নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার সব লেখা

ডা: আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী

চিকিৎসক এবং লেখক

ডা: আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমরা পারিও বটে

০৮ ই আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৩:৪৬

ভার্চুয়াল জগতে এখন তোলপাড়। এখানে ‘তুবা’ শ্রমিকদের জন্য ভার্চুয়াল অনশন থেকে শুরু করে পরবর্তী পদক্ষেপ, আন্দোলনের নিয়ম কানুন, লেনিন বেঁচে থাকলে কি করতেন, হেন উপদেশ নাই যা নাজিল হচ্ছে না। কে কত ভাল উপদেশ দিতে পারে তার একটা প্রতিযোগিতা চলছে এবং যথারীতি সেখানে গালিগালাজও আছে। আছে ইতিহাস নিয়ে টানাটানি। কে কবে কোন দলের লেজুড় ছিল, কে কখন শ্রমিকের জন্য ক্ষতিকর কাজ করেছে, এসব তো আছেই। ওদিকে তুবা এবং তাঁকে ঘিরে তাজরিনের মালিকের ‘জামিন জামিন’ খেলা এখন শেষ পর্যায়ে। মালিকের জামিন হয়ে গেছে। বেতন নিয়ে খেলা এখনও বাকী আছে। সেই খেলার যবনিকা কে টানবে বোঝা যাচ্ছে না। বিজিএমইএ কেন মাঠে নামলো সেটাও খুব স্পষ্ট না। ঠিক বোঝা গেল না তাঁরা মালিকের লেজ হিসেবে নেমেছে না সত্যিই কোন সমাধান করতে। যে উদ্দেশ্যেই কাজ করতে নামুক না কেন, তাদের পারফর্মেন্স বেশ ন্যাক্কারজনক হয়েছে। না দেশবাসীর কাছে বিশ্বাস যোগ্য কিছু দেখাতে পেরেছে না শ্রমিকদের কাছে। যা চেষ্টা করল, তা হচ্ছে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে কিছুটা সন্দেহ তৈরি করা। সেটাও খুব ভাল পেরেছে বলে মনে হয় না। বেতন ভাতা দেয়ার ‘ডিভাইড এন্ড রুল’ ও ফ্লপ করল। সমস্যাটা যাদের সবচেয়ে বেশি কাজে লেগেছে তাঁরা হচ্ছে বাম মোর্চা। গরম গরম ভাষণ গুলো দিয়ে অনেক অপরিচিত নেতা কিছুক্ষণের জন্য হলেও টিভি কাভারেজ পেয়েছেন। অনেকে সহমর্মিতার জন্য অনশনও করেছেন। কারো মতে সেসব তাঁরা পাবলিসিটির জন্য করেছেন। যে কারণেই হোক, আন্দোলন থেকে সাফল্য আনতে পারলে হয়তো বাজারে বামদের দাম বাড়ত। তবে সেটা হবে বলে মনে হচ্ছে না। যথারীতি বামদের পুরনো দোষ, ‘ভাঙ্গন’, এখানেও আঘাত হেনেছে। দুমাসের বেতন নেয়া উচিত কি না, এ নিয়ে যথারীতি বিভক্তি। সশস্ত্র হবে কি না, আন্দোলন বৃহত্তর করা হবে কি না এসব নিয়ে বিভেদ আসি আসি করছে। এছাড়াও রয়েছে, কে বড় নেতা, তাঁর প্রতিযোগিতা। বিএনপি আছে নিজের ঘর নিয়ে। আব্বাস আর খোকা গ্রুপের ঝগড়া মনে হয় সমাপ্তির পথে। খালেদা জিয়া যা করতে পারেন নি, ক্যান্সার তা করে দেখাল। খোকা গ্রুপের যেহেতু সেকেন্ড ইন কমান্ড কেউ নেই, তাই আব্বাস সাহেব মনে হচ্ছে, এ যাত্রা বাজী মাত করছেন। তবে মনে হচ্ছে, কাহিনী ওখানেই শেষ। আন্দোলন সংগ্রামের জন্য নেতা কর্মী জোটাতে এখনও হিমশিম খাচ্ছে বিএনপি। ঈদের পরে নাকি হবে, এমন কি সব বলেছিল, বোধহয় তাঁদের নিজেদেরও মনে নেই। আসলে এই গরমের সময় কোন আন্দোলনই করা সম্ভব না। নভেম্বরের আগে এসব হুমকি ধামকি দিয়েই কাজ চালাতে হবে। একটু শীত পড়লে, রোদের তেজ কমলে তখন দুএকজন মাঠে রোদ পোহাতে নামতেও পারে। সবচেয়ে মজায় আছে সরকারী দল। নেহাত সংসদে নাচানাচি সম্ভব না, তাই মনের ভাব প্রকাশ করতে পারছে না। তাঁদের অবস্থা হাতে আলাদিনের চেরাগ পাওয়ার মত। যখন যা চাইছে, তাই পাচ্ছে। দেশে ঘটা কোন অনিয়ম, দুর্নীতি নিয়ে তাঁদেরকে প্রশ্ন করার কেউ নেই। লঞ্চ ডুবছে, কোন সমস্যা নেই। বরং নৌ মন্ত্রীর পোয়া বারো। বেশ কয়েকদিন টিভি কাভারেজ। টক শো তে আমন্ত্রণ। কিছু কলামিস্টের ‘নেট সার্চ’ এবং দক্ষিন কোরিয়ার ফেরী ডুবির উদাহরণ। তবে তাঁরা কেউই তৃতীয় বিশ্বের কোন উদাহরণ টানতে পারছেন না। ভারতে শুধু একবার এক রেলমন্ত্রী পদত্যাগ করেছিলেন, রেল দুর্ঘটনার দ্বায়িত্ব কাঁধে নিয়ে। এরপরে আর এমন নীতির প্রদর্শন কেউ করেন নি। রাজ্যে ‘দাঙ্গা’ লাগার পরও মুখ্য মন্ত্রী বহাল তবিয়তে থেকেছেন, যদি কেন্দ্রে সেই দলের সরকার থাকে। দেশ নিয়ে চিন্তা ভাবনা করা সবসময়ই অনেকটা ‘টাইম পাস’ ব্যাপার ছিল। এখনও আছে তবে এখন যুক্ত হয়েছে বিশ্ব। ইউক্রেন, মালয়েশিয় বিমান নিয়ে আমাদের চিন্তা ছিল দেখার মত। ফিলিস্তিন নিয়েও হৈ হল্লা কম হয় নি। নিহত শিশুদের ছবি থেকে শুরু করে আমিরিকার বক্তব্য কি ছিল না ফেসবুকে। মাঝে মাঝে ছিল ‘বুদ্ধিদীপ্ত’ সব আনালাইসিস। প্রমাণ করার আপ্রাণ চেষ্টা, এসবের পেছনে আছে আমেরিকা। মজাই লাগছিল। মনে হচ্ছিল ফেসবুক আর ব্লগে এসব প্রমাণ হাজির করলেই আমেরিকা সুর সুর করে নিজের ভুল বুঝতে পেরে সরে দাঁড়াবে। মজার ঘটনা আরও ঘটেছে। বিশাল একটা পণ্যের লিস্ট ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছে। ‘ইহুদীদের তৈরি’ এসব বর্জন করার ডাক দেয়া হয়েছে। আর সেটা দেয়া হয়েছে ‘ইহুদী’ জুকারবার্গের সৃষ্ট ‘ফেসবুক’এ। ‘কোকাকলা’ বিক্রি কমেছে কি না কিংবা এ নিয়ে সত্যি কোন মুভমেন্ট হচ্ছে কি না তা নিয়ে কোন রিপোর্ট অবশ্য নেই। যিনি বা যারা এই ডাক দিয়েছেন তাঁরা নিজেরা আর কিছু করেছেন কি না তাও বোধগম্য না। আসলে ফেসবুকে একটা স্ট্যাটাস দিয়েই দ্বায়িত্ব শেষ করা একটা ফ্যাশান হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই ভার্চুয়াল ওয়ার্ল্ড ই এখন সবার ‘বিপ্লব’ এর জায়গা। এখানে কে কত বিপ্লবী কথা লিখতে পারে, কে কত উত্তেজক স্ট্যাটাস দিতে পারে তার একটা প্রতিযোগিতা চলছে। মাঝে মাঝে তো আবার সেলিব্রেটিরা একে অপরকেও আক্রমণ করছেন। কে নীতি ভ্রষ্ট, কে বেশি নিতিবান, কে সাচ্চা বিপ্লবী, কে বিক্রি হয়েছে। সত্যিই আমরা পারিও বটে।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৪:০০

লেখোয়াড় বলেছেন:
তোবার শ্রমিক না খাইয়া মরে
তোবার মালিক ফুর্তি করে।

তোবার শ্রমিক না খাইয়া মরে
বিজিএমইএ তামাশা করে।

তোবার শ্রমিক না খাইয়া মরে
প্রধানমন্ত্রী ঈদ করে।

শ্লোগানগুলা কিন্তু জস্পেস।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.