নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আর পড়া নয়, এখন শুধুই ঘোরা। কয়েকদিন শুধু ঘুরব আর ঘুরব।দূর পাহাড়ে যাব, চাকমাদের ব্যাং ভাজা খাওয়া দেখব, মগ মেয়ের ঝরণা থেকে কলস ভরে পানি নেওয়া দেখব। সাগরে যাব, ডলফিনের সাথে সাঁতার কাটব, সুটকি ভরতা আর রূপচাঁদা ফ্রাই দিয়ে ভাত খেয়ে রৌদ্রে গা ড্রাই করে নেব। ভরা নদীতে মাঝিদের সাথে নৌকায় শুয়ে কাঁটাব রুপালী রাত্রি।
শাহবাগ নিয়ে আমার কিছু কি লেখা উচিত! হ্যাঁ কি না ঠিক বুঝে উঠতে পারছি না। হাসিনা খালেদা কে ক্ষমতায় এলো আর গেলো তা নিয়ে আমার খুব বেশী মাথা ব্যাথা নেই। পেটের ধান্দায় ব্যস্ত থাকি ভাই। তাই বলে আমি কিন্তু একদম নগন্য মানুষ নই ভাই। রাতে যখন ডাইনিংয়ে ডিনার করতে যাই তখন আমি খবর দেখি। অফিসের আরো কলিগদের সাথে খবর দেখি। নানা মানুষ নানা মত। যারা বিএনপি পন্থি তারা হু হা করে। যারা জামাত পন্থি তারা বোবা হয়ে থাকে। উদাস দৃষ্টিতে টিভির দিকে তাকিয়ে থাকে যেন এই জিনিস তারা দেখে নাই কোনকালে। আর যারা লীগপন্থি তারা কথার তুবড়ি ছোটায়। তাদের কথা শুনলে মনে হয় দেশের সব থেকে বড় রাজনৈতিক বোদ্ধা। আমি যে ভাই ঠিক কোন দলে বুঝে উঠে পারিনি আজো। আমি অনেক কিছুই বুঝিনা। তবে মাঝে মাঝে মজা করে বলি আমি ভাই সরকারীভাবে বিরোধীদলের সমর্থক। কারণ বিএনপি যখন ক্ষমতায় তখন আমি তাদের কর্মকান্ডের সমালোচনা করেছি আর এখন করি লীগের।
যদিও খুব বেশী জোরে নয়। কারণ আমার প্রোডাকশান ম্যানেজারের লীগ পছন্দ। লীগ যাই করুক তার কাছে সব সহীহ। তার যুক্তি গুলোও সেরকম। আচ্ছা মানলাম রাজীব নাস্তিক। তাই বলে তাকে জবাই করে মারবে কেন। গুলি করে মারুক। গুলি করে মারা আর জবাই করে মারার মধ্যে অনেক পার্থক্য। ছেলেটাকে এভাবে মারা ঠিক হয় নাই।
আমি স্যারকে বলেছিলাম যে স্যার আমরা আওয়ামীলীগকে সমর্থন করবো তার মানে এই নয় যে আমাদের ধর্মীয় বিশ্বাসের উপরে গিয়ে একজন নাস্তিককেও সমর্থন দিতে হবে যে মোহাম্মাদ নামটাও সঠিক ভাবে লিখতে পছন্দ করত না। উত্তর তো আগেই বলে দিয়েছি।
স্যারের নিজের জেলা মানিকগঞ্জ। মানিকগঞ্জে গ্রামবাসী (তারা যে আওয়ামী লীগ এটা না বলে দিলেও বোঝা যায়) আর পুলিশের সাথে হরতাল সমর্থকদের সাথে সংঘর্ষে ৪ জন নিহত। আমি দোয়া করছিলাম যেন খাবার টেবিলে স্যারের সাথে দেখা না হয়। স্যার নয়টার দিকে খান। আমি সাড়ে দশটার দিকে গেলাম খেতে। যখনি স্যারের ভয়, তখনি খাওয়ার সময় হয়। স্যার দেখি আলোচনা করছেন। গ্রামের মানুষগুলো গাধা নাকি। তারা জানে পুলিশের বন্দুক আছে, গুলি করার অর্ডারও আছে। কোন সাহসে তারা পুলিশের সাথে লাগতে যায় এখন।
অতিশয় যুক্তিপূর্ন কথা। আমি আর না করি কিভাবে। স্যারের সাথে তর্ক করে তো আমি আমার সামনের ইনক্রিমিমেন্টটা খারাপ করতে পারি না। জয়তু বাঙালী মেন্টালিটি। শিবির মরুক আর লীগ মরুক তাতে আমার কি। আমার পেটের ভাত হজমে তো কোন গন্ডগোল দেখতে পাচ্ছি না।
তবে আমি কিন্তু শাহবাগে গিয়েছিলাম। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে চলে গেলাম শাহবাগ। যেতে যেতে দুপুর হয়ে গেলো লোকের ভীড় কম। টিভিতে , সংবাদপত্রে মানুষের যে সাগর দেখেছিলাম তাতে ভেবেছিলাম আমি প্রজন্ম চত্ত্বরে পৌছতে পারবো না। কিন্তু অবাক ব্যাপার পৌছে গেলাম। চারুকলার সামনের রোড দিয়ে আমি এগুচ্ছি। রাস্তায় স্কুল কলেজের ড্রেস পরা ছেলে মেয়েরা জটলা বেঁধে স্লোগান দিচ্ছে। এদের দেখে আমার স্কুলে পড়ার সময়ের কথা মনে পড়ে গেলো। যখন কোন বড় নেতা এলাকায় যেত তখন স্কুল থেকে আমাদের দলবেঁধে নিয়ে যাওয়া হয় রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে স্লোগান দেয়ার জন্য। এখানে অবশ্য অবস্থা ভিন্ন। এরা নিজেরাই এসেছে। জাতীয় জাদুঘরের রাস্তার সামনে বঙ্গবন্ধুর ইয়াবড় একটা পোর্ট্রেট। আজব ব্যাপার আমি তো এটাকে নির্দলয়ীয় গণজাগরণ ভেবে আসলাম। এখন তো ঠিক নির্দলীয় বলে মনে হচ্ছে না। আমি সবসময় নিজেকে সব ধরণের দলীয় সমাবেশ থেকে দূরে রাখতে চেষ্টা করি। কারণ আমি যখন প্রথম কলেজে পড়তে যাই তখন আম্মাকে কথা দিয়েছিলাম কোন ধরণের ছাত্র রাজনীতিতে জড়াবো না। সেই থেকে আমার ভিতরে একটা ছাত্ররাজনীতি বিরোধী মনোভাব কাজ করে। মনটা খুঁচখুচ করছিলো।
আমি খেয়াল করিনি যে আমি একটা লাইনের শেষ মাথায় দাঁড়িয়ে আছি। লাইনের শুরুর দিকে খাবারের প্যাকেট বিলাতে বিলাতে আমার পর্যন্ত চলে এলো। আমাকেও এক প্যাকেট ধরিয়ে দিলো। এক প্যাকেট বিরানি পেয়ে খুশী হতে পারলাম না। কারণ বুঝলাম না। এটা তো সর্বসাধারণের সমাবেশ। এখানে আগতদের বিরানী খাওয়ার বাজেট আসলো কোথা থেকে। ভাই আমার দিলে আওয়ামী চেতনার বীজ নেই। পারিবারিকভাবে আমার পরিবার ধানের শীষে ভোট দেয়। গতবার আমি না ভোটে সিল মেরেছিলাম। এবার আর ভোট কেন্দ্রে যাবো কি নিজেই জানি না। আমি অনেক কিছুই জানি না। বিরানীর প্যাকেট হাতে নেওয়ার পর আমার বিরোধী মন ছোক ছোক করতে লাগলো। আমি নেতাদের ভাষন আর শুনতে পেলাম না। ছেলেদের হাতে হাতে চকোলেট বিলানো দেখতে পেলাম। দেখতে পেলাম সব গুলো ক্যামেরা প্রজন্ম চত্ত্বরের দিকে ফেরানো। তাদের স্ক্রীণে ভেসে উঠছে শহিদ জননী জাহানারা ইমামের মুখ। কোন চ্যানেলে আমি জাদুঘরের সামনে রাখা বঙ্গবন্ধুর পোর্ট্রেট দেখিনাই। মিডিয়াকেও আমার কাছে আর নিরপেক্ষ বলে মনে হলো না। আজ থেকে আর খবর দেখবো না।
তার থেকে ফিরে যাই। হাতে তখনো বিরানীর প্যাকেট। ছূড়ে ফেলার মত সৎসাহস আমার নাই। শিবির আমি কোন দিন পছন্দ করি নাই। এই প্যাকেট যদি এখানে ছূড়ে ফেলি তবে নিশ্চিত শিবিরের কর্মী হিসেবে এখানেই গণপিটুনি খেয়ে আমাকে শহীদ হতে হবে। নীলক্ষেতের সামনে একটা ছেলে দাঁড়িয়ে আছে। পোষাক দেখলে বোঝা যায় টোকাই। আমি ওর দিকে প্যাকেট টা বাড়িয়ে দিলাম। ও ওসংকোচে নিলো। বিরানীর প্যাকেটটার প্রয়োজনীয়তা আমার ছিলো না। নিজেকে ভারমুক্ত করতে পেরে ভালোই লাগছিলো। শুনেছিলাম এক ভিখিরি তার সারাদিনের ভিক্ষার টাকায় খাবার কিনে নিয়ে এসেছিলো শাহবাগের রাত জাগা ক্লান্ত ক্ষুধার্ত ছেলেদের জন্য। ভিক্ষার টাকায় যে বিরানীর প্যাকেট পাওয়া যায় এই প্রথম জানলাম।
শাহবাগ নিয়ে সুমন গান গেয়ে নিজের সাইটে আপলোড করছে। প্রতীক, সুমি রাও পিছিয়ে নেই। ওদের গানের কোন কলি এখন ঠিক মাথায় আসছে না। লীগ, দল, জামাত শিবির যা পারে তাই করুক। আমার কি। শাহবাগ নিয়ে আমি কিছু লিখবো না। আমি অনেক কিছু কম বুঝি। আম আসলেই অনেক কিছু কম বুঝি।
আমি মুক্তিযুদ্ধ দেখিনি, দেখেছি মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি পুতি কোঠা। পরে হয়তো মুক্তিযোদ্ধাদের ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে এই কোঠা দেয়া হবে। আমি শাহবাগ দেখেছি, আমি গনজাগরণ দেখেছি। ভাবছি আমার সন্তানদের আমি কখনো ইতিহাসের বইগুলো পড়তে দেব না। বাস্তব সময়েই ইতিহাস থাকে কুয়াশা ঘেরা। ভবিষ্যতে ইতিহাস হয়ে যাবে রূপকথার গল্প। আমি কেন এত কম বুঝি। আমি আসলেই কি কিছু বুঝি না!
২৩ শে এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ১২:৪৫
দক্ষিনা বাতাস বলেছেন: যত হাসি তর কান্না, বলে গেছেন রাম শন্না (শর্মা)।
২| ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১:২৩
মন্জুরুল আলম বলেছেন: চমত্কার লিখছেন ভাই....মনে হয় এটা প্রথম পাতাতে কোন কালেই স্থান পায়নি..... আমি আমার প্রিয় লিস্টে স্থান দিলাম......
২৩ শে এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ১২:৫২
দক্ষিনা বাতাস বলেছেন: এই অধমের কোন লেখা কখনো কারো প্রিয় তালিকায় যাবে তা ভাবতে পারিনি কখনো। আপ্লুত হলাম।
ভাইজান, আমার অন্যান্য পোস্ট পাঠসংখ্যার তুলনায় এটার পাঠসংখ্যা তুলনামূলক পর্যালোচনা করলেই বুঝতে পারবেন এটার অবস্থান কোথায় ছিলো।
৩| ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ১:০০
মদন বলেছেন: +
২৩ শে এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ১:৩৩
দক্ষিনা বাতাস বলেছেন: অবশেষে এই লেখাতেও প্লাস। আহলাদিত হইলাম মদন ভাই।
৪| ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ১:১৩
লেজ কাটা শেয়াল বলেছেন: أ+
২৩ শে এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ১:৩৩
দক্ষিনা বাতাস বলেছেন: আরো একটা প্লাস! ওরেব্বাস।
৫| ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ১:৫৬
উৎস১৯৮৯ বলেছেন: আমিও প্লাস দিলাম।
২৩ শে এপ্রিল, ২০১৩ বিকাল ৩:৩৮
দক্ষিনা বাতাস বলেছেন: মোটে জোটে না তাও পাঁচটা। লোভ বেড়ে যাচ্ছে ভাইজান।
©somewhere in net ltd.
১| ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:৫৮
পথহারা সৈকত বলেছেন: