![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দারুণ টপিক পাওয়া গেছে। ‘ঐশী’। আগামী কয়েকদিন প্রতিটি পত্রিকায় একটা না একটা ফিচার থাকবেই। সবারই চেষ্টা থাকবে নতুন কিছু তথ্য যোগ করার। কেঁচো খুঁড়তে বেশ কিছু সাপের আমদানিও হবে। বেশ কিছু পিতামাতা সন্ধান পাবে তাঁদের সন্তান রাও ইয়াবা নিচ্ছে। জানতে পারবে তাঁদের কন্যাটিও পয়সা জোগাড় করতে না পেরে ‘সুন্দর(?)’ কোন পথে চলতে শুরু করেছে। পুত্রটি মাঝে মাঝেই ‘ছিনতাই’ দলে নাম লেখায়। কলামিস্টরা নেমে পড়বেন, বিশ্লেষণে, সমাজ কাঠামো তে কি কি পরিবর্তন জরুরী। অবশেষে? এখানেই সবেচেয়ে মজা। কিছুই হবে না। আমরা সব কিছু ভুলে যাব।
কেন যেন মনে হচ্ছে আলোচনার কেন্দ্রে থাকবে নৃশংসতা। সন্তানের পিতামাতা কে খুন করবার সিদ্ধান্ত কিংবা কত সহজে মানুষ খুন করার লোক পাওয়া যায়, এইসব। সন্তানটি যেহেতু কন্যা তাই ব্যাপারটায় সেক্স মেশানো থাকলে আরও চটকদার আলোচনা হত। সন্তানটি পুরুষ হলে, সঙ্গে ‘ছিনতাই’ কিংবা ‘নিজ হাতে খুন’ হলেও আলোচনা বেশ জমত। তারপরও বর্তমান কাহিনী নেহাত মন্দ না। যে বিষয়টা আসি আসি করেও খুব বেশী আলোচনায় আসবে না তা হচ্ছে ‘নেশা’। এবং তারচেয়েও অবহেলিত হবে যে ব্যাপারটা তা হচ্ছে ‘করণীয় কি’? বিশেষ করে নেশা বিষয়ে। কারণ বিষয়গুলোতে তেমন কোন আপীল নেই। আছে কিছু নীতিকথা। উপদেশ শুনতে কার ভালো লাগে?
তবে খুব বড় সমস্যায় পড়তে যাচ্ছেন উচ্চবিত্তরা। কারণ উচ্চ মধ্যবিত্ত এবং একটু উচ্চবিত্ত পরিবার এখন ছুটছে সন্তানদের প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াতে। অতি উচ্চবিত্তরা এদেশেই রাখেন না সন্তানদের। সেসন জট নেই। একটু ভালো প্রতিষ্ঠান পেলে শিক্ষকও ভালো এবং পর্যাপ্ত। ছাত্র রাজনীতি নেই। আর কি চাই? পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে খরচ কম ঠিকই তবে ঝামেলাও আছে। সেসন জট, ছাত্র রাজনীতি, হোস্টেলে সিট পেতে কোন না কোন দলে নাম লেখাতেই হবে। দুই দলের মারামারি লাগলে উবাস্তু জীবন। তাই নেহাত ভালো সাবজেক্টে চান্স না পেলে অনেকেই শেষ সম্বল বিক্রি করে হলেও চেষ্টা করছেন প্রাইভেটে পড়ানোর। এবার তাঁদের যুদ্ধ করতে হবে নতুন এই সমস্যার সঙ্গে। নেশা। এই বড়লোকি জায়গা গুলোতে নেশা এখন অনেকটাই ‘স্ট্যাটাস সিম্বল’। নেশা করার পয়সা নেই মানে ‘তোরা গরীব’।
নেশা ব্যাপারটার শুরু বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই আসে সিগারেটের হাত ধরে। আর সিগারেটও শুরু হয় স্মার্ট সাজবার চেষ্টার অংশ হিসেবে। সিগারেট নিয়ে অনেক ধরনের অনুষ্ঠান মাঝে মাঝেই হয়। একবার এমন এক অনুষ্ঠানে একজন শিক্ষিকা বললেন, আমি অনেকজনের সঙ্গে আলাপ করে যেটা পেয়েছি, বেশীর ভাগ ছেলেই মনে করে সিগারেট হাতে তাঁদের অনেক বেশী আকর্ষণীয় লাগে। মেয়েরা অনেক বেশী পছন্দ করে এমন ছেলেদেরকে। কথাটার সত্যতা কিংবা যৌক্তিকতা নিয়ে তর্ক করবো না। সিগারেট কিংবা নেশা শুরুর অনেক কারণ থাকতে পারে, তবে এই কারণটা একেবারে অসম্ভব না। ‘বন্ধু বান্ধবের পাল্লায় পড়া’ কিংবা ‘অন্যের দেখাদেখি’ এসব তো আছেই।
সিগারেট দিয়ে শুরু হওয়ার আরও একটা কারণ হচ্ছে, সিগারেট ব্যাপারটার প্রতি একটু আধুনিক বা শহুরে পিতামাতাদের অনেকটা ‘অনুমুতি’ দেয়া টাইপ মনোভাব থাকে। ‘এই বয়সে একটু আধটু’ ধরনের প্রশ্রয়। অনেক ক্ষেত্রেই তা কেবল সিগারেটেই সীমাবদ্ধ থাকে। তবে যে কোন নেশার ক্ষেত্রে যা হয়, শরীরের নিজস্ব নিয়মেই পূর্বের পরিমানে আর পরে কাজ করে না। প্রথম প্রথম দুই টানে যে অনুভুতি আসতো ধীরে ধীরে সেই অনুভুতি পেতে পুরো একটা সিগারেট খরচ করা প্রয়োজন হয়ে পরে। কখনও খুব ঘন ঘন খেতে হয়। একসময় আসে সেই মহেন্দ্রক্ষন যখন ইচ্ছে জাগে, ‘এর চেয়ে ভালো কিছু নাই’? এমন কিছু যার কারণে আসবে আরও আনন্দ দায়ক অনুভুতি। থাকবে আরও বেশীক্ষণ।
বন্ধু বান্ধবের কাছেই বেশীর ভাগ সময় পাওয়া যায় এই সন্ধান। এই চক্রটার শুরু কোথায়, বোধকরি কেউ নির্দিষ্ট করে বলতে পারবে না। নতুন এইসব নেশার শুরু অনেকটাই ‘অ্যাডভেঞ্চার’ করার মনোভাব নিয়ে। একসময় ‘আজকেই শেষ, আর না’ এই পর্যায়ে আসে। তবে কখনোই তা ‘আজকে শেষ’ হয় না। অতঃপর আসে সেই অনিবার্য পরিণতি। ‘নির্ভরতা’ যখন আর না নিয়ে পারা যায় না। শুরু হয়ে যায় অসহনীয় কষ্ট। আর সেই কষ্ট থেকে বাঁচতে যে কোন কিছুই তখন তুচ্ছ মনে হয়। শুরু হয় পিতামাতাকে মিথ্যা বলা দিয়ে। আর শেষ হয় ছিনতাই, পতিতাবৃত্তি কিংবা পিতামাতা খুন দিয়ে। ধরা না পড়া পর্যন্ত।
পুরো চক্রে পদে পদে পাওয়া যায় বন্ধু। কখনও টাকা ধার দিয়ে, কখনও ‘কোথায় পাওয়া যায়’ তাঁর খোঁজ দিয়ে আর কখনও বা ‘কিভাবে টাকার জোগাড় করতে হয়’ তাঁর নিয়ম বাতলে দিয়ে। সৎ বন্ধুরা বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই সরে যায় কিংবা উপদেশ দিতে যেয়ে ধীকৃত হয়। এই সময়টায় সবচেয়ে বেশী বিরক্তিকর লাগে বন্ধুবান্ধবদের অভিভাবক সাজা। কখনও কোন সৎ বন্ধু অতি উৎসাহী হয়ে সেই বন্ধুর বাবা মাকে জানিয়ে শত্রুতা বেছে নেয়, তবে বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই তা হয় না। কখনও ‘প্রতিজ্ঞা’ করা ‘আর কখনও খাব না’ বলে পিতামাতার আস্থা ফিরিয়ে আনা এবং যথারীতি প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ এবং আরও সঙ্গোপনে পথ চলা। পুরো প্রক্রিয়াটা এতোটাই ‘পারফেক্ট’ যে কখনই কোন সমস্যা হয় না। এই ‘সরি’ বলাও সেই প্রক্রিয়ারই অংশ।
এসব আটকানোর যেসব খোঁড়া ফর্মুলা সমাজে প্রচলিত আছে তাঁর একটি হচ্ছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা।এদের হাতেই দ্বায়িত্ব দেয়া হয়েছে এসব নেশার দ্রব্য যেন দেশে ঢুকতে না পারে। আর তাঁদের বশে আনবার জন্য রয়েছে ‘উৎকোচ’। বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই ‘উৎকোচ’ এর জয় হয়। কখনও আবার এরা এতোটাই শক্তিশালী যে এদের গায়ে হাত দেয়া মানে প্রাণ খয়োয়ানো। তাই নেশার চালানগুলো দেখেও না দেখলে, পকেট ভর্তি হতে সময় নেয় না আর জানটাও নিরাপদে থাকে। আর আটকালে, উপরি আয়ে টান পড়ে। তাই কখনোই সেই পথে পা বাড়াতে চান না কোন আইন প্রয়োগকারী। আজ একজন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোক এই ‘নেশা’ ফর্মুলার শিকার হলেন। এবার তো নিজেদের ঘরই পুড়ল। এবার কি বোধোদয় হবে? না আরও লাশ চাই?
২| ১৯ শে আগস্ট, ২০১৩ সকাল ৯:৫৩
জাহাজ ব্যাপারী বলেছেন: ব্যক্তিগত সুবিধাবাদীতা ও ভোগবাদ আমাদের বোধশক্তির নিঃশব্দ হন্তারক
৩| ১৯ শে আগস্ট, ২০১৩ সকাল ১০:০৫
মোমেরমানুষ৭১ বলেছেন: কিছুদিন পর আমরা সব ভুলে যাব.......শিশু শামিউল হত্যাকান্ডের কথা খেয়াল আছে? এই মর্মান্তিক হত্যাকান্ডটাই কিন্তু তার গর্ভধারিনী মা ই ঘটিয়েছিল। তারপর অনেক আলোচনা হল, সমাজপতিরা অনেক ব্যখ্যা বিশ্লেষন করল, টকশো গরম হল। তারপর কি হল ?
©somewhere in net ltd.
১|
১৯ শে আগস্ট, ২০১৩ সকাল ৯:৩২
ময়নামতি বলেছেন: বন্ধু সম্পর্কিয় বিশ্লেষণ ভাল লেগেছে এটাই সত্যি......................
উঠতি বযসের সন্তানগন এই চক্রের কারনেই ধংস হয়।
প্লাস।+++++++