![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অন্ধকার ঘনীভূত, তবু স্বপ্ন দেখি, কারণ আমি জানি অগণিত আলোর পথযাত্রী বাড়ছে অগোচরে.....
"গনি মিয়া"
_____ এহসানুল হক হোসেন
______০১_____
ফুটপাতে নোংরা-দুর্গন্ধ। হেটে যাচ্ছেন গনি মিয়া। হাতে বাজারের ব্যাগ। সম্ভবত এটা ওটা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন বাসায়। থাকেন এই গলির শেষ মাথায়।
হঠাৎ এক গাড়ীওয়ালা বাবু সাব গাড়ী থামিয়ে দৌড়ে এসে কদমবুসি করলেন!
গনি মিয়া (অবাক হয়ে) ___ আরে আরে কি করছেন এসব! কে আপনি?
স্যার, আমাকে চিনতে পারছেন না?
আমি মিজান।
না বাবা, মনে পড়ছেনা! বয়স হয়ে গেছেতো....
স্যার, চিনতে পারছেন না?
কুসুমপুর বস্তি... "ফুলকুঁড়ি বিদ্যালয়"...
মি..জা..ন! তুমি সেই মিজান?
(চিনার ভান করলেন)
কেমন আছ বাবা? অনেক বড় হয়েগেছ!
চিনতেই পারছি না!
(মিজান আবাব কদমবুসি করত)
জী স্যার, আমি সেই মিজান।
বস্তির চা দোকান থেকে ধরে নিয়ে যাকে ফুলকুঁড়ি স্কুলে ভর্তি করিয়ে ছিলেন! বই খাতা, শার্ট, হাফ-প্যান্ট কিনে দিতেন, সেই মিজান!
গনি মিয়া (চোখ মুছতে মুছতে) হাসতে হাসতে বললেন__
আমাকে মনে রেখেছ! খুব খুশি হলাম বাবা!!
মিজান কান্না জড়িৎ কন্ঠে (গনি মিয়াকে জড়িয়ে ধরে) বাবা...
(এক পর্যায়ে আর কান্না চাপিয়ে রাখতে পারেনি! কান্না শুরু করলেন...)
বাবা!!! আপনার জন্যেই আজ এই পর্যায়ে উঠে আসতে পেরেছি।
গনি মিয়া মিজানকে জড়িয়ে ধরে শান্তনা দিতে লাগলেন_
"শোন বাবা, জীবন এখানেই শেষ নয়। থেমে গেলে হবেনা। তোমাকে আরো সামনে এগিয়ে যেতে হবে। দেশের জন্যে, মানুষের জন্যে অনেক কিছুই তোমাকে করতে হবে। আমি দোয়া করি, তুমি আরো বড় হও।"
(পিতৃতল্য শিক্ষককে জড়িয়ে কাদঁতে থাকে মিজান) মিজান আজ প্রথমশ্রেণীর গেজেট অফিসার। একসময় কাজ করত কুসুমপুর বস্তির এক চা দোকানে। পিতামাতাহীন মিজান গনি মিয়ার হাত ধরেই ভর্তি হয়েছিল ফুলকুঁড়ি বিদ্যালয়ে।
কাদঁতে কাদঁতে মিজান বলল__
স্যার, আমি ফুলকুঁড়ি'র দায়িত্ব নিতে চাই, আমার জন্যে দোয়া করবেন!!!
(আবার কদমবুসি করে বিদায় নিল মিজান)
হাসতে হাসতে বাসায় ফিরছে গনি মিয়া....
_______০২_______
গনি মিয়া এক জন স্কুল শিক্ষক ছিলেন। নিজ উদ্যোগে গড়েতুলা ফুলকুঁড়ি বিদ্যালয়ে পাঠদান করতেন। অনাথ, হতদরিদ্র পরিবারের ছেলেমেয়েদের যথাসাধ্য সাহায্য করেন। নিজের কোন সন্তান নেই। ফুলকুঁড়ির ছেলে-মেয়েদের নিজের সন্তানের মতোই দেখাশুনা করেন।
মিজানের মতো অনেকেই ফুলকুঁড়িতে এসেছে গনি মিয়ার হাত ধরে।
বয়সের কারনে গনি মিয়া আর পাঠদান করতেনা পারলেও সারাটা দিন ফুলকুঁড়িতেই কাটে। আর রাতে দুই কপোত-কপোতি ফুলকুঁড়ির গল্প করেন....
স্বপ্ন দেখে একসময় আমাদের দেশটা ফুল বাগান হবে! যত কুঁড়ি আছে সুপ্ত অগোচরে, সবই বিকশিত হবে......
________________
২| ১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:১১
এহসানুল হক হোসেন বলেছেন: ধন্যবাদ @ ফেরদৌসা রুহী
©somewhere in net ltd.
১|
১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:৫৫
ফেরদৌসা রুহী বলেছেন: স্বপ্ন দেখে একসময় আমাদের দেশটা ফুল বাগান হবে! যত কুঁড়ি আছে সুপ্ত অগোচরে, সবই বিকশিত হবে.....
গনি মিয়ার স্বপ্ন পূরন হোক। যদিও এই পূরন আমাদের দেশে খুব কঠিন কিছু না। পড়াশুনা, বই সবই তো ফ্রি।