![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একটা ফরমায়েস ছিল। পরিচিত একজন দ্বায়িত্ব পেয়েছেন একটি নতুন দৈনিকের স্বাস্থ্য পাতার। তিনি অনুরোধ করলেন তাঁকে একটা লেখা দেয়ার জন্য। নতুন লেখকের জন্য নিঃসন্দেহে বিরাট এক সুযোগ। লেখার রসদ জোগাড় করতে লেগে পড়লাম। সবারই যেমন কোন না কোন বিষয়ের প্রতি দুর্বলতা থাকে, আমারও তেমনি আছে। আমার দুর্বলতা চিকিৎসার বিভিন্ন ইতিহাসের প্রতি। কোন অসুখ নিয়ে পড়তে বসলেই প্রথমে পরে ফেলি সেই অসুখের ইতিহাস। কে কবে সেই অসুখ সম্পর্কে প্রথম বলেছিলেন। চিকিৎসা বিজ্ঞানের অনেক অসুখের নামকরণও হয়েছে সেই অসুখ প্রথম যিনি ‘ডায়াগনোসিস’ করেছিলেন তাঁর নামে। বেশ কিছু ‘সিম্পটম’ এর নাম ও এসেছে এভাবে। অনেক জীবাণুর নামকরণ হয়েছে এর আবিষ্কর্তার নামে।
ইন্টারনেট এ খোঁজ শুরু করলাম। ‘মেডিকেল ডিসকভারি’ দিয়ে। অনেক লেখার দেখা পেলাম। সবচেয়ে বেশী যে বিষয়টা পেলাম তা হচ্ছে স্কটিশ ব্যাক্টেরিওলজিস্ট স্যার অ্যালেকজান্ডার ফ্লেমিং এর পেনিসিলিন আবিস্কার। মেডিকেল জগতের শ্রেষ্ঠ দশটি আবিস্কারের মধ্য এটি একটি। ঘটনাটাও অনেকেরই জানা। ১৯২৮ সালের কথা। একবার ছুটিতে যাওয়ার আগে বেশ কিছু ‘পেট্রি ডিস’ অগোছালো ভাবে ফেলে গিয়েছিলেন। ফিরে এসে দেখেন এগুলোর একটাতে ছত্রাক পড়েছে। নষ্ট এই ‘পেট্রি ডিস’ ফেলে দিতে গিয়েও ফেললেন না, মজার একটা ব্যাপার লক্ষ্য করে। আর হঠাৎ নজরে আসা ‘সেই ব্যাপার’ টাই পরে জন্ম দেয় অসাধারণ এক আবিস্কারের।
একটা লেখায় সব তথ্য পাচ্ছিলাম না। তাই বিভিন্ন ভাবে খোঁজ করে আরও তথ্য জোগাড় করছিলাম। অনেকগুলো লেখা পড়লাম। দিন, তারিখ, সহকারী এমন অনেক তথ্য পেলাম। তাঁর দেয়া সুত্র ধরে কিভাবে ১৯৪২ সালে ওপর দুই বিজ্ঞানী সফলভাবে পেনিসিলিন ব্যবহার করে ব্যাক্টেরিয়ায় আক্রান্ত রোগীকে সারিয়ে তোলেন। যদিও বিজ্ঞানের প্রায় প্রত্যেকটি ছাত্রেরই এই গল্প জানা, তারপরও গল্পটা খুব ভালো লাগলো দেখে লিখে ফেললাম। আরও কিছু তথ্য পাই কি না, সেই আশায় তখনও পড়ে যাচ্ছি। একটা লেখায় চোখ আটকে গেল।
অ্যালেকজান্ডার ফ্লেমিং এর সেই বিখ্যাত ‘পেনিসিলিন’ আবিস্কারের ৩২ বছর আগে অর্থাৎ ১৮৯৬ সালে একজন ফরাসী বিজ্ঞানী আর্নেস্ট ডুসে একটি ব্যাপার লক্ষ্য করেছিলেন। সেই পর্যবেক্ষণের ওপর ভিত্তি করে তিনি একটি গবেষণাপত্রও লেখেন। ১৮৯৭ সালে এই গবেষণা পত্রের ওপর ভিত্তি করেই তিনি ডক্টরেট ডিগ্রী অর্জন করেন। ‘অ্যান্টিবায়োটিক’ এর আবিস্কারের খুব কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিলেন এই বিজ্ঞানী। সেদিন ভাগ্য তাঁর সহায় হয় নি। আর সেই পর্যবেক্ষণের মুলে ছিলে একটি ছোট্ট বালক।
১৮৮৪ সালে তিনি লিওন এর মিলিটারি হেলথ সার্ভিসে যোগ দেন। সেই আর্মি হাসপাতালের আস্তাবলে কাজ করতো এক আরব বালক। সে নিয়মিত একটা কাজ করত। সে ঘোড়ার পিঠে পড়ানোর জিন (স্যাডল) অন্ধকার আর্দ্র ঘরে রাখতো। ড্যুসে যখন জানতে চাইলেন কাজটা সে কেন করে, তখন সে উত্তর দিল এই কাজটা করলে ঘোড়া একটু আরাম পায়। জিনের কারণে ঘোড়ার পিঠে যে ঘা হয়, এভাবে অন্ধকারে রাখা জিন সেখানে চড়ালে সেই ঘা সেরে যায়। ব্যাপারটা নিয়ে গবেষণা করতে যেয়ে ড্যুসে আবিস্কার করলেন, অন্ধকারে রেখে দিলে সেই ‘জিন’এ এক ধরনের ছত্রাক জন্মায়। আর সেই ছত্রাকই ঘা শুকাতে সাহায্য করে।
এ নিয়ে গবেষণা শুরু করলেন। তিনি দেখালেন একটি পশুর শরীরে যে পরিমাণ টাইফয়েডের জীবানু থাকলে পশুটি মারা যায়, সেই পরিমাণ জীবাণু তাঁর শরীরে থাকা সত্ত্বেও সে মারা যাবে না যদি তার শরীরে ইঞ্জেকশানের মাধ্যমে এই ছত্রাক প্রবেশ করানো হয়। ডক্টরেট ডিগ্রী পেলেন। একে তো বয়স তখন তাঁর মাত্র ২৩ বছর, তার ওপর নামী দামী কেউ না। পাস্তুর ইন্সটিটিউট তাই তাঁর এই গবেষণা পত্র আমলে নিল না। তিনি এই নিয়ে আরও গবেষণা করতে চাইলেন, কিন্তু সেনাবাহিনীর চাকরীর বাধ্য বাধকতার কারণে পারলেন না।
১৯১২ সালে মাত্র ৩৭ বছর বয়সে বুকের সংক্রমণের কারণে মারা যান। তাঁকে যদি সেদিন গবেষণা করতে দেয়া হত, হয়তো তার আবিস্কার তাঁকে বাচিয়ে দিত।
১৯৪৫ এ অ্যালেকজান্ডার ফ্লেমিং, আর্নেস্ট চেইন এবং রবার্ট ফ্রলি পেনিসিলিনের আবিস্কারের জন্য ফিজিওলজী বা মেডিসিন এ নোবেল প্রাইজ দেয়া হয়। আজ টাইম ম্যাগাজিনের শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ একশ জনের মধ্যে রয়েছেন স্যার অ্যালেকজান্ডার ফ্লেমিং। পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ দশটি আবিস্কারের মধ্যে রয়েছে ফ্লেমিং এর এই আবিস্কার।
আর আর্নেস্ট ড্যুসে? অবশেষে ১৯৪৯ সালে অ্যান্টিবায়োটিকের সহআবিষ্কর্তা হিসেবে তাঁকে মরণোত্তর সম্মানে ভূষিত করা হয়। আর সেই আস্তাবলের বালকের নাম কোথাও খুঁজে পেলাম না। সত্যিকার অর্থে যার পর্যবেক্ষেনে প্রথম এই অ্যান্টিবায়োটিকের সন্ধান পাওয়া যায়।
২| ২১ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ৮:০৫
মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: nice post
৩| ২২ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১২:৪৬
আমিনুর রহমান বলেছেন:
দারুন পোষ্ট +++
৪| ২২ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১:১৮
রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: দারুন পোষ্ট।
৫| ২২ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ২:২৫
নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
চমৎকার লাগল পোষ্টের বিশয়বস্তু
৬| ২২ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ৩:১৪
প্রিন্স হেক্টর বলেছেন: চমৎকার পোষ্ট। শিক্ষনীয়
পোষ্টে ২য় +
৭| ২২ শে আগস্ট, ২০১৩ ভোর ৪:১৩
খেয়া ঘাট বলেছেন: চমৎকার একটা লিখা। পড়ে অভিভূত হলাম।
৮| ২৩ শে আগস্ট, ২০১৩ সকাল ১০:৫৭
ডা: আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী বলেছেন: সবাইকে ধন্যবাদ। লেখাটা আজকে ছাপা হয়েছে
Click This Link
৯| ০৩ রা অক্টোবর, ২০১৩ রাত ২:০৭
মহামহোপাধ্যায় বলেছেন: এই আস্তাবল বালকেরা থেকে যায় সবার অগোচরে। পোস্টে প্লাস রইল
০৬ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:২৩
ডা: আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী বলেছেন: ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১|
২১ শে আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:২৪
রাখালছেলে বলেছেন: বাহ ! চমৎকার আপনার লেখা আর তার বিষয়বস্তু । আহা কেন প্রতিদিন লিখেন না ।আজ থেকে আপনার পোষ্টের ভক্ত হলাম। আরো লিখুন ।