নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার সব লেখা

ডা: আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী

চিকিৎসক এবং লেখক

ডা: আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী › বিস্তারিত পোস্টঃ

শিরোনাম থেকে সরে যাচ্ছে ‘নির্বাচন’

১১ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১১:০৫

রাজনীতির সঙ্গে শিরোনামে থাকা ব্যাপারটা বেশ ওতপ্রোত ভাবে জড়িত। আসলে আগামী কিছুদিন যে পত্রিকার শিরোনামে ‘নির্বাচন’ থাকবে তা সবাই আশা করেছিলেন। আছেও। একদল চাইছে যত বেশীদিন সম্ভব ‘নির্বাচন’ আলোচনায় থাকুক। সমালোচনা চলতে থাকুক। আন্তর্জাতিক মহল কি বলছে, কেন বলছে, তার বিচার বিশ্লেষণ চলুক। কূটনীতিকরা দৌড়ঝাঁপ করুক। এমন সব খবর শিরোনাম হোক, যা দেখে দেশ বাসী ধারণা পায়, নির্বাচন আন্তর্জাতিক মহল গ্রহণ করে নি। যথারীতি অন্য পক্ষের চাওয়া একটু ভিন্ন। শিরোনাম থেকে ‘নির্বাচন’ সরে যাক। অন্য যেকোনো ব্যাপার আসতে পারে। মন্ত্রী কে হচ্ছে? কে বিরোধী দলে থাকছে? বিএনপি নেত্রীর প্রটোকল প্রত্যাহার। বিএনপির রাজনৈতিক দুর্দশা। জামায়াত প্রসঙ্গ। একটু সময় পেরোলে এবং খুব শীঘ্র কিছু না ঘটলে ‘নির্বাচন’ হয়তো আর শিরোনামে থাকছে না। সেই সময়টুকু নির্বিঘ্নে আর করতে চাইছে আওয়ামী লীগ।

এদেশের নির্বাচনের পরে ‘সহিংসতা’ অনেকটাই রুটিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্যাটার্ন টা ও বেশ ছক বাঁধা। বিএনপি জিতলে আওয়ামী সমর্থক কিংবা হিন্দুদের ওপর আক্রমণ। আওয়ামী লীগ জিতলেও হিন্দুদের ওপর আক্রমণ। এবং এটা অনেকটাই অবধারিত। এর পরের কার্যকলাপ ও যথারীতি সবার জানা। প্রথমে কিছুদিন যাবে, ‘কে করল’ তা নিয়ে বিতর্ক করে। যথারীতি শুরু হবে কাদা ছোঁড়াছুড়ি। এক দল অন্য দলকে দায়ী করবে। প্রচুর প্রতিবেদন হবে। এসব ‘সহিংসতা’ নিয়ে বিশেষজ্ঞ মতামত চলবে কিছুদিন। এবং অবশেষে কেউই ধরা পড়বে না। শাস্তিও হবে না। সেই রীতি এবারও অক্ষরে অক্ষরে পালিত হয়েছে। ‘নির্বাচন’ এবং ‘নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা’ দুটোই সম্ভবতঃ শেষ। অন্ততঃ এখন পর্যন্ত তাই মনে হচ্ছে। অভয়নগরের পরে শিরোনাম হওয়ার মত আক্রমণ এখনও হয় নি।

এরপর কিছুদিন থাকে ‘শপথ গ্রহণ’ সম্পর্কিত সংবাদ। এবারও ছিল। কবে শপথ, কেন এতো তাড়াতাড়ি? ২৪ তারিখের আগে সরকার গঠন করা সাংবিধানিক কি না? এসব নিয়ে আলোচনা চলল কিছুদিন। এরশাদ সাহেব থাকবেন আর নাটক হবে না, তাই কি হয়? সবার আকাঙ্খা পূরণ করতে তাই এরশাদ সাহেব যথারীতি কিছু নাটক করলেন এবং শপথ নিলেন। নাটকএর এখনও যবনিকা টানেন নি। শপথ নিয়েই পুনরায় হাসপাতালে ফিরে গেছেন। অনেকের বক্তব্য, ‘এরশাদ নাটক’ এবং ‘নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা’, দুটোই ইচ্ছাকৃত এবং শিরোনাম পরিবর্তনের চেস্টার অংশ।

তবে নির্বাচন এখনও একেবারে শিরোনাম থেকে সরে নি। প্রথমে কিছুদিন এনালাইসিস চলল ‘নির্বাচন’ কে বহির্বিশ্ব মেনে নিবে কি না, তা নিয়ে। বিশেষ করে সবাই মনোযোগ দিয়ে পড়ল, বহির্বিশ্ব এ নির্বাচন নিয়ে কি মন্তব্য করছে, সেসব। রাশিয়া মেনে নিল কি না। ভারত কি বলছে। এবং অবশ্যই মার্কিনীরা কি বলছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন এর সর্বশেষ অবস্থান কি। এখন পর্যন্ত কথাবার্তায় খুব কঠোর ভাব কেউই দেখান নি। ‘আলোচনা’ ‘সমঝোতা’ এসব উপদেশ বানীর মধ্যেই কথাবার্তা সীমাবদ্ধ রেখেছেন।

সুশীল সমাজ তিন ভাগে বিভক্ত। আওয়ামী পন্থীরা রেকর্ড বাজিয়ে যাচ্ছেন, যেমন ই হোক ‘নির্বাচন’ তো হয়েছে। কেউ না আসলে কি করা যাবে। বিএনপি পন্থীরা নির্বাচনকে তুলো ধুনো করছেন, ‘সিলেকশান’ হয়েছে। আর বাকী সুশীল সমাজ এই একতরফা নির্বাচন যেন না হয়, কোন ভাবে সমঝোতা হয় তার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়েছিলেন। প্রচুর সমালচনাও করছিলেন। কাজে দেয় নি। এখন তাঁরা ক্ষান্ত দিবেণ কি না তা ভাবছেন। সম্প্রতি মন্ত্রীত্বে দুর্নীতি গ্রস্থদের না নেয়ার জন্য আবেদন করেছেন। মনে হচ্ছে নির্বাচন নিয়ে সমালোচনায় ভাটা পড়তে যাচ্ছে। ব্লগে আর ফেসবুকেও পক্ষ বিপক্ষ ছিল। যুক্তি, পাল্টা যুক্তি। মতের সঙ্গে না মিললেই, যে যাকে খুশি দালাল বানাচ্ছেন। পত্রিকার সম্পাদক থেকে শুরু করে কলামিস্ট আর টক শো জীবী সবাই এখন গালির লক্ষ্য বস্তু। এসব আরও কিছুদিন চলবে, আশা করা যায়।

বিএনপি পন্থীরা কোন লাইনে তর্ক চালাবেন বোঝা যাচ্ছে না। ‘নির্বাচন’ নিয়ে আলোচনা এখনও শিরোনামে থাকলেও, কিছুদিন পরে আর রাখা যাবে না। ফলে এখনও এসব নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাবে? না মন্ত্রী পরিষদ, জামায়াত সঙ্গ এসব আলোচনায় মনোযোগ দিবে তা নিয়েও তাঁদের ভাবতে হচ্ছে। সাম্প্রতিক বেশ কিছু শিরোনামের কারণে এখন ‘নির্বাচন’এর চেয়ে বিএনপির বর্তমান কর্মকাণ্ড অনেক বেশি আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে বিরোধী নেত্রীর সাংবাদিকদের সঙ্গে মত বিনিময় স্থগিতের সিদ্ধান্ত এবং এর কারণ হিসেবে ড্যান মজিনার একটি বিশেষ বার্তা কে সংবাদ হিসেবে পরিবেশন, বেশ বড় ধরনের শিরোনাম হয়। বিএনপির পক্ষ থেকে সেই সংবাদ সম্পর্কে খুব যুক্তি সঙ্গত ব্যাখ্যা না দেয়া। সব মিলিয়ে বিএনপি সম্পর্কে একটা ধুম্রজাল তৈরি হতে সাহায্য করছে।

আসলে বিএনপি সম্পর্কে যে সব খবর আসছে, প্রায় সবগুলোই তাঁদের জন্য নেতিবাচক হয়ে দাঁড়াচ্ছে। তারেক সাহেবের ‘ধমক বার্তা’ থেকে শুরু করে মজিনা সাহেবের ‘বিশেষ বার্তা’। অবশ্য যদি খবরগুলো সত্য হয়। এদিকে জামায়াত প্রশ্নে দোদুল্যমানতা দলটিকে আরও বেশি ক্ষতিগ্রস্থ করছে। তাঁদের ‘জোট’ টি কি জাতীয়, কখনও ভাঙবেন, কিংবা ভাঙবেন কি না। কারো নির্দেশ এর পরে না ভাঙ্গা আর অবস্থা বেগতিক দেখে ভাঙ্গা এসব নিয়ে জল ঘোলা দলটির জন্য কতটা উপকারী হচ্ছে, বোধহয় ভেবে দেখার সময় এসেছে। তার চেয়েও বড় কথা, সাম্প্রতিক শিরোনাম গুলো সবই বিএনপির রাজনীতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

বর্তমান সমস্যা কিভাবে শেষ হবে, তা নিয়ে জল্পনা কল্পনা চলছে। কারো মতে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া ছাড়া উপায় নেই। কারো মতে বিএনপির এখন যা অবস্থা, সমঝোতার বিকল্প নেই। শুধু অবরোধ আর হরতাল দিয়ে কতদিন আন্দোলন চালানো যাবে তা তাঁদের ভেবে দেখতে হবে। তাঁদের নেত্রীকেও ‘গোপালি’ কিংবা ‘বেয়াদব’ জাতীয় বক্তব্য ছেড়ে শান্ত ভঙ্গিমায় কথা বলা শুরু করতে হবে। সমঝোতার বেশ কিছু ফর্মুলাও বাজারে চালু আছে। জামায়াতের সঙ্গ ত্যাগ, মধ্যবর্তী নির্বাচন। কেউ আবার বলছেন, ট্রেন মিস। আবার পাঁচ বছর পরে। তবে এই মুহূর্তে বিএনপির জন্য সবচেয়ে উদ্বেগজনক ব্যাপার হচ্ছে, শিরোনাম। তাঁদের জন্য উৎসাহ ব্যঞ্জক কোন শিরোনাম এখনও দেখা যাচ্ছে না। তারচেয়েও বড় কথা, খুব দ্রুত শিরোনাম থেকে সরে যাচ্ছে, ‘নির্বাচন’।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১১:০৮

খেয়া ঘাট বলেছেন: প্রথমে কিছুদিন যাবে, ‘কে করল’ তা নিয়ে বিতর্ক করে। যথারীতি শুরু হবে কাদা ছোঁড়াছুড়ি। এক দল অন্য দলকে দায়ী করবে। প্রচুর প্রতিবেদন হবে। এসব ‘সহিংসতা’ নিয়ে বিশেষজ্ঞ মতামত চলবে কিছুদিন। এবং অবশেষে কেউই ধরা পড়বে না। শাস্তিও হবে না।

ভালোলিখেছেন।

১১ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১১:৫৩

ডা: আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী বলেছেন: ধন্যবাদ

২| ১১ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১১:২৩

মুহামমদল হািবব বলেছেন: ভালোলিখেছেন। মনের কথা লিখেছেন।

১১ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১১:৫৪

ডা: আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী বলেছেন: ধন্যবাদ

৩| ১২ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১২:০২

সায়েম মুন বলেছেন: চমৎকার বিশ্লেষণ।

১২ ই জানুয়ারি, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:২৯

ডা: আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী বলেছেন: ধন্যবাদ

৪| ১২ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১২:৫২

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
নির্বাচনের পর বিএনপির কর্মকান্ডে বিশৃক্ষল ও সিদ্ধান্থীনতা দেখা গেছে।
বিশেষ করে বিরোধী নেত্রীর সাংবাদিকদের সঙ্গে মত বিনিময় স্থগিতের সিদ্ধান্ত, নির্বাচনের পর পর সবাই অবরোধ অগ্রাহ্য করা সুরু হলে এরপরও অপরিকল্পিত অবরোধ সিডিউল, সাপ্তাহিক উইকএন্ড, মিলাদুন্নবীর তারিখও ভুলে গিয়েছিল।

১২ ই জানুয়ারি, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:২৭

ডা: আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী বলেছেন: ভালো বলেছেন। মতামতের জন্য ধন্যবাদ

৫| ১২ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১:২২

দেশপ্রেমিক পোলা বলেছেন: শিরোনাম থেকে নির্বাচন তো সরে গেছে কবেই। ৬ তারিখেই সরে গেছে আপনি টের পাননি। সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমন এবং সাম্প্রদায়িকতার ঠেলায় ৬ তারিখ থেকেই নির্বাচন পত্রিকার পিছনের পাতায় চলে গেছে। আপনি হয়তো সেটি খেলায় করেননি। এখন আমরা ভাবছি কাকে মন্ত্রী বানানো হলে কেমন হবে এগুলো নিয়ে। ভাবছি ইমরান এইচ সরকার যশোরের লংমার্চের পরে কি কি করবে এগুলো নিয়ে।

১২ ই জানুয়ারি, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:২৮

ডা: আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী বলেছেন: নির্বাচন তো শিরোনামে ছিল না, ছিল নির্বাচনকে বহির্বিশ্ব কিভাবে নিচ্ছে। সেটা কম বেশি এখনও আছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.