![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি বিক্ষ্যাত বা কুক্ষ্যাত কোন ক্ষ্যাতির আওতায়ই পরি না। আমজনতা বলতে যা বুঝায় আমি তাই। লিখা লিখি আমার কম্যের আওতায় পরেনা। তারপরও কলমতোনা কী-বোর্ডে কেন হাত রাখতে হলো তার একটু যাস্টিফিকেশন দেয়া দরকার। দুই বছরের উপরে আমার এক অতিব ঘনিষ্ট বন্ধু ক্রমাগত আমাকে ফুসলিয়ে যাচ্ছে রাজনিতীতে ফেরার জন্য, আর কিছু না হোক অন্তত যা আমার মাথায় আছে তা জেন লিখে ফেলি। বাতাসের সাথে বাতাস মিলিয়ে তার কথা এতোদিন সুন্দর উড়িয়ে দিচ্ছিলাম। কিন্তু বাধ সাধলো ফেবুতে অথবা বিভিন্ন ব্লগে এই সময়ে বিশেষ করে শহবাগ আন্দলোনের সময় থেকে বামপন্থী এবং বাম পন্থার উপর যে সংগঠিত, অসংগঠিত অথবা ব্যিক্তিগঠিত সাড়াশি আক্রমন পরিচালিত হচ্ছে তা। ভাই কথা নাই বার্তা নাই আকাম করে হেফাজত/ জামাত, গালি খায় চিনা বাম, হরতাল দেয় বিম্পি গালি খায় নাস্তিক বাম, ইজারা দেয় আম্লিগ গালি খায় চীনা বাম। এতো মহা মুসিবতে পরলাম! রাজনিতি ছেরেছি তা প্রায় বছর ছয় তাও আবার বামপন্থিদের প্রতি ১০০১ টা সমালোচনা নিয়ে! তাইলে বামপন্থিরা গালি খাইলে আমার কি? ওইখানেই ধরা! একসময় বিশ্বাষ করতাম ”ট্রেইলের ঘামের বন্ধন রক্তের বন্ধনের চাইতে দৃঢ়” – মনেহয় বন্ধনটা এতোই দৃঢ় যে ছয় বছর সময়টা তা ছিন্ন করার জন্য যথেষ্ট না, ওই জন্য বাম পন্থিদের কেউ গালি দিলে এখোনো গায়ে লাগে। মনে হয় আমার ভাইকে দুই কথা শোনাতে হয় সেটা আমি শোনাব বেটা তুই কে? সমস্যা আরো এক যায়গায় আছে, সেটা হচ্ছে অনেক বিদ্যন ব্যক্তিকেও দেখি বামপন্থিদের সমালোচনা করতে করতে বামপন্থাকে গালিদেয়া শুরু করে দেন। প্রথমটা যাওবা হজম করা যায় পরেরটা স্ট্রেইট বদহজম হয়ে যায়। সে যাই হোক কেচ্ছা বাদ কাহিনী শুরু করি।
প্রথম কথা হচ্ছে সমালোচনা কি? কেউ যখন সমালোচনা করেন কেন করেন? এই প্রশ্ন দুটোর পাশাপাশি কিভাবে সমালোচনাটা করা হচ্ছে (way of criticism) সেটাও গুরুত্বর্পূ্ন, মাঝেমধ্যে সেটাই সবচেয়ে গুরুত্বর্পু্ন হয়ে যায় যেটা ঠিক না। সমালোচনা = সম + আলোচনা, অর্থাৎ আপনি যদি আপনার সমালোচনাকে কারো কাছে গ্রহনযোগ্য করতে চান তবে সেটাকে ব্যক্তি বা গোষ্ঠির সক্ষমতা এবং অক্ষমতা দুটোকেই আপনার সমান গুরুত্ব/ ওজন দিয়ে করতে হবে। আধুনিক সমালোচনার সংগায় সমালোচকের দায়িত্ব আরো অনেক বেশী, শুধু সমালোচনা করে ছেরে দিলেই হবে না আপনাকে অক্ষমতা বা ঘাটতি দূর বা পূরন করার জন্য পন্থাও (way out) বলে দিতে হবে –এটাকে বলে দয়িত্বশীল সমালোচনা । যার কোন চর্চা্ আমরা আমাদের আশে পাশে দেখতে পাই না। কেন পাইনা তার উত্তর ” সমালোচকটি কেন সমালোচনা করছেন” এই প্রশ্নের উত্তরের মধ্যে নিহিত আছে। সমালোচনা সমালোচকের উদ্দেশ্যের উপর নিভর্র্্করে দুই ধরনের হয়, গঠন মুলক (Constructive - যেটা আপনাকে গঠন করতে শক্তি যোগাবে, পথ দেখাবে) আর ধংশাত্মক (Distructive - যেটা ব্যক্তি বা গোষ্ঠিকে দূর্ব্ল করতে সহায়তা করবে)। সাদা বাংলায় কেউ যখন চাইবে আপনি পা থুবরে পরে যান তখন সে দ্বিতীয় লাইনে সমালোচনা করা শুরু করবে, আর কেউ যদি সত্যি সত্যি আপনাকে আপনার দূবলর্তা ধরিয়ে দিতে চা্য় তবে সে প্রথম লাইন বেছে নেব। এখন মুশকিল হলো সবসময়যে ব্যক্তির উদ্দেশ্য অসৎ থাকে তা না, সমালোচনা একধরনের দক্ষতারো ব্যাপার। আপনার হাতে যদি পযার্প্ত্ তথ্য, উপাত্ত না থাকে, আপনি যদি সঠিক যুক্তি করতে না যানেন তাহলে চাইলেও আপনি ভালো মানের সমালোচনা করতে পারবেন না। তার উপর মরার উপর খারার ঘার মতো আছে আমাদের সামাজিকতায় অর্থা্ৎ প্রচলিত ধারনায় “ সমালোচনার সংগা এবং তার বহু ব্যবহৃত চর্চা্ ” । ভূ-ভারতে সমালোচনা বলতে ব্যক্তিকেন্দ্রিক যে কু-আলোচনার চর্চা্ বিদ্যমান আছে, এই জিনিষ বিশ্বের আর কোথাও আছে কিনা আমার সন্দেহ আছে। আমার ধারনা এটা আসে আমাদের যুক্তি না করতে পারার দক্ষতার অভাব থেকে। প্রশ্ন হচ্ছে আমারা সঠিক যুক্তি করতে পরিনা কেন? আমাদের সামাজিক এবং পারিবারিক কাঠামো এবং আমাদের পাঠ্যসূচি আসলে আমাদের যুক্তি করতে শেখায় না। যুক্তি শেখার প্রথম শর্ত্ হচ্ছে আপনাকে প্রশ্ন করতে শিখতে হবে। যেটা সারাজীবন আমাদের যত্ন করে নিরুৎসাহিত করা হয়। পরিবারে প্রশ্ন করলে, বরদের সাথে পাল্টা যুক্তি করলে আপনি বেয়াদপ, স্কুলে প্রশ্ন করলে বেতের বারি, তাহলে আপনি যুক্তি করাটা শিখবেন কোত্থেকে? যুক্তি করা বলতেই যেন আমাদের সামনে বির্ত্ক প্রতিযোগিতা ভেসে ওঠে । যার সমালোচনা করছি অথবা যিনি সমালোচনা করছেন মুহূর্তেই সে হয়ে ওঠে অপনেন্ট । যতক্ষন পর্ন্ত্ত দুইজন সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে আলোচনা না করবেন, পরস্পরকে সহযোগী (Partner) না ভাববেন ততক্ষন পর্ন্তরর কোন সমালোচনাই কোন র্কায্ক্র ভূমিকা রাখবে না – তা সে সমালোচনা যত ওজনদার মানুষই করুন আর যত বড় মন নিয়েই আমি সমালোচনা শুনিনা কেন। সে যাই হোক সমালোচনার এতো ইতিবৃত্ত টানলাম এই কারনে যে কিছ্চুক্ষন পর আমি নিজেও আসলে ওই পথে হাটা শুরু করবো । এবং অবশ্যই বামবন্ধুদের সমালোচনা দিয়েই সেটা শুরু করবো। তারা যেন আমার সমালোচনা ভূল ভাবে না বোঝে অথবা আমার সমালোচনা করার ঘাটতি যেন বামপন্থা কে কোনভাবেই ছোট না করে, তার জন্য এই এত বর ভূমিকা টানতে হল, সমালোচনার এত বর আলোচনা আনতে হল।
©somewhere in net ltd.