![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ঐ রিকশা খাড়া, খাড়া।
তিনজন ঘিরে ধরলো রিকশা।
পিস্তলটা হাতে নিয়ে একজন বললো,
ভালোয় ভালোয় যা আছে, বাইর কর।
নইলে.....
যাত্রী- ভাই, এই কয়টা টাকা আছে।
ঐ শালা, তোর হাতের ঘড়ি কি আমি খুইলা
নিমু? খোল, খোল তাড়াতাড়ি।
এই নেন ভাই।
পিস্তলের মাজল পেটে ঠেকিয়ে সর্দারজী
বললো,
আর কি আছে ( ধমক দিয়ে) ,বাইর কর।
ভাই, ভাই,ভাই, আর কিছু নাই। ভাই, সত্যি
কইলাম আর কিছু নাই। বিশ্বাস করেন ভাই।
রইছ সর্দার রে সামনে যাবার সময় সালাম
দিয়া যাবি।
যা এখান থিকা.......।
যাইতেছি বাই,যাইতেছি।
রইছ হলো এই তল্লাটের ক্যাডার।
ক্ষুদার তাড়নায় একদিন বেঁহুশ হয়ে রাস্তায়
পড়ে যায়।
গুন্ডা জামাল ওরফে....।
ওরে তুলে নিয়ে আসে আস্তানায়।
হেন অপকর্ম নাই যা সে করায়না রইছ কে
দিয়ে।
এমনকি বেইজ্জতের চ্যাপ্টারও হাতেকলমে
শিখিয়েছে এই রইছ কে।
আজ রইছের এসব কাজ করতে এতটুকুও হাত
কাঁপে না।
যখন রইছের বয়স ৮ তখন তার মা এক বাসায়
কাজের বুয়া হিসেবে কাজ করতো।
কি কারণে একদিন তার মালকিন তার
গায়ে ফুটন্ত ডাল ঢেলে দেয়। এতে তার
শরীরের ৮০% পুড়ে যায়।
হাসপাতালে নিতে নিতেই উনি মারা
যান।
দগ্ধ মাকে দেখে বারবার ছেলে মূর্ছা
যাচ্ছিলো।
কিছুদিন পর রইছের বাবা আরেকটা বিয়ে
করে।
সৎমার ঘরে সাতদিনও ভাত জুটেনি। জুটেছে
শুধু মার, থাপ্পড় , জুতার বারি আর গলা
ধাক্কা।
ক্ষুধার জ্বালায় টিকতে না পেরে এক
দোকান থেকে দুইটা রুটি চুরি করে।
ধরা খেয়ে মারের চোটে অজ্ঞান হয়ে যায়।
জামাল ওকে কুড়িয়ে নিয়ে শেল্টার দেয়।
আজ রইছ জামালকে পুলিশের গারদ থেকে
জামিনে বের করে আনে।
রাতের ঘটনা তো আগেরটুকু।
--- --- ---
ফুটফুটে মেয়েটার নাম রাখলো বাবা হুসনে
আরা।
বয়স যখন ছয়,
বাবা মার সম্পর্ক শেষ হয়ে যায়।
মা আর তাকে সাথে করে নেয়না।
বাবার ঘরে বড় হতে থাকে।
একদিন,
পাশের বাড়ীর পলাশ সুযোগ পেয়ে ঘরে
ঢুকে।
হোসনে আরা কে একা পেয়ে অপাত্রে
কামরস ছেড়ে আসে।
কিন্ত আশ্চর্য,
বাবা এতে ঐ ছেলেকে কিছুই বলেনা।
সুযোগ পেয়ে ছেলে ওকে একদিন ধর্ষণ করতে
করতে অজ্ঞানই করে ফেলে।
পরেরদিন বের হয়ে আসে সে বাপের বাড়ী
থেকে।
রতন সাহেব একজন ব্যাংকার।
কাজের মেয়ে হিসেবে রেখে দেয় এই
মিষ্টি মেয়ে হুসনে আরা কে।
প্রথমে কিছুদিন খুব ভালো ব্যবহার করে।
স্ত্রী বাবার বাড়ী গেছে।
সুযোগ বুঝে আবারো সতীচ্ছেদ করে দশ
বছরের এই মেয়েটার।
কিছুদিন পর সুযোগ বুঝে পালিয়ে যায় হুসনে
আরা।
--- --- ---
আমজাদের অভিজ্ঞ চোখ এড়ায়না হুসনে
আরার দেহের সৌন্দর্য।
ঝোপ বুঝে কোপ মারে একদিন।
মোটা অঙ্কে বেচে দেয় তাকে জেসমিনের
পতিলালয়ে।
সেখানে প্রতিটা রাত্রি হয় যাতনার
আর
প্রতিটি দিন হয় পিল খেয়ে ঘুমানোর।
অন্ধকারের পিছনের গল্পটা কি চোখের
সম্মুখে আসবার সুযোগ পায়?
মনকে চিন্তা করতে কি বাধ্য করে???
মানসপটে এদের করুণ গগণবিদারী আত্ন
চিৎকারেরর দৃশ্য দেখে কি তা কর্ণকুহর দিয়ে
হ্রদয়ের আঙ্গিনায় নাড়া দেয়??????
নাকি.......................?
আমরা তো উপরের ক্যানভাসটা দেখেই
একটা মন্তব্য করি যে কিরে খ.....।
উপরের বেশভূষা দেখেই মন্তব্য করি।
অথচ তাদের আজ গুন্ডা, পতিতা হবার
পেছনের গল্পগুলো কি ইঙ্গিত করে?
রইছের কি অপরাধ ছিলো?
কেন তার বাবা তাকে আগলে রাখলো না?
কেন আজ মিষ্টিমেয়ে হুসনে আরার চোখে
বেদনার বিষাক্ত অশ্রু???
কি অপরাধ ছিলো তার?
নিভৃতের যাত্রীদের পেছনের গল্পটা কি
থাকে?
প্রথমদিনই কেউ পতিতা হয়না
গুন্ডা হয়না।
এদের পেছনে থাকে অনেকগুলো কালো
হাত।
ধীরেধীরে বিগড়ে যায় তারা।।
ক্যানভাসের পিছনের তুলির আঁচড়গুলো
( অনেক কিছুর রাজসাক্ষ্যী)
বিশ্বাস হয়না আপনার?
এরা তো সমাজের অথর্ব, অসভ্য, নর্দমার কীট।
কিন্ত যারা তাদেরকে এমনটি বানিয়েছে,
তারা কি
পিশাচ, বেজন্মা, হারামী, জানোয়ার নয়?
আসুন ক্যানভাসের পিছনটা আগে দেখি যে,
)
( কারা এই নিঝুম পুরের ছোট্র খু পড়ীর
নিভৃতের যাত্রী?)
মনমানসিকতা বদলান ।
সমাজটাই বদলে যাবে।
©somewhere in net ltd.