![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আন্তর্জাতিক খবরগুলোর ভেতর এই মুহূর্তে বাজার মাতাচ্ছে মালয়েশিয়ান বিমান আর ক্রেমিয়া। বিমানের খবরটিতে অনেক কিছু আছে। খুব সাধারণ দর্শক পাঠকের জন্য ঘটনাটি হচ্ছে দুশ্চিন্তার। ‘আহারে বেচারাদের কি হল। ফ্যামিলি মেম্বারদের কি অবস্থা।‘ আরেক জাতের পাঠক, দর্শক আছেন। তাঁরা এর মাঝে ষড়যন্ত্র খুজছেন। কিছু একটা বাহানা করে ব্যাপারটাকে জঙ্গী হামলা বানিয়ে আবার কোন দেশ আক্রমণের কোন পাঁয়তারা কেউ করছে কি না। কেউ ভাবছেন নতুন কোন টেকনোলোজি আসলো কি না। যার মাধ্যমে অনবোর্ড কম্পিউটারকে হ্যাক করে, পুরো প্লেনকেই হাইজ্যাক করা যায়। আর এমনটা হলে তো সন্ত্রাসীদের পোয়া বারো। ‘চাঁদা দাও নইলে করলাম প্লেন হাইজ্যাক’। আবার সফটওয়ার প্রোগ্রামারদেরও রমরমা ব্যাবসা হতে যাচ্ছে। ‘আমার প্রোগ্রাম অনবোর্ড কম্পিউটারে রাখো নইলে সন্ত্রাসীরা হাইজ্যাক করলো বলে।‘ কম্পিউটার ভাইরাস আর অ্যান্টিভাইরাসের খেলা।
সত্যিকারে কি ঘটেছে, এখনও কিছু জানা যায়নি। সবাই চেষ্টা চালাচ্ছেন। কি হবে আমরা কেউ জানি না, তবে খবরটার আকর্ষণ হারাচ্ছে। যত মর্মান্তিকই হোক একই খবর খুব বেশীদিন কারোরই মুখে রোচে না। অচিরেই বিমানের কোন সুরাহা না হলে আর কিছুদিনের মধ্যে খবরটি ভেতরের পাতায় চলে যাবে। ‘মিসিং প্লেন’ শিরোনাম আর পাবলিক খাচ্ছে না। আসলে এক খবর নিয়ে খুব বেশী মেতে থাকতে আমরা পছন্দ করি না। ইরাকের মৃত্যু আর সিরিয়ার গণ্ডগোল একসময় গিলেছি তবে এখন আর ভালো লাগে না। প্রতিদিন কতশত মরছে, সেসবের খোঁজ আর রাখতে মন চায় না। খুব মর্মস্পর্শী কিছু না হলে এসব মৃত্যু আমাদেরকে এখন আর স্পর্শ করে না। সিরিয়ার সেই তিন বছরের শিশুর আল্লাহকে নালিশ করার হুমকি কয়েকদিন খুব মার্কেট পেয়েছিল। এখনও মাঝে মাঝে ফেসবুকে অবোধ শিশুটির ছবি ঘোরে। লাইক দিই। কখনও শেয়ার করি। দুঃখী দুঃখী কিছু কথা বলি। কখনও বিপ্লবী ভাষণ। আমেরিকা, সাম্রাজ্যবাদ, এসব নিয়ে কিছু সুন্দর বাণী আছে। সেসব কপি করে ছড়িয়ে দিই। ব্যাস। কিছুদিন পরে সেটাও আর মার্কেট পাবে না।
এই মুহূর্তে দ্বিতীয় যে খবরটি সবাই একটু মজা নিয়ে পড়ছে, তা হচ্ছে ক্রাইমিয়া। ক্রাইমিয়ার জনগণ কিংবা তাঁদের অধিকার নিয়ে খুব একটা কারো মাথা ব্যাথা নেই। মূল চিন্তা, আমেরিকা কি করে। রাশিয়ার সঙ্গে লাগতে যাবে কি না। অবরোধেই থেমে থাকবে, না আরও কিছু করবে। বিশ্বজুড়ে যে রাজত্ব এতদিন করে আসছিল আমেরিকা, সেখানে ফাটল ধরতে যাচ্ছে কি না। ধরলে অবশ্য বেশ সমস্যায় পরে যাবে আমেরিকা। তাঁর অস্ত্র বিক্রির কি হবে। যুদ্ধ বিমান, ক্ষেপনাস্ত্র থেকে শুরু করে যুদ্ধ জাহাজ সব কিছুর বিক্রি তো বাড়ে এই যুদ্ধ লাগলে। আর বিক্রিটাও হয় নিজের পক্ষের দেশের কাছে। নিজের পক্ষে রাখতে গেলে চাই—আধিপত্য। সেটা না থাকলে কি করে হবে? আর যুদ্ধ যে করবে সেখানেও তো চাই দুর্বল প্রতিপক্ষ। যাদের হাতে তেমন কোন অস্ত্র নেই। ইরাক, আফগানিস্তান এরকম হলে ভালো হয়। অন্যপক্ষকে যদি রাশিয়া সাহায্য করে তবে তো সমস্যা। নিজেদের খরচও বাড়বে, সৈন্যও মরবে আর যুদ্ধও শেষ হবে না। লিবিয়া আর মিসরের মত দুধভাত কেস তো সবসময় পাওয়া যায় না। লিবিয়াতে নিজেদের নামতে হয় নি, ফলে খরচও বেশ অল্প হয়েছে, নিজেদের লোকও মরে নি। মিশরে কিছুদিনের জন্য যদিও পছন্দের আর্মির কাছ থেকে ক্ষমতা ছুটে গিয়েছিল। এখন আবার সেটা আবার ফেরত এসেছে। এখন চীন, রাশিয়া আর ভারত একসাথে হলে, বেজায় সমস্যা হয়ে যাবে।
পুতিন সাহেব বেশ অনেকদিনই চুপচাপ ছিলেন। ইরাক, আফগানিস্তান—কিছু বলেননি। ফলে আমেরিকা জাতিসংঘের প্রায় সব কিছুতেই একচেটিয়া আধিপত্য চালাচ্ছিল। নিজের ইচ্ছেমত যা কিছু পাশ করিয়ে, যেকোনো দেশে হামলা চালাচ্ছিল। সিরিয়া প্রশ্নে প্রথম মুখ খুলতে শুরু করেছেন। কথা না শুনলে ‘অবরোধ’ দিবো—এই হুমকি দিয়ে অনেক দিনই আমেরিকা কাজ চালিয়েছিল। ক্রাইমিয়ার ক্ষেত্রে মনে হয়েছিল হুমকিতেই হয়ে যাবে। ‘অবরোধ দিবো কিন্তু’ বলে প্রথমে সাবধান করাও হয়েছিল। কাজ হোল না দেখে এবার ‘অবরোধ’ দিয়েও দিলেন ওবামা সাহেব। প্রশ্ন যেটা দেখা দিচ্ছে—এখানেই কি ঘটনার ইতি? না থলের ভেতর আরও বিড়াল আছে। পুতিন সাহেব এতো শক্ত ভাবে আমেরিকার বিরুদ্ধে এর আগে কখনও দাঁড়ান নি। হয়তো নিজের স্বার্থ ছিল, তাই। তবে এবার মনে হয় না তিনি পিছপা হবেন। আর তা হলে সেটা হবে আমেরিকার গালে চপেটাঘাত। সেটা নির্লজ্জের মতো হজম করবে না কোন ফন্দি আঁটবে সেটাই এখন দেখার বিষয়। আরও একটি প্রশ্ন গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে আসছে, ‘শীতল যুদ্ধ আবার শুরু হল কি না।‘
শীতল যুদ্ধের সময়কালটা যেকয়টি দেশ সবচেয়ে বেশী জ্বালাতন সহ্য করেছে তাঁর একটি বিশাল অংশের অবস্থান হচ্ছে লাতিন আমেরিকায়। এরা সারাক্ষণই ভয়ে থাকতো, এই বুঝি কোন না কোন ছুতোয় এখানে ক্যু হবে। কখনও আর্মি প্রধান কখনও কোন বিদ্রোহী গ্রুপ। একপক্ষ পেত আমেরিকার সমর্থন আর অন্য পক্ষ রাশিয়ার। দিনের পর দিন চলতো যুদ্ধ। তখন এসব দেশে একটি রসিকতা বেশ শোনা যেত।
‘আচ্ছা বলতো, আমেরিকাতে কেন কোনদিন কোন ক্যু হবে না? কারণ ওয়াশিংটনে কোন মার্কিন দুতাবাস নেই।‘
শীতল যুদ্ধের কিছু নমুনা আমরা আমাদের ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনে দেখেছি। রাশিয়া, চীন, ভারত নির্বাচন মেনে নিয়েছে। আমেরিকা আর ইউরোপীয়রা মানে নি। ক্রাইমিয়া নিয়েও ওরা দুইভাগে বিভক্ত। সিরিয়া নিয়ে বিভক্তি তো আছেই। এই বিভক্তি দিনে দিনে বাড়বে বলেই মনে হচ্ছে। অস্ত্র বাণিজ্যে চীন উঠে আসছে আর মেরুকরণ হলে রাশিয়াও তাঁর আগের অবস্থান ফিরে পাবে। আর এভাবে চলতে থাকলে আমেরিকার পেটে লাথি পড়তে সময় লাগবে না। আর তাই এমন অবস্থা চলতে দিতে আমেরিকা চাইবে বলে মনে হচ্ছে না। একটা হেস্তনেস্ত হতে হবে। কোথা থেকে তাঁর শুরু হবে? মালয়েশিয় বিমানের মতোই দুর্বোধ্য এই প্রশ্নের উত্তরের অপেক্ষায় আরও কিছুদিন দর্শকদের অপেক্ষা করতে হবে। তবে দর্শকরা একটা কাজ বোধহয় এখনই করতে পারেন। স্বাগতম জানাতে পারেন। বলতে পারেন—‘শীতল যুদ্ধ—ওয়েলকাম ব্যাক’।
২| ২৩ শে মার্চ, ২০১৪ দুপুর ১:৩৫
শরৎ চৌধুরী বলেছেন: অনবদ্য পর্যবেক্ষণ। এটা করার জন্য কিছুটা বয়সও বোধহয় লাগে। শুভেচ্ছা জানবেন।
৩| ২৩ শে মার্চ, ২০১৪ দুপুর ১:৪৬
মমিন@ বলেছেন: ভাল পর্যবেক্ষন, অনেক কিছু জানলাম, আশা করি এইটার আপডেট থাকবে ...... শুভেচ্ছা রইল
৪| ২৩ শে মার্চ, ২০১৪ দুপুর ১:৫২
স্নিগ্ধ শোভন বলেছেন: সুন্দর পর্যবেক্ষণ।
পোষ্টে +++++
৫| ২৩ শে মার্চ, ২০১৪ দুপুর ২:৪৬
বেলা শেষে বলেছেন: Good post , good explaination, beautiful description.
৬| ২৩ শে মার্চ, ২০১৪ দুপুর ২:৫৫
দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন: ওয়েলকাম ব্যাক - শীতল যুদ্ধ
৭| ২৩ শে মার্চ, ২০১৪ বিকাল ৩:০০
"চিত্ত যেথা ভয় শূণ্য, উচ্চ সেথা শির" বলেছেন: খুব সুন্দর পোষ্ট, ওবামাকে ভালো লাগে কারন আগের যুদ্ধবাজ গুলার চাইতে ওবামা প্রশংসার দাবিদার। মন্দের ভালো হিসাবে ওবামাকে সাপোর্ট করি।
যুদ্ধ নয় শান্তি চাই.
৮| ২৩ শে মার্চ, ২০১৪ বিকাল ৩:১৫
সোহানী বলেছেন: অবশ্যই শীতল যুদ্ধের প্রয়োজন আছে পৃথিবীর ভারসাম্য ফিরিয়ে আনতে..... আজ শীতল যুদ্ধ থাকলে ইরাক/ইরান/সিরিয়া বা আফগানিস্তান হয়তো বেচেঁ যেতো............
৯| ২৩ শে মার্চ, ২০১৪ বিকাল ৩:২২
জগ বলেছেন: মালয়েশিয়ার বিমানে নাকি চাইনিজ মিলিটারি টেকনলজি (স্টিলথ যুদ্ধ বিমান) নিয়ে কাজ করে এইরকম ১৮/২০ জন এক্সপার্ট লোক ছিল।
এই ঘটনা যদি সত্যি হয়, তাইলে বাকি হিসাব সোজা।
১০| ২৩ শে মার্চ, ২০১৪ রাত ৮:৫২
নহে মিথ্যা বলেছেন: "শীতল যুদ্ধের কিছু নমুনা আমরা আমাদের ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনে দেখেছি। রাশিয়া, চীন, ভারত নির্বাচন মেনে নিয়েছে। আমেরিকা আর ইউরোপীয়রা মানে নি।"
ঠিক বুঝলাম না আপনি কি বোঝাতে চাইলেন শেষে এসে...!! আচ্ছা আপনি কি এই নির্বাচন মেনে নিয়েছেন...???
আপনি যদি মেনে নেন এই সাজানো নির্বাচন... তাহলে পরবর্তি মন্তব্যে আপনার মত বিজ্ঞ একটা পর্যালোচনা থাকবে... কেন ভারত, চীন আর রাশিয়ে এই নির্বাচন মেনে নিয়েছে...
কমেন্ট পর্যবেক্ষনে রাখলাম...
৩০ শে মার্চ, ২০১৪ রাত ১২:৫৯
ডা: আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী বলেছেন: কোথায় আমি নির্বাচনকে মানলাম। ওদের ঝগড়ার কারণে একজনের মানা অন্যের না মানা-- এটাই বলতে চেয়েছি। ওদের তো নীতি একটাই-- একজন হ্যা বললে অন্যকে না বলতেই হবে। ঠিক বেঠিক ওদের কাছে ইস্যু না।
১১| ২৩ শে মার্চ, ২০১৪ রাত ৮:৫৯
নিরীহ বালক বলেছেন:
মজা পাইলাম
১২| ২৩ শে মার্চ, ২০১৪ রাত ১১:৩৫
এহসান সাবির বলেছেন: ভালো পোস্ট।
©somewhere in net ltd.
১|
২৩ শে মার্চ, ২০১৪ দুপুর ১:৩১
মুহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেছেন: শীতল যুদ্ধ—ওয়েলকাম ব্যাক !!!