নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ঘুরতে ভালোবাসি। সময়ের অবসরে নিজের ভাবনাকে অক্ষরে প্রকাশ করার চেষ্টা করি।

ধ্রুব বাদল

বাদল

ধ্রুব বাদল › বিস্তারিত পোস্টঃ

জিঞ্জিরার ভালোবাসা..!!

২০ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৩:২৫

প্রিয় নারকেল জিঞ্জিরা..

অপেক্ষা মৃত্যুর চেয়ে কঠিন। হৃদয়ে পুষে রাখা ভালোবাসার জন্য অপেক্ষার তৃপ্তিটাও বর্ণনাতীত। তোমার জন্য অনেক অপেক্ষা করেছি জিঞ্জিরা! প্রতিক্ষায় থেকেছি অনেকটা সময়। টেকনাফ নেমেই তাই মনটা ছটফট করছিলো আগলে ধরার জন্য। বারবার জাহাজের মাস্তুলে গিয়ে দেখেছি আর ভেবেছি আর কতদূর!
চোখ মেললেই শুধু আকাশ, তখন ভয়ও হারিয়ে যাবে বিশাল আকাশের কাছে। এত বড় আকাশ একসাথে দেখার আর কোন উপায় আছে বলে জানা নেই৷ মাঝে মাঝে দেখা যাবে এলবাট্রস। সারেং এর ঠিক মাথার উপর নির্ভয়ে উড়ে চলছে। কখনও বা একা আবার কখনও বা একঝাক। আকাশ রেখে পাখির দিকে মন দিলে হামেশাই সময়টা চলে যাবে বুঝে ওঠার আগেই। পাখিগুলো উপরে উঠে কিছুক্ষণ উড়ার পর ঝপ করে পানিতে দিবে লাফ। আবার ভুস করে ভেসে দেবে উড়াল। আজব খেলা। শিকার আর শিকারীর অংশগ্রহণ।
বিশাল সমুদ্রে ডানামেলে গাঙচিলের যে স্বাধীনতা সেই স্বাধীনতায় ভাসতে মন চাচ্ছিলো বারবার। মনে হচ্ছে এই ছোট্ট জাহাজের মধ্যে না থেকে দু’পাশে উড়েচলা শুভ্র গাঙচিলগুলোর সাথে চলে যায় তোমার বুকে। দু’পাশের সবুজ পাহাড় আর ভিনদেশি কাটাতারের বেড়ার ফাঁকের কোন সৌন্দর্যই এতটা মোহিত করেনি। শুধু তোমার আশায়। নীল জলরাশির পানে চল্লিশজোড়া চোখ শুধু তোমাকে খুজেছে।
অবশেষে রোদ ঝলসানো দুপুরে তোমার বুকে পদার্পণ করেই মনটা খারাপ হয়ে গিয়েছিলো। মানুষের আধিক্য আর রমরমা বানিজ্যের ভিড় দেখে । একপেশে নগর কেন্দ্রিক জীবনে অতিষ্ট হয়ে পালাবার উত্‍কৃষ্ট স্থান এই দ্বীপ। কিন্তু যে নিবিড় ভালোবাসা আর পরম মমতার যে প্রত্যাশা ছিলো, তার আশা ভঙ্গের কষ্ট পেয়েছিলাম। বাজারের বুক চিরে হাটছিলাম আর ভাবছিলাম যে কোন নব্য উপনিবেশে চলে আসলাম। নিবিড় করে ভালোবাসা পেতে ব্যাকুল হৃদয় তখন নানান অভিযোগে দুষছে তোমায়।
প্রকৃতি নাকি সবার উপযুক্ততা ফিরিয়ে দিতে কোন কার্পণ্য করে না। তুমিও তার ব্যতয় ঘটাও নি। ভালোলাগা,ভালোবাসা,ভাবাবেগ, উচ্ছ্বল আনন্দে ভরিয়ে দিতে কোন দ্বিধাই করোনি। প্রিয়ার মতো শত অভিযোগে নিশ্চুপে ভালোবেসে আনন্দের প্রতিদানে ভরিয়ে দিয়েছো চল্লিশটি প্রাণকে। ভালোলাগা আর ভালোবাসার যে প্রাচুর্যতায় ভরিয়ে দিয়েছো তাতে হাজার কোটি বছর বাঁচার অনুষঙ্গ হিসেবে কাজ করবে বললে কম বলা হবে।
এবার শোন আমাদের কথা...
তোমার কাছে যেয়ে নীল জলরাশির কাছে নিজেকে সঁপে দিতে কেউ দ্বিধা করেনি। ঝাপিয়ে পড়েছি মহাসমুদ্রে। পাশে অনেকগুলো প্রিয় মানুষকে নিয়ে সময় কাটানোর এই স্মৃতি অমলিন। তবে গভীর রজনীতে পূর্ণ আঁধারে সাগরপাড়ে গোল হয়ে বসে গান গল্পের যে দ্যোতনা তা হয়তো তুমি উপভোগ করেছো জিঞ্জিরা। আমার এই সব প্রিয় মানুষের কণ্ঠস্বর কানে বাজবে আমৃত্য।
দোস্ত Nidhi Chakma ভয়ে ভয়ে পানিতে নামা আর Layla Nawshin এর নির্ভয়ে সাগরে ঝাপ দেওয়া সত্যিই মনে রাখার মতো। বিজুর ঘাড়ের উপর থেকে Tasmia Tania এর সমুদ্র লাফিয়ে পড়া নান্দনিকতায় পূর্ণ। Barnana Bhowmick ম্যামের হাতে হাত ধরে ভয়ে ভয়ে আস্তে আস্তে পানিতে নামার দৃশ্য আহ কি দারুন!
প্রাণের বন্ধু Md Ubaidul কণ্ঠে গভীর রাতে ‘শুয়াচান পাখি’, Biju Roy এর গলায় ‘সোনার ময়না পাখি’সহ Mithun Miya স্যারের কণ্ঠে ‘জাত গেলো জাত গেলো বলে’...এমন অসংখ্য গানের স্বাক্ষী তুমি জিঞ্জিরা। বন্ধু Drinja Ï Chambugong তার নিজের ভাষায় অধিকারের গানে মুগ্ধ করেছে সবার মনকে।
Mithun Miya স্যার বিভাগের বড় ভাই ও শিক্ষক হিসেবে আমাদের আগলে রেখেছেন সারাক্ষণ। দায়িত্বশীলতার সাথে ভালোবাসার সমন্বয়ে ভরিয়ে দিয়েছে সব সময়। নানান গল্প আর স্মৃতিচারণে ভরিয়ে তুলেছেন প্রতিটা সময়কে। এমসিজে পরিবার গর্বিত তাঁর জন্য। এটা আমাদের অহংকার।
আর প্রিয় Fortune Shamim স্যারের মায়াবী সুর হৃদয়ে ভালোবাসার সূচ ফুটিয়েছে প্রতিনিয়ত। এমন ভালোবাসায় সমন্বয় কখোনো দেখেছো সেন্টমার্টিন? অনেকগুলো মানুষের একপ্রাণে গাথা ভালোবাসার মালা উপহার দিয়েছি তোমাকে। আর তুমিই আমাদের দিয়েছো সেই ভালোবাসার ক্ষেত্র। তাইতো প্রাণের সাথে মিশে আছে তোমার প্রতিটি বালুকণা।

ফরচুন স্যারের সাথে
পড়ন্ত বিকালে সূর্যাস্ত দেখতে দেখতে সেন্টমার্টিনের সমুদ্রের কিনারা ঘেষে সাইকেল চালোনোর অনুভূতি অন্য রকম। সেই সময়ের সঙ্গী Fortune Shamim স্যার। যার সাথে জীবনের অনেক কথা শেয়ার করা যায়। ঠিক নির্দেশনা বাতলে দেন গল্পের ছলে। পুরো সেন্টমার্টিন দেখেছে ভালোবাসার এই সব অপরুপ দৃশ্য। মনে মনে ভেবেছি হিংসায় জ্বলে যাচ্ছে কেয়া,ঝাউ আর নারকেল গাছ। তাই ভেবে খুশি হয়েছি আর সাইকেল চড়ে বেড়িয়েছি। ফেরার পথে হুমায়ূন আহমেদের সমুদ্র বিলাস দেখে কাকড়া ভাজা খেয়ে রাতে ফিরেছি। আহা ! কি আনন্দ। খুউব খুউব মিস করবো স্যারের লুজার কমান্ডার বলাকে।
সত্যি করেই বলছি..প্রিয়ার সাথে আর নৈসর্গিক ঐ সূর্যোদয় দেখতে মন চাইবে না। সদা হাস্যোজ্জ্বল প্রিয় Barnana Bhowmick ম্যাম সহ যে কজন বন্ধুদের নিয়ে, পুব আকাশের ঐ ভিনদেশি সবুজ পাহাড়ের বুক চিরে চিকচিক করে জেগে উঠা সূর্য দেখেছি, তাতে এ হৃদয় তৃপ্তিতে কানায় কানায় পূর্ণ।

সূর্যোদয় দেখার পর অামরা সবাই.
আনন্দ উপভোগ সমন্বয়হীনতায় তার মাধূর্য হারায়। অন্ধকারের মধ্যে মাঝরাতের সমুদ্রের যে ভাষা আর হিমেল বাতাস উপভোগ করার আনন্দ তা সত্যিই মনোরম। এখানে হৃদয়ের ব্যাকুলতা প্রকাশে ব্যর্থ হচ্ছি শব্দ ভান্ডারের অভাবে। সেই নিশুতি রাতের অমন পরিবেশে প্রিয় কথা ম্যাম তাঁর নামের স্বার্থকতা বুঝিয়েছেন। আমি নিশ্চিত যে, ম্যামের মতো অমন ভালোবাসাময় পরিপূর্ণ হৃদয়ের মানবী নারকেল জিঞ্জিরা কখোনো দেখেনি। হাসি-খুশি,আনন্দ অার সৌভাগ্যের দিক দিয়ে আমরা সত্যিই ভাগ্যবান। সৃষ্টিকর্তার কাছে অসীম কৃতজ্ঞ। আর সেই সাথে কৃতজ্ঞ ঐ প্রিয় মানবীর কাছে। অসংখ্য ধন্যবাদ Barnana Bhowmick ম্যাম।
সূর্যোদয়
ঘোরের মাঝে কেটে গেল দুই দিন। কক্সবাজার ফিরে আসার বেলায় জাহাজের মধ্যে হৃদয় নিংড়ানো অনুভূতি প্রকাশের গল্প হৃদয়ের স্থায়ী মেমেরিতে থাকবে সারাজীবন। Mia Mohammad বলে সেই আসরের জন্য নাকি অামিই অনুঘটক হিসেবে কাজ করেছি। সে যাই হোক......থাক না কিছু কথা বাকী।
জাহাজের পাটাতনে Mithun Miya ও Fortune Shamim স্যারসহ সেই বন্ধুদের খুব খুব মনে পড়ছে গো....Rudro Milon Md Ubaidul Mia Mohammad Jubair Abdullah Mosiur Mumin মনে আছে তো...???
নারকেল জিঞ্জিরার ভালোবাসায় বিভোর হয়ে বন্ধু Md Mahfuzar Rahman এর ভালোবাসার ফুল প্রকাশিত হলো পৃথিবীর বৃহৎ সৈকতে। সীমাহীন ভালোবাসার প্রকাশ সীমাহীন সমুদ্রে। আমার হৃদয়েও তেমনি অসীম ভালোবাসার ঢেউ এসে আছড়ে পড়ছে বারংবার। যতবারই ঐ মহাসমুদ্রে যাই না কেন..প্রতিটি বারই এ হৃদয় খুজে বেড়াবে চলিশজোড়া পায়ের ছাপ। ভালোবাসার এ কি মধুর যন্ত্রণা প্রিয়..?
যাহ ! থাক না কিছু কথা মনে মনে...

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.