নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

লেখার মত কিছু পেলে লিখি, নিয়মিত ব্লগার না।

সুখে থাকতে ভুতে কিলায়, কথাটা প্রাচীন প্রবাদ। কিন্তু কাউকে সুখে থাকতে দেখলেও ইদানীং অনেকে ভুতের কিল খায়, কেন খায় জানি না।

doha057

মতের অমিল হওয়াটা কখনই খারাপ কিছু নয়। মতের অমিল রয়েছে বলেই আলোচনা-সমালোচনার আবির্ভাব ঘটেছে। পৃথিবীর সবাই যদি একই রকম ভাবতো তাহলে পৃথিবীও ঘূর্ণন বন্ধ করে দিত। তবে মতের অমিল যুক্তি দিয়ে খণ্ডানো উচিৎ আর যুক্তি খণ্ডানো সম্ভব না হলে উদারচিত্তে কারো মন্তব্য মেনে নেয়া উচিৎ।

doha057 › বিস্তারিত পোস্টঃ

রাজাকার উপাখ্যান, এডিটেড ও রিপোস্ট

২১ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ১২:৪৫

বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ এটি একটি কট্টর পন্থী রাজনৈতিক পোস্ট।







ওয়ান্স আপন এ টাইম, ৪২ বছর এগো, আমাদের বাপ দাদাদের আমলে আমরা একটা দেশ পাইলাম, স্বাধীন কয় সবাই, কিন্তু স্বাধীনতার সংজ্ঞার সাথে দেশের স্বাধীনতার কোন মিল পাই না। যাই হোক, ১৯৭১ এ দেশ স্বাধীন হইল। ৭২ এ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সরকার গঠন করলেন। ৭৩ এ দালাল আইন বাতিল করলেন, ৭৪ এ দুর্ভিক্ষ উপহার দিলেন, ৭৫ এ কতিপয় বীর বিক্রম ও বীর উত্তমদের হাতেই সপরিবারে নিহত হন। তার হত্যাকাণ্ডের পর শুনছি তেমন কোন বিকার হয় নাই বাঙ্গালী জাতির মনে, সবাই অনেকটা মাইন্না নিছে জাতির পিতা বুড়া হইছে, মইরা গেছে, আল্লাহ্র মাল আল্লাহ্ লইয়া গেছে ইত্যাদি ইত্যাদি। কারন জাতির পিতার পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা তাদের কৃতকর্মের দ্বারা দোয়া কামনার জন্য সামান্য সহানুভূতিটুকু ও নাকি হারিয়ে ফেলেছিলেন। শুধুমাত্র বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকি বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবী করে রাস্তায় নেমেছিলেন। কালের বিবর্তনে বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া দলের মানুষই বঙ্গবীরকে রাজাকার উপাধি দিয়ে ধন্য করলো।



উফফ মাথায় কত প্রশ্ন আসে রে!!!



প্রথম প্রশ্নঃ বঙ্গবন্ধুর এতো ঘনিষ্ঠ লোক, দেশের একজন মুক্তিযোদ্ধা, এদেশের বীর, কিভাবে তাকে রাজাকার উপাধি দেয়া হল?



দ্বিতীয় প্রশ্নঃ বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকিই বা কেন ৪২ বছর লাগালেন মখারে রাজাকার সাব্যস্ত করতে?



তৃতীয় প্রশ্নঃ কেন সবাই হঠাৎ এই ৪২ বছর পরে এক যোগে সত্যবাদী হয়ে গেল?



এরকম প্রশ্ন মাথায় ঘুরপাক খাইতেছে গত কয়েকদিন ধরে। আসলে আবর্জনা ঘাঁটলে দুর্গন্ধ ছড়াবেই। যেমন জাফর ইকবাল স্যারের বাবা ফয়জুর রহমান যেমন মুক্তিযুদ্ধের সময় শহীদ হয়েছিলেন, তেমন উনার নানা নাকি আবার রাজাকার ছিলেন, যাকে মুক্তিবাহিনীরা পরবর্তীতে হত্যা করে। শান্তি পূর্ণ উত্তরের আশায় কিছু মুরুব্বী গোছের লোকের সাথে আলোচনা করলাম। কিছু উত্তর সরাসরি পেলাম, কিছু উত্তর নিজে নিজে মিলাতে সক্ষম হলাম।



প্রথম ও সহজ উত্তর সবগুলো প্রশ্নের ব্যাপারে, সেটি হচ্ছে রাজনীতিতে সবই সম্ভব। কিন্তু এটা মনে হয় সান্ত্বনা পুরুস্কারের মত। ফিরে গেলাম তৎকালীন সময়ে, ইতিহাস ঘাঁটলাম। দেখলাম কিভাবে বঙ্গবন্ধু তার পাশের মানুষদের দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন, কিভাবে বন্ধুরাষ্ট্র ভারতের চক্ষুশূলে রূপান্তরিত হলেন, কিভাবে নোংরা রাজনীতি আর আন্তর্জাতিক চক্রান্তের শিকার হয়ে গেলেন এসব। একটা বিষয় সেই আদিকাল থেকেই চলে আসছে, যেটা হচ্ছে কোন অপরাধ করার আগে সেটাকে যদি কোন ভাবে বৈধ করে নেয়া যায়, সেটা যে উপায়েই হোক, তাহলে অপরাধের বিপরীতে প্রাথমিক ধাক্কা থেকে বেঁচে যাওয়া যায়। তখনও এরকম প্রচার ও অপপ্রচারে লিপ্ত মানুষ ছিল, এখনো আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। এরাই মুহূর্তের মধ্যে তিলকে তাল বানায়, তালকে তিল বানায়। তবে একটা জিনিষ পরিষ্কার, বঙ্গবন্ধু ৭৩ সালে দালাল আইনটা আসলে খুব একটা বুক ভরা আনন্দ নিয়ে বাতিল করেন নাই। উনি যেটা দেখেছিলেন সেটা হচ্ছে, এই আইন বলবত থাকলে উনার অসংখ্য কাছের মানুষকে এই বিচারের আওতায় এনে শাস্তি দিতে হবে। তাই খামাখা আবর্জনা ঘাঁটতে আগ্রহী না হয়ে তাদেরকে ক্ষমা করে দিয়েছিলেন। বলা বাহুল্য, রাজাকারদের লিস্ট আবার এখানে উল্লেখ করার কোন মানে হয় না। সবাই কম বেশী তাদেরকে চেনে। তখন বিষয়টা মাথায় আসলো, বঙ্গবন্ধুর খুনি যারা বেশীরভাগই সামরিক ব্যক্তিবর্গ, আর সামরিক ব্যক্তিদের ব্যাপারে যতদূর জানি তাদের কাছে আত্মসম্মান অনেক বড় বিষয়। তাদের দেশপ্রেমের ব্যাপারে কোন মন্তব্য করতে চাইনা, কারন ইতিহাস বড়ই বিভ্রান্তিকর। কিন্তু কেন জানি মনে হচ্ছে এই রাজাকারদের ক্ষমা করে দেয়াটা ঐ আর্মি পারসনদের যারপরনাই মনঃক্ষুণ্ণ করেছিলো। কারন চিহ্নিত রাজাকারদের আবার ক্ষমতার চেয়ারে বসিয়ে তাদের আজ্ঞাবহ হবার মত মানসিকতা তাদের ছিল না।



দ্বিতীয় আফসোস, আমাদের প্রধান মন্ত্রীর যত পিরীতি আর ভালোবাসা শুধু রাজাকারদের সাথে। সাকা চৌধুরীর সাথে তার প্রেমের গল্প কারো অজানা নয়, সেটাতে ব্যর্থ হয়ে নিজের মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন আরেক রাজাকারের ছেলের সাথে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহিউদ্দিন খান আলমগীর; বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকি দ্বারা স্বীকৃত রাজাকার। কারন মুক্তিযোদ্ধাদের চাইতে ভাল রাজাকার চেনে এমন কেউ আছে বলে মনে হয় না। রাজাকারদের জন্য এমন বুক ভরা ভালোবাসা নিয়ে উনি কিভাবে তাদের বিচার করবেন সেটাই বোধগম্য নয়।



বঙ্গবীর আব্দুর কাদের সিদ্দিকী নিজের একটি বাহিনী গড়ে তুলেছিলেন মুক্তিযুদ্ধের সময়। যাকে বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলার মানুষ জানতো কাদেরিয়া বাহিনী বলে, পরবর্তিতে এই কাদেরিয়া বাহিনীকে পুরো বিশ্ববাসির কাছে পরিচয় করিয়ে দেন জেনারেল আরোরা। স্বাধীনতার দলিলে সই করার পর জেনারেল আরোরা কাদের সিদ্দিকী কে পরিচয় করিয়ে দেন বিদেশী সাংবাদিকদের সামনে কাদেরিয়া বাহিনীর প্রধান হিসাবে। তখন বিশ্ববাসী প্রথম জানলো কাদের নামের এক লোক নিজের নামে বাহিনী গড়েছেন দেশ কে স্বাধীন করার জন্য।



ইতিহাসের স্বর্ণ শিখরে নিয়ে গেলেন বংবন্ধু তাকে বঙ্গবীর উপাধি দিয়ে । বাংলাদেশের একমাত্র বাহিনী যারা এক লক্ষ অস্ত্র বঙ্গবন্ধুর পায়ে সমর্পন করেছেন। দেশে যখন কোন আইন আদালত ছিল না তখন নিজে আদালত বসিয়ে রাজাকারদের বিচার করেছেন। তার প্রথম বিচার রাজাকার মুছা চৌধুরি (নায়ক মান্নার বাবা)। আজ সেই বঙ্গবীর, রাজাকার হয়ে যায় প্রজন্ম চত্বর এ না যাওয়ার কারনে।



“খায় দায় তুলসি, মোটা হয় জব্বর” দেশে যেন আর কোন ঘটনাই নাই, যাই ঘটুক সব রাজাকার আর স্বাধীনতার বিরোধী শক্তির কাম । প্রজন্ম চত্বর যে যাইবে সেই শুধু মুক্তিযোদ্ধা, বাদ বাকিরা সব রাজাকার। প্রজন্ম চত্বরের কথা নতুন করে আর কি বলব, পদ্মা সেতু, হলমার্ক, শেয়ার বাজার দুর্নীতির তদন্ত, সাগর রুনি হত্যাকাণ্ডের তদন্ত ইত্যাদি বিষয়গুলো নিয়ে তাদেরকে আন্দোলন করতে বলা হলে তারা বললেন তারা নাকি বাংলা পরীক্ষা দিতে গিয়ে ভূগোল পরীক্ষা দিয়ে আসেন না। চমৎকার উত্তর, কিন্তু সমস্যা হল বাংলা বিষয়ে কয়টি পত্র? যুদ্ধাপরাধীদের বিচার যদি প্রথম পত্র আর জামাত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ যদি ২য় পত্র হয়, তাহলে ইসলামী ব্যাংক, রেটিনা বা ইবনে সিনা বন্ধ করার দাবী কি ৩য় পত্র? দিগন্ত টিভি আর আমার দেশ পত্রিকা বর্জন করার দাবী কি চতুর্থ পত্র? মাহমুদুর রহমান আর কাদের সিদ্দিকির বিরুদ্ধে বিচার দাবী করা কি ৫ম পত্র? এই বাংলা পরীক্ষা আর কয়দিন চলবে? পরীক্ষা চলাকালীন কি কি অসদুপায় অবলম্বন করা হইছে আর যদি একই বিষয়ের এতোগুলো পত্র করে পরীক্ষা দেয়া হয়, তাহলে এর ফলাফল কি হতে পারে তা কারো কাছেই অজানা নয়।



ধর্মীয় রাজনীতির পঙ্কিলতায় আজ আমরা সবাই ধর্ম ব্যবসায়ি। কোনদিন নামাজ এর ধার দিয়া যাই না। মসজিদ তো বহুদূর। ধর্ম রক্ষায় কাছা দিয়া সবার আগে। পাফ করা চুল, মেকাপ করা গাল, পান খাওয়া ঠোট নিয়ে খালেদা জিয়া ধর্ম যুদ্ধ ঘোষনা দিয়েছেন। আর আমাদের আলেম সমাজ তো রিতিমত উনার সাথে যোগ দিয়া বাংলাদেশ জিন্দাবাদ চিল্লাইতেছেন যদিও তখন পর্দার খেলাফ হয় না, নারী নেতৃত্ব হারাম হয় না । আচ্ছা আমাদের এই হিন্দু মুসলিম রাজনীতি কত বছর যাবত আছে এই দেশে। কোন কিছু ঘটলেই হিন্ধুরা সংখালঘু হয় কেন । রাজনীতির কারনে ঘর বাড়ী ওদেরই পুড়ে কেনো। আবার অন্য দিকে তারা একটি মাত্র দলকেই ভোটের ক্ষেত্রে রাজনীতির ক্ষেত্রে বেছে নেয় কেনো । ওদের ঘর বাড়ী কে পুরাচ্ছে কারা ভেঙ্গে দিচ্ছে তা কারো অজানা নয়, তার পরও তারা নিশ্চুপ কেন।



এখন দাবী একটাই, বুড়োদের দিয়ে অনেক রাজনীতি হয়েছে। এরা এদের স্ক্যান্ডাল ছেড়ে বেড়িয়ে আসতে পারবেন না। কেঁচো খুরতে গিয়ে সাপ বেরোবেই, আর এদের কারো ইতিহাসই ধোয়া তুলসী পাতার মত নয়। ঘাদানিকের শাহরিয়ার কবির পাকিস্তান আর্মিদের মুরগী সাপ্লাই দিতেন। উনার মুরগী খেয়ে পাকিস্তানী আর্মি বাঙ্গালীদের হত্যা করেছে। কবি সুফিয়া কামাল পাকিস্তান টেলিভিশনে চাকুরী করতেন। জাতীয় ফুফু সাজেদা চৌধুরী পাকিস্তানের গ্যাজেটেড রাজাকার। গোলাম আজমের রায় এতো বিলম্বিত কেন হচ্ছে? তার জন্য তো নতুন কোন তথ্য প্রমানেরও প্রয়োজন নেই!! এরকম বলে শেষ করা যাবে না। তাই বলতে চাই মুরুব্বীদের, অনেক হইছে, আপনেরা কেউই ভালা না, গদি ছাড়েন, অন্তিমকালে কাদা ছোঁড়াছুড়ি না করে কিছু ভাল কাজ করেন। এখন সময় তরুণদের, তারুণ্যের সূর্যের আলো সহ্য না হলে কোন অন্ধকার গুহায় গিয়ে আশ্রয় নিন।





পুনশ্চঃ ফেসবুক এর রাজনৈতিক অবস্থানের উপর একটি সমীক্ষা চালালে দেখা যাবে, রাজনীতি একটি অখাদ্য, সবাই পলিটিকাল ভিউ এ লিখে রাখে F*ck Politics টাইপ কথাবার্তা, ওয়াক থু ছাড়া কিছুই পাবেন না। আর এই সবকিছুর জন্য দায়ী বৃদ্ধদের কলঙ্কিত রাজনৈতিক জীবন, যারা তাদের পরবর্তী জেনারেশন এর জন্য কিছুই রেখে যায়নি।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে মার্চ, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:০২

নীলপথিক বলেছেন: এত সুন্দর একটা লেখা! আর কেউ মন্তব্য করেনি। আমাদের অবস্থাও ঐ বুড়োদের মতোই দেখছি।

২৬ শে মার্চ, ২০১৩ দুপুর ১২:৫৫

doha057 বলেছেন: কি জানি ভাই, হয়তো কারো মন মত হয় নাই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.