নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মানুষ বাঁচে আশায়, শূন্যে বাঁধি আশা।

আমার ব্লগ http://dokhinabatas.blogspot.com/

দক্ষিনা বাতাস

আর পড়া নয়, এখন শুধুই ঘোরা। কয়েকদিন শুধু ঘুরব আর ঘুরব।দূর পাহাড়ে যাব, চাকমাদের ব্যাং ভাজা খাওয়া দেখব, মগ মেয়ের ঝরণা থেকে কলস ভরে পানি নেওয়া দেখব। সাগরে যাব, ডলফিনের সাথে সাঁতার কাটব, সুটকি ভরতা আর রূপচাঁদা ফ্রাই দিয়ে ভাত খেয়ে রৌদ্রে গা ড্রাই করে নেব। ভরা নদীতে মাঝিদের সাথে নৌকায় শুয়ে কাঁটাব রুপালী রাত্রি।

দক্ষিনা বাতাস › বিস্তারিত পোস্টঃ

মিয়ার দালান, ঝিনাইদহ

২৪ শে মে, ২০১৪ বিকাল ৫:২৭

রুমমেট এখন ছাত্রজীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। বিশেষ করে আমরা যারা পড়াশোনা করতে বাড়ির বাহির হয়ে পড়েছি। এসএসসি পাশ করার পর সেই যে বাড়ির বাহির হলাম , তারপর আর সেভাবে বাড়ি ফেরা হলো না। বিবাহিত মেয়েদের মত মাঝে মাঝে পিতৃগৃহে বেড়াতে যাই। মায়ের হাতের রান্না খাওয়ার লোভ তাই ক্রমাগত বেড়েই চলেছে।



আমি আড়াই বছরের মত ঝিনাইদহ ছিলাম। স্থানীয় লোকেরা উচ্চারন করে ঝিনেদা। ঝিনুকদহ থেকে ঝিনাইদহ নামটা ব্যুৎপত্তি লাভ করেছে। পাগলা কানাই মোড়ে একটা মেসে উঠি। মেসের কোন নাম ছিলো না। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করা ১৩ জন ছাত্র মিলে দোতলার ফ্লাট নিয়ে থাকতাম। খুলনায় আমাদের পাশের বাড়ির মোকলেস কাকুর ছোট শ্যালকের মাধ্যমে আমি এই মেসের সন্ধান পাই।



মেসে ওঠার পর রুমমেট হিসেবে পাই মোজাম নামের একটা ছেলেকে। ঝিনাইদহের হরিনাকুন্ডু উপজেলায় বাড়ি। খুব সহজ সরল একটা ছেলে। মনের মধ্যে তেমন কোন প্যাঁচগোঁচ ছিলো না। খেতে ভালোবাসত । তরকারী যাই হোকনা কেন এক গামলা ভাত সে অনায়াসে খেয়ে ফেলতে পারতো। এই ছেলের দ্বারাই খাওয়াকে শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব বলে আমি মনে করতাম। তার আরেকটা নেশা ছিলো। সিনেমা হলে গিয়ে ম্যুভি দেখা। প্রতি সপ্তাহে সে একটা করে ম্যুভি দেখত। একহাজার চলচিত্র দেখলে পরিচালক হওয়া যায় এই ডায়ালগ আমি মোজাম্মেলের মুখেই প্রথম শুনি।



মোজাম্মেল নিজে থেকে প্রস্তাব করলো মিয়ার দালান দেখতে যাওয়ার্। তার ধারনা আমি এগুলো দেখে আনন্দ পাবো। কি দেখে ধারণা করলো বলতে পারবো না।



সময়টা ২০০৬ এর নভেম্বর এর দিকে। একদিন দুপুরের খাওয়া সেরে মোজাম আর আমি বেড়িয়ে পড়লাম। পাগলা কানাই থেকে বাসে করে আরাপপুর বাসস্ট্যান্ডে নামলাম। তারপর রিকশা নিলাম। ক্যাডেট কলেজের পেছনের গ্রামের ভেতর দিয়ে রিকশা এগিয়ে চলেছে। দুপাশে বাশ ঝাড়। ঝিনাইদহ সদর থেকে মিয়ার দালানের দূরত্ব তিন কিলোমিটারের মত। অল্প সময়ের মধ্যে পৌঁছে গেলাম। নবগঙ্গা নদীর পাশে অবস্থিত ভগ্নপ্রায় এক ভবন। খুব সম্ভবত দ্বিতল ছিলো।



মোজাম মিয়ার দালানের ইতিহাস বলতে পারলো না। এটুকু জানে এটা কোন প্রাচীন জমিদার বাড়ী। ঘুরে ঘুরে বাড়িটা দেখলাম। সাপখোপের বাসা হয়ে আছে। মেঝেতে গাঁজাখোরেরা তাদের নিদর্শন রেখে গেছে। আমার মনে হতে লাগলো আমি ইতিহাসের খুব কাছে এসেছি। এর আগে ঐতিহাসিক স্থান ভ্রমনের অভিজ্ঞতা বলতে শিলাইদহ কুঠিবাড়ি এবং বাগেরহাটের খান জাহান আলী (র:) এর মাজার ও ষাটগম্বুজ মসজিদ ভ্রমনের অভিজ্ঞতা।



এই যেমৃতপ্রায় নবগঙ্গা নদীর পাড়ে ঘাট, এই ঘাটে বসে জমিদার কন্যা স্নান করত, সখীদের সাথে নিয়ে জল ছিটিয়র খেলা করত। মুরদ্দায় অবস্থিত এই দালানের খোদাই করা লিপি থেকে জানা যায় ১২৩৬ বঙ্গাব্দে। মোজাম জানালো এই দালানের সাথে একটা সুড়ঙ্গ আছে। আমাকে দেখানোর জন্য কিছুক্ষণ খোঁজাখুজি করলো। কিন্তু খুঁজে পেলো না।



শীতের সূর্য্য হেলে পড়েছে পশ্চিমে। আমরা ফেরার পথ ধরলাম। ধান খেতের পাশ দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে আরাপপুর চলে এলাম।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে মে, ২০১৪ রাত ১০:৪৫

মামুন রশিদ বলেছেন: লেখার শুরুটা ভালো লেগেছে ।

২৬ শে মে, ২০১৪ সকাল ৯:০৯

দক্ষিনা বাতাস বলেছেন: ধন্যবাদ জনাব মামুন রশিদ,

২| ২৫ শে মে, ২০১৪ রাত ৯:৪১

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: অভিজ্ঞতার বর্ণনা ভাল দিয়েছেন। অ্যান্টি-ক্লাইমেক্স বর্ণনা!

২৬ শে মে, ২০১৪ সকাল ৯:০৩

দক্ষিনা বাতাস বলেছেন: হা হা হা। এখানেও এন্টি ক্লাইমেক্স! ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.