![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সেদিন পায়ের সেন্ডেল সেলাই করছিলাম। জুতা মেরামতের কারিগর যা সচরাচর "মুচি" নামে পরিচিত তিনি ছিলেন সত্তরোর্ধ করিম মিঞা। রিকশা ষ্টান্ডে বা দোকানে কিংবা যে কোন যাত্রায় অপরিচিতদের সাথে কুশল বিনিময়, দেখভাল, জানা আমার পুরানো অভ্যাস। চাচা কেমন আছেন? জিজ্ঞেস করতেই করিম মিঞা জীর্ণ শীর্ণ শরীরের অসহায় চাহনীর শুকনো মুখ নাড়িয়ে বললেন, ৬ সন্তান নিয়ে খেয়ে না খেয়ে দিনাতিপাত করছি। দুই মেয়ে বিয়ে দিয়েছি। অর্থাভাবে ছোট দুই সন্তানের স্কুলে যাওয়া বন্ধ। কথা বলতে বলতে দুই গাল বেয়ে অশ্রূ ঝরছে করিম মিঞার। বললেন, স্বাধীনতা যুদ্ধে পুরো ন'মাসই তিনি রংপুর অঞ্চলের বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। এলাকায় অনেকেই ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সার্টিফিকেট নিয়ে ভাগ্য ফিরিয়েছে। স্বাধীন দেশে তার এলাকায় জানা অনেক স্বাধীনতা বিরোধী রাজাকার, আলবদরই অনেক ধন-সম্পত্তির মালিক হয়েছেন। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের বীর মুক্তিযোদ্ধা হয়েও তিনি অশিক্ষিত থাকায় সার্টিফিকেটও জোটেনি, আর ভাগ্যও বদলায়নি। একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার অসহায় আর করুণ কাহিনী শুনে মনটা খুব বিষন্ন হয়ে গেল। ভাবলাম, এ স্বাধীন দেশ যাদের ত্যাগের বিনিময়ে তারা কেন স্বাধীন দেশে এত অসহায় দুরাবস্থার মধ্যে করুণ পরিবেশে থাকবে? দেশের বর্তমান সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা অনেকাংশে বৃদ্ধি করেছেন। মুক্তিযোদ্ধাদের পূনর্বাসনের ব্যবস্থা করেছেন। তার পরেও স্থানীয়ভাবে অনেক অসহায় মুক্তিযোদ্ধা এমন অবহেলার শিকার হয়ে থাকতে পারেন। স্থানীয় সরকার প্রশাসন, জনপ্রতিনিধিদের প্রতি তাই আমাদের আহবান, আসুন আমরা তাদের খুঁজে বের করে পূনর্বাসন ও আর্থিকভাবে স্বচ্ছল করে জাতির ঋণ পরিশোধ করি।
©somewhere in net ltd.
১|
০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:৫৭
আরণ্যক রাখাল বলেছেন: এমন কিছু পড়ার পর কিছু বলার থাকে না। ভাষা হারিয়ে ফেলি।