![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মৃত্যুর দিনক্ষণ নিয়ে আলোচনা কিংবা বিতর্ক হতে পারে। তবে ফলাফল মনে হয় না আসবে। কেউ বলবে যেদিন লাকি মার খেয়েছিল, কেউ বলবে রুমী স্কোয়াড শুরুর দিন। কেউ বলবে ৬ই মে, যেদিন হেফাজতের ওপর ক্র্যাকডাউনের পরে মঞ্চ ভেঙ্গে দেয়া হয়েছিল। আবার কেউ হয়তো অস্বীকার করবেন, গণজাগরণ মঞ্চ আছে। যে চেতনা নিয়ে এই মঞ্চ তৈরি হয়েছিল, সেই চেতনার মৃত্যু নেই। কেউ আবার এই নিয়ে আলোচনা করতে চাইলেই তেড়ে আসবেন।
লাকি যেদিন মার খেয়েছিল, সেদিন একজনকে বলেছিলাম, ব্যাপারটা লুকানোর চেষ্টা করছেন কেন? উত্তর ছিল, জানাজানি হলে, বিরাট গোলযোগ শুরু হয়ে যাবে। মনে মনে হেসেছিলাম, আপনারা স্বীকার না করলে কি কেউ জানবে না? তাঁর চেয়ে বরং স্বীকার করুন কি হয়েছে, খুঁজে বের করুন কোথায় ভুল হয়েছে আর পদক্ষেপ নিন, যেন এমনটা আর না হয়। বলাই বাহুল্য তা হয় নি। মঞ্চে দলীয় নেতা কর্মীদের আনাগোনা শুরু হয়ে গেল। একসময় মঞ্চ হয়ে উঠলো রাজনৈতিক নেতা হতে আগ্রহীদের বিজ্ঞাপন স্থল।
আন্দোলনটা প্রথমে বেশ স্বতঃস্ফূর্ত ছিল। তাঁর চেয়েও বেশী ছিল অরাজনৈতিক। কি মতাদর্শে বিশ্বাসী তাঁর চেয়ে বড় হয়ে উঠেছিল আমরা কি চাই। একই চাওয়া, একই গন্তব্য, যে সঙ্গে থাকতে চায়, থাকবে। কে নেতা, সে কি বলছে তা নিয়ে কেউই উৎসাহী ছিল না। কখনও কখনও বড় বড় বুলি আওরানো, গতানুগতিক ভাষণ হচ্ছিল ঠিকই, তবে তা মুখ্য আকর্ষণ ছিল না। কেউ শুনছে, কেউ শুনছে না, এমন একটা পরিস্থিতি। তবে পুরো প্রচেষ্টাটা রাজনৈতিক রূপ নিতে দেরি হোল না। এখানে দুকথা বললেই সবাই শুনছে। বামেরা চাইলো নিজেদের ভঙ্গুর অবস্থা শুধরাতে আর আওয়ামীরা চাইলো ভোট বাড়াতে।
ওদিকে টিভি কাভারেজ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এলো খ্যাতি। ‘টক শো’ আর সরাসরি সম্প্রচার অনেককেই রাতারাতি স্টার করে দিল। এবার শুরু হোল আত্মপ্রচারের প্রতিযোগিতা। সেখানে মূল বাঁধা হচ্ছে প্রতিপক্ষ। তাই শুরু হোল প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার প্রচেষ্টা। এবার প্রতিপক্ষ কিন্তু নিজেরা। একসময় বাম আর আওয়ামী সংগঠনগুলোর ভেতর নেতৃত্বের ভাগাভাগি নিয়ে কোন্দল চরমে উঠলো। ব্লগপাড়া আর ফেসবুকে গালাগালির জোয়ার এলো। গালি দেয়ার জন্য বিশেষ বাহিনী তৈরি হোল। অবশেষে তৈরি হোল ‘রুমি স্কোয়াড’।
‘চীনা বাম’ আর সরকারের ‘লেজুড়বৃত্তি’ এই দুই শিরোনামে দুই পক্ষ একে অপরকে আক্রমণ শুরু করল। থামানোর চেষ্টা আর ব্যর্থতা এই দুইএর মধ্য ঘুরপাক খেতে থাকে মঞ্চের কার্যক্রম। নেতৃত্বে ছিল না কোন দূরদর্শিতা। আন্দোলন কিভাবে জোরদার করা যায় তা নিয়ে না ভেবে চেষ্টা চলল নেতৃত্বে কে থাকবে। আওয়ামী বড় দল, তাই তারাই এই দাবিদার। বামেরাও ছাড় দিতে নারাজ। ফলে একজনের সিদ্ধান্তকে অন্য জন ছোট করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ল। যার অবশ্যম্ভাবী পরিণতি পেতে দেরি হোল না।
মাঠে আগমন ঘটলো ‘হেফাজত’ বাহিনীর। নিজেরা যেহেতু সরাসরি নামতে পারছে না, তাই অন্য নামে মাঠে নামল। বিরোধ দেখানোর চেয়ে তাঁদের বেশী উৎসাহ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিতে। মিছিলের নাম করে কেবল সাহবাগে যাওয়ার চেষ্টা। রাজিব হত্যার পরে তাঁরা নাস্তিক ইস্যু নিয়ে বাজার গরম করছে। আওয়ামী লীগ দেখল এদের বিরুদ্ধে গেলে ধর্মের ভক্ত মানুষদের ভোট হাতছাড়া হবে। তাই শুরু হোল তোষণ নীতি। অচিরেই বুঝল, হবে না। তবে ততোক্ষণে দুই কুলই হাতছাড়া হোল। তাই ৬ই মে দুইজনকেই মাঠ ছাড়া করল।
রায়ের আগের দিন শাহবাগ দখল করলেই হবে এই ফর্মুলা দিয়ে সাইদি জয় হোল। প্রচুর ভাংচুর, হত্যা ঘটলো। তারপরও ব্যাপারটাকে শাহবাগের বিজয় বলে মনে হয়েছিল। মনে হয়েছিল মুক্তিযুদ্ধের চেতনা জিতছে। ভুল ভাঙতে দেরি হোল না। বাকী রায় ঝুলানো শুরু হোল। এমন সময় রিজভি আর রাজ্জাক সাহেবের ভেতর বৈঠকও হোল। সিদ্ধান্তও হোল কে যাবজ্জীবন আর কে ফাঁসি। প্রথমে লম্বা জেল এর রায়টা দেয়া হোল। কিছু সমালোচনা, আঁতাত এমন কথা বলা হলেও পরের রায়ের পরে অনেকের মুখ বন্ধ করা যাবে। নিজেদের বাহিনিকেও তখন নামান যাবে, ‘আঁতাত আওয়ামী লীগ করে না’ এইসব বচন নিয়ে। সঙ্গে বনাস হিসেবে থাকবে বিএনপির সঙ্গে জামাতের আঁতাতের কিছু নিদর্শনের চিত্র।
বামেদের এমনিতেই পায় বল নেই। তাঁর ওপর আওয়ামী লাঠি স্বরে যাওয়ায় তাঁরাও বেশ ভঙ্গুর অবস্থায় আছে। হরতাল ডাকা আর গুটি কয়েক কর্মী নিয়ে সাহবাগে অবস্থান নিতে যেয়ে আবিস্কার করল, তাঁদের হরতালে কেউই সাড়া দেয় নি। নেহাত পরের রায় ফাঁসি এসেছে, নইলে মঞ্চের মানুষগুলোর মুখ দেখবার মত হত। এখন শেষ রায়কেই নিজেদের জয় বলে চালাবে। তবে দেশবাসীর কাছে তাঁদের খুব একটা সম্মান আর নেই। তাঁরা ভালমতই জানে, বাকী রায়গুলো সরকার ও আওয়ামী আঁতাত অনুযায়ী ই হবে, মঞ্চ সেখানে থাকুক, আর না থাকুক।
ছোটবেলায় অনেক উপদেশ মূলক গল্প পড়ানো হত। ‘একতাই বল’ ছিল তাঁর একটি। কিছু প্রবচন মুখস্থ করেছিলাম, ‘দশের লাঠি একের বোঝা’। বইগুলোতে বোধহয় আরও একটা গল্প যোগ করা যায়, ‘দ্যা ডেথ অফ শাহবাগ’
২| ১৮ ই জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৩:৫৭
মোমেরমানুষ৭১ বলেছেন: শাহবাগ আন্দোলনটা কেবলই ইতিহাস হয়ে থাকবে
এর সাথে ছিল কিছু মায়ের বুক ফাটা কান্না.....
৩| ১৮ ই জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৪:১২
ময়নামতি বলেছেন: ড্যাথ অফ রাজাকার, ড্যাথ অফ শাহবাগ, ড্যাথ অফ বিজনেছ..................
©somewhere in net ltd.
১|
১৮ ই জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৩:৫৫
মদন বলেছেন: দ্যা ডেথ অফ শাহবাগ

বাহ, সুন্দর নাম দিয়েছেন তো