে জায়গা না থাকায় সেই সুন্দরীকে আবার রেখেছেন অন্য এক সাহাবীর বাড়ি। মন কি আর মানে ? দিন যায় রাত যায়, কিন্তু কিবতিয়াকে আর ভোগ করতে পারেন না। শেষে নবী এক ফন্দি আঁটলেন, মা দেখা করতে বলেছে বলে হাফসাকে বাপের বাড়ি পাঠিয়ে দিলেন। হাফসা চলে গেলে সেই ঘরে এনে তুললেন মারিয়াকে। এই ঘটনা হাতে নাতে ধরে ফেলেন আয়েশা। অন্যদিকে হাফসা বাপের বাড়িতে গিয়ে বুঝতে পারে নবী তাকে মিথ্যে বলেছে। পরদিন তিনি ফিরে এলে আয়েশা সব ঘটনা বলে দেন হাফসাকে। পুরো কাহিনি ফাঁস হয়ে যাওয়ায় হাফসাতো মহা ক্ষ্যাপা, সেই সাথে আয়েশা সহ অন্যরাও। শেষে নবী ভুল টুল স্বীকার করেও পত্নীদের মান ভাঙাতে পারেন না। অবশেষে নবী প্রায় একমাস সেক্স স্ট্রাইক করলেন। কোনো স্ত্রীর ঘরেই যান না। পরিশেষে এই ঘটনা সামাল দিতে এগিয়ে আসেন হযরত ওমর। তিনি নবী পত্নীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘তিনি যদি তোমাদেরকে তালাক দিয়ে দেন, তবে আল্লাহতালা নবীকে তোমাদের থেকে অনেক ভালো স্ত্রী দেবেন।’ আলী বলেন পরবর্তীতে ঠিক এই রকম বক্তব্য নিয়েই ৬৬ নং সূরা তাহরিম এর ৫ নং আয়াত নাজিল হয়।
ক্ষমতা এবং ধর্মান্ধতা মানুষকে কোথায় নিয়ে যায়! নবীর এই স্ত্রীদের মধ্যে নিজেরও যে একটি যুবতী মেয়ে আছে, যাকে নিয়েই এই মূল ঘটনা, ওমর নবীর পক্ষ হয়ে নবীর স্ত্রীদের হুমকি দেওয়ার সময় সে কথা মাথায় আনলেন না। তিনি আরও তাদেরকে তালাক দেওয়ার জন্য নবীকে উৎসাহিত করলেন! এই ঘটনা জানার জন্য পড়তে হবে সহি বোখারি শরিফ, ভলিউম ১, বুক ৮, নম্বর ৩৯৫।
৮| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ ভোর ৪:০৫
রুপবান বলেছেন: http://www.youtube.com/watch?v=X2hN8w26SVU
জাকির নায়েক : ২+২ = ৪
৯| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ ভোর ৪:৩৭
রুপবান বলেছেন: ইদানিং ধর্ম নিয়ে বিশেষ করে মুসলিম বিশ্বে যে উন্মাদনা সৃষ্টি হয়েছে তা আমাদেরকে ইউরোপের মধ্য যুগের কথা মনে করিয়ে দেয় যাকে আমরা অন্ধকার যুগও বলে থাকি। সেই অন্ধকার যুগে ইউরোপে খৃষ্টান দের ধর্ম গুরু ভ্যটিকানের পোপ ছিলেন সর্বে সর্বা, তার কথাই ছিল আইন, আর গন মানুষের সমাজে তার প্রতিনিধি স্বরূপ পাদ্রী ও ধর্ম যাজকদের কথাই ছিল চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত। তাদের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কেউ টু শব্দ করতে পারত না। কেউ তা করার সাহস দেখালে তার গর্দান যেত, না হয় জীবন্ত আগুনে পুড়িয়ে মারা হতো। এর উদাহরন ভুরি ভুরি। খৃষ্টীয় ধর্ম তখন ইউরোপে এমন জগদ্দল পাথরের মত চেপে বসেছিল যে, জ্ঞান বিজ্ঞানের চর্চা সব শিকেয় উঠেছিল। তখন বলা হতো- যাবতীয় জ্ঞান বিজ্ঞানের কথা বাইবেলে লেখা আছে তাই বাইবেল ছাড়া অন্য কোন কিছু পড়ার কোন দরকার নেই। ইউরোপ তাই তলিয়ে গেছিল গহীন অন্ধকারে। অবশেষে রেনেসা আন্দোলনের ফলে ইউরোপ রক্ষা পায় সে অন্ধকার যুগের জগদ্দল পাথর থেকে আজ থেকে প্রায় ৬০০ বছর আগে। এর পর পরই শুরু হয় ইউরোপের অগ্রযাত্রা। যে জগদ্দল পাথর ইউরোপ ৬০০ বছর আগে ত্যাগ করে নতুন ভাবে শুরু করে আজকের আধুনিক সভ্যতার পত্তন ঘটাল হঠাৎ করে মুসলিম বিশ্ব এখন সম্পুর্ন বিপরীত দিকে যাত্রা কেন শুরু করল এটা বিশেষ ভাবে চিন্তার বিষয়। কেন তারা সব কিছু ত্যাগ করে ইসলাম ধর্মের মধ্যে সব কিছুর সমাধান খোজার চেষ্টা করছে তা বিশেষ কৌতুহলদ্দীপক। কিন্তু সব কিছুর আগে দেখতে হবে যে ইসলাম ধর্মের মধ্যে তারা নিজেদের শর্তহীনভাবে সপে দিয়ে এমন কি মাঝে মাঝে জীবনকে উৎসর্গ পর্যন্ত করছে সেই ইসলাম ধর্মের মূল কিতাব কুরআন টা আসলে কি জিনিস।সেটা সত্যি সত্যি কোন ঐশী কিতাব কিনা মানে তা মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লার কাছ থেকে সরাসরি এসেছে কিনা। নবী মোহাম্মদ নিজেকে আল্লার প্রেরিত পুরুষ হিসাবে দাবী করছেন ,আল্লাহ তাকে সত্যি সত্যি প্রেরন করেছিলেন কিনা। প্রথমেই আমরা কুরআন কে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখতে পারি।
উদার দৃষ্টি ভঙ্গি দিয়ে কুরআন কে খুব মনযোগ দিয়ে পড়লে বহু সংখ্যক স্ববিরোধী ও বিজ্ঞানের সাথে সংঘাতপূর্ন অনেক বক্তব্য পাওয়া যায় যা নিম্নে বর্ননা করা হলোঃ
ইদানীং কিছু মুসলমান ব্যক্তি ( বর্তমানে জাকির নায়েক, হারুন ইয়াহিয়া প্রমুখ তাদের মধ্যে খুবই অগ্রগন্য) কোরানের আয়াতে আয়াতে বিজ্ঞানের যাবতীয় তত্ত্ব ও সূত্র খুজে পাচ্ছেন। অতীতে বা বর্তমানে বিজ্ঞানীরা যা কিছু বহু কসরত করে আবিষ্কার করেছেন তারা কোরান নামক গ্রন্থে খুজে পেয়ে নিজেরা যেমন পুলকিত হচ্ছেন তেমনি তারা সাধারন মুসলমানদেরকেও পুলকিত করার চেষ্টা করছেন। তাই তারা দাবী তুলছেন কোরান হলো বিজ্ঞানময় কিতাব আর মোহাম্মদ হলো মহাবিজ্ঞানী, মানে সবার সেরা। এখন দেখা যাক, কোরান কতখানি বিজ্ঞানময়।
পৃথিবী ও মহাবিশ্ব গঠন সম্পর্কিত বিষয়ঃ
১। কতদিনে আল্লাহ আকাশ মন্ডলী ও পৃথিবীকে সৃষ্টি করেছিলেন? ৬ দিনে ? নাকি ৮ দিনে?
নি:সন্দেহ, তোমাদের প্রতিপালক আল্লাহ , যিনি আসমান ও জমীন ছয় দিনে সৃষ্টি করিয়াছেন, অনন্তর সিংহাসনে সমাসীন হইয়াছেন, তিনিই দিনকে রাত্রির দ্বারা আচ্ছাদিত করেন, যাহা উহার পিছনে দৌড়াইয়া চলে এবং তিনিই চন্দ্র, সূর্য, নক্ষত্রসমূহকে তাহার নির্দেশাধীন করিয়াছেন। সূরা-৭: আ’রাফ, আয়াত:৫৪
তোমাদের প্রতিপালক সেই আল্লাহ তিনি আকাশ ও ভূমন্ডল সৃষ্টি করিয়াছেন ছয় দিবসে, তৎপর তিনি অধিষ্ঠিত হন আরশের উপর। সূরা-১০: ইউনুস, আয়াত:৩
তিনিই সর্বশক্তিমান, যিনি সৃজন করিয়াছেন আসমান ও জমীনকে ছয় দিবসে আর তিনি সিংহাসনে আসীন ছিলেন যা ছিল পানির উপরে। সূরা-১১: হূদ, আয়াত: ৭
উপরের তিনটি আয়াত ই সু-স্পষ্টভাবে প্রকাশ করছে যে, আল্লাহ আসমানসমূহ ও জমীন কে ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন। তিনি তখন তার সিংহাসনে বসেছিলেন যা ছিল পানির উপরে। তো পানি ছিল কোথায় ? আসমানে নাকি জমিনে ? তখনও তো তিনি আসমান জমিন সৃষ্টিই করেন নি , তাহলে ? আজগুবি কথা বার্তার একটা সীমা আছে। কোরান তো দেখি তাও লঙ্ঘন করেছে।
তুমি বল- তোমরা কি সত্যই তাহাকে অমান্য করিতেছ, যিনি দুই দিবসে পৃথিবী সৃজন করিয়াছেন এবং তোমরা তাহার সমকক্ষসমূহ নির্ধারন করিতেছ? ইনিই বিশ্বজগতের প্রতিপালক। এবং তিনিই উহাতে উহার উপর পর্বতসমূহ স্থাপন করিয়াছেন এবং তিনি উহাতে আধিক্য প্রদান করিয়াছেন ও তিনি চারি দিবসে উহাতে উৎপন্ন সমূহের নির্ধারন করিয়া দিয়াছেন। সকল প্রার্থীর জন্য সমতূল্য করিয়াছেন। পুনরায় তিনি উহাকে ও পৃথিবীকে বলিলেন তোমরা উভয়ে স্বেচ্ছায় অথবা অনিচ্ছায় এস, উহারা উভয়ে বলিল-আমরা স্বেচ্ছায় উপস্থিত হইয়াছি। অতঃপর তিনি দুই দিবসে সপ্ত আকাশ সৃজন করিলেন এবং তিনি প্রত্যেক আকাশে উহার আদেশ প্রেরন করিলেন এবং নিম্নের আকাশকে আমি প্রদীপসমূহ দ্বারা সুসজ্জিত ও সুরক্ষিত করিয়াছি। সূরা-৪১:হা-মীম সাজ্বদা, আয়াত: ৯-১২
উপরের সূরাটিতে খুব স্পষ্ট ও নির্দিষ্ট ভাবে দেখা যায়, দুই দিবসে পৃথিবী সৃজন, চারি দিবসে উহার উপর নানা বস্তু সকল এবং অবশেষে আরও দুই দিবসে সপ্ত আকাশ সৃজন করলেন, অর্থাৎ (২+৪+২) বা ৮ দিনে আল্লাহ পৃথিবী ও আকাশসমূহ সৃষ্টি করলেন।
এখন প্রশ্ন হলো- কোনটা সত্য? ৬ দিন নাকি ৮ দিন? আল্লাহ নিশ্চয়ই একই বিষয়ে দুই রকম কথা বলবেন না। একদিন ইসলামিক টেলিভিশনে এ বিষয়ে এক যুবক প্রশ্ন করেছিল জাকির নায়েক নামক এক ব্যক্তিকে যিনি কিনা ইদানিং বিজ্ঞানের সব তত্ত্ব ও সূত্র কোরানে খুজে পাচ্ছেন। দেখা গেল জাকির নায়েক ইনিয়ে বিনিয়ে নানারকম কথা বলে গোজামিল ধরনের একটা উত্তর দিয়ে বিষয়টা চাপা দিলেন। গোজামিল যে জায়গাতে দিলেন তা হলো- চারি দিবসে উহাতে উৎপন্নসমূহ সৃষ্টি করিয়াছেন- এ বক্তব্যের মধ্যেই আগের দুই দিন অর্থাৎ দুই দিবসে পৃথিবী সৃজন করার সময়কে ধরে নিতে হবে।তার মানে আগের দুই দিন কে আলাদা ভাবে ধরা যাবে না। ধরা যাবে না তার কারন সেটা বলছেন স্বয়ং জাকির নায়েক।তো একদল মোটিভেটেড শ্রোতার সামনে দাড়িয়ে এধরনের গোজামিল দিয়ে সহজেই পার পাওয়া যায়, কারন দেখা গেল এত বড় একটা গোজামিল দেয়ার পরেও সেই যুবকটি বা শ্রোতাদের অন্য কেউ এ বিষয়ে আর কোন প্রশ্নই করল না। এখন যে কোন নিরপেক্ষ পাঠক যদি একটু মনটা খোলা রেখে উপরোক্ত আয়াত গুলো পড়েন- তিনি কি অর্থ করবেন এর? লক্ষ্যনীয় যে, আয়াত গুলো অতীব সহজ সরল ভাষায় লেখা, অতি সাধারন শিক্ষিত লোকও কিন্তু এর অর্থ অতি সহজেই বুঝতে পারবেন। ইনিয়ে বিনিয়ে প্যাচানো কোন কিছু লেখা নেই বরং ইদানিং কালের এক ধরনের তথাকথিত ইসলামী চিন্তাবিদরাই বড় বেশী প্যাচানো শুরু করেছেন।
২। আল্লাহ কি আগে সৃষ্টি করেছিলেন? পৃথিবী নাকি আকাশ মন্ডল ?
তোমাদের জন্য তিনি ভূ-মন্ডলের যাবতীয় বস্তু সৃষ্টি করিয়াছেন, অতঃপর নভমন্ডলের যাবতীয় বস্তু সৃষ্টি করিয়াছেন, অতঃপর নভোমন্ডলের প্রতি দৃষ্টি দিয়া ইহাকে সাত স্তরে বিভক্ত করিয়াছেন, তিনিই সকল বস্তু সম্পর্কে পরিজ্ঞাত। সূরা-২:বাক্কারাহ, আয়াত:২৯
উপরোক্ত আয়াত পড়লে সহজে বোঝা যায় আল্লাহ প্রথমে ভূমন্ডল সৃষ্টি করেছেন ও পরে নভোমন্ডল মানে সাত আসমান সৃষ্টি করেছেন। এছাড়াও পূর্বে উল্লেখিত সূরা-৪১:হা-মীম সাজ্বদা, আয়াত: ৯-১২ থেকেও বোঝা যাচ্ছে আল্লাহ আগে পৃথিবী ও পরে আকাশ সমূহ সৃষ্টি করেছেন।
ওহে ! সৃষ্টির দিক দিয়া তোমরাই কি অধিক শক্ত , না কি তাহার তৈয়ারী আসমান? উহার ছাদকে উচ্চ করিয়াছেন এবং উহাকে নিখুত করিয়াছেন। উহার রাতকে আধার ও দিনকে প্রকাশ্য বানাইয়াছেন। অতঃপর ভূমিকে বিছাইয়াছেন। সূরা-৭৯, আয়াত:২৭-৩০
উপরোক্ত আয়াত পড়ে জানা যাচ্ছে আল্লাহ আগে আকাশকে তৈয়ারী করেছেন ও পরে ভূমি অর্থাৎ পৃথিবীকে সৃষ্টি করেছেন। এ ছাড়া কি অন্য কোন অর্থ হতে পারে এ সূরার? অবশ্য আপনি অন্য অর্থ করতে পারেন যদি আপনি ধান্ধাবাজ হন।তো যাই হোক, আল্লাহ একবার বলছেন তিনি আকাশ মন্ডলীকে প্রথমে ও পৃথিবীকে পরে সৃষ্টি করেছেন অন্য একবার বলছেন তিনি প্রথমে ভূমি অর্থাৎ পৃথিবীকে আগে সৃষ্টি করেছেন ও আসমান বা আকাশকে সৃষ্টি করেছেন।কোনটা সত্য? আল্লাহ কি এভাবে একই বিষয়ে দুই কথা বলতে পারেন ?মনে হয় , এখানেও ইসলামী চিন্তাবিদরা এর অন্য অর্থ খুজে পাবেন। হয়ত বলবেন- এমন কিছু সূরা আছে যার অর্থ কেউ বুঝতে পারে না। তখন স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠবে- যা মানুষ বুঝতে পারবে না তা কোরানে মানুষদের জন্য বলার দরকার কি? কিন্তু একথাও টিকবে না কারন কুরানে আল্লাহ নিজেই আবার বলছেন-কুরান খুব সহজ ও সরল ভাষায় প্রকাশ করা হয়েছে যাতে সবাই বুঝতে পারে। অর্থাৎ কোরানে তেমন কিছুই নেই যা মানুষ বুঝতে পারবে না। তাহলে?
সমস্যা সেখানেই শেষ নয়। কোরান বলছে জমীন তথা পৃথিবী আগে সৃষ্টি হয়েছিল তারপর সৃষ্টি হয়েছে আকাশমন্ডলী। সেখানে আধুনিক বিজ্ঞান কি বলছে?আধুনিক বিজ্ঞানের নানাবিধ গবেষনা ও পরীক্ষা নিরীক্ষা নির্দেশ করছে মহাবিশ্ব সৃষ্টি হয়েছিল আজ থেকে কমপক্ষে পনের শ’ কোটি বছর আগে। আর তখন পৃথিবী তো দুরের কথা খোদ আমাদের সৌরজগতেরই কোন অস্তিত্ব ছিল না। পৃথিবীর বয়স বড়জোর পাচশ’ কোটি বছর। অর্থাৎ বিশ্ব জগত সৃষ্টিরও প্রায় এক হাজার কোটি বছর পর। আর সেখানে আল্লার প্রেরিত আসমানী কিতাবে বলা হচ্ছে পৃথিবী আগে সৃষ্টি হয়েছিল এর পর সৃষ্টি হয়েছিল আকাশমন্ডলী তথা মহাবিশ্বের বাকীসব। সুতরাং প্রশ্ন ওঠা খুব স্বাভাবিক কোরান কি সত্যি সত্যি আল্লাহর বানী নাকি মোহাম্মদের নিজের বানী?
৩। পৃথিবী কি চ্যাপ্টা কোন সমতলীয় ক্ষেত্র নাকি? তারপর আকাশমন্ডলী বা পৃথিবী কি কথা বলতে পারে? আকাশ কি কঠিন পদার্থ দিয়ে গঠিত ছাদ ?
কোরানে বার বার পৃথিবী যে সমতল একথাই বলা হয়েছে। নানা উপমা আর রূপক ব্যবহার করেই তা বলা হয়েছে। যেমন-
আল্লাহ তোমাদের জন্য ভূমিকে বিছানা এবং আকাশকে ছাদ স্বরূপ স্থাপন করে দিয়েছেন। সূরা-২: বাক্কারাহ, আয়াত: ২২
এখানে ভূমি বলতে পৃথিবীকে বোঝানো হয়েছে এবং তা বিছানার মত, বিছানা বলা বাহুল্য সমতল। এছাড়া আকাশকে একটা কঠিন ছাদ রূপে বর্ননা করা হয়েছে। দুটো বিষয়ই যে স্রেফ রূপক বা উপমা হিসাবে বলা হয়নি তার প্রমান পাওয়া যাবে পরবর্তী সূরা গুলোতে কারন সেসব সূরার বানী দিয়ে উপরোক্ত দুটি বিষয়কে বার বার সমর্থন করা হয়েছে।
তিনিই ভূমন্ডলকে বিস্তুৃত করেছেন এবং এতে পাহাড় পর্বত ও নদ-নদী স্থাপন করেছেন। সূরা-১৩: রা’দ, আয়াত: ৩
ভূমন্ডলকে বিস্তৃত করেছেন যার সোজা অর্থ পৃথিবীকে সমতল বলা হচ্ছে।
আল্লাহ তিনিই যিনি আসমানগুলিকে বিনা খুটিতে উচ্চে দন্ডায়মান রাখিয়াছেন তাহা তোমরা দেখিতেছ, তৎপর তিনিই স্থির হইলেন আরশের উপর, গতিশীল করিয়াছেন সূর্য ও চন্দ্রকে প্রত্যেকেই নিজ নিজ পথে ক্রমাগত চালিত হয় নির্ধারিত সময় পর্যন্ত,—। সূরা-১৩:রা’দ, আয়াত:২
আসমান বা আকাশ যে একটা কঠিন ছাদ তা বোঝাতে এখানে বিনা খুটিতে উচ্চে দন্ডায়মান রাখিয়াছেন দ্বারা সমর্থন করা হয়েছে। দালানের ছাদ তো খুটি ছাড়া উপরে থাকতে পারে না , তাই বিনা খুটি এর উপমা দিয়ে আকাশ যে একটা কঠিন ছাদ এবং তা যে খুটি ছাড়া উপরে স্থাপন করেছেন তা খুব পরিস্কার ভাবেই বোঝানো হয়েছে কোরানে।শুধু তাই নয়, যেহেতু তিনি খুটি ছাড়া এ ছাদ স্থাপন করেছেন তাই তা তার এক অসীম কুদরত।
ওহে ! সৃষ্টির দিক দিয়া তোমরাই কি অধিক শক্ত , না কি তাহার তৈয়ারী আসমান? সূরা-৭৯, আয়াত:২৭
আকাশ যে খুব কঠিন ও শক্ত ভাবে সৃষ্টি করেছেন তারই বর্ননা আল্লাহ দিচ্ছেন। এত বেশী শক্তভাবে তৈরী করেছেন বলেই তো তা ভেঙ্গে মানুষের মাথার ওপর পড়ে না। তিনি পরম দয়ালু বলেই না আকাশকে অত শক্তভাবে তৈরী করেছেন আর আমরা হুট হাট মাথার ওপর আকাশ ভেঙ্গে পড়ে পটল তোলার হাত থেকে বেচে গেছি। মনে হয় সে থেকেই প্রবাব বাক্য চালু হয়েছে- মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়া।
সূর্য ও চন্দ্র নিজ নিজ পথে ক্রমাগত চালিত হয়- এর মধ্যে কোন কোন ইসলামী মহাবিজ্ঞানীরা মহাবিস্ময়তা আবিস্কার করেছেন। যেমন- দিনের বেলায় আমরা খালি চোখেই দেখি সূর্য সকালে পূর্ব দিকে উদিত হয় , বিকালে পশ্চিম দিকে অস্ত যায়। একই ভাবে রাতের বেলায় চাদকেও ঠিক তাই করতে দেখা যায়। এটা জানার জন্য আমাদের কোরান বা অন্য কোন ঐশী কিতাবের দ্বারস্থ হওয়ার কোন দরকার নাই। সেই প্রাগৈতিহাসিক কাল থেকেই আদিম মানুষেরা তা স্বচক্ষে দেখত ও জানত। বরং কোরান আমাদেরকে সেই কথাই বোঝাতে চাচ্ছে যে পৃথিবীকে কেন্দ্র করে সূর্য ও চাদ নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ঘুরে চলেছে।অর্থাৎ কোরান পৃথিবী কেন্দ্রিক মহাবিশ্বের ধারনার কথাই বলেছে। যে ধারনার কথা সেই চোদ্দ শ বছর আগে আরব তথা সারা বিশ্বে প্রচলিত ছিল। অথচ আজকের দিনে প্রাইমারী স্কুলের একটা বাচ্চা ছেলেও জানে যে, সূর্য পৃথিবীকে কেন্দ্র করে ঘোরে না, বরং সূর্যকেই কেন্দ্র করে শুধু পৃথিবী নয়, পৃথিবী ছাড়াও আরও আটটি গ্রহ নিয়মিত ঘুরে চলেছে। কিন্তু তাহলে বিস্ময়কর সেই জিনিসটা কি যা ইসলামী মহাবিজ্ঞানীরা আবিস্কার করেছেন? তা হলো- অতি সম্প্রতি জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা আকিষ্কার করেছেন যে, বস্তুতঃ সূর্যও কিন্তু স্থির নয়। সূর্য হলো ছায়াপথ নামক গ্যালাক্সির একটা তারকা যা গ্যালাক্সির কেন্দ্র থেকে প্রায় ত্রিশ হাজার আলোকবর্ষ দুরে অবস্থিত। তো অন্যান্য কোটি কোটি তারকার মত আমাদের সূর্যও ছায়াপথের কেন্দ্র বিন্দুকে কেন্দ্র করে ঘুরছে, একবার ঘুরে আসতে সময় লাগে প্রায় বিশ কোটি বছর। ইসলামী মহাবিজ্ঞানীদের মহাবিস্ময়কর আবিষ্কার হলো-তারা বলতে চাচ্ছেন যে, উপরোক্ত সূরায় সূর্যের যে চলার কথা বলা হয়েছে তার মাধ্যমে ছায়াপথকে কেন্দ্র করে সূর্যের ঘোরার কথা বলা হয়েছে।?বেশ কয়টি ওয়েব সাইটেও দেখলাম বিষয়টি নিয়ে খুব আকর্ষনীয় বর্ননা দেয়া হয়েছে বেশ কিছু চিত্র সহকারে।আর বলা বাহুল্য তা অত্যন্ত বিস্ময়কর কারন সেই ১৪০০ বছর আগে তা একমাত্র আল্লাহ ছাড়া কেউ জানত না।
কিন্তু বিষয়টা যে মোটেই তা নয় তা বোঝা যাবে নিম্নের আয়াত থেকেÑ
অবশেষে তিনি সূর্যের অস্তাচল স্থলে পৌছলেন, তখন তিনি সূর্যকে এক পঙ্কিল জলাশয়ে অস্ত যেতে দেখলেন এবং সেখানে এক সম্প্রদায়কে দেখলেন। সূরা-১৮:কাহফ, আয়াত:৮৬
ইহার পর জুলকারনাইন অন্য একটি জোগাড়যন্ত্রের পশ্চাতে লাগিল। এ পর্যন্ত যে, চলিতে চলিতে যখন সূর্যোদয় স্থলে উপনীত হইল সূর্যকে এরূপ বোধ হইল যেন কতক লোকের প্রতি উদিত হইয়াছে যাদের জন্য আমি সূর্যের দিকে কোনও আড়াল রাখি নাই। সূরা-১৮:কাহফ, আয়াত:৮৯-৯০
উপরের আয়াতগুলো থেকে বোঝা যাচ্ছে সূর্য সব সময় একটা নির্দিষ্ট স্থানে অস্ত যায় যাকে কোরানে অস্তাচল স্থল বলা হচ্ছে এবং একটা নির্দিষ্ট স্থানে উদিত হয় যাকে সূর্যোদয় স্থল বলা হচ্ছে। বস্তুতঃ পৃথিবী একটা সমতল ক্ষেত্র হলেই শুধুমাত্র তা সম্ভব। তাহলেই সূর্যের একটি অস্ত স্থল ও একটি উদয় স্থল থাকবে যা কোরানের সূরাতে খুব স্পষ্ট ভাবেই বর্ননা করা হচ্ছে। পৃথিবী যদি গোলাকার হয় আর তা যদি নিজের কক্ষপথের ওপর ২৪ ঘন্টায় একবার ঘুরে আসে , সূর্য যদি তার নিজ জায়গায় স্থির থাকে , তাহলে পৃথিবীর কোথাও কোন নির্দিষ্ট সূর্যোদয় স্থল বা অস্ত স্থল থাকবে না। পৃথিবীর কোন এক জায়গায় সূর্য যদি অস্ত যেতে থাকে তো ঠিক তার বিপরীত পৃষ্ঠে সূর্য উদিত হতে থাকবে। তার মানে পৃথিবীতে প্রতি মুহুর্তেই কোথাও না কোথাও সূর্য উদিত হচ্ছে ও ঠিক তার বিপরীত পৃষ্ঠে সূর্য অস্ত যাচ্ছে। তাই পূর্বোক্ত সূর্যের যে চলাচল করার কথা বলা হচ্ছে তা হলো পৃথিবী নামক সমতল একটি ক্ষেত্রের যে স্থানে সূর্য উদিত হয়, সেখান থেকে সারা দিন পরিভ্রমন শেষে অস্ত স্থলে যাওয়ার ঘটনা। কোরানে বর্নিত সূর্যের চলাচল তাই বলা বাহুল্য কোন ক্রমেই ছায়াপথকে কেন্দ্র করে ঘোরার ঘটনা নয়। এখানে আরও লক্ষনীয় যে, সূর্য ও চন্দ্রকে প্রত্যেকেই নিজ নিজ পথে ক্রমাগত চালিত হয় নির্ধারিত সময় পর্যন্ত এ বক্তব্য দিয়ে খুব পরিষ্কার ভাবে প্রকাশ করছে যে সূর্য ও চন্দ্র তারা যে নিজ নিজ পথে চালিত হয় তা কিন্তু হয় নির্ধারিত সময় পর্যন্ত, সর্বক্ষন নয়, অথচ আমরা জানি পৃথিবী সারাক্ষনই ঘুরে মরছে যার কারনে পৃথিবীতে দিন রাত হয়, চন্দ্রেরও একই অবস্থা বিরামহীনভাবে ঘুরেই মরছে বিশ্রামের কোন অবকাশ তার নেই। অর্থাৎ সূর্য (যদিও চলাচল করে না, সাদা চোখে যে চলাচল আমরা দেখি তা ভ্রমাত্মক) ও চন্দ্র যে সব সময় চলার উপরে থাকে তাকে অস্বীকার করা হচ্ছে, নির্দিষ্ট সময় পর্যন্তই তারা চলাচল করে ও তারপর তারা কিছুক্ষন বিশ্রাম নেয়- এটাই বরং বোঝানো হচ্ছে।বিশ্রাম নেয়ার পর আবার চলা শুরু করে। সূর্য যে আসলেই মোহাম্মদের ধারনা অনুযায়ী বিশ্রাম নেয় তার সুন্দর বর্ননা আছে নিু হাদিসেঃ
আবু দার থেকে বর্নিতঃ আল্লার রসুল একদিন সূর্যাস্তের সময় আমাকে জিজ্ঞেস করলেন- তুমি কি জান অস্ত যাওয়ার পর সূর্য কোথায় যায় ? আমি উত্তর দিলাম- আল্লাহ আর তার রসুল ভাল জানেন। তখন আল্লাহর রসুল বললেন- এটা চলতে থাকে যতক্ষন না আল্লাহর সিংহাসনের নীচে পৌছে। সেখানে সে সিজদা দেয় আর আল্লাহর কাছে পূনরায় উদিত হওয়ার অনুমতি চায়। যতক্ষন অনুমতি না দেয়া হয় ততক্ষন সে সেজদা দিতেই থাকে। পরে তাকে যেখানে সে উদিত হয়েছিল সেখানে ফিরে গিয়ে পূনরায় উদিত হওয়ার জন্য অনুমতি দেয়া হয়। বুখারী শরিফ, খন্ড-৪. বই-৫৪, হাদিস নং- ৪২১
তাহলে সূর্য সম্পর্কে আল্লাহ ও তার রসুলের জ্ঞানের বহরটা এবার ভালমত বুঝা গেল। সূর্য সারাদিন ভ্রমন শেষে ক্লান্ত হয়ে আল্লাহর সিংহাসনের নীচে হাজির হয়। তার মানে আল্লাহর সিংহাসন পৃথিবী থেকে খুব দুরে নয় কারন যেহেতু সূর্যকে আমরা দেখতে পারি বেশ বড় আকারে, পৃথিবী থেকে তার দুরত্ব মাত্র নয় কোটি ত্রিশ লক্ষ মাইল, সুতরাং ঠিক সেই দুরত্বে আল্লাহর সিংহাসন। তাহলে অদুর ভবিষ্যতে মানুষ রকেটে চড়ে আল্লাহর সকাশে গিয়ে তাদের নানারকম আব্দার অভিযোগ তার কাছে জানাতে পারবে। এ থেকে আল্লাহর সিংহাসনের আকার সম্পর্কেও একটা ধারনা পাওয়া গেল । সূর্যের আকার যেহেতু পৃথিবীর চেয়ে তের লক্ষ গুন বেশী বড়, সেহেতু আল্লাহর সিংহাসনের আকারও প্রায় সেই রকমই হবে। হয়ত সামান্য কম বেশী হতে পারে।
কোরান ও হাদিসে আল্লার এসব বানী পড়ে মনে হয়- সূর্য ও চাদের চলাচলের ব্যাপারে আল্লার( নাকি মোহাম্মদের ?) কোন জ্ঞানই ছিল না।কোরান উপরোক্ত সূরার বর্ননা মোতাবেক বলছে যে সূর্য স্থির নয় ও তা উদয় স্থলে উদিত হয়ে অস্ত স্থলের দিকে চলতে থাকে যা আজকের দিনে নিতান্তই হাস্যকর মনে হবে কারন আজকের দিনে একটা প্রাইমারি স্কুলের বাচ্চাও জানে সূর্য মোটেও চলাচল করে না , এক জায়গাতে স্থির হয়ে দাড়িয়ে থাকে আর পৃথিবী সূর্যের চারদিকে ঘুরছে।তার চেয়ে বড় বিস্ময়কর ব্যাপার হলো- কোরানের মাধ্যমে আল্লাহ আমাদেরকে সমতল পৃথিবীর সুন্দর বর্ননা একবার দুইবার নয়, বার বার বর্ননা করছেন। সে কারনে পৃথিবীর বর্ননা করতে গিয়ে তিনি বার বার বিছানা, বিস্তৃত, শয্যা ইত্যাদি শব্দ রূপক হিসাবে ব্যবহার করেছেন, ভুল করে একটা বারের জন্যও বলেন নি পৃথিবী হলো কমলালেবু বা আপেলের মত অথবা নিদেন পক্ষে গোলাকার। অথচ পৃথিবীর বর্ননায় সেটাই কিন্তু খুব জরুরী ছিল।বলা হবেই বা কি করে, সেই ১৪০০ বছর আগে তো কেউ সত্যিকার ভাবেই জানত না যে, পৃথিবী গোল, তখন তো মানুষ পৃথিবীকে সমতল হিসাবেই জানত। দুঃখের বিষয় হলো- আমাদের নবী মোহাম্মদও আল্লার কাছ থেকে পৃথিবীর আকার সম্পর্কে সঠিক ভাবে জেনে নিতে ব্যর্থ হয়েছেন যদিও বার বার তিনি একটি সমতল পৃথিবী সম্পর্কে অনেক সুন্দর বর্ননা দিয়েছেন বিভিন্ন সূরাতে। তা ছাড়া কোরানে বার বার সূর্য আর চাদের চলাচলের কথা বলা হয়েছে যা না বললেও চলত কারন সেই কাফের আরবরাও তা জানত আর তা জানার জন্য আল্লাহর বানী দরকার নেই। ভুল করে হলেও কোরানে একবার বলতে পারত যে পৃথিবী ঘোরে, তাহলেই আমরা যা বোঝার বুঝে নিতাম। বলা হয়নি তার কারনও কিন্তু খুব সোজা। তার কারন হলো- সেই চোদ্দ শ’ বছর আগে তো কেউ জানত না যে পৃথিবী সূর্যকে কেন্দ্র করে বিরামহীনভাবে ঘুরে মরছে। সুচতুর ইসলামী চিন্তুাবিদরা কিন্তু বলেন যে, কোরানে পৃথিবী যে স্থির বা ঘোরে না একথাও তো বলা হয়নি। তাহলে প্রশ্ন ওঠে- কেন বলা হয়নি? বার বার যেখানে সূর্য আর চাদের ঘোরাঘুরির কথা বলা হচ্ছে যা আসলে বলারই কোন দরকার ছিল না কারন আল্লাহর বানী ব্যতিরেকেই সবাই সেই প্রাগৈতিহাসিক কাল থেকেই তা দেখত ও জানত, সেখানে পৃথিবীর কথা বলা হবে না কেন? পৃথিবী সম্পর্কে কোরান কেন এত চুপ? অথচ পৃথিবী ঘোরার কথাটি বলাটা খুব জরুরী ছিল। কারন ওটাই সেকালে মানুষ জানত না।আসলে এর কারনও কিন্তু খুব সোজা। তা হলো- নবী মোহাম্মদ কেন, যে কোন আরবও কিন্তু সেকালে সাদা চোখেই দেখতে পেত সূর্য ও চাদের ঘোরা ঘুরি, কেউ তো পৃথিবীর ওপর দাড়িয়ে থেকে পৃথিবীর ঘোরা ঘুরি দেখতে পারে না। মহানবীও তা দেখতে পারেন নি, সেকারনেই কোরানে পৃথিবীর ঘোরাঘুরির কথা বলা নেই।সাদা চোখে চাদ-সূর্যের ঘোরাঘুরি দেখে তা কোরানে বর্ননা করাতে ধূর্ত ইসলামী চিন্তাবিদরা আহ্লাদে গদ গদ, কিন্তু পৃথিবীর ঘোরাঘুরির কথা কেন কোরানে নেই সে বিষয়ে তারা আশ্চর্য রকমভাবে চুপ। একটা সাদা মাটা প্রত্যক্ষ বর্ননা যে কত জটিল আর মহাবিজ্ঞানময় হতে পারে তার প্রকৃষ্ট উদাহরন সাম্প্রতিক কালে তথাকথিত ইসলামী স্কলার নামধারী কিছু ধান্ধাবাজদের ব্যাঙের মত লাফালাফি ।
সূর্য তাহার অবস্থিতি স্থানের জন্য চলিতেছে; ইহা মহাপরাক্রমশালী জ্ঞানীর নিরূপিত। এবং আমি চন্দ্রের জন্য বিরাম স্থান সমূহ নিরূপিত করিয়াছি। এমন কি সে জীর্ন খর্জুর শাখার ন্যায় পরিনত হয়। চন্দ্রকে প্রাপ্ত হওয়া সূর্যের জন্য সমীচিন নহে এবং রাত্রি দিবার অগ্রগামী নহে এবং প্রত্যেকটি কক্ষপথে সন্তরন করিতেছে।সূরা-৩৬:ইয়াসিন, আয়াত:৩৮-৪০
উপরের আয়াতে পরিষ্কার ভাবে বর্ননা করা আছে যে, সূর্য ও চন্দ্র তারা দিন বা রাতে পরিভ্রমন করে একটা বিশ্রাম স্থানে বা স্থান সমূহে উপস্থিৎ হয়। সূর্যের ক্ষেত্রে অবস্থিতি স্থান বুঝাতে এক বচন ব্যবহার করা হয়েছে কিন্তু চন্দ্রের ক্ষেত্রে বিরাম স্থান সমূহ বুঝাতে বহু বচন ব্যবহার করা হয়েছে। বিষয়টি কিন্তু খুবই অর্থপূর্ন। এর কারন হলো- সূর্য প্রতিদিন নির্দিষ্ট স্থান থেকেই উদিত হয় এবং নির্দিষ্ট স্থানেই অস্ত যায় যা যে কোন মুসলমান তো বটেই কাফির মুশরিকও দেখতে পায়। অস্ত যাওয়ার স্থান শুধুমাত্র একটি নির্দিষ্ট জায়গা হওয়াতে সূর্যের ক্ষেত্রে অবস্থিতি স্থান বা বিরাম স্থানকে এক বচন দ্বারা প্রকাশ করা হয়েছে। এর সোজা অর্থ হলো- সূর্য সারা দিন পরিভ্রমন শেষে বেশ ক্লান্ত হয়ে পড়ে, ফলে সে অস্ত যাওয়ার পর একটি নির্দিষ্ট স্থানে সারা রাত বিশ্রাম নেয়। পক্ষান্তরে, চন্দ্রের ক্ষেত্রে বিষয়টি ভিন্ন ও জটিল। কারন চাদ সব রাতে একই সময় একই স্থান থেকে আকাশে উদিত হয় না। প্রতি রাতেই তার উদয় স্থানের পরিবর্তন ঘটে। তার মানে চন্দ্র যখন বিশ্রাম নেয়ার জন্য অস্ত যায়, তার অস্ত যাওয়ার অবস্থান প্রতিদিন পাল্টে যায়, অর্থাৎ তার বিশ্রাম স্থান অনেক সংখ্যক। ঠিক সে কারনেই সূর্যের বিরাম স্থান এক বচন ও চন্দ্রের বিরাম স্থান বহু বচনে প্রকাশ করা হয়েছে। আবারও বলা হচ্ছে- সূর্য সারা দিন পরিভ্রমন শেষে বিশ্রাম নেয়। পূর্বে এ সম্পর্কিত নবীর একটি হাদিসও উল্লেখ করা হয়েছে। চন্দ্রও কি রাতের বেলায় ভ্রমন শেষে বিশ্রাম নেয়? কোরান কিন্তু সেরকম কথাই বলছে যা কিনা সর্বজ্ঞানী আল্লার বানী। উপরোক্ত সূরায় আরও বলা হয়েছে- চন্দ্রকে প্রাপ্ত হওয়া সূর্যের জন্য সমীচিন নহে এবং রাত্রি দিবার অগ্রগামী নহে এবং প্রত্যেকটি কক্ষপথে সন্তরন করিতেছে-মনে হতে পারে এ বক্তব্য দিয়ে কোরান মহাবৈজ্ঞানিক কোন বর্ননা দিয়ে ফেলেছে। কিন্তু একটু গভীর ভাবে চিন্তা করলেই কিন্তু বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যাবে। দুনিয়ায় এত কিছু থাকতে হঠাৎ সূর্য দ্বারা চন্দ্রকে প্রাপ্ত হওয়ার কথা বলতে গেল কেন? এর কারন হলো-আমরা জানি সূর্য গ্রহনের সময় চাদের ছায়া পৃথিবীর ওপর পড়লে কিছুক্ষনের জন্য সূর্য চাদের আড়ালে ঢাকা পড়ে যায় ও পৃথিবীর কিছু অংশ আবছা অন্ধকারে আচ্ছন্ন হয়ে যায়। সাদা চোখে বিষয়টাকে এমন মনে হয় যে, সূর্য যেন চাদকে গ্রাস করল বা প্রাপ্ত হলো। তো এই ঘটনা সেই ১৪০০ বছর আগে আরব দেশেও মাঝে মাঝে ঘটত যখন পূর্ন সূর্যগ্রহন হতো, মূর্খ আরবরা এর কোন কারন জানত না। কিন্তু এ ধরনের ঘটনা দেখে তারা ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ত, নানা রকম অমঙ্গলের আশংকা করত।আল্লাহর নবী মোহাম্মদ দুনিয়াতে আসার পর, আরবরা হাফ ছেড়ে বাচল, কারন আল্লাহর নবী নিজে অনেক কিছু জানেন, যা জানেন না তা তিনি আল্লাহর কাছ থেকে জেনে নেন। তারা নবীর কাছে এ ঘটনার কারন জানতে চাইল। তো নবী একটু সময় নিলেন আল্লাহর কাছ থেকে ঘটনাটার কারন জেনে নেয়ার জন্য কারন তিনি নিজে এর কারন জানতেন না। ফলাফল- উপরোক্ত সূরা নাজিল হলো। অর্থাৎ আল্লার কোন অভিপ্রায় নেই যে সূর্য চাদকে গ্রাস করে ফেলবে, এবং এটাই আল্লাহর অলৌকিক ঘটনার এক অন্যতম নিদর্শন। অথচ আল্লাহ কিন্তু ও ধরনের অবান্তর কথা না বলে অতি সরল ভাবেই বলতে পারত যে- সূর্য চাদ থেকে অনেক দুরে অবস্থান করছে, চাদ ঘুরতে ঘুরতে মাঝে মাঝে পৃথিবী ও সূর্যের মাঝখানে এসে পড়ে ফলে চাদের আড়ালে কিছুক্ষন ঢাকা পড়ে যায় সূর্য- এতে ভয়ের কোন কারন নেই। ভনিতা করে বলার কোন দরকারই ছিল না যে- চন্দ্রকে প্রাপ্ত হওয়া সূর্যের জন্য সমীচিন নহে। কিন্তু উপরোক্ত সূরাতে এ কথা বলে আরও একটা স্ববিরোধের জন্ম দিয়েছে। তা হলো- কোরানে বর্ননা মতে পৃথিবী থেকে চাদ ও সূর্য সম দুরত্বে অবস্থিত এবং একই কক্ষপথে অবস্থান করে ঘুরছে, তাই স্বাভাবিকভাবে ঘুরতে ঘুরতে তারা মাঝে মাঝে একে অন্যের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হবে, কিন্তু আমরা পৃথিবী থেকে সে ধরনের কোন সংঘর্ষ দেখতে পাই না। বরং দেখি সূর্য কিছুক্ষন চাদকে গিলে ফেলে পরে মুক্তি দেয়। কিছুক্ষন পর সূর্য চাদকে ছেড়ে দেয় বা মুক্তি দেয় কারন তা আল্লাহর অভিপ্রায় অনুযায়ী সমীচিন নয়। ঠিক সে বিষয়টাই অত্যন্ত সহজ সরল ভাবে বর্ননা করা হয়েছে ঐশি কিতাব কোরানে।
রাত্রি দিবার অগ্রগামী নহে- কথাটির অর্থও কিন্তু কৌতুহলোদ্দীপক। পৃথিবীকে যদি সমতল মনে করা হয় ও পূর্ব দিকে যদি সূর্য উদিত হয় তাহলেই এ বক্তব্যের একটা গভীর অর্থ প্রকাশ হয়ে পড়ে। উদিত হওয়ার পর সারা দিন সূর্য পরিভ্রমন করে রাতে সে বিশ্রাম নেয় অর্থাৎ প্রথমে দিন ও পরে রাত আসে।কিন্তু পরদিন সকালে তাকে যদি আবার হুট করে পূর্ব দিকে উদিত হতে হয়,তাহলে তাকে আল্লার অশেষ রহমত ছাড়া তার পক্ষে আকাশ পরিভ্রমন না করে আবার পূর্বদিকে গিয়ে উদয় হওয়া সম্ভব নয়। অবস্থিতি স্থান বা নির্দিষ্ট সময় পরিভ্রমনের কথা (কারন দেখা যাচেছ ইদানিং কোরানের অনুবাদকরা তাদের ইচ্ছে মত বা সুবিধা মত অর্থ করে কোরানকে অনুবাদ করছেন, উদ্দেশ্য পরিস্কার-যাতে করে সম্ভাব্য স্ববিরোধিতা এড়ানো যায়, কিন্তু তাতে করেও কোন কাজ হচ্ছে না) খুব স্পষ্ট ভাবে ব’লে কিন্তু সূর্যের জন্য পৃথিবীর নীচ দিয়ে ঘুরে আসার রাস্তাও বন্দ করে দেয়া হয়েছে। সূর্য যদি পৃথিবীর তল দিয়ে ঘুরে আসত তাহলে সূর্যের কোন অবস্থিতি স্থান বা নির্দিষ্ট সময় পরিভ্রমন ব্যাপারটা অর্থহীন হয়ে যায়। তাই কোরানে দিনকে প্রথম ও রাত্রিকে তার পশ্চাদগামী মনে করা হয়েছে। রাত্রি দিবার অগ্রগামী নহে বাক্যটি দিয়ে সে কথাই বুঝানো হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে কি তাই? পৃথিবী একটি গোলাকার পিন্ড, তা নিজের ওপর ঘোরে বলেই দিন রাত হয়, তাই কোথাও যখন দিন , তার বিপরীত পাশে তখন রাত, ২৪ ঘন্টায় পৃথিবী তার নিজ একবার পাক খায়, তাই এই ২৪ ঘন্টার প্রতিটি মুহুর্তে কোথাও দিন হলে তার বিপরীত পৃষ্ঠে রাত। পুরো পৃথিবীতে একসাথে কখনো শুধুমাত্র দিন বা রাত হয় না। পৃথিবীর অবস্থাকে দিন আর রাত দিয়ে ভাগ করা যায় না কিছুতেই। সুতরাং রাত কখনই দিনের অনুগামী বা অগ্রগামী নয়, তেমনি দিনও রাতের অনুগামী বা অগ্রগামী নয়।
তিনি তোমাদের জন্য পৃথিবীকে শয্যা করেছেন এবং তাতে চলার পথ করেছেন, আকাশ থেকে বৃষ্টি বর্ষন করেছেন এবং তা দ্বারা আমি বিভিন্ন উদ্ভিদ উৎপন্ন করেছি। সূরা-২০:ত্বোয়াহা, আয়াত:৫৩
যিনি তোমাদের জন্য পৃথিবীকে করেছেন বিছানা এবং তাতে তোমাদের জন্য করেছেন পথ যাতে তোমরা গন্তব্য স্থলে পৌছতে পার। সূরা-৪৩:যুখরুফ, আয়াত:১০
আমি ভূমিকে বিছিয়েছি। আমি কত সুন্দরভাবেই না বিছাতে সক্ষম। সূরা-৫১:আয-যাজিরাত, আয়াত:৪৮
যে দিন আমি পর্বতসমূহকে পরিচালনা করব এবং আপনি পৃথিবীকে দেখবেন একটি উন্মুক্ত প্রান্তর এবং আমি মানুষকে একত্রিত করব অতঃপর তাদের কাউকে ছাড়ব না। সূরা-১৮:কাহফ, আয়াত:৪৭
আর তোমার কাছে পাহাড়গুলি সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করিতেছে। অতএব তুমি ইহাদিগকে বল যে, আমার প্রভূ ঐগুলিকে ধূলা করিয়া চতুর্দিকে উড়াইয়া দিবেন। এবং ভূমিকে সমতল ময়দান করিয়া ছাড়িবেন। তখন না তো তুমি উহাকে কোথাও বক্রতা দেখিবে আর না উচ্চ-নীচ দেখিবে। সূরা-২০:ত্বা-হা, আয়াত:১০৫-১০৭
এখানে একের পর এক সূরাতে সেই সমতল পৃথিবীর সুন্দর বর্ননা, কারন পৃথিবী এখানে শয্যা, বিছানা ইত্যাদির মত। সমতল পৃথিবীর ব্যপারে কেউ যাতে সন্দেহ পোষন না করতে পারে সেজন্যেই বলছেন- আমি কত সুন্দরভাবেই না বিছাতে সক্ষম । তাছাড়া এমন এক দিন আসবে যখন আল্লাহ সব পাহাড় পর্বতকে সরিয়ে দিয়ে পৃথিবীকে সত্যিকার একটা সুসম সমতল হিসাবে গড়ে তুলবেন। পাহাড় পর্বত থাকাতেই না পৃথিবী সব জায়গাতে সমতল নয়। তাই তো আল্লাহ একদিন পর্বত সমূহকে পরিচালনা করে বা তাদেরকে ধুলায় পরিনত করে একটা উন্মুক্ত প্রান্তরের মত তৈরী করবেন যাতে যমীন বা পৃথিবী সুষম সমতল ভুমিতে পরিনত হয়।তবে তার চেয়েও অদ্ভুত বিষয় হলো- অন্য অনেক কিছুর সাথে আল্লাহ পৃথিবীতে চলার জন্য পথ-ঘাটও তৈরী করেছেন। গাছ-পালা, পাহাড়-পর্বত না হয় আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন বোঝা গেল, তাই বলে পথ-ঘাট ও ? নবী মোহাম্মদ ভীষণ কল্পনা শক্তির অধিকারী ছিলেন বলাই বাহুল্য। কিন্তু সেই কল্পনাও যে সব সময় খাপে খাপে মিলে যাবে এমন নাও হতে পারে, তারই একটা উজ্জ্বল নমুনা এই আল্লাহর পথ ঘাট সৃষ্টির ব্যপারটা। নবী মোহাম্মদ ইতিহাস আর ভুগোল বিষয়ে যে খুব বেশী জানার সুযোগ পান নি তা তো আমরা সবাই জানি, সম্ভবতঃ একারনেই তিনি কল্পনা করে ফেলেছেন যে আল্লাহ পথ-ঘাটও দুনিয়াতে সৃষ্টি করে রেখে গেছেন। তিনি বিশ্বাসই করতে পারেননি যে, পৃথিবীতে সেই চোদ্দ শ’ বছর আগে সেসব রাস্তাঘাট ছিল তা মানুষ তৈরী করতে পারে। অবশ্য তিনি যেখানে বসবাস করতেন সে প্রেক্ষাপট চিন্তা করলে এর কারন বোঝা খুবই সোজা। তা হলো- তার বাসস্থান মক্কা ও মদিনা হলো মরুভুমির মাঝে একটা খুব ছোট যায়গা সেখানে কোন রাস্তা ঘাটই ছিল না অর্থাৎ মরুভুমির মধ্যে কোন রাস্তা ঘাট ছিল না।আরবরা মরুভূমির মধ্য দিয়ে উটের পিঠে চড়ে এদিক ওদিক যেত। তো বানিজ্য উপলক্ষ্যে নবী যুবক বয়সে বেশ কয়বার তিনি সিরিয়ায় ভ্রমন করেছিলেন। সিরিয়া ও অন্যান্য অঞ্চল বলা বাহুল্য মরুভুমির মক্কার চাইতে অনেক বেশী উন্নত ছিল , সেখানে মানুষের চলাচলের জন্য চওড়া রাস্তা ঘাট ছিল। নবী মোহাম্মদ বিশ্বাসই করতে পারেননি যে সে সব রাস্তাঘাট মানুষই তাদের প্রয়োজনে তৈরী করেছিল বা করতে পেরেছিল।
আমি আকাশ মন্ডলীকে সুরক্ষিত ছাদ করেছি, অথচ তারা আমার আকাশস্থ নির্দেশাবলী থেকে মুখ ফিরিয়ে রাখে। সূরা-২১: আম্বিয়া, আয়াত:৩২
তারা কি তাদের সামনের ও পশ্চাতের আকাশ ও পৃথিবীর প্রতি লক্ষ্য করে না? আমি ইচ্ছা করলে ভূমিসহ তাদের ধ্বসিয়ে দেব অথবা আকাশের কোন খন্ড তাদের ওপর পতিত করব। সূরা-৩৪: আল-সাবা, আয়াত:৯
উপরোক্ত সূরা পড়ার পর কি আর কোন সন্দেহ থাকে যে, আল্লাহ আকাশমন্ডলী (সাত আসমান বা আকাশ) কে কঠিন পদার্থ দিয়ে পৃথিবীর ছাদের মত তৈরী করেছেন? সুরক্ষিত ছাদ বলতে বোঝাচ্
১০| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:৩০
রুপবান বলেছেন: Click This Link
১১| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ ভোর ৫:১৪
রুপবান বলেছেন: মজার একটা গল্প বলি, শুনেন। সাত গ্রামের অতি জ্ঞানি! লুক(লোক) কুদ্দুস আলী হটাত ঘোষণা দিলেন- "এখন থিক্কা তোমরা কোন বে-পর্দা মাইয়্যা দেখলে গায়ে হাত দিবা"। তো, এই কথা শুনে একালার ময়মুরুব্বি সবাই হতবাক। গ্রামে ছি, ছি রব পরে গেল। অবস্হা বেগতিক দেখে কুদ্দুসের সাঙ্গপাঙ্গ ওনার কথার নতুন
১২| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ৮:১৪
রুপবান বলেছেন: জনাব শাহবাজ নজরুল,
মজার একটা গল্প বলি, শুনেন। সাত গ্রামের অতি জ্ঞানি! লুক(লোক) কুদ্দুস আলী হটাত ফাতোয়া দিলেন- "এখন থিক্কা তোমরা কোন বে-পর্দা মাইয়্যা দেখলে গায়ে হাত দিবা"। তো, এই কথা শুনে একালার ময়মুরুব্বি সবাই হতবাক। গ্রামে ছি, ছি রব পরে গেল। অবস্হা বেগতিক দেখে কুদ্দুসের সাঙ্গপাঙ্গরা ওনার ফাতোয়ার সাথে নতুন তাফসির যোগ করে গ্রামের লোকদের বুঝালেন- আরে ভাই, উনি আসলে খারাপ কিছু মিন করেন্নি! আমাদের কুদ্দুস ভাই অতি বিদ্যান মামুষ, উনি আরবী ছাড়া অন্য ভাষায় কথা বলেন্না, উনি কি বলেছেন! আর আপনারা কি বুঝেছেন!! ঐ যে, আমরা বলিনা- অসুস্থ রোগিকে "গায়ে হাত দিয়ে" সেবা কর। উনি আসলে ঐ ধরনের কিছু একটা বুঝাইতে চাহিয়াছেন। আর সেই যাত্রায় কুদ্দুস আলী প্রানে বেঁচে গেলেন।
তো ভাই, আপনার জন্য আক্ষেপ। আল্লাপাক নিজ হাতে ৩০ পারা কোরান রচনা করে কোথাও পরিস্কার করে বলতে পারলেন্না- "পৃথিবী নামক বস্তুটি সমতল নয়, উহা আসলে গোলাকার এবং পৃথিবী তার নিজ অক্ষ এবং কক্ষপথে চড়কির মত আবিরাম ঘুড়ছে"। যে কারনে আল কোরানের গোলাকার(?) পৃথিবীর বৈজ্ঞানিক(?) বয়ান অনুধাবন করার জন্য আপনাদের মত তাফসিরকারী দরকার হয়।
অথচ তাজ্জবের বিষয়- অবিশ্বাসীদের কি ভাবে হাবিয়া দোজখের আগুনে পুড়িয়ে/পুড়িয়ে হাড্ডি-মাংসের শিক কাবাব বানানো হবে তার রেসেপি কিন্তু আল কোরানে আল্লাহপাক অত্যন্ত সহজ-সরল-প্রাঞ্জল ভাষায় বয়ান করেছেন। যা একবার পড়লেই ভয়ে শরীরে কাঁপানি জ্বর উঠে।
ধন্যবাদ।
আল কোরানে বারবার সুর্যের ঘুর্ননের কথা বলা হয়েছে, কিন্তু পৃথিবীর ঘুর্ননের কথা বলা হয় নি।
সান- ৩৩ বার, পৃথিবী- 115
১৩| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:০০
রুপবান বলেছেন: From the Hadith:
Bukhari (72:715) - A woman came to Muhammad and begged her to stop her husband from beating her. Her skin was bruised so badly that she it is described as being "greener" than the green veil she was wearing. Muhammad did not admonish her husband, but instead ordered her to return to him and submit to his sexual desires.
Bukhari (72:715) - "Aisha said, 'I have not seen any woman suffering as much as the believing women'" This is Muhammad's own wife complaining of the abuse that the women of her religions suffer relative to other women.
Muslim (4:2127) - Muhammad struck his favorite wife, Aisha, in the chest one evening when she left the house without his permission. Aisha narrates, "He struck me on the chest which caused me pain."
Muslim (9:3506) - Muhammad's father-in-laws (Abu Bakr and Umar) amused him by slapping his wives (Aisha and Hafsa) for annoying him. According to the Hadith, the prophet of Islam laughed upon hearing this.
Abu Dawud (2141) - "Iyas bin ‘Abd Allah bin Abi Dhubab reported the Apostle of Allah (may peace be upon him) as saying: Do not beat Allah’s handmaidens, but when ‘Umar came to the Apostle of Allah (may peace be upon him) and said: Women have become emboldened towards their husbands, he (the Prophet) gave permission to beat them." At first, Muhammad forbade men from beating their wives, but he rescinded this once it was reported that women were becoming emboldened toward their husbands. Beatings are sometimes necessary to keep women in their place.
Abu Dawud (2142) - "The Prophet (peace be upon him) said: A man will not be asked as to why he beat his wife."
Abu Dawud (2126) - "A man from the Ansar called Basrah said: 'I married a virgin woman in her veil. When I entered upon her, I found her pregnant. (I mentioned this to the Prophet).' The Prophet (peace_be_upon_him) said: 'She will get the dower, for you made her vagina lawful for you. The child will be your slave. When she has begotten (a child), flog her'" A Muslim man thinks his is getting a virgin, then finds out she is pregnant. Muhammad tells him to treat the woman as a sex slave and then flog her after she has delivered the child.
Ibn Ishaq/Hisham 969 - Requires that a married woman be "put in a separate room and beaten lightly" if she "act in a sexual manner toward others." According to the Hadith, this can be for an offense as petty as merely being alone with a man to whom she is not related.
Kash-shaf (the revealer) of al-Zamkhshari (Vol. 1, p. 525) - [Muhammad said] "Hang up your scourge where your wife can see it"
১৪| ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:২৫
রুপবান বলেছেন: Bukhari yol 3,Book46, No. 717
"Narrated Ibn Aun:
Prophet had suddenly attacked Banu Mustaliq without warning while they were heedless and their cattle were being watered at the places of water. Their fighting men were killed and their women and children were taken as captives; the Prophet got Juwairiya on that day and raped her.
১৫| ০৩ রা অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:৩২
রুপবান বলেছেন: আপনার উক্ত বক্তব্য দ্বারা কিন্তু প্রমানিত হলো না যে ইসলাম শান্তির ধর্ম। গায়ের জোরে উচ্চস্বরে চিৎকার করে যদি বলেন – ইসলাম শান্তির ধর্ম, তাহলে কি সেটা শান্তির ধর্ম হয়ে যাবে ? আপনার ভাব সাব দেখে তো তাই মনে হচ্ছে। ইসলাম প্রচারের পরও দাস প্রথা বহাল তবিয়তে ছিল তাদের কষ্টের কোন কমতি ঘটে নি। নবি কিছু দাসকে প্রথম দিকে মুক্ত করতে বলতেন কারন তারা মুক্ত হয়ে ইসলাম কবুল করত , যা মুসলমানদের সংখ্যা কিছু হলেও বাড়ত। কিন্তু যখন মুসলমানদের সংখ্যা বেশ বৃদ্ধি পায় তখন দাস মুক্তির এ মহানুভবতা বাদ হয়ে যায়। ইসলাম প্রচারে বিফল হয়ে নবি মক্কা ত্যাগ করে মদিনাতে হিজরত করেন আর সেখানে তার ও তার সাহাবিদের বেচে থাকার জন্য প্রধান পেশা হয় মদিনার পাশ দিয়ে চলে যাওয়া কুরাইশদের বানিজ্য কাফেলা আক্রমন করে তাদের ধন সম্পদ লুন্ঠন করা ও তা অত:পর গণিমতের মাল হিসাবে ভাগাভাগি করা যাকে সোজা কথায় ডাকাতি করা বলে। দুনিয়াতে কুরানই একমাত্র কিতাব যাতে ডাকাতিকে একটা মহান পেশা হিসাবে স্বীকৃতি দেযা হয়। কি মহান আল্লাহ , সে তার বিশ্বাসীদেরকে বলছে- তোমরা ডাকাতি কর, কারন সেটা হলো মহান পেশা। হায় রে যাই কোথায় ! যারা প্রাথমিক দিকে মক্কায় ইসলাম গ্রহণ করেছিল তাদেরকে কুরাইশরা যে সত্যি সত্যি অত্যাচার করে হত্যা করত এমন নজির দু একটা দেখালে সেটা ভাল হতো। এমন কি নবিকেও যে কুরাইশরা কঠিন অত্যাচার নির্যাতন করত এমন নজির দেখানো যাবে ? একটা হাদিসে আছে একবার নবি কাবা ঘরের মধ্যে বসেছিলেন তখন এক লোক উটের নাড়ি ভুড়ি তার গায়ের ওপর ঢেলে দিয়েছিল। এ ছাড়া নবীকে প্রকৃতই কুরাইশরা খুব অত্যাচার করেছে এমন কাহিনী কোথায় লেখা আছে ? কুরাইশদের কোন দাস ইসলাম গ্রহন করলে তারা তাদেরকে মাঝে মাঝে নির্যাতন করত কিন্তু কেন ? কারন তারা কাজ ফাকি দিয়ে ইসলাম পালন করে সময় নস্ট করত। সেকারনে। তো কাজ ফাকি দিলে মনিবরা কি দাসদেরকে চুম্বন করবে ? ইসলাম তার গত ১৪০০ বছরের ইতিহাসে কোথাও প্রকৃত পক্ষে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারে নি। ইসলাম যেখানেই গেছে সেখানে গণহত্যা , ধর্ষন , ডাকাতি , লুট পাট করে বহু জনপদ ধ্বংস করে দিয়েছে, ধবংস করে দিয়েছে অনেক উচু মানের সভ্যাতা ও সংস্কৃতি। যেমন – মিশর , ইরান , সিরিয়া , ইরাক ইত্যাদি দেশ। ভারতীয় উপমহাদেশে ইসলাম প্রবেশ করে এখানকার উন্নত মানের সভ্যতা ও সংস্কৃতিও ধ্বংস করে দিয়েছে আর মানুষের মধ্যে সৃষ্টি করেছে চরম শত্রুতা যার জের ধরে আজও ভারতে মানুষ প্রতি বছর দাঙ্গা বাধায়। বর্তমানে ইসলাম সারা দুনিয়ার জন্য এক চরম বর্বর ধর্ম হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে , মানুষ ইসলাম আর মুসলমানের নাম শুনলে ভয়ে আতকে ওঠে। টুপি ও দাড়িওয়ালা মানুষ দেখলে মানুষ ভয় পায়, না জানি কোন বোমা বা অন্য কিছু তার সাথে আাছে কি না। ইসলাম ও সন্ত্রাস বর্তমানে সমার্থক হিসাবে সারা দুনিয়াতে পরিচিত হয়েছে। সেই প্রাথমিক যুগেও ইসলাম ছিল এক সন্ত্রাসের নাম । ধর্ম হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হলেও এটা ছিল আসলে ক্ষমতা দখলের এক আদর্শ। যে কারনে সেই খোলাফায়ে রাশেদিনের যুগেও খোদ তিন জন খলিফা অত্যন্ত অপমানজনক ভাবে মুসলমানদের হাতে খুন হয়েছে। হযরত আলী তার শ্বাশুড়ি নবির প্রিয়তমা স্ত্রী আয়েশার সাথে যুদ্ধ করেছে আর তাতে মারা গেছে দশ হাজার মুসলমান , যাদের অধিকাংশই খোদ নবির সাহচর্য পেয়েছে। আলীর সাথে ওমর বা ওসমানের শত্রুতা ছিল সর্বজন বিদিত। আলী একবার তার শ্বশুর নবির সম্পদ ফিরিয়ে নিতে আবু বকরের কাছে গেলে আবু বকর তাকে ফিরিয়ে দেয় যার ফলে আলী ও ফাতিমা উভয়েই আবু বকরকে প্রচন্ড ঘৃনা করতে থাকে। এসব কাহিনী লিপিবদ্ধ আছে সহি হাদিস যথা বুখারি ও মুসলিমে। অথচ এই আবু বকর , ওমর, ওসমান ও আলীর চরিত্র ও আদর্শকে ইসলামে সবচাইতে বড় আদর্শ হিসাবে গণ্য করা হয়। মনে হয় এজন্যেই বর্তমানকার জামাত ইসলাম , তালেবান বা জে এম বি এর অনুসারীদের চরিত্র এত রুক্ষ কর্ক শ ও নিষ্ঠুর। সুতরাং ইসলামকে শান্তির ধর্ম বলা বর্তমানে সবচাইতে মারাত্মক কৌতুকে পরিনত হয়েছে। দুনিয়াতে এটাই সবচাইতে মারাত্মক কৌতুক এখন।
১৬| ১২ ই অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ৮:৩৬
১৭| ১৩ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ২:৪১
রুপবান বলেছেন: (আপনি কোরান-হাদীসের কোন রেফারেন্স দেন্নি, তাই মনের মাধুরীর মিশাল ঘটেছে কিনা জানা নেই)
[u]দেখা যাক কোরানে আসলে কি লেখা আছে?[/u]
[b]সুরা ৫:৫১ ;[/b] [i]"হে মুমিণগণ! [b]তোমরা ইহুদী ও খ্রীষ্টানদেরকে বন্ধু হিসাবে গ্রহণ করো না।[/b] তারা একে অপরের বন্ধু। তোমাদের মধ্যে যে তাদের সাথে বন্ধুত্ব করবে, সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ জালেমদেরকে পথ প্রদর্শন করেন না।"[/i]
[b]সুরা ৪:৮৯ ;[/b][i]"তারা চায় যে, তারা যেমন কাফের, তোমরাও তেমনি কাফের হয়ে যাও, যাতে তোমরা এবং তারা সব সমান হয়ে যাও। অতএব, তাদের মধ্যে কাউকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না, যে পর্যন্ত না তারা আল্লাহর পথে হিজরত করে চলে আসে। [b]অতঃপর যদি তারা বিমুখ হয়, তবে তাদেরকে পাকড়াও কর এবং যেখানে পাও হত্যা কর।[/b] তাদের মধ্যে কাউকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না এবং সাহায্যকারী বানিও না।"[/i]
আরো দেখুন ৫:৮০, ৩:২৮, ৩:১১৮, ৯:২৩, ৫৩:২৯, ৩:৮৫, ৩:১০, ৭:৪৪,
দিনে কতবার নীচের এ আয়াততগুলো মুসলিমরা উচ্চার করে ভেবে দেখেছেন কি? [b]সুরা ; ১:৫-৭ [/b]
[u]Shahi Bukhari ; Volume 1, Book 12, Number 749:[/u]
[i]Narrated Abu Huraira: Allah's Apostle said, "Say Amen' when the Imam says [b]"Ghair-il-maghdubi 'alaihim wala-ddal-lin;[/b] not the path of those who earn Your Anger (such as Jews) nor of those who go astray (such as Christians); all the past sins of the person whose saying (of Amin) coincides with that of the angels, will be forgiven. [/i]
[b]এবার দেখা যাক হাদীস কি বলে :[/b]
[i]Muslim (1:417) - Taken to mean that one's own relatives should not be taken as friends if they are not Muslim.[/i]
আরো দেখুন : Abu Dawud (41:4815), Abu Dawud (41:4832), Bukhari (59:572), Ishaq 262, Ishaq 252 ..........
১৮| ০১ লা মে, ২০১৬ দুপুর ১২:১২
দেবজ্যোতিকাজল বলেছেন: অনেককিছু জানলাম
©somewhere in net ltd.
১|
১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ ভোর ৬:২৩
রুপবান বলেছেন: আবারো মুনিম ভাইয়ের সাথে বিতর্ক। আসলে সদালাপ ব্লগে অন্যদের তুলনায় আপনাকে রিজোনেবল মনে হয়, এজন্য প্রথমেই ধন্যবাদ আপনাকে।
দেখুন- বিজ্ঞানে কার কি অবদান তা জ্ঞানি লোকেরা এমনিতেই বুঝতে পারে। বুদ্ধিমানের বিদ্যার দৌড় এতটা অল্প-ভয়ংকর-তাছ্ছিল্ল না যে বিজ্ঞানের কথা উঠলেই মরিশ বুকলি আর মুসলমানদের পিছে দৌড়াবে? যে কারনে পুরো “ইসলামী বিজ্ঞান” বিষয়ে পাকিস্তানী নোবেলপ্রাপ্ত পদার্থবিজ্ঞানী ডঃ আব্দুস সালাম লিখেছেন : "কেবলমাত্র একটি সার্বজনীন বিজ্ঞান রয়েছে- বৈজ্ঞানিক সমস্যা এবং পন্থাগুলো সবই আন্তর্জাতিক ও সার্বজনীন। যেহেতু হিন্দু বিজ্ঞান, ইহুদী বিজ্ঞান, কনফুসিয়াস বিজ্ঞান ও খ্রীষ্টান বিজ্ঞান বলে কিছু নেই সেহেতু ইসলামিক বিজ্ঞান বলেও কিছু নেই।"
তারপরও আপনি যে ভাবে চায়ের ছাকনি নিয়ে বিখ্যাত-অগ্যাত-অক্ষাত সব মুসলিম বিজ্ঞানীদের তুলে এনে বিজ্ঞানের ঢোল মারছেন তাতে দুই কথা বলতেই হয়। জ্ঞান অর্জন বিষয়ে যারা মোহাম্মদের তরিকার নামগন্ধও শুনেনি তারাও যে মাহা বিজ্ঞানী হতে পারে সে বিষয়টি আপনাকে প্রথমেই স্মরন করিয়ে দিতে চাই। দ্বীনের নবী মোহাম্মদ সম্ভবত নিজেও সে সময়ে চীনের জ্ঞান বিজ্ঞানের কথা জানতেন, যে কারনে তিনি তার উম্মতকে সুদুর চীনদেশে যেয়ে জ্ঞান অর্জনের উপদেশ দিয়েছেন। সুতরাং বিজ্ঞানে কে কার জনক এ সরল সত্যটি আপনার নবী স্বয়ং বুঝতে পারলেও দুঃখজনক ভাবে আপনি তা বুঝতে পারেন্নি, আক্ষেপ। যদি বুঝতেন তা হলে আল জাবিরকে তাবত রসায়ন শাস্ত্রের জনক দাবি করতেন্না।
১। যেনে রাখা ভাল- প্রাক মধ্য-আধুনিক যুগের রসায়ন শাস্ত্রের জনক হছ্ছেন Antoine Lavoisier, Jan Baptist এবং Robert Boyle.................. এ নাম গুলো মনে রাখবেন আশা করি। তারও আগে প্রাচিন Chemistry বিষয়ে জানতে হলে আপনাকে পুরো লৌহ-যুগ খতিয়ে দেখতে হবে। প্রাচিন গ্রিক, মেডোভেল চায়না, ইন্ডিয়া এবং জাপান রসায়ন শাস্ত্রের উদ্ভাবক। blast furnace, cast iron, hydraulic-powered trip hammers, এবং double acting piston সে সময় আবিস্কার হয়। ৩৪০ বিসিতে সর্বপ্রথম গ্রিক বিজ্ঞানি Leucippus অজৈব বস্তুর সুক্ষ অনুর(এটম) ধারনা প্রদান করেন। এবং একই বিষয়ে একই ধারনা দিয়েছেন সমসাময়িক ভারতীয় বিজ্ঞানী কানাদা তার বিশেষ শিক্ষা সূত্রে(Vaisheshika sutras)। আর সে যুগে চীনের Confucian বিজ্ঞান যুগের ধারাবাহিকতায় রসায়ন শাস্ত্রের কথা বলে আপনাকে লজ্জা দিতে চাই না।
২। দেখুন- চিকিৎসা, গনিত, ভূগল, হাড্রলিকস, কম্পাস,ম্যাপ, অনু, পরামাণু, নিউক্লিয়ার, স্পেস................. এসব নিয়ে গ্রিক-ইউরোপিয়ান বিজ্ঞান-আবিস্কারের কথা বলতে চাই না। কারন ১৯-২০ এ বিতর্ক হতে পারে, কিন্তু মুসলমানদের শুন্য(o)'র সাথে ইউরোপিয়ানদের ২০ এর তর্ক কারা মানে বিজ্ঞানকে লজ্জা দেয়া। আমি বরং সমসাময়িক চীন-ভারতের কথাই বলি। চীনের হাং ডাইনিষ্টি, সং ডাইনিষ্টি...... যুগ এবং পরবর্তি China's scientific revolution ব্লগের স্বল্প পরিসরে লেখে শেষ করা যাবে না। আপনি গুগল থেকে তা যাচাই করে নিয়েন( Click This Link)
একই অসস্থা সমসাময়িক ভারতে ( Click This Link )
আপনি যে ভাবে অখ্যাত-বিখ্যাত মুসলিম বিজ্ঞানীদের ছেকে তুলেছেন, সৎসাহস থাকলে আমার দেয়া লিংক থেকেও তা তুলে এনে অপকটে তা প্রকাশ করবেন আশা করি। লজ্জা পাবেন্না, এটি মুসলিম-অমুসলিম বিতর্ক না, এটি আসলে বিজ্ঞান।
সবশেষে মরিশ বুকুলি নিয়ে কিছু বলতেই হয়। আসলে নিঃবুদ্ধ মুসলমানরা সৌদি আরবের টাকায় আল কোরানের তথাকথিত বিজ্ঞান(!) কে এমন হাস্যকর এবং নেক্কার জনক ভাবে তুলে ধরেছে তাতে কোরানের প্রতি বিশ্ব ফোরামের যে সামান্য শ্রদ্ধা ছিল, এখন তার আর অবশিষ্ট কিছু নেই।
একটি মাত্র উদাহরন দিছ্ছি ;
Sahih International
And after that He spread the earth.
Muhsin Khan
And after that He spread the earth;
Pickthall
And after that He spread the earth,
Yusuf Ali
And the earth, moreover, hath He extended (to a wide expanse);
Shakir
And the earth, He expanded it after that.
Dr. Ghali
And the earth, after that He flattened it (for life).
যার শুদ্ধ বাংলা : পৃথিবীকে এর পরে বিস্তৃত করেছেন।
এখানে অস্টৃচ পাখির ডিম্ব আকৃতির কথা ঠিক কোথায় বলা হচ্ছে? নাকি এই ৭/৮ জন পন্ডিত সবাই ভুল বুঝেছেন?? আমি তো জানতাম কিন্ডারগার্টেনের শিশুদের পৃথিবীর আকৃতি কমলা সদৃশ বলে প্রথম পাঠ দেয়া হয় - "অস্টৃচ ডিম্ব"(??) আসলেই জীবনে প্রথম শুনলাম।
বুকাইলিবাদ অনুযায়ী, আল্লাহ্ কোনকিছু অতি পরিষ্কার বলতে ব্যর্থ, তর্কাতীত স্পষ্ট হতে অক্ষম। উদাহরণস্বরূপ, যদি আল্লাহ সত্যই কোরআনে বোঝাতে চাইতেন যে পৃথিবী গোলাকার, তাহলে তিনি কেন একটা আয়াতে স্পষ্ট করে এইভাবে লেখেন না: “তুমি কী বিবেচনা করনি, আমি কীভাবে পৃথিবীকে সমতল নয় বরং গোলাকার বানিয়েছি, এবং সূর্যের চারপাশে ঘুর্ণায়মান করে পৃথিবীকে তৈরি করেছি?” অন্য প্রসঙ্গে তো আল্লাহ কিন্তু অতি পরিষ্কার করে কথা বলেছেন! যেমন তিনি বলেছেন ;
সুরা ৩১ : ২৯ ; "তুমি কি দেখ না যে, আল্লাহ রাত্রিকে দিবসে প্রবিষ্ট করেন এবং দিবসকে রাত্রিতে প্রবিষ্ট করেন? তিনি চন্দ্র ও সূর্যকে কাজে নিয়োজিত করেছেন। প্রত্যেকেই নির্দিষ্টকাল পর্যন্ত পরিভ্রমণ করে। তুমি কি আরও দেখ না যে, তোমরা যা কর, আল্লাহ তার খবর রাখেন?"
আসলে সুভংকের ফাকি হছ্ছে : রাতের পর দিন, দিনের পর রাত, চাঁদ-সুরুজ নির্দিষ্ট সময়ের জন্য যায় আবার আসে..................... এসব মামুলি বিষয় ৩ হাজার বছর আগেও মানুষের জানা ছিল। কিন্তু সে সময়ে বিজ্ঞানহীন কোন মানুষের পক্ষে কোন ভাবেই জানা সম্ভব ছিল না পৃথিবী গোলাকার, চাদ-সুরুজের মত পৃথিবীও হেলেদুলে নিজ কক্ষপথে ঘুড়ে বেড়ায়। সে কারনে পৃথিবীর আকৃতি নিয়ে মরিশ বুকুলি অশ্য-ডিম্নের
"Narrated Abu Dhar : The Prophet asked me at sunset, ‘Do you know where the sun goes (at the
time of sunset)?’ I replied, ‘Allah and His Apostle know better.’ He said, ‘It goes (i.e. travels) till it prostrates itself underneath the Throne, and takes the permission to rise again, and it is permitted and them ( a time will come when) it will be about to prostrate itself but its prostration will not be accepted,…’" Bukhari vol.4 book 54 ch.4 no.441 p.283. Sahih Muslim vol.1 book 1 ch.73 no.297-300 p.95-96 also has a lot of detail on this conversation with Mohammed and Abu Dharr.