![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
Dipak Ray, Kalirhat, Krishnagar, Nadia, WB, India, Ph. 9775179985 Mail. [email protected]আমি লিখি, লেখার চেষ্টা করি। যা বিশ্বাস করি না, তা লিখি না। শিক্ষকতা আমার পেশা, লেখালেখি-সাংবাদিকতা নেশা। আমার লেখার সমালোচনা হলে, আমি সমৃদ্ধ হই।
'মরিচঝাপি' পর্ব-৩
(কারা কি কি বলেছেন)
দীপক রায় (২৩-০১-১৮)
# মরিচঝাপির গল্প শুনতে হলে এক ভদ্রমহিলার নাম সবার আগে জানা দরকার। তাঁর নাম ডঃ অনুজালে। সম্ভবতঃ ফরাসী। তিনি মরিচঝাপি নিয়ে থিসিস লিখেই ডক্টরেট হয়েছেন। তাঁর থিসিসের মূলকথা ''মরিচঝাপির ঘটনার আগে সুন্দরবনের বাঘ মানুষ খেত না।'' গোদাআ বাংলায় দাঁড়ায় এই- মরিচঝাপিতে এত মানুষ মারা হয়েছিল যে বাঘ মানুষ খেতে শিখে গিয়েছে। ডঃ অনুজালে লিখেছেন, ''মরিচঝাপির ঘটনার আগে বাঘ ও মানুষের নির্বিরোধ সহাবস্থান ছিল। মাছ, কাকড়া, হরিন ও মধু খেয়ে বাঘ ও মানুষ একসঙ্গে নির্বিরোধে সহাবস্থান করত।'' এই বিষয়ে আর কিছু উল্লেখ করছি না। পাঠক বুঝে নিন।
# আরেকটি নাম রাইহরন বাড়ৈ। মরিচঝাপির উদ্বাস্তু উন্নয়নশীল সমিতির সম্পাদক। ১৬-০২-১৯৭৯ তারিখে তার নামে ছাপানো হ্যান্ডবিলে বলা হয়েছে, ৩০ জনের মতো মৃত্যু হয়েছে। ২৩-০৩-১৯৭৯ তারিখে তাঁর স্বাক্ষরিত একটি স্মারকলিপি দিল্লী থেকে আসা সংসদীয় দলকে দেওয়া হয়েছিল। তাতে তিনি ১৫ জনের মতো মৃত্যু হয়েছিল বলে লিখেছিলেন। পরের বছর বাংলাদেশে পলাতক রাইহরন বাড়ৈ একটি চিঠি পাঠিয়ে মৃতদের নামের তালিকা পাঠান সাংবাদিকদের কাছে। সেই তালিকায় ১৪ টি নামের উল্লেখ করেন। খোদ সম্পাদকমশাইয়ের নামের সংখ্যা ১৪ থেকে ৩০ এর মধ্যে সীমাবদ্ধ।
# ২৭-০২-১৯৭৯ তারিখে সব সংবাদপত্রেই লেখা হয়েছিল ৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে।
# ২৪-০৪-১৯৭৯ তারিখে দিল্লীর সংসদীয় দলের রিপোর্টে মৃত্যুর সংখ্যা বলা হয়েছে ১০ জন।
# ২০-০৪০১৯৭৯ তারিখে বিধানসভায় দাঁড়িয়ে বিরোধী দলনেতা কাশীকান্ত মৈত্র ৭৭ জনের মৃত্যুর কথা বলেছিলেন।
# অমল নায়েকের লেখা অজানা সুন্দরবন বইয়ের ৩১ পাতায় মৃতের সংখ্যা লেখা হয়েছে ৪৪৭৮ জন।
# সোনারপুরের বঙ্গবাণী পত্রিকায় ৩০০ জনের মৃত্যুর কথা বলা হয়েছে।
# ভারতীয় লোকদলের বিধায়ক দিলীপ চক্রবর্তী বিধানসভায় ০৪-০৫-১৯৭৯ তারিখে মৃতের সংখ্যা বলেছিলেন ৭৭৭ জন।
# মরিচঝাপিঃ নৈঃশব্দের অন্তরালে বইতে এক জায়গায় মৃত্যুর সংখ্যা বলা হয়েছে ৩৬ জন। আআরেক জায়গায় লেখা হয়েছে ১৫০ জন।
# শিবনাথ চৌধুরী মরিচঝাপির কান্না বইতে মৃত্যুর সংখ্যা লিখেছেন ৩০ জন।
# সব শেষে আরেক ভারতীয় বংশোদ্ভূত বিদেশী ডক্টরেট রস মল্লিকের কথা না বললে বড় অন্যায় হবে। তিনি তাঁর বহুল প্রচারিত দ্য জার্নাল অব এশিয়ান স্টাডিজে মৃত্যুর সংখ্যা লিক্ষেছেন ১৭ হাজার। হ্যাঁ, ঠিকই শুনেছেন ১৭০০০ জন।
# এই অবধি পড়ে পাঠক কি বুঝলেন? মরিচিঝাপির তথাকথিত গনহত্যায় কতজন মারা গিয়েছিল? নীচে ১০ আর উপরে ১৭০০০ জন। গল্পের গোরু গাছে ওঠে, কিন্তু মরিচঝাপির গল্পের গোরুকে এরা আকাশে থুড়ি মহাকাশে পাঠিয়ে দিয়েছেন। আর সেইসব সূত্র ধরে দিব্যি প্রকাশিত হচ্ছে গাঁজাখুরি বইপত্র, ইন্টারনেটের লেখা আর তথ্যচিত্র নামক বুজরুকি।
# মরিচঝাপি গনহত্যা আসলে একটা বড় চক্রান্তের ফসল। বাস্তবে কি হয়েছিল, তথ্যসহ সেই আলোচনায় পরে আসব। কিন্তু এখানে যে তথ্য দেওয়া হয়েছে, সেগুলির প্রমান আছে। প্রমান আছে সরকারী দপ্তরে, বিধানসভায়্ লোকসভায়। প্রমান আছে সেই মায়াকান্নাধারীদের প্রকাশিত বইপত্রেই। তাদের প্রকাশিত বক্তব্যেই মরিচঝাপি গনহত্যা বেলুন ফেঁসে যায়, অন্য কিছুর প্রয়োজন হয়না। তারাই বলুন, কোনটা সত্যি?
(চলবে...পরের পর্ব..জ্যোতি বসু ও সরকার কি বলেছেন...)
©somewhere in net ltd.