নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ঘুরতে ভালোবাসি। সময়ের অবসরে নিজের ভাবনাকে অক্ষরে প্রকাশ করার চেষ্টা করি।

ধ্রুব বাদল

বাদল

ধ্রুব বাদল › বিস্তারিত পোস্টঃ

সমকালীন প্রলাপ

০৬ ই নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:৩৮

খোলা চোখে দেখলে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণের জন্য প্রয়োজন একটা তাজা জীবন। যদি বিবেচনাবোধটা সামাজিক হয় তাহলে আমরা এর ব্যতিক্রমও লক্ষ্য করি। অবশ্য একে ব্যতিক্রম না বলে আমরা বলতে পারি, সৃষ্টির স্বাভাবিক নিয়মকে ভেঙে, স্রষ্টাকে নতুন করে দেখিয়ে দেয়া যে, আমরাও পারি! যে আমরা গলা ছেড়ে গান গাই ‘আমরা করবো জয় একদিন’ সেই আমরা তোমার সৃষ্ট নতুন জীবনকে জীবনরুপে এই পৃথিবীর উন্মুক্ত আলো বাতাস থেকে বঞ্চিত করতে পারি। দেশের এই শঙ্কটময় অবস্থা এর আগে মানুষ কি দেখে অভ্যস্থ ? নাকি বলতে হয়, “যে দেশে দার্শনিকের চোখে জল, সে দেশের নদীগুলো শুকিয়ে গেছে”। আর মায়ের বুকের মানিক,নাড়ি ছেড়া ধন হারানোর কারনে যে কান্না তার জন্য কি হবে দেশের ???

মায়ের কোল নাকি সন্তানের কাছে পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে নিরাপদ স্থান। আর সেই মায়ের গর্ভ সন্তানের জন্য কতটুকু নিরাপদ তা কল্পনাতীত বিষয়। মায়ের গর্ভে সন্তান সমস্ত জাগতিক সমস্যা থেকে মুক্ত থেকে দিন দিন এই পৃথিবীতে আসার জন্য তৈরী হয়। কিন্তু আমাদের সোনার দেশ, বাংলাদেশ। বঙ্গ সন্তান বলে আমাদের গর্বে বুক ভরে যায়! সেই সবুজ শ্যামল দেশে একটা শিশু তার মায়ের পেটে কতটুকু নিরাপদ ? আমরা মাগুরা আর ফেনীর ঘটনার দিকে তাকালে দেখতে পাবো। মায়ের পেটে থেকেও ক্ষমতাশীলদের দাপট সম্পর্কে অভিজ্ঞতা নিয়ে জন্মানো তো আসলেই ভাগ্যের ব্যাপার! সংবাদের শিরোনাম হয়।

বড় হলে গর্ব করে বলতে তো পারবে, যে জন্মের আগেই আমি তোমাদের মাঝে পরিচিত ছিলাম। এ হয়তো একথা বলে তার আত্মপরিচয়টা দিয়ে পারবে এই পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মানবদের সামনে। কিন্তু ফেনীর তুলসী রানীর সন্তান কি বলবে ? নাকি পরকালে ছাগল যেমন গরুকে গুতা মেরে প্রতিশোধ নেয় বলে কথিত আছে, ঠিক তেমনি এও সেই লাথ্থি মারা তথাকথিত নেতার মায়ের পেটে লাথি মেরে প্রতিশোধ নিবে? যে গর্ভে থাকবে আজকের ভয়ানক ক্যাডার। কিন্তু সেটাই কি সবার চেতনা ?

তারও তো এই পবিত্র বাতাসে শ্বাস নেবার পূর্ণ অধিকার ছিলো। নাকি আমরাই তাকে মেরে ভালো করেছি? বাতাস তো আর এখন পবিত্র নাই। আমরাই তো বাতাসকে কুলোষিত করেছি। তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এ অপবিত্র বাতাসের শ্বাস না নেওয়াই তার জন্য ভালো। দেশের মাটি, পানি, ধূলা, বালু-কনা থেকে শুরু করে পুরো দেশটাকে আজ অযোগ্য করে তুলছি বসবাসের। এমন জায়গাতে আসলে না আসাই ভালো। এই সিদ্ধাতে তোকে লাথি মেরে ভালো করেছি। একথা তাকে হয়তো মনে মনে বলছে অনেকে। বার বার ‘তাকে’ ব্যবহার করছি একটা নামের অভাবে। সে কি নামেরও অযোগ্য? নাকি নামের উপর কোন পদাঘাতের চিহ্ন আবার পড়ুক সেটা চাই না। এমন ভয় পেয়ে বসেছে আমাদের সবার অস্থিমজ্জায়। যার কারণেই বার বার আঘাতের পর আঘাত মেনে নেওয়া আর মনে নেওয়ার রীতি হয়ে গেছে।

এই পৃথিবীর মধ্যে ‘মা’ শব্দটা মধুর যেমন সন্তানের কাছে ঠিক মায়ের মনটা ভরে ওঠে সন্তানের মুখ থেকে ‘মা’ উচ্চারণের সাথে সাথে। মা তো এমনই যার গর্বের শেষ নেই! নিজের শরীরের ভেতর আরেকটি শরীর লালন করার মধ্যে এক ধরণের গর্ব আছে, গর্ব আছে একজনের ভেতরে দুজনকে অনুভব করার মধ্যে। হৃদয় এবং মস্তিষ্কের যেমন কোন নারী পুরুষ ভিন্নতা থাকে না, তেমনি তার শত্রু ও থাকে না। তবে সেই মা কি ধরে নিবে যে এই সবুজ-শ্যামল দেশের জন্য কথাটা ভুল!!

যে মা প্রতিদিন সকাল সন্ধ্যায় আহ্নিক করে তার দিন কেটেছে; অনাগত সন্তানের কামনায় যে তুলসী রানী, তুলসী গাছের গোড়ায় প্রদীপ জ্বেলে প্রণাম করেছে; তার সন্তানের ভাবনায় সে ধীরে ধীরে পা টিপে টিপে হেটেছে;তাকে কোন কিছু বলে সান্ত্বনা দেবার ভাষা কি বিশ্ব সাহিত্যে আছে ???

এখানেই শেষ না ! ছোট গল্প যেমন শেষ হয়ে হইলো না শেষ,এমন একটা আবেশ রেখে যায়। তুলসী রানীর জীবনেও এমন ছোট গল্পের অাঁচ সারাজীবন থেকে যাবে। জীবনের এই অদেখা মানিক ছেড়ে একটু খড়কুটো ধরে যন্ত্রের মত জীবন-যাপন করার যে অবলম্বন তাও তার নেই। আশা আর স্বপ্নই নাকি জীবন। সেই আশা আর স্বপ্নেরও মৃত্যু ঘটেছে তার জীবনে।

আবার কোন এক সন্তানের দিকে তাকিয়ে থাকার আশা নিয়ে যে বেচে থাকা, সেটুকুও বাকি রইলো না। প্রকৃতি কেড়ে নিলে তো বাজ-বিচার করেনা। কিন্তু প্রকৃতির ভয়াবহতার থেকে মুক্তি পাবার জন্য যে মানুষকে আকড়ে ধরি, সেই মানুষ যদি ধ্বংসলীলার খেলায় মেতে ওঠে তাহলে সেটা তো হিংস্র জানোয়ার থেকেও ভয়াবহ হয়। এমন নিদারুন থাবার ও পদাঘাতের কবলে শুধু তুলসী রানীর অনাগত সন্তানই পড়ে নি, পড়েছে তার জীবনের সম্ভবনাটুকুও। তারা শুধু একটা জীবনই কেড়ে নেয় নি, সাথে সাথে ‘মা’ হওয়ার তৃপ্তিটুকুও কেড়ে নিতে দ্বিধা করেনি। আর কোন দিন কেই ‘মা’ ডাকবে না তাকে, আর সেও কোন দিন এই মমতাভরা ‘মা’ ডাক শুনতে পাবে না। মা হবার ক্ষমতাটুকুও কেড়ে নিয়েছে আজকের কোন এক মায়ের সন্তান !!

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:৪৮

কবি এবং হিমু বলেছেন: সুন্দর লেখাটির জন্য ধন্যবাদ,শেষের দিকে এসে চোঁখ ভিজে গেল।মন্তব্য করার ভাষা খুঁজে পেলাম না

০৬ ই নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:১০

ধ্রুব বাদল বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ভাই....

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.