নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার সব লেখা

ডা: আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী

চিকিৎসক এবং লেখক

ডা: আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী › বিস্তারিত পোস্টঃ

যারা রেপিস্ট হতে চান

০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:৪৪

সাম্প্রতিক বেশ কিছু ঘটনাকে কেন যেন পূর্বপরিকল্পিত মনে হচ্ছে। বিরোধীদলের দায় সারা গোছের আন্দোলন, শক্ত কোন অবস্থান না নেওয়া, কোথায় যেন একটা সমঝোতার ইঙ্গিত দিচ্ছে। হয়তো দেখা যাবে জুন জুলাই আসতে আসতে খুব সুন্দর একটা ফর্মুলার আবির্ভাব হবে। একটা উইন উইন অবস্থান। দুই দল ই বলবে তাঁরা জিতেছে। পাকিস্তান সফরে যাওয়ার মত। বোর্ডের ইচ্ছা ছিল কিন্তু দেশবাসীর বিরোধিতার কারণে পারলো না। লোটাস কামাল পেয়ে গেলেন আই সি সি এর ভাইস প্রেসিডেন্ট পদ আর পাকিস্তানে যেতেও হল না।

দেশে দুর্নীতি থাকবেই, রেপ থাকবেই, বিশ্বজিৎ রা মরবেই। তেলের দাম বৃদ্ধি নিয়ে হরতাল হবেই। কিছুদিন আগে ভারতের রেপ ভিক্টিমকে নিয়ে একটা আর্টিকেল লিখেছিলাম, তাঁর মতামতে একজন লিখেছিলেন টাঙ্গাইলে একটা গ্যাং রেপ হয়েছে, এটা নিয়েও লিখেন। ‘শুধু কি ভারত গ্যাং রেপ করতে পারে? আমরাও পারি’। আমার নিজেরও বোধহয় খুশী হওয়া উচিৎ, ঐ পাঁচজন ভিডিও গ্রাফার আমাকে একটা বিষয় উপহার দিয়েছেন। লেখালেখি করবার জন্য।

লেখালেখি শুরুর পরে একদিন সম্পাদক সাহেব ফোন করে জানিয়েছিলেন, এই ফিল্ডে নতুন এসেছেন, এখানে অনেক কিছু ঘটবে। লেখালেখির জন্য গালি গালাজ হবে, হুমকি আসবে কখনও উদ্ভট মন্তব্য শুনতে হবে। সবচেয়ে বড় কথা আপনাকে প্রস্তুত থাকতে হবে যেকোন ঘটনার জন্য। হুমকি এখনও পাইনি। গালিগালাজ অনেক শুনেছি। তবে সবচেয়ে আকর্ষণীয় লেগেছে ‘উদ্ভট মন্তব্য’ গুলো। বেশীর ভাগের এর ই উপদেশ ‘লেখা ছেড়ে ডাক্তারি করেন’। অর্থাৎ আমার চারপাশে রুগী গিজগিজ করছে আর আমি তাঁদেরকে চিকিৎসা না দিয়ে বসিয়ে রেখেছি আর লেখালেখি করছি।

যারা আমার লেখা পড়েন (আদৌ যদি কেউ পড়েন) তাঁদের একাংশ কোন মন্তব্য করেন না। কেউ আবার করেন। এবং ভাল এবং মন্দ দুইই করেন। তবে কিছু আছেন যারা নিয়মিত বিরক্ত হন এবং বিরক্তি প্রকাশ করেন। এবং কোন এক দুর্বার আকর্ষণে পরবর্তী লেখাটাও পড়েন এবং আবার বিরক্ত হন। বিরক্ত হওয়া যে কারো নেশা হতে পারে, এই ফিল্ডে না আসলে জানতে পারতাম না।

রেপ নিয়ে যে কয়টি লেখা লিখেছি, কিংবা রেপের রিপোর্ট ছেপেছে এমন অনলাইন পত্রিকার মন্তব্য অংশ পড়েছি সেখানে এক ধরনের মন্তব্য প্রায়শই দেখা যাচ্ছে তা হচ্ছে বোরখা বা হিজাব হচ্ছে সলিউশান। কেউ টার্গেট করলেন ভারতীয় টিভি চ্যানেল গুলোকে। সেসব চ্যানেলে মহিলারা যে ড্রেস পড়ছে তাঁর কারণে এসব ঘটছে। কেউ আবার বললেন, তাই যদি হত দেশের সব পুরুষই রেপিস্ট হয়ে যেত। অবাক করা ব্যাপার হচ্ছে কেউ দায়ী করলেন না বিভিন্ন সিডি র দোকানে বিক্রি হওয়া শত শত ব্লু ফিল্মকে। কেউ দায়ী করলেন না সেই সব রেপিস্টের পিতা মাতা কে।

একজন মন্তব্য করেছিলেন, রেপিস্ট হচ্ছে রেপিস্ট। তাঁর চাই সুযোগ। কোন মেয়েকে একা পাওয়া। তা সে বোরখা পরে থাক আর স্কার্ট পরে থাক। এটা আটকাতে পারে দুটো জিনিস। এক তাঁর শিক্ষা আর দ্বিতীয়টি আইনের ভয়। শিক্ষা নিয়ে কথা বলে লাভ নেই, কারণ এই পুরুষ শাসিত সমাজে মেয়ে দের পন্য ভাববার শিক্ষা আমরা অহরহ দিচ্ছি। বাকী থাকে আইনের প্রয়োগ। সিঙ্গাপুর দেখিয়ে দিয়েছে, শুধু আইনের প্রয়োগের কারণে সেখানে রেপ এর ঘটনা কত কম।

আইন কি হওয়া উচিৎ এই নিয়ে বেশ বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। মৃত্যুদন্ড বিরোধী একটি গ্রুপ আছে, যারা কোন অপরাধেই মৃত্যুদণ্ডের বিপক্ষে। যাবজ্জীবন এ কারো আপত্তি নেই। কেউ আবার ‘কেমিক্যাল কাস্ট্রেশান’ এর পক্ষে। আরও একটি ব্যাপার উঠে এসেছে, তা হচ্ছে বয়স। ১৮ বছরের নীচে হলে তাঁকে শাস্তি দেয়া উচিৎ কি না। ভারতের রেপ এর ক্ষেত্রে একজনের বয়স ১৮ এর নীচে। তবে ভয়াবহ তথ্যটি হচ্ছে, যে সব অপরাধের শাস্তি যত কঠোর, সেসব অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার রেকর্ড তত কম। অর্থাৎ কঠোর শাস্তি হলে আসামী পক্ষ পুরো শক্তি লাগিয়ে দেয়, যেন কোন ভাবে দোষী সাব্যস্ত না হয়। হুমকি, সাক্ষী কেনা বেচা, ভালো উকিল জোগাড় করা এই ব্যাপারগুলো অনেক বেশী শুরু হয়।

টাঙ্গাইলের ঘটনার মর্মান্তিক অংশ মনে হয়েছে মেয়েটির মানসিক অবস্থা। ঘটনাটিকে সে মেনে নিয়েছে। বিচার চাইতেও সাহস করে নি। নেহাত ব্যাথা সহ্য করতে না পারার জন্য ডাক্তারের কাছে যেতে হয়েছে। পুরো ঘটনা বলতে হয়েছে। ছেলেগুলো একটু কম টর্চার করলে, কম ব্যাথা পেলে হয়তো পত্রিকায় আসতো ও না। ধরা তো পড়তোই না বরং ওদিকে ভিডিও বিক্রি করে বেশ আয়ের সুযোগও পেত। অথবা ভিডিও র কথা বলে ব্ল্যাক মেইল করে আরও কিছুদিন এমন ঘটনা চালিয়ে যেত। পুরো ঘটনা থেকে এদেশের পুলিশ বা প্রশাসন কোন শিক্ষা নেবে কি না জানি না। তবে রেপিস্টরা হয়তো শিক্ষা নেবে। এর পরে এমন কিছু করবে না যেন ব্যাথায় অস্থির হয়ে মেয়েটিকে ডাক্তারের কাছে যেতে হয়।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪৬

অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: ভালো লাগলো +++++

কিন্তু এটার কি কোন বিহিত হওয়া উচিৎ না ?

ভালো থাকবেন ।

২| ১০ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:৪৫

ডা: আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী বলেছেন: সেজন্যই তো এই লেখা

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.