![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আজ যায়েদ এবং যাকিয়ার বিয়ে। পুরো পাড়ায় হৈহুল্লড়। যায়েদ এবছর ঢাবিতে চান্স পেয়েছে। ওর বয়স কেবল ২১। প্রথম ঈদের ছুটিতে বাড়ি এসেছে, এসেই বাবার কাছে আবেদন ‘বিয়ে করা দরকার...’। একমাত্র পুত্রের কথা, কিভাবে ফেলা যায়? দাদা-চাচাদের নিয়ে পুত্রবধূর সন্ধানে নামলেন... সৌভাগ্যক্রমে বেশ দ্রুতই মেয়ে পাওয়া গেল। যায়েদের পুরাতন এক সহপাঠীর বোন!
তারপরে বলা যায় জরুরী ভিত্তিতে বিয়ের আয়োজন করা হল!
যায়েদের বিয়ে উপলক্ষে বন্ধু এবং কাজিনরা দুদিন আগেই বিভিন্ন জেলা থেকে এসেছে। বিয়ের আয়োজনে শুধু তারা না, পাড়ার বুড়ো থেকে বাচ্চা অনেকেই দৌড়ঝাঁপ করছে। বাংলার ট্র্যাডিশন অনুযায়ী বিয়ের অনুষ্ঠান মেয়ের বাড়িতে হচ্ছে, কিন্তু ছেলেবাড়ির লোকজনও আছে অনেক। আসলে ব্যাপারটা হচ্ছে, দুপক্ষ একত্রে বিয়ের আয়োজন হয়েছে, দুজনের বাড়িতেই অর্থের একটু টানাপড়েন চলছে কি না...!
যাকিয়ার বাবা উঠানের এক কোনায় বসে দুজন মুরব্বির সাথে নিচু আওয়াজে কথা বলছেন, আবার মাঝেমধ্যে হাঁকডাক দিয়ে আয়োজনের তদারকিও করছেন।
- “হাশেম ভাই! আপনার টাকাটা তাহলে কয়েকমাস পর নেন! আমার ইচ্ছা ছিল এমাসেই সব দিয়ে দেয়ার, কিন্তু বিয়ের আয়োজন তারপর আরেক ছেলের গিয়ে জমানো টাকা প্রায় শেষ! আর কয়টা দিন একটু সবুর করেন...”
জুমার পরেই খানাপিনা, কাছের এক মসজিদ থেকে নামাজ পড়ে ধীরেসুস্থে সবাই এদিকে আসছে। হঠাৎ কি হল, একটা কালো কাচের জিপ এবং একটা পুলিশের গাড়ি হর্ন বাজাতে বাজাতে রাস্তায় উদিত হল। সবার চোখ সেদিকে, কি হয়েছে? কি হয়েছে? কাকে ধরতে পুলিশ আসলো?
সামনের জিপ থেকে ইউএনও সাহেবকে বের হতে দেখা গেল। আট-দশজন পুলিশ নিয়ে তিনি বিয়ের প্যান্ডেলের দিকেই আসছেন। এসেই গর্জে উঠলেন “মেয়ের গার্জিয়ান কোথায়!!?” পাশে দাঁড়ানো মানুষের মত দেখতে পুলিশটা কানেকানে বলল “স্যার ছেলের বয়সও তো ২২ হয়নি!” ইউএনও আবার হাঁক ছাড়ল “এই ছেলের বাবাকেও ডাকো...”
.
ইউএনও সাহেব উঠানের একটি চেয়ারে বসে আছেন। পুলিশগুলো বাঁপাশে দাঁড়ানো। যাকিয়াদের উঠান ততক্ষণে লোকে লোকারণ্য, দুজন মুরব্বি মিনিট খানেক পর এসে উপস্থিত হলেন।
- আপনার সাহস কত বড়! আমার এলাকায় বাল্য বিবাহের আয়োজন করেছেন? জানেন আপনার কি শাস্তি হতে পারে?........
বহুক্ষণ ধরে ইউএনও সাহেব হাঁকডাক করছেন... যাকিয়ার বাবা নিরীহ গোছের মানুষ, চুপচাপ শুনে যাচ্ছেন। যায়েদের বাবা বারবার পেছনের দিকে তাকাচ্ছে, কাকে যেন খুঁজছে বোধহয়!
এবার ভিড়ের পেছন থেকে আওয়াজ শোনা গেল, ইউএন সাহেব আবার গলা ছাড়লেন “আমি এখানে কথা বলছি আপনারা হৈহুল্লড় করেন কেন?”
কথা শেষ হওয়ার আগেই যায়েদ তার সামনে উপস্থিত! - আসসালামু আলাইকুম আংকেল!!
আধা মিনিট হল ইউএনওর মুখে রা নেই! মাথা উঠিয়ে জিজ্ঞেস করলো- তাহলে তুমি কি বলতে চাও?
- আমি বলতে চাচ্ছি আমি এখন থেকে যাকিয়ার সাথে ‘জাস্ট লিভ টুগেদার’ করবো! আপনার সংবিধান অনুযায়ী এটা বৈধ না অবৈধ? যদি আমি আর যাকিয়া একসাথে থাকি? যদি একে ওপরের বাড়িতে বন্ধু হিসেবে যাতায়াত করি? আপনার সংবিধানের কোনো আইন আমাকে বাধা দিচ্ছে?
-- তোমার বয়স কত?
- ২১
-- আর যাকিয়ার?
- ১৬
-- হ্যাঁ সংবিধানে এটা বৈধ, বাংলাদেশের সংবিধানে ১৪ বছরের পর কোনো ছেলে বা মেয়ে ফিজিক্যাল রিলেশনে জড়ানোর ব্যপারে স্বাধীন!
- অর্থাৎ সংবিধান স্বীকার করছে ১৪ বছরেই এদেশের ছেলেমেয়েরা ফিজিক্যাল নিড ফিল করে, তাইতো? কিন্তু সেটা লিগ্যাল ভাবে পূরণ করতে মেয়েদের ১৮ আর ছেলেদের ২২ পর্যন্ত বসে থাকা লাগবে... বাহ! ফাটাফাটি আইন।
-- (ইউএনও চুপ, তাঁর কপালে বিন্দু-বিন্দু ঘাম দেখা যাচ্ছে। কম বয়সী একটা ছেলের কাছে এরকম অপমান জীবনে কাউকে হতে দেখেছে বলে মনে পড়ছে না)
- যায়েদ বলল, কাজি সাহেব কই? এদিকে আসেন!! আপনি ইউএনও সাহেবের সাথে চলে যান। আপনাকে দরকার নেই, আমার আজকে বিয়ে হচ্ছে না।
পাশে বসা যাকিয়ার বাবা বলল- বাবা আমিতো বুঝলাম না তোমার কথা কিছুই!
যায়েদঃ আপনাকে থামতে বললাম না? আপনি দুশ্চিন্তা কেন করছেন? যার বুঝার সে ঠিকই বুঝেছে। আপনি শুধু দেখতে থাকেন...
ইউএনও চেয়ার থেকে উঠে রাস্তায় দাঁড়ানো গাড়ির দিকে হাটা দিল, পেছনে পেছনে একপাল পুলিশ...!
সবাই খানা খাচ্ছে খাক, আপনারা বসেন। উপস্থিত পাড়ার মুরব্বিদের উদ্দেশ্যে বলল যায়েদ। এবার ইমাম সাহেবের দিকে তাকিয়ে বলল, হুজুর আপনি বিয়ের খুতবা পড়বেন। ওকে? হুজুর বলল আচ্ছা, কোনো সমস্যা নেই!
যায়েদ মুরব্বিদের দিকে তাকিয়ে বলল, এবার আপনাদের বলি কাহিনী, আমার বিয়ে এখনি এই ঘরে বসেই হয়ে যাবে, রেজিস্ট্রির চিন্তা আরো ৪-৫ বছর পর। অর্থাৎ সরকারের খাতায় আমি এই ক'বছর অবিবাহিতই থাকবো। কিন্তু আল্লাহর খাতায় তো দুজন কবুল বললেই বিয়ে হয়ে যাচ্ছে। সরকারের দিকে তাকিয়ে আমার লাভ আছে নাকি?
- পাশ থেকে একজন বলল ‘যদি এরমধ্যে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়?’
যায়েদ চোখ বন্ধ করে রাগটা গিলতে চেষ্টা করলো, তারপর আস্তে করে মুরব্বির দিকে তাকাল- “কি বললেন আপনি এইটা? বিয়ে কি ছাড়ার জন্য করছি? ডিভোর্স ফাইজলামির জিনিশ নাকি?!”
.
এবার যাকিয়ার বাবার দিকে তাকিয়ে আরেক মুরব্বি বলল-
“জামাইয়ের মত জামাই পাইছো ব্যাপারী ভাই, আল্লাহর শোকর করো বেশি বেশি...”
সবাই এক যোগে হেসে উঠলো....
গল্প: বাল্যবিবাহ // আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ
২| ০২ রা আগস্ট, ২০১৭ সকাল ৯:৪৩
প্রোলার্ড বলেছেন: পতিতাবৃত্তিতে কচি মেয়ের ডিমান্ড বেশী । এটা পৃথিবীর আদিমতম পেশাও । তাই এই পেশাতে আন-ইন্টারাপ্টেড কচি মেয়ে সাপ্লাই পাবার জন্য বাল্য বিয়ের মত একটা জায়েজ+শরিয়তি বিষয়কে ঠেকানোর জন্য উঠে পড়ে লেগে আছে এই পেশায় যারা ইনভেস্ট করেছে তারা ।
নারী ও পুরুষের বিবাহবহির্ভূত প্রেম শরিয়তবিরোধী জিনিস । আমরা যতই বাল্যবিয়েকে আটকিয়ে বাল্যপ্রেমকে প্রমোট করতে যাই ততই তা আমাদের সমাজকে কলুষিত ও বিশৃঙ্খল করে ফেলবে।
যে কোন সাধারণ মানুষকে জিজ্ঞেস করে দেখা যেতে পারে - কোনটা সমাজের জন্য ক্ষতিকর ? বাল্যপ্রেম নাকি বাল্যবিয়ে ?
০২ রা আগস্ট, ২০১৭ সকাল ১১:৪১
চেংকু প্যাঁক বলেছেন: রেজিষ্টার্ড বিবাহবহির্ভূত প্রেম নাকি রেজিষ্ট্রেশন ছাড়া বিবাহপরবর্তি প্রেম?
©somewhere in net ltd.
১|
০২ রা আগস্ট, ২০১৭ সকাল ৭:৪৯
চেংকু প্যাঁক বলেছেন: প্রতিদিন দুই রাকা'ত সালাতুল হাজত পড়বে (প্রথম রাকা'তে সূরা ফাতেহার পরে আয়াতুল কুরছি আর দ্বিতীয় রাকা'তে সূরা ফাতেহার পরে সূরা এখলাস তথা ক্বুলহুয়াল্লাহ) প্রতিদিন নির্দিষ্ট একই সময়ে হলে ভালো হয়। সালাম ফেরানোর পর পুন:রায় সেজদায় গিয়ে সূরা ফুরকানের ৭৪ নং আয়াত "রাব্বানা হাবলানা মিন আযওয়াজিনা ওয়া যুররিয়্যাতিনা ক্বুররাতা আ'য়ইউনিন ওয়াজ'য়াল লানা লিল মুত্তাক্বীনা ইমামা" ৪০ বার পড়বে। এই আমল কমপক্ষে ৪০ দিন করবে। আন্তরিকতার সাথে করলে ইনশা'আল্লাহ এই আমল চলাকালীনই বিয়ে হয়ে যাবে।