নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার সব লেখা

ডা: আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী

চিকিৎসক এবং লেখক

ডা: আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী › বিস্তারিত পোস্টঃ

তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রশ্নে নতুন কিছু সমাধান

০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:১১

এ বিষয়ে প্রচুর লেখালেখি হয়ে গেছে। সুশীল থেকে শুরু করে হবু সুশীল কিংবা হবু হবু সুশীল। পাইপলাইনে অপেক্ষা রত অনেক পেছনে পড়ে থাকা বিজ্ঞ জন। কেউ বাদ যান নি। ফেসবুকে হোক আর ব্লগে হোক দুকলম সবাই লিখেছেন। পত্রিকার সম্পাদকের সঙ্গে দহরম মহরম থাকলে তো এতদিনে তিন চার টা কলাম বেরিয়ে গেছে। যারা খুব একটা লেখালেখি করেন না, শুধু টক শো তে ঘ্যান ঘ্যান করেন, তাঁরা প্রায় প্রতিদিন ই সংবিধানের ব্যাখ্যা দিচ্ছেন। কেউ কেউ আবার আগ বাড়িয়ে নিজেই সরকার প্রধান হতে চেয়েছেন। যথারীতি প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পরেও এই ধরনের মানুষের দেখা প্রায়ই পাওয়া যাচ্ছে। এই রেসে সম্প্রতি এরশাদ সাহেবও ‘ভালো নিরাচন করতে পারবেন’ বলে নিজেই নেমে পড়েছেন।

দেশে হেন কোন বিজ্ঞজন নেই যিনি এবিষয়ে দুকথা বলেন নি। নিদেন পক্ষে একটা ফর্মুলা দেন নি। দুই নেত্রীকে বকাঝকা কিংবা উপদেশ তো চলছেই। দেশের অবস্থা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে একটা বক্তব্য দেন নি এমন ‘সুশীল’ (?) বোধহয় মাইক্রোস্কোপ দিয়েও খুঁজে পাওয়া যাবে না। যদিও কারো ফর্মুলাই মানা হচ্ছে না, তারপরও উপদেশ বর্ষণে কারো বিরাম নেই। ‘যৌথ সরকার’ থেকে শুরু করে ‘টসের সরকার’ তাঁদের দুজনের মন রক্ষা করতে কতো না ফর্মুলা দেয়া হল। কিছুতেই তাদের মন ভরছে না। এদিকে আবার ‘প্রধানমন্ত্রীর কথাই শেষ কথা না’ বলে আরেক সমস্যা জাগিয়ে দেয়া হল। এখন বসে থাকো কবে তিনি ‘শেষ কথা বলেন’।

বিরোধী দল আছ আরেক মুসিবতে। নির্বাচনের প্রচারণা শুরু করবে কি করবে না বুঝতে পারছে না। শুরু করলে বিপদ, ‘আপনারা তো তাহলে নির্বাচনে যাচ্ছেন’ এই ধারণা জন্মে যাবে। আর না শুরু করলে বিপদ, হঠাৎ দাবী মেনে নিলে কিংবা নিরপেক্ষ কাউকে মেনে নিতে রাজী হলে অল্প সময়ে সব এলাকায় নেত্রীর জনসংযোগ করা কঠিন হয়ে যাবে। সমস্যা আরও আছে। বিরোধী দলের তুরুপের তাস তারেক সাহেব এর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন নিয়ে। তাকে কতটা ছাড় দেয়া হবে, আসলেই ‘জেল’ না ‘জামিন’ কোন উপহার দেয়া হবে তাঁর ওপরও অনেক কিছু নির্ভর করছে। পর্দার আড়ালে চলা এই দর কষাকষির ফয়ালফলের অপেক্ষাও করছে বিরোধী দল।

সমস্যা আন্দোলন নিয়েও। ‘ঈদের পরে করবো’ বলে রোজার মাস টা পার করা গেছে। এখনো তেমন কোন আন্দোলন না করায় ‘তাঁদের মুরোদ’ নিয়ে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। আবার আন্দোলন করতে গেলে সমস্যা ক্যাডার দের নিয়ে। কখন বা আবার ‘বিশ্বজিৎ’ স্টাইল অ্যাকশানে চলে যায়। এরকম নৃশংস কোন হত্যাকান্ড হলে আর রক্ষা নেই। প্রতিটি চ্যানেলে হামলে পরে। কে কত সুন্দর ভাবে ধারণ করেছে তা দেখানোর একটা প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যায়। ইদানীং তো আবার ভোটিং, রেটিং এসব চালু হয়েছে। ঈদের বেস্ট নাটকের মত ‘হত্যাকান্ড কে ভালো রেকর্ড করেছে’ তাঁর বেস্ট রেটিং পেতে সবাই ব্যস্ত। আর এমন পুঙ্খানুপুঙ্খু ফিচারে নেতা কর্মীদের খুব ভালো ভাবে চেনা গেলে আরেক সমস্যা দেখা দিবে। এদেরকে নিজের দলের কর্মী স্বীকার করলে ভোট কাটা পড়বে আর না স্বীকার করলে ভোটের সময় কর্মী পাওয়া যাবে না।

এদিকে আরেক ঝামেলা শুরু করেছে ওবামা। সিরিয়াতে যদি আক্রমণ হয় ই তাহলে বেশ কিছুদিনের জন্য শিরোনাম হাত ছাড়া। প্রতিটি টক শো তে তখন থাকবে এই হামলা। ফলে তত্ত্বাবধায়ক নিয়ে আলাপ আলোচনায় বিরাম চিহ্ন লেগে যাবে। আর শিরোনাম কিংবা আলোচনায় না থাকলে ‘গোল্ড ফিশ’ মেমোরির এই জাতির কিছুই মনে থাকে না। তাঁদের ভোটের অধিকার আদায়ে যে বিরোধী দল পায়ের ঘাম মাথায় উঠাচ্ছে সে কথাও তাঁদের মনে থাকবে না। ফলে শিরোনামে থাকতে, ভয়ংকর কিছু করার বিকল্প নেই।

সবচেয়ে মজায় আছে মজীনা। দেশের রাজনীতিবিদের চেয়ে উনার দিকেই এখন সবাই তাকিয়ে আছে। ভাবছে তিনি হয়তো হাতে জাদুর কাঠি নিয়ে বসে আছেন। কিংবা তিনি যদি দুজনকে ডেকে একটু বকে দেন তবে হয়তো তাঁরা সমঝোতা করে ফেলবেন। তাঁর শখ এখনও বোঝা যাচ্ছে না। নোবেল জয়ীদের প্রতি তাঁদের আবার একটা টান আছে। মিশরের টাকে বসানো হয়েছিল। পরে উনি ভেগেছেন। এখানকার টাকে নিয়ে কি করবেন বোঝা যাচ্ছে না। তবে এই ধরনের ঝামেলার সময় তাঁর দল করার শখ জাগে। ছয় বছর আগে একবার জেগেছিল। এবার আবার জেগেছে। তাঁর দলের সেকেন্ড এডিশান এর দেখা পাওয়া গেছে। এবার নাম সহ।

সবাই এখন অক্টোবরের দিকে তাকিয়ে আছে। হজ্ব ফ্লাইট শুরু হয়ে যাচ্ছে। ফলে এই সময়ে হরতাল দেয়া মানে ভোটে প্রভাব পরা। না দিলে আবার ‘মুরোদ’ নিয়ে কটাক্ষ। এখন সবচেয়ে উপকারী প্রাণী হচ্ছে সংবিধান বিশেষজ্ঞ রা। বিশেষ করে যাদের গায়ে এখনও কোন দলের তকমা লাগে নি। এমন আইনজ্ঞদের এখন পোয়া বারো। প্রতিদিনের অনুষ্ঠানের মাঝে প্রায় প্রতিটি চ্যানেল ই কাউকে না কাউকে সংবিধান বিশেষজ্ঞ বানিয়ে উপস্থিত করছে। কেউ না কেউ কোন না কোন চ্যানেলে ব্যাখ্যা শুনাতে হাজির হচ্ছে। তাঁদের একমাত্র কাজ ‘এখনও সমাধান সম্ভব’ এজাতীয় বক্তব্য দেয়া।

সুশীল সমাজ অচিরেই ক্ষান্ত দিবেন বলেই আমার ধারণা। বিদেশী কূটনীতিকরা ২০০৬ এও বেশ দৌড় ঝাপ করেছিলেন, পারেন নি। এবারও পারবেন এমনটা মনে হয় না। সবাই হাল ছাড়লে তখন হয়তো নিরপেক্ষতার খোঁজে কোন শিশুর (পাগলের কাছেও যাওয়া যেতে পারে) কাছে উপদেশ চাওয়া হবে। শিশুটি হয়তো তাঁর জানা কোন রূপকথা থেকে এর উত্তর খুজবে। রূপকথায় যেমন হতো, হাতী যার গলায় মালা দিবে। নাহ, এমনটা করারও বিপদ আছে। সেই মাহুত কোন দল করতো কিংবা তাঁর বাপ দাদা কোন দল করতো, এ প্রশ্নে সমঝোতা ভেঙে যেতে পারে। তাঁর বাড়ী যদি গোপালগঞ্জ কিংবা বগুড়া হলেও সমঝোতা হবে না। পাগলকে জিজ্ঞেস করলে হয়তো ‘গালি দেয়া প্রতিযোগিতা করার কথা বলবে। যে সবচেয়ে বাজে গালি দিতে পারবে। আমার ধারণা সেখানেও সমস্যা দেখা দিবে। জাজ কে হবে? ওহ হো, বিচারপতিদের তো আবার ব্যবহার করা যাবে না।

একটি উপায় ই তখন বাকী থাকবে। ‘পিলো পাসিং’ করে এগারো জন নির্বাচিত করা আর ওপেন্টি বাইস্কোপ জাতীয় কোন খেলা আয়োজন করে নেতা নির্বাচন। কেমন হয়?

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:১৫

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: দারুণ একটা ইস্যু নিয়ে লিখেছেন। আপনার উদ্যোগ ভাল লাগলো। এরশাদ সাহেব আর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাছিনা তত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হলে নাকি নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে এমনটা দাবী তাদের এখন শুধু মাত্র মাননীয় বিরুধী দলীয় নেত্রেী খালেদা জিয়ার ওই রকম দাবী করা বাকী আছে। আশা করি শীঘ্রই তিনিও তেমনটি দাবী করবেন।

২| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৩২

ডা: আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী বলেছেন: ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.