নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জীবে প্রেম করে যেজন, সেজন সেবিছে ঈশ্বর

দীপান্বিতা

দীপান্বিতা › বিস্তারিত পোস্টঃ

সাঁচি

১০ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১১:২৭



এক নম্বর স্তূপ



সাঁচি পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ বৌদ্ধ শিল্প ও স্থাপত্যের নিদর্শন। যদিও সাঁচির সাথে বুদ্ধদেবের প্রত্যক্ষ যোগাযোগ নেই। সম্রাট অশোক এর প্রতিষ্ঠাতা। খ্রিষ্টপূর্ব ২৫৭তে অশোক বৌদ্ধধর্মে দীক্ষিত হয়ে চন্ডাশোক থেকে ধর্মাশোকে পরিবর্তিত হন। তাঁর স্ত্রী দেবী ছিলেন বিদিশার মেয়ে। সাঁচির পাহাড়টি তখন বিদিশাগিরি নামে পরিচিত ছিল। সাঁচি থেকে দশ কি.মি দুরে বিদিশাতে বর্ধিষ্ণু ব্যবসায়ীরা বসবাস করতেন। শহরটি গুরুত্বপূর্ণ বানিজ্যকেন্দ্র হিসেবেও উল্লেখযোগ্য।





মধ্যপ্রদেশের রাজধানী শহর ভূপাল থেকে সাঁচির দূরত্ব ৪৬ কিলোমিটার, দেখার সুবিধার জন্য সাঁচির পুরাবস্তুকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা যেতে পারে৷ সম্রাট অশোকের তৈরি মূল স্তূপটির ব্যাস প্রায় ৩৬.৬ মিটার ও উচ্চতা প্রায় ১৬.৫ মিটার৷





সম্রাট অশোক বিদিশাগিরি অর্থাৎ সাঁচিতে স্তূপ, স্তম্ভ ও মঠ স্থাপন করেন। অশোকের কন্যা সঙ্ঘমিত্রা ও পুত্র মহেন্দ্র শ্রীলঙ্কায় বৌদ্ধধর্ম প্রচারে যাওয়ার আগে সাঁচিতে মা দেবীর সাথে দেখা করতে আসেন। দেবী তাঁদের বৌদ্ধমঠে নিয়ে যান। প্রকান্ড এলাকা জুড়ে এই মঠ। তাতে অনেক ঘর, উপাসনাগৃহ প্রভৃতি ছিল। মঠের পাশে থাকতো এক বিশাল পাথরের পাত্র। এতে সমস্ত দানসামগ্রী জমা হত। পরে সেগুলি বিতরণ করা হত। এসব ঘটনা যিশুর জন্মের তিনশো বছর আগের। তারপর পনেরোশো বছর ধরে সাঁচিতে বৌদ্ধ শিল্প ও স্থাপত্যের ভাঙাগড়া চলেছে।





বিদিশাগিরির শীর্ষে যুগ যুগ ধরে দাঁড়িয়ে আছে সম্রাট অশোকের তৈরি মহাস্তূপ বা এক নম্বর স্তূপ। পুর সাঁচিতে এটিই সবচেয়ে সুন্দর।

সম্রাট অশোক যে স্তূপ গড়েছিলেন তা এখনকার স্তূপের নীচে ছিল। একশ বছর পরে সেই স্তূপের উপর আরো বড় স্তূপ তৈরি হয়। তা ঘিরে তৈরি হয় অলিন্দ। মানুষের পায়ে পায়ে সেই অলিন্দের পাথর আজ ক্ষয়ে এসেছে। পরে স্তূপের পাশে গোল বারান্দার মতন প্রদক্ষিণ পথ তৈরি হয়। তারও একশ বছর পর স্তূপের চারদিকে চারটি তোরণ নির্মাণ হয়। এক নম্বর স্তূপের উত্তরমুখী তোরণ এখনও সবচেয়ে অক্ষত। দুটি চৌক স্তম্ভের উপর তিনটি পাথরের লম্বা লম্বা ফলক। সেই পাথরের ওপর সূক্ষাতিসূক্ষ কাজ। এমন সূক্ষ যে তা এলোরা বা খাজুরাহোর কাজকেও টেক্কা দেবে। এই সব তোরণে যারা কাজ করেছেন তারা সকলেই ছিলেন কাঠ বা হাতির দাঁতের শিল্পী। সে কারণেই তোরণে কাঠ বা হাতির দাঁতের কাজের সুক্ষতা পাওয়া যায়। এছাড়াও স্বর্ণকারেরাও এখানে কাজ করেছেন। এই স্তূপের উত্তরমূখী তোরণের মাথায় এখনও চক্রের কিছু অংশ দেখা যায়।



অলিন্দ ও প্রদক্ষিণের পথ



বৌদ্ধদের কাছে সাঁচি অত্যন্ত পবিত্র স্থান। মনেকরা হয় এখানে এক নম্বর স্তূপের মধ্যে বুদ্ধদেবের ভস্ম আছে। তিন নম্বর স্তূপে ছিল বুদ্ধের শিষ্য সারীপুত্র ও মহামোজ্ঞলানার ভস্ম। পরে এগুলো নতুন মন্দিরে আনা হয়।

দেশবিদেশের অন্যান্য ধর্মস্থানের মত সাঁচিতেও ধর্ম কারুশিল্প ও স্থাপত্যে মিলেমিশে গেছে। তোরণের স্তম্ভ ও ফলকে বৌদ্ধ জাতকের গল্প খোদাই করা আছে। বুদ্ধের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু দৃশ্য এখানে দেখা যায়। তবে তোরণ বা স্তম্ভে বুদ্ধের কোন মূর্তি নেই। কখনও গাছ, কখনও ধর্মচক্র, কখনও পদচিহ্ন-এসব প্রতীক দিয়ে বুদ্ধের উপস্থিতি বোঝান হয়েছে। এর কারণ সম্ভবত এই যে সে সময় বুদ্ধের নীতি অনুসারে মূর্তি পূজোর অনুমোদন পায় নি। তা ছাড়া বিদিশায় কারুকাজের শিল্পী থাকলেও মূর্তি তৈরির শিল্পী ছিলেন না।



জাতকের কাহিনী



সাঁচির প্রতিটি কারুকার্যমন্ডিত তোরণের ওপর ধর্মচক্র ও তার নীচে জীবজন্তু,বুদ্ধের জীবনের ঘটনাবলী,জাতকের কাহিনী,এমনকি সমকালীন ঐতিহাসিক তথ্যগুলি ভাস্কর্যে বর্ণিত হয়েছে৷পশ্চিম তোরণের উপরিভাগে আছে মানবরূপী বুদ্ধের সাত জন্মের কাহিনী৷ মাঝে সারনাথে উপদেশরত বুদ্ধ,নিচে হসত্মিসহ ছন্দক জাতকের চিত্র৷ দক্ষিণ তোরণে বুদ্ধের জন্মকাহিনী৷ সিদ্ধার্থমাতা মায়াদেবী পদ্মের ওপর দাঁড়িয়ে আছেন,তাঁর ডানদিকে যূথপতি বারি সিঞ্চনরত৷ নিচে কীচকের বামন মূর্তির হাতে মালা৷ পূর্বতোরণে গর্ভাবস্থায় মায়াদেবীর স্বপ্নদর্শন,শাক্যমুনির জলের ওপর ভ্রমণ ও কপিলাবস্তু থেকে গৃহত্যাগ৷এখানে একটি তোরণে আছে আম্রবৃক্ষের নিচে উপদেশদানের পর শ্রীবুদ্ধ হেঁটে চলেছেন লেলিহান শিখার মাঝখান দিয়ে শূন্যপথে৷





সাঁচিতে মূর্তি আসে অনেক পরে, গুপ্ত যুগে। আনুমানিক চারশো খ্রিষ্টাব্দে। এই মূর্তি আসে মথুরা থেকে। এই পরিবর্তনের সঙ্গে বৌদ্ধ ধর্মের বিবর্তনের যোগাযোগ থাকতে পারে। বুদ্ধের মৃত্যুর কিছু পর থেকেই তার প্রবর্তিত ধর্ম নিয়ে তর্ক শুরু হয়। কৌসাম্বির দলটি পুরানো ও রক্ষণশীল ছিল। অন্যদিকে মথুরার কেন্দ্রটি অপেক্ষাকৃত নতুন। নতুন দলটি এমন কিছু পরিবর্তন আনে যা বুদ্ধদেব নিজেও বাতিল করেছিলেন। বুদ্ধদেব কখনও চাননি তার শিষ্যরা তাঁকে ঈশ্বরের মত পূজো করুক। অথচ একশো খ্রীস্টাব্দের মধ্যেই মথুরাকেন্দ্রিক দলটির সদস্যেরা বুদ্ধের পাথরের খোদাই মূর্তি গড়ে পূজো শুরু করে। গুপ্ত যুগে সাঁচিতে যে বুদ্ধ মূর্তি আসে সেগুলি মথুরা থেকেই আনা।





স্তূপের ঠিক বাইরে দুটো অতি প্রাচীন মন্দির। যদিও মন্দিরের মত এদের মাথায় গম্বুজ নেই। বরং সাধারণ বাড়ির ছাদের মতো সমান। অনেকটা প্রাচীন গ্রিক বা রোমান মন্দিরের মতো। এর ডানদিকে আরেকটি মন্দিরের ভগ্নাবশেষ। তার থাম ছাড়া আর কিছু অবশিষ্ট নেই। যদিও সেই থাম দেখেই বোঝা যায় এক সময় এটি দেখার মতো মন্দির ছিল।

প্রথমদিকে তোরণের চারদিকে চারটি মূর্তি ছিল। এখন একটিই আছে, তাও অক্ষত নয়।



মৌর্য বংশের অবসানের পর সাঁচির স্তূপের উপর বারবার ব্যাপক ধ্বংসাত্মক আক্রমণ হয়। অশোকের স্তূপ ছাড়াও সাঁচির সমস্ত সৌধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পরে বৌদ্ধ ভিক্ষু ও আঞ্চলিক মানুষ নতুন উদ্যমে কিছুটা মেরামত শুরু করেন। কিন্তু দেশের রাজনৈতিক ছায়া সাঁচির উপরেও পরে। নতুন উদ্যমে মঠ স্তম্ভ নির্মাণের কাজেও ভাঁটা পড়ে। এবং শেষে একেবারে থেমে যায়।



তারপর গুপ্তযুগে দেশে কিছু শান্তি ও সমৃদ্ধি এলে সাঁচিতে কারুশিল্প ও স্থাপত্যের কাজ নতুন ভাবে শুরু হয়। এ সময়ই মূর্তির দেখা মেলে। এসময়ে সতেরো নম্বর মন্দিরটি নির্মিত হয়। এভাবে দুশো বছর কাজ চলতে থাকে। তারপর হুনেরা ভারত আক্রমন করে। গুপ্ত সাম্রাজ্যের পতন ঘটে।



ছয়শো খ্রিস্টাব্দে আবার হর্ষবর্ধনের শাসনকালে বৌদ্ধধর্ম বিস্তার লাভ করে। সাঁচিতে বেশ কিছু মঠ ও মন্দির বানানো হয়। বারোশো খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত এভাবে চলে। এরপর একদিন সব বন্ধ হয়ে যায়। বৌদ্ধ সৌধে হিন্দু ফলক দেখা দিতে থাকে। এসময় ঠিক কি ঘটে বলা যায় না। হিন্দুরা বৌদ্ধদের শেষ করে, নাকি বৌদ্ধরা এস্থান ছেড়ে চলে যান-সঠিক জানা যায় না। জাতপাতের বিচার না থাকায় বৌদ্ধধর্ম জনপ্রিয় হচ্ছিল। হিন্দুরা তাতে ক্ষিপ্ত হতেও পারে। যাই হোক্‌, সাঁচি থেকে বৌদ্ধরা বিদায় নেয়।

এরপর পাঁচশো বছর কেটে যায়। মানুষ সাঁচির কথা ভুলে যায়। মঠ–মন্দিরের উপর জঙ্গল গজায়। চোদ্দশো থেকে উনিশো শতাব্দী পর্যন্ত সাঁচি পরিত্যক্ত থাকে।



এরপর ১৮১৮ সালে ব্রিটিশ জেনারেল টেলার সাঁচির ধ্বংসস্তূপ আবিষ্কার করে বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। যদিও এতে অপকারই বেশি হয়। গুপ্তধনের আশায় পুরাকীর্তির উপর অত্যাচার চলে।

১৮২২ সালে ক্যাপটেন জনসন ভেতরে কি আছে দেখতে এক নম্বর স্তূপটি উপর থেকে নিচ পর্যন্ত কেটে ফেলে। স্তূপের গায়ে প্রকান্ড ফাটলের সৃষ্টি হয় এবং পশ্চিমের তোরণ ভেঙ্গে পড়ে। দু নম্বর স্তূপও ধ্বংস হয়।

১৮৫১ সালে আবার দুই ও তিন নম্বর স্তূপ খোঁড়া হয়। এক নম্বর স্তূপের মধ্যে লোহার রড পাঠানো হয় কিছু পাওয়ার আশায়।

সাহেবদের সাথে স্থানীয় মানুষও হাত মেলায়। এক জমিদার অশোক স্তম্ভটি তিন টুকরো করে কেটে আখ মাড়াই করতে বাড়ি নিয়ে যান।





১৮৮১ সালের আগে সাঁচি সংরক্ষণের চেষ্টা হয় নি। সে বছর মেজর কোল এ কাজ়ে হাত দেন। পরে তিন বছর তিনি ও আরো পরে ভারতের আর্কিওলজিকাল সার্ভের ডিরেক্টর এ কাজে এগিয়ে আসেন।

মেজর কোল বিদিশাগিরির জঙ্গল কেটে গোটা পাহাড় পরিষ্কার করান। এক নম্বর স্তূপের ফাটল মেরামত করেন। পশ্চিম ও দক্ষিণদিকের তোরণগুলি তুলে যথাস্থানে স্থাপন করেন।





বাকি কাজ করেন স্যার জন মার্শাল। ১৯১২ থেকে ১৯১৯ সালের মধ্যে তাঁর কাজেই আজকে সাঁচি দেখা সম্ভব হয়।

সাঁচি বর্তমানে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট। সৌধগুলি সংরক্ষণের জন্য জাপানও সাহায্য করে।





আজ যখন সারা পৃথিবী জুড়ে হিংসার শাসন চলছে তখন বুদ্ধের শিক্ষার দিকে ফিরতে হবে। ভোগবিলাস বাড়তে বাড়তে বিতৃষ্ণায় পরিণত হচ্ছে। স্বাভাবিক জিনিস আর সুখ দিতে পারছে না। মানুষের মন অস্বাভাবিক আর বিকৃতির দিকে চলেছে। এ সময়ই তো বুদ্ধের শিক্ষা স্নিগ্ধ প্রলেপের মত কাজ করবে।



তথ্যসূত্রঃআনন্দবাজার

মন্তব্য ৩৮ টি রেটিং +১২/-০

মন্তব্য (৩৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১১:৫৪

দুখী মানব বলেছেন: ওয়াও। যাব একদিন :)

১১ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১২:১০

দীপান্বিতা বলেছেন: অবশ্যই এসো! :)
..........................




মহামতি গৌতম বুদ্ধ জীবনের সত্যকে খুব সহজভাবে বর্ণনা করে গেছেন। ধম্মপদ থেকে পাওয়া তাঁর কিছু বানী:

•ভালো কাজ সবসময় কর। বারবার কর। মনকে সবসময় ভালো কাজে নিমগ্ন রাখো।

•নিজেকে নিয়ন্ত্রণ কর। তারপর অন্যকে অনুশাসন কর। নিজে নিয়ন্ত্রিত হলে অন্যকেও নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে। নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করাই কঠিন।

•চিন্তার প্রতিফলন ঘটে স্বভাব বা প্রকৃতিতে। যদি কেউ মন্দ অভিপ্রায় নিয়ে কথা বলে বা কাজ করে দুঃখ তাকে অনুগমন করে। আর কেউ যদি সুচিন্তা নিয়ে কথা বলে বা কাজ করে সুখ তাকে ছায়ার মত অনুসরন করে।

•যিনি অস্থিরচিত্ত, যিনি সত্যধর্ম অবগত নন, যার মানসিক প্রসন্নতা নেই, তিনি কখনো প্রাজ্ঞ হতে পারেন না।

•প্রাজ্ঞ ব্যক্তি কখনো নিন্দা বা প্রশংসায় প্রভাবিত হয় না।

•রণক্ষেত্রে সহস্রযোদ্ধার ওপর বিজয়ীর চেয়ে রাগ-ক্রোধ বিজয়ী বা আত্মজয়ী বীরই বীরশ্রেষ্ঠ।

•কাউকে কটু কথা বলবে না। কারণ সে-ও কটু প্রতু্ত্তর দিতে পারে। উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় তোমার জন্যেও কষ্টদায়ক হবে। দন্ডের প্রতিদন্ড তোমাকেও স্পর্শ করবে।

•কোনো পাপকেই ক্ষুদ্র মনে করো না। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পাপই জমা হতে হতে মূর্খের পাপের ভান্ড পূর্ণ করে ফেলে।

•মূর্খরা ‘আমার পুত্র, আমার অর্থ, আমার ধন’ এই চিন্তায় যন্ত্রণা ভোগ করে। যখন সে নিজেই নিজের না তখন পুত্র বা ধন তার হয় কিভাবে?

•বর্ষাকালে এখানে, শীত-গ্রীষ্মে ওখানে বাস করবো – মূর্খরা এভাবেই চিন্তা করে। শুধু জানে না জীবন কখন কোথায় শেষ হয়ে যাবে।

•আলস্য ও অতিভোজের দরুন স্থূলকায় নিদ্রালু হয়ে বিছানায় গড়াগড়ি দেয়া স্বভাবে পরিণত হলে সেই মূর্খের জীবনে দুঃখের পুনঃ পুনরাবৃত্তি ঘটবে।

২| ১০ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১১:৫৬

প্রজাপতি'র ডানা বলেছেন: ভালো লাগলো........

১১ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১২:২১

দীপান্বিতা বলেছেন: ধন্যবাদ, প্রজাপতি'র ডানা! :)

........................................

বোধিবৃক্ষ

মানুষের শ্রেষ্ঠত্বের নিদর্শন পাওয়া যায় তাদের ভিতরের গুণাবলী হতে আর পশু-পক্ষীদের শ্রেষ্ঠত্বের নিদর্শন পাওয়া যায় তাদের বাহিরের গুণাবলী হতে-

সমগ্র মানব সমাজের জন্য দশটি নীতি-

একঃ তুমি কোন জীব হত্যা করবে না ।

দুইঃ অপরের জিনিস চুরি করবে না ।

তিনঃ কোন ব্যভিচার বা অনাচার করবে না ।

চারঃ মিখ্যা কথা বলবে না, কাউকে প্রতারণা করবে না ।

পাঁচঃ কোন মাদক দ্রব্য গ্রহণ করবে না ।


ছয়ঃ আহারে সংযমী হবে । দুপুরের পর আহার করবে না ।

সাতঃ নৃত্যগীত দেখবে না ।

আটঃ সাজসজ্জা অলঙ্কার পরবে না ।

নয়ঃ বিলাসবহুল শয্যায় শোবে না ।

দশঃ কোন সোনা বা রূপা গ্রহণ করবে না ।

এই দশটি উপদেশের মধ্যে প্রথম পাঁচটি ছিল সাধারণ মানুষের জন্য। আর সন্ন্যাসীর ক্ষেত্রে দশটি উপদেশই পালনীয়।

৩| ১১ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১২:১৬

প্রভাষক বলেছেন: + এবং প্রিয়তে...
ধন্যবাদ আপনাকে...

১১ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১২:৩০

দীপান্বিতা বলেছেন: ধন্যবাদ, প্রভাষক!:) ....সবটাই নেটে ফাইন্ড মেরে পাওয়া:D

..................



বুদ্ধের অষ্টমার্গ:

প্রথমঃ সত্য বোধ- অর্থাৎ মন থেকে সকল ভ্রান্তি দূর করতে হবে। উপলব্ধি করতে হবে নিত্য ও অনিত্য বস্তুর মধ্যে প্রভেদ।

দ্বিতীয়ঃ সংকল্প- সংসারের পার্থিব বন্ধন থেকে মুক্ত হবার আকাঙ্ক্ষা। যা কিছু পরম জ্ঞান তাকে উপলব্ধি করার জন্য থাকবে গভীর আত্ম সংযমের পথ ধরে এগিয়ে চলা।

তৃতীয়ঃ সম্যক বা সত্য বাক্য। কোন মানুষের সাথেই মিথ্যা না বলা হয়। কাউকে গালিগালাজ বা খারাপ কথা বলা উচিত নয়। অন্য মানুষের সাথে যখন কথা বলবে, তা যেন হয় সত্য, পবিত্র আর করুণায় পূর্ন।

চতুর্থঃ সৎ আচরণ - সকল মানুষের উচিত ভোগবিলাস ত্যাগ করে সৎ জীবন যাপন করা। সমস্ত কাজের মধ্যেই যেন থাকে সংযম আর শৃঙ্খলা। এছাড়া অন্য মানুষের প্রতি আচরণে থাকবে দয়া ভালবাসা।

পঞ্চমঃ সম্যক জীবিকা- অর্থাৎ সৎভাবে অর্থ উপার্জন করতে হবে এবং জীবন ধারনের প্রয়োজনে এমন পথ অবলম্বন করতে হবে যাতে রক্ষা পাবে পবিত্রতা ও সততা।

ষষ্ঠঃ সৎ চেষ্টা- মন থেকে সকল রকম অশুভ ও অসৎ চিন্তা দূর করতে হবে-যদি কেউ আগের পাঁচটি পথ অনুসরণ করে তবে তার কর্ম ও চিন্তা স্বাভাবিকভাবেই সংযত হয়ে চলবে।

সপ্তমঃ সম্যক ব্যায়াম অর্থাৎ সৎ চিন্তা - মানুষ এই সময় কেবল সৎ ও পবিত্র চিন্তা-ভাবনার দ্বারা মনকে পূর্ণ করে রাখবে।

অষ্টমঃ এই স্তরে এসে মানুষ পরম শান্তি লাভ করবে। তার মন এক গভীর প্রশান্তির স্তরে উত্তীর্ন হবে।

৪| ১১ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১:২১

আকাশ অম্বর বলেছেন: হে অষ্টম স্তরের সন্ন্যাসিনী! মন্তব্যের উত্তরগুলোয় প্লাস! লোভ জাগানিয়া পোষ্টে মাইনাস!

:-)

১১ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১১:১৮

দীপান্বিতা বলেছেন: হাঃ...হাঃ! বলছেন, অষ্টম স্তরে পৌঁছেছি!B-)) ....ধন্যবাদ ...ধন্যবাদ!:D
.........................



ত্রিশরণ মন্ত্র:

বুদ্ধং শরণং গচ্ছামি - আমি বুদ্ধের শরণ নিলাম। বোধি লাভ জীবনের মূখ্য উদ্দেশ্য। বুদ্ধত্ব মানে পূর্ণ সত্য, পবিত্রতা, চরম আধাত্মিক জ্ঞান।

ধম্মং শরণং গচ্ছামি - আমি ধর্মের শরণ নিলাম। যে সাধনা অভ্যাস দ্বারা সত্য লাভ হয়, আধ্যাত্মিকতার পূর্ণ বিকাশ হয় তাই ধর্ম।

সঙ্ঘং শরণং গচ্ছামি - আমি সঙ্ঘের শরণ নিলাম। যেখানে পূর্ণ জ্ঞান লাভের জন্য ধর্মের সাধনা সম্যক্ ভাবে করা যায় তাই সঙ্ঘ।

৫| ১১ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ২:৫৩

রাজসোহান বলেছেন: অসাধারণ !, যাব একদিন !

১১ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১১:৪৩

দীপান্বিতা বলেছেন: ধন্যবাদ, রাজসোহান! ঘুরে যান, ভাল লাগবে...:)
........................


অশোক স্তম্ভ

বুদ্ধের দর্শন:

বুদ্ধের দর্শনের প্রধান অংশ হচ্ছে দুঃখের কারণ ও তা নিরসনের উপায়।
বাসনা সর্ব দুঃখের মূল।
বৌদ্ধমতে সর্বপ্রকার বন্ধন থেকে মুক্তিই হচ্ছে প্রধান লক্ষ্য। এটাকে নির্বাণ বলা হয়।
নির্বাণ শব্দের আক্ষরিক অর্থ নিভে যাওয়া (দীপনির্বাণ, নির্বাণোন্মুখ প্রদীপ), বিলুপ্তি, বিলয়, অবসান।

৬| ১১ ই আগস্ট, ২০১০ সকাল ৭:৫১

ইমন জুবায়ের বলেছেন: সবাই যেতে চাইছে :) । ইতিহাসের অনেক উপকার করলে :P । ++++++

১১ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১১:৫৭

দীপান্বিতা বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ,ইমনভাই!:) .... এ ব্যাপারে আপনি অনেক জানেন...আমি তো নেটে দেখে ভাল লাগলো তাই সে গুলো শেয়ার করছি মাত্র!...এখন দেখছি বৌদ্ধদের প্রতীক...এর উপর কি আপনার কোন লেখা আছে!
....................................

The Guanyin Statue of Hainan in Sanya, China

বাংলায় 'Guanyin' মানে কি, ইমনভাই!

৭| ১১ ই আগস্ট, ২০১০ সকাল ৮:০৫

লবঙ্গলতিকা বলেছেন: ডেসক্রিপশন ভাল লাগলো আপুমনি

১২ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১২:০৪

দীপান্বিতা বলেছেন: ধন্যবাদ, লবঙ্গলতিকা! .......সবই ইন্টারনেটের দান:D
..................................


দুঃখ:

বুদ্ধ দুঃখের কারণ, দুঃখ দূর করার উপায় সম্বন্ধে উপদেশ দিয়েছেন।
ওঁর মতে জীবন দুঃখপূর্ণ।
দুঃখের হাত থেকে কারও নিস্তার নেই।
জন্ম, জরা, রোগ, মৃত্যু সবই দুঃখজনক।
বাসনা সব দুঃখের মূল।
মাঝে মাঝে যে সুখ আসে তাও দুঃখ মিশ্রিত।
অবিমিশ্র সুখ বলে কিছু নেই।
নিবার্ণ লাভে এই দুঃখের অবসান।
বাসনার নিস্তারের মাঝে অজ্ঞানের অবসান।
এতেই পূর্ণ শান্তি।

চতুরার্য সত্য:

•যথা দুঃখ

•দুঃখ সমুদয়: দুঃখের কারণ

•দুঃখ নিরোধ: দুঃখ নিরোধের সত্য

•দুঃখ নিরোধ মার্গ: দুঃখ নিরোধের পথ

৮| ১২ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১২:১৯

দুরন্ত স্বপ্নচারী বলেছেন: প্রিয়তে নিলাম। পোস্টটা একদিন কাজে লাগবে।

১২ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১২:৪৬

দীপান্বিতা বলেছেন: ধন্যবাদ...ধন্যবাদ! :D ....অনেকদিন পর! খবর কি! :)
...............................


আক্ষরিক অর্থে "বুদ্ধ" বলতে একজন জ্ঞানপ্রাপ্ত, উদ্বোধিত, জ্ঞানী, জাগরিত মানুষকে বোঝায়।
উপাসনার মাধ্যমে উদ্ভাসিত আধ্যাত্মিক উপলব্ধি এবং পরম জ্ঞানকে বোধি বলা হয় (যে অশ্বত্থ গাছের নীচে তপস্যা করতে করতে বুদ্ধদেব বুদ্ধত্ব লাভ করেছিলেন তার নাম এখন বোধি বৃক্ষ)।

সেই অর্থে যে কোনও মানুষই বোধপ্রাপ্ত, উদ্বোধিত এবং জাগরিত হতে পারে।

সিদ্ধার্থ গৌতম এইকালের এমনই একজন "বুদ্ধ"।

৯| ১২ ই আগস্ট, ২০১০ সকাল ৭:০৪

ইমন জুবায়ের বলেছেন: বোধিসত্ত্ব হলো আলোকিত সত্ত্বা যারা অন্যদের আলোকিত করার জন্য স্বর্গে যায় না । মানে স্বর্গের লোভ ত্যাগ করে। অনেক ধরনের বোধিসত্ত্ব হতে পারে।চিন দেশে সবচে বিখ্যাত বোধিসত্ত্ব র নাম অবলোকিতেশ্বর। চিন দেশে
এই অবলোকিতেশ্বর কে বলে 'Guanyin'...
এই দেখ ছবি


'Guanyin'এর আরও ছবি পাবে এখানে
Click This Link

১৪ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১১:৩০

দীপান্বিতা বলেছেন: কি দারুন! ...অনেক ধন্যবাদ, ইমনভাই..:)

১০| ১২ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ৮:২০

ইমন জুবায়ের বলেছেন: Click This Link

১৪ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১১:৩৭

দীপান্বিতা বলেছেন:
দেখছি... :)

১১| ১২ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১১:১০

ইমন জুবায়ের বলেছেন: Click This Link

১৪ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১১:৩৯

দীপান্বিতা বলেছেন:
দেখছি...:)

১২| ১৩ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১২:০৮

চতুষ্কোণ বলেছেন: সাঁচি সুন্দর!

১৪ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১১:৪৫

দীপান্বিতা বলেছেন: ধন্যবাদ, চতুষ্কোণ! :)
....................


সিদ্ধার্থ গৌতমের জীবন:

সিদ্ধার্থের পিতা ছিলেন শাক্য বংশীয় রাজা শুদ্ধোদন। মাতা মায়াদেবী।
মায়াদেবী কপিলাবস্তু থেকে পিতার রাজ্যে যাবার পথে লুম্বিনি গ্রামে (অধুনা নেপালের অন্তর্গত) সিদ্ধার্থের জন্ম দেন। তাঁর জন্মের সপ্তম দিনে মায়াদেবীর জীবনাবসান হয়।
পরে তিনি বিমাতা গৌতমী কতৃক লালিত হন। ধারণা করা হয় তাঁর নামের "গৌতম" অংশটি বিমাতার নাম থেকেই এসেছে। আবার কারও কারও মতে এটি তাঁর পারিবারিক নাম।

জন্মের পঞ্চম দিনে রাজা ৮ জন জ্ঞানী ব্যক্তিকে সদ্যোজাত শিশুর নামকরণ ও ভবিষ্যৎ বলার জন্য ডাকেন।
তাঁর নাম দেওয়া হয় সিদ্ধার্থ - "যে সিদ্ধিলাভ করেছে, বা যার উদ্দেশ্য সফল হয়েছে"।
তাঁদের মধ্যে একজন বলেন, রাজকুমার একদিন সত্যের সন্ধানে বেরিয়ে যাবেন এবং বোধিপ্রাপ্ত হবেন।
একজন রাজপুত্র হিসেবে সিদ্ধার্থ বিভিন্ন শাখায় শিক্ষা লাভ করেন।

১৩| ১৩ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১২:৪৮

প্রভাষক বলেছেন: ওরে বাপস্‌... আরো একজন পেলাম... ইমন জুবায়ের... লক্ষ্য রাখতে হবে... বৌধিসত্ত্ব দরকার আমার!!!

ধন্যবাদ সবাই-কে...

১৪ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১১:৫৬

দীপান্বিতা বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ, প্রভাষক! :) ....আপাতত আপনাকে উইকিপিডিয়া থেকে তথ্য দিচ্ছি :D
.......................................



সিদ্ধার্থ গৌতমের বিবাহ:

সিদ্ধার্থ গৌতমের বিবাহ সম্বন্ধে দুধরনের মত আছে।
প্রথম মত অনুসারে ১৬ বছর বয়সে তিনি একটি প্রতিযোগিতায় তাঁর স্ত্রীকে লাভ করেন। অতঃপর পুত্র রাহুল জন্মগ্রহণ করে।
আর একটি মত অনুসারে ২৮ বছর বয়সে তাঁকে সংসারের প্রতি মনোযোগী করার জন্য তাঁর পিতামাতা তাঁকে রাজকন্যা যশোধরার সাথে বিবাহ দেন। পরবর্তী বছরে জন্ম নেয় পুত্র রাহুল।

১৪| ১৩ ই আগস্ট, ২০১০ সকাল ১১:১৯

১২৩৪ বলেছেন: সাঁচি
নামটাওতে দারুন..
অনেক ধন্যবাদ আপু..
আপনার পোস্টগুলি সবসময়ই দারুন ব্যতিক্রম,দারুন সুন্দর হয়..

১৫ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১২:০১

দীপান্বিতা বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ, ১২৩৪!:#>
.....................................

মহানিষ্ক্রমণ:

কথিত আছে, একদিন রাজকুমার সিদ্ধার্থ বেড়াতে বের হলে ৪ জন ব্যক্তির সাথে তাঁর সাক্ষাৎ হয়।
প্রথমে তিনি একজন বৃদ্ধ মানুষ, অতঃপর একজন অসুস্থ মানুষ এবং শেষে একজন মৃত মানুষকে দেখতে পান।
তিনি তাঁর সহিস চন্নকে এ প্রসঙ্গে জিজ্ঞেস করলে, চন্ন তাঁকে বুঝিয়ে বলেন যে এটিই সকল মানুষের নিয়তি।
আবার একদিন (কারও কারও মতে সেদিনই) তিনি চন্নকে নিয়ে বের হলেন।
এবারে তিনি দেখা পেলেন একজন সাধুর, যিনি মুণ্ডিতমস্তক এবং পীতবর্ণের জীর্ণ বাস পরিহিত।
চন্নকে এঁর সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করলে, তিনি বলেন উনি একজন সন্ন্যাসী, যিনি নিজ জীবন ত্যাগ করেছেন মানুষের দুঃখের জন্য।

রাজকুমার সিদ্ধার্থ সেই রাত্রেই ঘুমন্ত স্ত্রী, পুত্র, পরিবারকে নিঃশব্দ বিদায় জানিয়ে তিনি প্রাসাদ ত্যাগ করেন। সাথে নিলেন চন্নকে। প্রাসাদ থেকে বেরিয়ে বনের শেষ প্রান্তে পৌঁছিয়ে তিনি থামলেন। তলোয়ার দিয়ে কেটে ফেললেন তার লম্বা চুল। অতঃপর চন্নকে বিদায় জানিয়ে যাত্রা শুরু করলেন জ্ঞানান্বেষণে, মাত্র ২৯ বছর বয়সে।
সিদ্ধার্থের এই যাত্রাকেই বলা হয় মহানিষ্ক্রমণ।

১৫| ১৩ ই আগস্ট, ২০১০ দুপুর ১২:০০

শিরীষ বলেছেন: অসাধারণ পোস্ট দীপা। অনেক কিছু জানা গেল। কাস্টিজম-কে আমিও ঘৃণা করি। সেই অর্থে গৌতম দর্শন অনেক অনেক উদার এবং humane ।
ইমন ভাই এবং আপনার ব্লগে মাঝে মাঝেই এসমস্ত রত্ন ভান্ডার-এর দেখা মিলছে। সুপার্ব!

১৫ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১২:৩৩

দীপান্বিতা বলেছেন: ধন্যবাদ, শিরীষ! :) .... কাস্টিজম খুব খারাপ...ধিরে ধিরে নতুন প্রজন্মের মধ্যে এসব ভেদাভেদ উঠেও যাচ্ছে! তবে বহুদিনের অভ্যাস হয়ত একটু সময় নেবে! গৌতম দর্শনই পথ দেখাবে....

ইমনভাই কোথায় আর আমি কোথায়! ....আমি তো নেট থেকে সব নিই! তবু ভাল লাগছে এতজনের ভাল লাগছে দেখে :D
...........................


বোধিলাভ:
বোধিবৃক্ষ, যেখানে ভগবান বুদ্ধ বোধিলাভ করেছিলেন
দুঃখ ও দুঃখের কারণ সম্বন্ধে জানতে সিদ্ধার্থ যাত্রা অব্যাহত রাখেন।

প্রথমে তিনি আলারা নামক একজন সন্ন্যাসীর কাছে যান। তাঁর উত্তরে সন্তুষ্ট হতে না পেরে তিনি যান উদ্দক নামক আর একজনের কাছে। কিন্তু এখানেও কোনও ফল পেলেন না।

এভাবে কিছু দিন যাবার পর তিনি মগধের উরুবিল্ব নামক স্থানে গমন করেন।
সেখানে প্রথমে একটি উত্তর-পূর্বমুখি শিলাখণ্ডের উপর বোধিসত্ত্ব জানু পেতে বসে আপন মনেই বলেছিলেন যে, "যদি আমাকে বুদ্ধত্বলাভ করতে হয় তা হলে বুদ্ধের একটি প্রতিচ্ছায়া আমার সম্মুখে দৃশ্যমান হোক।" এই কথা উচ্চারিত হবার সঙ্গে সঙ্গে শিলাখণ্ডের গায়ে তিন ফিট উঁচু একটি বুদ্ধের প্রতিচ্ছায়া প্রতিফলিত হল।
বোধিসত্ত্ব তপস্যায় বসার পূর্বে দৈববাণী হয় যে, "বুদ্ধত্ব লাভ করতে গেলে এখানে বসলে চলবে না; এখান থেকে অর্ধযোজন দূরে পত্রবৃক্ষতলে তপস্যায় বসতে হবে।"
এরপর দেবগণ বোধিসত্ত্বকে সঙ্গে করে এগিয়ে নিয়ে যান। মধ্যপথে একজন দেবতা ভূমি থেকে একগাছা কুশ ছিঁড়ে নিয়ে বোধিসত্ত্বকে দিয়ে বলেন যে, এই কুশই সফলতার নিদর্শন স্বরূপ।
বোধিসত্ত্ব কুশগ্রহণের পর প্রায় পাঁচ শত হাত অগ্রসর হন এবং পত্রবৃক্ষতলে ভূমিতে কুশগাছটি রেখে পূর্বমুখি হয়ে তপস্যায় বসেন। কঠোর সাধনার ফলে তাঁর শরীর ক্ষয়ে যায়।
কিন্তু এ তপস্যায় তিনি ভয়, লোভ ও লালসাকে অতিক্রম করে নিজের মনের উপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ লাভ করতে সক্ষম হলেন।

সহসা তিনি বুঝতে পারলেন এভাবে বোধিলাভ হবে না। তিনি তাই আবার খাদ্য গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিলেন। সুজাতা নাম্নী এক নারীর কাছ থেকে তিনি এক পাত্র পরমান্ন আহার করলেন। অতঃপর তিনি নদীতে স্নান করে পুনরায় ধ্যানরত হন। অবশেষে কঠোর তপস্যার পর তিনি বুদ্ধত্বপ্রাপ্ত হলেন।

শাক্যমুনি বোধিলাভের পর সাতদিন ধরে বোধিবৃক্ষের দিকে তাকিয়ে থেকে বিমুক্তিলাভের আনন্দ উপভোগ করেন। তিনি দুঃখ, দুঃখের কারণ, প্রতিকার প্রভৃতি সম্বন্ধে জ্ঞান লাভ করলেন। এ ঘটনাটিই বোধিলাভ নামে পরিচিত।

১৬| ১৩ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ৯:৫৪

মে ঘ দূ ত বলেছেন: সাঁচি নিয়ে ভিডিও দেখেছিলাম একবার। সেটি "ভারতবর্ষের দর্শনীয় স্থান" সিরিজে পোষ্ট করার ইচ্ছে রয়েছে।

ইমনদার দেয়া ছবিটার মতোন হুবহু একটা ছবি আমি এক এক্সিবিশনে দেখেছিলাম। নীচে লিঙ্ক দিলাম আমার তোলা ছবিটার।

Click This Link

অনেক ধন্যবাদ পোষ্টটার জন্য। অনেক অজানা তথ্য জানা হল।

১৫ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১২:৪০

দীপান্বিতা বলেছেন: ধন্যবাদ, মে ঘ দূ ত!...পোস্টটা কবে দিচ্ছেন!...ছবিটা কি সুন্দর, খুব ভাল লাগল :)...কোথায় তুলেছেন!
..............



মহাপরিনির্বাণলাভ:

সমস্ত জীবন ধরে তাঁর দর্শন এবং বাণী প্রচার করে অবশেষে আনুমানিক ৫৪৩ খ্রিস্টপূর্বাব্দে ৮০ বছর বয়সে বৈশাখী পূর্ণিমা তিথিতে কুশীনগরে ভগবান তথাগত মহাপরিনির্বাণলাভ করেন।

১৭| ১৫ ই আগস্ট, ২০১০ সকাল ১১:২১

শিরীষ বলেছেন: বাঃ! অনেক কিছু জানা গেল। থ্যাংকস দীপা।

১৫ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১০:১৫

দীপান্বিতা বলেছেন: ধন্যবাদ, শিরীষ! :) ... আরেকটা ছোট্ট ঘটনা জানলাম-বুদ্ধের শেষ বয়সের সেই গল্পটি

.....................


গৌতম তখন বুদ্ধত্ব লাভ করে খ্যাতিমান।
পুত্র রাহুলকে পিতা সন্দর্শনে পাঠিয়েছিলেন বুদ্ধপত্নী, বলে দিয়েছিলেন, পিতার কাছ থেকে বর চেয়ে নিও।
তিনি যদি একবার তোমাকে স্পর্শ করেন, তার জ্ঞান ও বুদ্ধত্ব তোমাতে প্রবেশ করিয়ে দিতে পারেন, তুমিও হবে জগৎ বিখ্যাত।
পুত্র রাহুল পৌঁছেছিলেন পিতার কাছে।

কিন্তু জ্ঞানী বুদ্ধ সে পথে পা বাড়াননি।
ছেলেকে জানিয়ে দিয়েছিলেন, রক্তের উত্তরাধিকারে জ্ঞান প্রবাহিত হয় না বা ছুঁয়ে দিলেই বুদ্ধত্ব বিনিময় করা যায় না।

বলেছিলেন, প্রাপ্তি হচ্ছে অর্জন। যদি কিছু পেতে হয়, তবে তা নিজেকেই অর্জন করে নিতে হয়।

১৮| ১৫ ই আগস্ট, ২০১০ দুপুর ১:৩৫

ইমন জুবায়ের বলেছেন: শিরীষ বলেছেন: ইমন ভাই এবং আপনার ব্লগে মাঝে মাঝেই এসমস্ত রত্ন ভান্ডার-এর দেখা মিলছে। সুপার্ব!

লেখক বলেছেন: ইমনভাই কোথায় আর আমি কোথায়! ....

ইমনভাই বলছেন: ইমনভাই ঢাকায় আর দীপান্বিতা কলকাতায়। :P

১৫ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১০:১৮

দীপান্বিতা বলেছেন:

:)

১৯| ১৫ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১০:২৭

শিরীষ বলেছেন:
প্রাপ্তি হচ্ছে অর্জন
===================
সার কথা!!

১৫ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১১:০২

দীপান্বিতা বলেছেন:
প্রাপ্তি হচ্ছে অর্জন ....

গৌতম নিজেকে নিতান্তই মানুষ বলে প্রচার করেছে। তার উপাধী দেয়া হয়েছে বুদ্ধ, যার অর্থ জ্ঞানী বা জ্ঞান প্রাপ্ত।

গৌতমই প্রথম বলেছেন যে মানুষ ভাল কাজ করলে তার ফলাফল এই পৃথিবীতেই পাবে, খারাপের ফলাফলও এখানেই।

গৌতম কখনও নিজেকে সর্বজ্ঞানী বলে দাবী করেনি। যেসকল প্রশ্নের উত্তর তিনি জানতেন না, সে সম্পর্কে সব সময় নিশ্চুপ থেকেছেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.