নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমার চোখে তো সকলই শোভন/সকলই নবীন,সকলই বিমল/ সুনীল আকাশ,শ্যামল কানন/বিশদ জোছনা,কুসুম কোমল/সকলই আমার মত
--অনেক তো হল। চল, এবার বিয়ে করে ফেলি।
--বিয়ের কী দরকার? এই তো বেশ আছি।
--বিয়ে করতে সমস্যা কোথায়?
--বিয়ে না করলেই বা সমস্যা কোথায়?
--তুমি কি আমার উপর পুরোপুরি আস্থা রাখতে পারছ না? আমাকে ছেড়ে চলে যেতে চাও?
--তোমাকে আমি জোর করে আটকে রাখতে চাই না।
-- আমার উপর তোমার কোন অধিকার থাকবে নেই?
--আমি তোমার উপর বাড়তি অধিকার খাটাতে চাই না।
--আসলে তুমিই চাও না, কেউ তোমার কাছে কোন অধিকার, কোন দাবী করুক। সব সময় তোমার একটা আলগা ভাব আমার ভাল লাগে না। আমি তোমাকে ছেড়ে চলে গেলে তোমার একটুও খারাপ লাগবে না।
--কেন খারাপ লাগবে না? খুব খারাপ লাগবে। কিন্তু তাতে যদি তোমার মংগল হয় তবে আমি তা মেনে নেব।
--আমি চলে যাই এটাই তবে তুমি চাও?
--আহা, তা হবে কেন? আমরা বিয়ে করছি না, তার মানে এই নয় যে, তুমি বা আমি খুব শিঘ্রীই একজন আরেকজনকে ছেড়ে চলে যাবো।
--তাহলে বিয়ে করতে তোমার সমস্যা কোথায়? ভবিষ্যতে কী হবে আমরা কেউ তা জানি না।কিন্তু এখন তুমি আমি, আমরা দুজন দুজনকে তো খুব করে ভালবাসি। তাহলে এখন বিয়ে করতে কী সমস্যা?
--তথাকথিত বিয়ের সম্পর্ক আমার প্রয়োজন নেই।এই তো বেশ আছি আমরা দুজন।
‘’লিভ টুগেদার’’ শব্দটি শুনলেই আমাদের মধ্যে এক ধরনের মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। পাশ্চাত্যে এটি খুব সাধারণ একটি ঘটনা।বিয়ের আগে পরস্পরকে আরেকটু ভাল করে জেনে নিতে, বুঝে নিতে, মানিয়ে নিতে অনেকেই লিভ টুগেদার করে থাকে।আবার কেউ কেউ বিয়ের শর্ত ছাড়াও লিভ টুগেদার করে থাকে। বিয়ের সম্পর্ক সামাজিক, আইনি ও ধর্মীয় স্বীকৃতি রয়েছে। লিভ টুগেদার এখনো আমাদের সমাজে স্বীকৃত হয় নি। উচচবিত্ত ও নিম্নবিত্তের মধ্যে এর চর্চা থাকতে পারে। মধ্যবিত্ত যে এমন সম্পর্কে যায় না এটাও নিশ্চিত করে বলা যাবে না।কিন্তু এই সামাজিক অবস্থানগুলোতে এমন সম্পর্কে যাবার পেছনের কারণগুলো কিন্তু ভিন্ন। এসব কারণ যতই ভিন্ন হোক, একটি সাধারণ ও বড় কারণ যে মানুষের সহজাত ও স্বাভাবিক জৈবিক চাহিদা পূরণ, এটা অস্বীকার করার কোন মানে নেই।শুধু লিভ টুগেদারই বা কেন, বিয়ের সম্পর্কেরও একটি প্রধান কারণ জৈবিক চাহিদা পূরণ। তা নইলে পতিতার কাছে গমন বা ধর্ষণ বা স্বমেহনেই এ চাহিদা সবাই পূরণ করত। বিয়ে বা লিভ টুগেদারের মত সম্পর্কের কোন দরকারই ছিল না। বিয়ে বা লিভ টুগেদার-- সম্পর্ক যাই হোক না কেন, পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ, ভালবাসা, বিশ্বাস, পারিবারিক মূল্যবোধ, সহনশীলতা, দায়িত্ববোধ, পরস্পরের পছন্দ অপছন্দের মূল্য দেওয়া ছাড়া কোন সম্পর্কই বেশিদিন সুন্দরভাবে টিকে থাকে না।
বিয়ে ও লিভ টুগেদার এ দুটিরই কিছু আলাদা ধরনের সুবিধা ও অসুবিধা আছে। এই সম্পর্ক দুটির মধ্যে যেমন কিছু মিল আছে আবার অমিলও আছে বিস্তর। বিয়ের সম্পর্কের সামাজিক, আইনি ও ধর্মীয় স্বীকৃতি থাকায় সন্তানের পিতৃ-মাতৃ পরিচয় নির্ধারণ, সন্তানের দায়িত্ব, সম্পত্তি বণ্টন, উত্তরাধিকার, তালাক ইত্যাদিতে ব্যক্তি সামাজিকভাবে ও আইনগত দিক দিয়ে শক্ত অবস্থানে থাকতে পারেন। এসব বিষয়ে সুনির্দিষ্ট আইন থাকায় সুবিচার পাবার সম্ভাবনাও বেশি।
বিয়ে একটি সামাজিক স্ট্যাটাস। বিয়ের সম্পর্ক সাধারনত ঘটা করে সবাইকে জানানো হয়। এতে সবাই জানতে পারে কোন নারীটির সাথে কোন পুরুষটির সম্পর্ক হল। লিভ টুগেদারের সম্পর্কের কথা এভাবে সাধারণত জানানো হয় না। এ ধরনের সম্পর্ক গোপন রাখা হলে কিছু সামাজিক সমস্যা তৈরি হতে পারে। যেমন সম্পত্তি বন্টন, বহুগামীতা, অবাধ যৌনাচার এমন কি সন্তানের দায়িত্ব নেওয়া ইত্যাদি। সংগী/সংগিনী বিস্তত্ব না হলে লিভ টুগেদার মানুষকে কষ্টই দেবে। বিস্তত্বতা এমন সম্পর্কের প্রধান অংগ।বিয়ের ক্ষেত্রেও তাই। একের পর এক পরীক্ষামূলকভাবে ঠিক কতগুলো সম্পর্ক চালালে পরে মনের মত মানুষ পাওয়া যাবে সে ফর্মূলা এখনো কেউ আবিষ্কার করে নি।প্রতিটি মানুষ আলাদা। ১০০ ভাগ মিলে যাবে এমন মানুষ শুধু স্বপ্নেই পাওয়া সম্ভব। দুজন আলাদা পরিবারের আলাদা পরিবেশের মানুষের মধ্যে অমিল থাকবেই। এর মধ্যেই দুজনকে মিলে থাকতে হয়, দুজনের প্রতি শ্রদ্ধা থাকতে হয়। তা সেটা বিয়ে হোক বা লিভ টুগেদারই হোক।
একটি বিয়ে মানে সামাজিক পারিবারিক উৎসব। এই বিয়েকে ঘিরে নানা আয়োজন সবার মনে আনন্দ এনে দেয়।সবাইকে কাছাকাছি আসার সুযোগ করে দেয়। কনের সাদা গাউন বা লাল শাড়ি, বরের শেরওয়ানি, তাদের সাজপোশাক নিয়ে সবার মধ্যে থাকে এক ধরনের কৌতুহল। বিয়েতে নিতকনেদের দিকে কনের ছুঁড়ে দেওয়া ফুলের তোলা, কেক কাটা, অথবা সাত পাকে ঘোরা, কবুল বলার ঘোর লাগা অনুভূতি, বর কনের আয়না দেখাদেখি করার মিষ্টি মধুর স্মৃতি রোমন্থনের আনন্দ শুধু বর কনেই নয় বরং অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া সবাই পান। এসব কি আর লিভ টুগেদারে পাওয়া যাবে?
আদিম সমাজে বিয়ে ছিল না। সময়ের প্রয়োজনে বিয়ে প্রথার উদ্ভব হয়েছিল। এখন আবার সময়ের প্রয়োজনেই বিয়ে অপ্রয়োজনীয় হয়ে যাচ্ছে। ভবিষ্যতে সময়ের প্রয়োজনে মানুষ আবার হয়ত বিয়ের প্রয়োজনবোধ করবে।
২৩ শে নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:৩৩
এইযেদুনিয়া বলেছেন: যে মানে না, সে কিছুই মানে না। না ধর্ম, না সমাজ না আইন না কিছু। সে শুধু মানে নিজের ইচ্ছে মত যা খুশি। এরাই স্বার্থপর, স্বেচ্চাচারী। এরা বিয়ে করলেও যা লিভ টুগেদার করলেও একই।
২| ২৩ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ২:০৮
উম্মু আবদুল্লাহ বলেছেন: লিভ টুগেদার মানে দায়িত্ব না নেওয়া। যে মানুষটা বিয়ে করল সে দায়িত্ববোধের পরিচয় দিল। বিয়ের দায়িত্ব দুপক্ষেরই নিতে হয়। কিন্তু দেশে বিয়ের আইন কানুন কঠিন করে ফেললে তখন দায়হীন আর ঝামেলা বিহীন লিভ টুগেদার হয়ে পড়ে বিয়ের বিকল্প। যার ফলে অনৈতিক হলেও লিভ টুগেদার জনপ্রিয় হতে পারে। ইদানিং পশ্চিমে লিভ টুগেদারেও কিছু দায় বোধকরি নিতে হয়। লিভ টুগেদারের ফলে উদ্ভূত সমস্যার কারনে হালে হয়তবা কিছু আইন হয়েছে পশ্চিমে। তারপরেও বিয়ের মত আইনী জটিলতা লিভ টুগেদারে নেই।
২৩ শে নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:৩৬
এইযেদুনিয়া বলেছেন: আইন বিষয়টা জটিল হলেও তা মানুষের অধিকার রক্ষার জন্যই সৃষ্ট। একসময় মুখে মুখে জমি বিক্রি করা যেত, কবুল বললেই বিয়ে হত, তালাক বললেই তালাক হত। আর এখন মানুষের মুখের কথার দাম নেই। এজন্যই নানা রকম জটিল আইন তৈরি করতে হয়েছে।
©somewhere in net ltd.
১| ২৩ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১:৩৬
আশরাফুল ইসলাম দূর্জয় বলেছেন:
ধর্ম, সমাজ, আইন বিষয়গুলো স্পর্শকাতর।
বিয়ে তো তিনটাতেই গুরুত্বপূর্ণ।
তাই পোস্ট নিয়ে নিজের কি মতামত বুঝতে পারছিনা।