![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেশে এখন দুটি ফর্মুলা চলছে। গনতন্ত্র পুনরুদ্ধার। আর মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। একজনের বক্তব্য আমরা না এলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বারোটা বাজবে। তাই গনতন্ত্র হত্যা করে হলেও আমাদের আসতে হবে। অন্য দলের বক্তব্য, গনতন্ত্র। আর তার জন্য জ্বালাও পোড়াও থেকে শুরু করে যে কোন কর্মসূচি জায়েজ। জনগণের ভোগান্তি থেকে শুরু করে পুড়িয়ে মারা, যাই ঘটুক, মেনে নিতে হবে। দেশের এই অবস্থা নিয়ে মজার একটি উদাহরণ দিয়েছিলেন একজন। বলেছিলেন, ‘দেশের অবস্থা সিটিসেল, গ্রামীন ফোনের যুগের মত, এতো রেট, যে কাউকেই পছন্দ না, কোনটাই ব্যবহার করতে ইচ্ছে করে না। আবার এদের ছাড়া উপায় ও নেই।‘ উদাহরণটি খুব ভালো লেগেছিল। তবে সেই ব্যক্তি কিছুটা হলেও উদ্ধার পেয়েছেন। সিন্ডিকেট ভেঙ্গেছে। দাম কমেছে। তবে দেশের ক্ষেত্রে এমন কোন লক্ষণ এখনও দেখা যাচ্ছে না।
২৯ তারিখে কি ঘটবে, তা নিয়ে জল্পনা কল্পনার অবসান হয়েছে। বিএনপির তরফ থেকে তেমন কিছু ঘটে নি। নেত্রীর কিছু রাগান্বিত বাণী আর গোপাল গঞ্জের নাম পরিবর্তনের আশ্বাস। এবং ৩০ তারিখের ঘোষণা। ‘রোড মার্চ ফর ডেমোক্রেসি’ না বলে ‘ডেমক্রেসি ফর রোড’ বলে ফেলা। বেশ কিছু গ্রেফতার, কর্মী শূন্য বিএনপি অফিস আর একরাশ প্রশ্ন। বিভিন্ন জেলা থেকে আসা কর্মীরা (যেমনটা দাবী করা হয়েছিল) কোথায়? গ্রেফতারের ভয়ে মাঠে নামে নি? না কি নামতে বারণ করা হয়েছিল? একটা ব্যাপার বোধহয় বাদ দিলাম। ‘বেয়াদপ’। সংসদে বলা ‘চুপ’ এর নতুন সংস্করণ। তবে এবার মনে হয় না আগের বারের মত মার্কেট পাবে।
বাকি যা ঘটেছে, তা ঘটেছে, আওয়ামী তরফ থেকে। প্রেসক্লাব হামলা এবং সুপ্রিম কোর্টের পিটুনি। এর মাঝে সুপ্রিম কোর্টের নারী আইনজীবী পিটুনি বেশ বাজার পেয়েছে। সেই ছবিতে এখন ফেসবুক আর ব্লগ সয়লাব। পত্র পত্রিকাতে তো আছেই। তবে মজার ব্যাপার হচ্ছে, এই ঘটনার ব্যাখ্যা। প্রথম দিকে এধরনের ঘটনায়, ‘অনুপ্রবেশ’ তত্ত্ব হাজির হত। এখন ‘তুলনা’ ফর্মুলা চলছে। বিএনপি আমলে মতিয়া চৌধুরী কে পিটিয়েছিল, তাই আমরাও পিটিয়েছি। অর্থাৎ, এক্ষেত্রে বিএনপি আমার গুরু, আমি শিষ্য।
আর কিছু ছোট খাট ব্যাপার নিয়েও চলছে আলোচনা। জনৈক কর্মীর ‘পুরুষাঙ্গ’ প্রদর্শন, আশরাফ সাহেবের বিবৃতি। চলছে আনালাইসিস, এর শেষ কোথায়। কে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। এসব ঘটনা আওয়ামীলীগের জন্য কালিমা হয়ে থাকবে কি না। কিংবা এসব ঘটনায় বিএনপি আরও বেশি পপুলার হচ্ছে কি না। যথারীতি এসব ব্যাপারে কেউই একমত না। নিজ নিজ দলের দিকেই ব্যাপারটা টেনে নিয়ে যাচ্ছেন। অর্থাৎ, তর্কের ময়দানে, ‘তাল গাছ আমার’ ফর্মুলা বিদ্যমান।
এই মুহূর্তে বিএনপি নেত্রীর ভুল ইংরেজির চেয়ে এখন বেশি আলোচনায় আছে, ’পিটুনি’। দু একটি ছবিই সম্ভবতঃ তোলা হয়েছে। সেগুলোই ঘুরে ফিরে বিভিন্ন জন নিজের মতামত সহ পোস্ট করছেন। পোস্ট কারীর মতামতগুলো বেশ বিনোদন মুলক। বিএনপি পন্থী গ্রুপ সেই ছবির সাথে নিন্দার বন্যা বইয়ে দিচ্ছেন। সঙ্গে বাকশাল এর ইতিহাস মনে করাচ্ছেন। গালিগালাজ তো থাকছেই। নিপাট ভদ্রলোক গ্রুপ সোজাসাপ্টা নিন্দা জানাচ্ছেন। এরা সাধারনতঃ এজাতীয় সব ঘটনায়, একই ভাবে নিন্দা জানান। এবং বলাই বাহুল্য এদের খুব বেশি ফলোয়ার নেই। বিএনপি ও এদের পছন্দ করে না আওয়ামীরাও না।
আরও এক ধরনের গ্রুপ নিন্দা জানাচ্ছেন, তবে সঙ্গে গল্পচ্ছলে বিএনপি জামায়াত আমলের কিংবা সাম্প্রতিক সময়ের তাঁদের করা বেশ কিছু নিন্দনীয় কাজের ফিরিস্তি শোনাচ্ছেন। কারণটা ঠিক বোধগম্য না। সম্ভবতঃ মনে সন্দেহ, এগুলো পাঠকরা ভুলে গেছেন। আবার হতে পারে, বোঝানোর চেষ্টা করছেন, আমরা পুরোপুরি আওয়ামী বিরোধী না। আর শেষ গ্রুপ একটু এগ্রেসিভ। বর্তমান ঘটনা নিয়ে তাঁদের কোন বক্তব্য নেই, অর্থাৎ এটা এমন কোন ঘটনাই না, নিন্দা জানাবার কিছু নাই। তাঁদের পুরনো রেকর্ডই একমাত্র সম্বল। বিএনপি, জামায়াত, রাজাকার—এগুলো ছাড়া দেশে আর কোন ইস্যু নেই। বাকী যা কিছুই ঘটুক—চোখ বন্ধ রাখতে হবে।
এর পরে শুরু হয় আরেক খেলা। মতামত খেলা। সেখানেও একই অবস্থা। মতিয়া চৌধুরীর পিটুনি থেকে শুরু করে মানুষ পোড়ানোর ছবি। আর্কাইভ থেকে যে যা পেয়েছেন জুড়ে দিচ্ছেন। এলাইনে আওয়ামীরা একা না। বিএনপি কিংবা জামায়াত ও আছে। কখনও সত্য ছবি, কখনও মিথ্যা ছবি। তবে সাধারনতঃ সত্য ছবি থাকলে, মিথ্যার আশ্রয় নেয়া হয় না। একদল পুলিশ পেটানোর ছবি দিলে অন্য দল নিজেদের কর্মী পেটানোর ছবি দেয়। একদল বিএনপি আমলের অত্যাচারের ছবি দিলে অন্য দল আওয়ামী অত্যাচারের ছবি দেয়। ফলাফল? ‘তাল গাছ আমার’।
সরকারী মনোভাবে মনে হচ্ছে, ৩০ তারিখ থেকে শুরু করে ‘মার্চ’ বাতিল এই ঘোষণা না দেয়া পর্যন্ত একই ঘটনা ঘটবে। সরকারী বাঁধা এবং জাতীয়তাবাদী হুঙ্কার। ৩০শেও দেয়া হল না বিধায় ১ থেকে লাগাতার অবরোধের ঘোষণা। আর এভাবে চলতে থাকলে আরও কিছু ক্ষুদ্র প্রশ্ন দেখা দিবে, ‘এভাবে কত দিন? এর শেষ কোথায়?’ উত্তরটা সম্ভবতঃ দুই নেত্রীর কেউই জানেন না। ৯৬ এ বিএনপি জানতো ক্ষমতা ছাড়তেই হবে। ফেস সেভিং ফর্মুলা হিসেবে দাড় করিয়েছিল, তত্ত্বাবধায়ক বিল পাস করাকে। আগের সংসদে যেটা ভদ্রভাবে চাওয়া হয়েছিল, সেটা এখন ঘাড় ধরে আদায় করা হচ্ছে। তারপরও মুখে বলেছিল, ‘খালেদা জিয়ার উপহার’—ফেস সেভিং ফর্মুলা। যদিও জানতো ‘এই উপহার’ খুব কাজে দিবে না। জনগণের মন জয় করা যাবে না, এরপরেও তাঁরা ক্ষমতা হারাবে, তারপরও তাঁদের উপায় ছিল না।
এবার কি হবে? ৫ই জানুয়ারী হয়তো পার হয়ে যাবে? এরপর কি হবে? আলোচনা? সমঝোতা? বুল ডোজার? নাকি এতদিন যা চলছিল তারই পুনরাবৃত্তি। অবরোধ আর হরতাল কোনভাবে ডেকে ফেললেই তো কাজ সারা। এরপর নেতারা বাড়ীতে নাকে তেল দিয়ে ঘুমালেও অবরোধ হয়ে যাবে। অন্ততঃ দূর পাল্লার অত টাকা দিয়ে কেনা বাসটা, এই ঝুকির মধ্যে কেউই বের করবে না। ফলে ইচ্ছায় হোক আর অনিচ্ছায় হোক, অবরোধ সফল হয়ে যাবে। আর এভাবে যে বেশিদিন চালান যাবে না তা ৯৬ এর বিএনপি সরকারের মত আওয়ামীরাও জানে। তাই এই মুহূর্তে মূল যে প্রশ্নটা জাগছে, তা হচ্ছে, ঠিক কখন ক্ষমতা ছাড়বে? আর তখন কি বলে ক্ষমতা ছাড়বে? আওয়ামী লীগের ‘ফেস সেফিং ফর্মুলা’ কি?
২| ০১ লা জানুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৫:৫৬
তিক্তভাষী বলেছেন: বিষয়টা আর ফেস সেভিংএ সীমাবদ্ধ নেই। এটা এখন বাট সেভিংএ পরিনত হয়েছে। তাই স্বেচ্ছায় যাবার কোনো কারণ দেখছি না। তাছাড়া জলদি ক্ষমতা ছাড়তে হবে কেন? অজনপ্রিয় কিংবা স্বৈরাচারী সরকারের দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার বহু নজির বিশ্বে আছে। এদেশেই এরশাদ দশ বছর ক্ষমতায় ছিলো।
©somewhere in net ltd.
১|
০১ লা জানুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৫:৩৯
ডা: আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী বলেছেন: আমার বাকী লেখা পড়তে চাইলে
Click This Link