![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ভাবতে অবাক লাগে, বঙ্গবন্ধু সর্বক্ষণই ছিলেন গরিব মানুষের পক্ষে। আজন্ম তিনি একই ধারার কাজ করে গেছেন। জীবনের একটি দিনও তিনি এই ধারার বিপক্ষে কোন সিদ্ধান্ত নেননি। ঔষধের ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। তাঁর কাছে বহুজাতিকদের পেটেন্ট রাইটের চাইতেও দেশের জনগণের স্বার্থ ছিল প্রধান বিবেচ্য, কারণ পেটেন্ট রাইট মানলে মানুষ কম দামে ঔষধ খেতে পারবে না। বঙ্গবন্ধুর এ সিদ্ধান্তটিই ছিল আমাদের দেশে ঔষধ শিল্প বিকাশের প্রধান সহায়ক শক্তি। এর ফলে দেশী ঔষধ কোম্পানিগুলো বিপুল প্রণোদনা লাভ করে এবং প্রতিযোগিতামূলক বাজারের কারণে জীবন রক্ষাকারী ঔষধগুলোর দাম বিদেশী কোম্পানিগুলোও কমাতে বাধ্য হয়, দাম কমে আসার ফলে এগুলো সহজলভ্য হয় এবং এই প্রক্রিয়ায় দেশের জনগণ ও দেশীয় ঔষধ শিল্প উভয় পক্ষই উপকৃত হয়। আমাদের দেশে জীবন রক্ষাকারী প্রয়োজনীয় ঔষধের দাম অন্যান্য দেশের তুলনায় সস্তা হওয়ার এটি প্রধান কারণ। পেটেন্ট রাইট না মানার জন্য বঙ্গবন্ধু সরকারের বিরুদ্ধে দেশীয় আদালতের মামলায় সুবিধা না হলে বহুজাতিক কোম্পানিগুলো আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা রুজু করতে পারত, তাদের রায়ে বঙ্গবন্ধুর ক্ষতিপূরণ প্রদান ও কারাবাসের আদেশও হতে পারত, ঔষধের পেটেন্টধারী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্য-ফ্রান্স-বেলজিয়ামরা জাতিসংঘে এ জন্য বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন করতে পারত, হয়ত অর্থনৈতিক বা বাণিজ্যিক অবরোধের প্রস্তাবও তারা পাস করতে চাইত। কিন্তু আমরা জানি এগুলো কোনটাই তাদের জন্য সহজ হতো না। সারা পৃথিবীতে বঙ্গবন্ধুর যে কারিশমা সৃষ্টি হয়েছিল, শোষিত মানুষের পক্ষে কথা বলার অভ্যাসের জন্য তিনি যেভাবে সমগ্র পৃথিবীর গরিব মানুষের কাছে নন্দিত হয়েছিলেন, তা বঙ্গবন্ধুকে পৃথিবীময় আরেক উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিল। তিনি হয়ে গিয়েছিলেন সারা পৃথিবীর গণমানুষের অন্যতম নেতা, শোষণমুক্তির আইকন। বিদেশী পেটেন্টধারীরা নিশ্চয়ই এটা বুঝেছিল এবং সম্ভবত এই ভয়েই তারা পিঠটান দিয়েছিল, বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে লড়াইয়ে আসেনি। মাঝখান দিয়ে আমরা পেয়ে গেলাম সবসময়ের জন্য পেটেন্ট থেকে মুক্তি। বঙ্গবন্ধুর দেয়া সেই পেটেন্টমুক্তির সুবিধা আমরা বাংলাদেশের জনগণ এবং দেশী ঔষধ কোম্পানি আজও ভোগ করছি। কম দামে ঔষধ পাচ্ছি। নইলে বাংলাদেশে ঔষধের দাম অনেক বেড়ে যেত এবং আজও বর্তমান দামের তিন-চারগুণ দামে আমাদের ঔষধ খেতে হতো।
©somewhere in net ltd.