![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
Dipak Ray, Kalirhat, Krishnagar, Nadia, WB, India, Ph. 9775179985 Mail. [email protected]আমি লিখি, লেখার চেষ্টা করি। যা বিশ্বাস করি না, তা লিখি না। শিক্ষকতা আমার পেশা, লেখালেখি-সাংবাদিকতা নেশা। আমার লেখার সমালোচনা হলে, আমি সমৃদ্ধ হই।
দীপক রায় (০৫-০২-২০১৮)
# না, এটা কোন গবেষণালব্ধ লেখা নয় সেই অর্থে। সারা ভারতের বা সারা বাংলার চিত্রও নয়। একেবারেই নিজের অভিজ্ঞতা আর ভাবনার মিশেল বলা যেতে পারে। অবশ্য যদি অন্য কোন এলাকার সাথে মিলে যায়, সেটাও অস্বাভাবিক নয়।
# একটা বহুল প্রচারিত তথ্য হল, বেসরকারী স্কুল হচ্ছে, তাই সরকারী স্কুলে ছাত্রছাত্রী কমছে। এই তথ্যের জন্য কোন পরিসংখ্যান লাগে না। বললেই সেটা সমর্থিত হয়ে যায়। সেটা যেন সর্বত্র সর্বক্ষেত্রেই সত্য।
# উদাহরন-একঃ নদীয়া জেলার সদর শহরের সীমানা থেকে তিন কিলোমিটার দূরে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়। মোট বাড়ি খান চল্লিশেক। স্কুলে বাচ্চা নিশ্চয়ই পঁচিশ ছাড়াবে না।
# উদাহরন-দুইঃ দক্ষিন ২৪ পরগনার সাগরদ্বীপের একটি স্কুল। মোট বাড়ি শ'খানেক। স্কুলে বাচ্চা সত্তরের কাছাকাছি।
# উদাহরন-তিনঃ বাঁকুড়া জেলার বড়জোড়া থেকে ছয় কিলোমিটার দূরে একটি স্কুল। মোট বাড়ি প্রায় ছ'শো। স্কুলে বাচ্চা দু'শোর সামান্য বেশি।
# উদাহরন-চারঃ হুগলী জেলার গুড়াপ রেলষ্টেশানের কাছে একটি স্কুল। মোট বাড়ি দেড়শ। স্কুলে বাচ্চা আশির কাছাকাছি।
# উপরোক্ত সবকটি স্কুলের এলাকার বাচ্চারা পুরোপুরি এই সরকারী স্কুলের উপর নির্ভর করে। কাছাকাছি কোন বেসরকারী স্কুল নেই, আর তার উপরে যাতায়াতের সমস্যা। ফলে সেই গ্রামগুলোর সব বাচ্চারা সরকারী স্কুলেই পড়ে। এই স্কুলগুলিতে ঠিক দশ বছর আগে ছাত্রছাত্রী ছিল কোথাও দ্বিগুণ, কোথাও তারও বেশি। তাহলে কমল কেন? বেসরকারী মাধ্যমে তো যায়নি। বাচ্চারা সব গেল কোথায়?
# হিন্দু হোক আর মুসলমান, বর্তমান প্রজন্ম একেই সন্তুষ্ট। আমার ঠাকুরমার সন্তান সংখ্যা গুনতে গিয়ে দুটো আঙ্গুল শেষ হয়ে যেত। আমার পিসিকেও অন্তত এক আঙ্গুল গুনতে হয়েছে। আমাদের প্রজন্ম এক বড়জোর হাতেগোনা কয়েকজন দুইটি সন্তানের পিতামাতা।
# আসুন, একটূ অংক করি। একটি গ্রামে ২০১১ সালে যতগুলি ছেলের বিয়ে হয়েছে, ধরে নিন সেই গ্রামে ২০১৮ সালে সেই কটি বাচ্চাই শিশুশ্রেনীতে ভর্তি হবে। দুটো কমতে পারে, বাড়ার সম্ভবনা একটিও নয়। সুতরাং যে গ্রামে বছরে গড়ে ১০ টি ছেলের বিয়ে হবে, সেই গ্রামের স্কুলে বছরে ১০ টি করে ৫ বছরে ৫ টি ক্লাসে ৫০ টির বেশি ছাত্রছাত্রী পাবার বিন্দুমাত্র সম্ববনা নেই।
# শহরের চিত্র আলাদা। নগরায়নের কারনে গ্রাম এখন শহরমুখী। শহরে স্কুল কত আর বাড়বে? কিন্তু প্রতিনিয়ত মানুষ শহরে মাথা গোঁজার জন্য ছুটছে। ফলে শহরের স্কুলে ঠাই নাই ঠাই নাই অবস্থা। শহরের সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলিতে কোথাও কোথাও ইদানীং ভর্তির জন্য বিশ পঞ্চাশ হাজার উৎকোচ লাগে, নিন্দুকেরা বলে। সেই কারনে শিক্ষা পন্য হিসাবে বেসরকারী মাধ্যমের জয়জয়কার হবেই। কিন্তু তাই বলে গ্রামের সরকারী স্কুল ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে, সেটা অভিজ্ঞতা অন্ততঃ তাই বলে না।
# প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রী কমে গেলে, অঙ্কের নিয়মেই হাইস্কুলেও কমবে। কারন সাপ্লাই লাইনেই তো সমস্যা। আমার বাড়ির সামনের হাইস্কুলে ২০১১ সালে ছাত্রছাত্রী ছিল আড়াই হাজার। আজ খোজ নিলাম, এগারো'শর কাছাকাছি। একাদশ শ্রেনীর ভর্তির পরে সেটা বেড়ে হবে বড়জোর নয় তের'শ। মানে অর্ধেক ছাত্রছাত্রী কমেছে গত ছয় বছরে।
# একটা ভাল দিক হল, জন্মনিয়ন্ত্রনের ব্যপারে হিন্দু-মুসলিম সকলে, আদিবাসী, নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্ত সকলেই সচেতন হয়েছেন। খারাপ দিক হল, স্কুলে শিক্ষক নিয়োগ কমবে। শিক্ষকতার প্রশিক্ষন নিয়ে বেকারত্মের যন্ত্রণা পেতে হবে। সর্বশিক্ষার উদ্যোগে নির্মিত শ্রেনীকক্ষগুলির বেঞ্চে ধুলো জমবে। আর সরকারী স্কুলে কেউ পড়ে নাকি বলে, বেসরকারী মাধ্যমকে উৎসাহিত করা হবে। শিক্ষার বানিজ্যিকীকরন আরো বাড়বে।
# বলছি না, সব সরকারী স্কুলে খুব ভাল পড়ানো হয়। আবার সব খারাপ, এমনটাও বলছি না। অনেক ভাল আছে, প্রচারের আলোর বাইরে। আবার বেসরকারী মাধ্যমের অনেক করুন কাহিনীও অজানা নয়। সরকারী স্কুলে পড়িয়ে আমরা দশ পনেরো টা দু'হাজারের নোট বেতন নিচ্ছি। আবার বেসরকারী স্কুলে শিক্ষকতা করে একটা দু'হাজারের নোটও বেতন পাচ্ছেন না অনেকেই। এক চরম বৈষম্য। সমকাজে সমবেতনের সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ সেখানে ব্রাত্য। মহান গণতন্ত্রে সেই সই।
©somewhere in net ltd.
১|
০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১০:৪৫
রাজীব নুর বলেছেন: একটি ইট দিয়ে ইমারত তৈরি হয় না।কিন্তু একটা ইট গেঁথে ইমারত নির্মানের শুভ উদ্বোধন হয়।একটি মেয়েকে ভালোবাসলে,সেই ভালোবাসা থেকে সমস্ত দেশের মানুষকে ভালোবাসা যায়।