নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ইকরাম এর দুনিয়া

আমার ব্লগঃ http://genesisblogs.com/

মোঃ ইকরাম

নেশা, পেশা সব আইটি কেন্দ্রিক

মোঃ ইকরাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

চলমান আন্দোলনের বিজয় এসেছে, বিজয়ীর বেশে সন্তানদের ঘরে ফিরে চলে যাওয়া উচিত

০৩ রা আগস্ট, ২০১৮ রাত ২:৩৪

চলমান আন্দোলনের উদ্দেশ্য যদি হয়ে থাকে সরকার কিংবা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গকে সড়ক দুর্ঘটনার বিষয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে বাধ্য করা, তাহলে আমার ধারনা আন্দোলনের চূড়ান্ত বিজয় এসে গেছে।
আর এ বিজয়ের ভাগীদার আমাদের সন্তানেরা।

♦আন্দোলনের বিজয়ের কারন:
দেনিক ইনকিলাব নিয়োমিত নিউজগুলো পর্যবেক্ষণ করছিলাম। সরকারীদলের নিউজপেপার পরে সঠিক তথ্য পাবেন না। যা পরছিলাম তার পযর্বেক্ষন অনুযায়ি কিছু উপলব্ধিযুক্ত করলাম।
১) সরকারের খুব ভালভাবে টনক নড়েছে। সরকারের সামনে অনেক অনেক সমস্যার মধ্যে এ সমস্যাটাকে এতদিন সিরিয়াসভাবে না নিলেও এবার সকল কাজের আগে সর্বোচ্চ প্রায়োরিটি দিয়ে এ সমস্যাটার সমাধান বিষয়ে উদ্যোগী হয়েছে, যা গত কিছুদিনের কর্মকান্ড দেখে বোধগম্য হচ্ছে।
- প্রধানমন্ত্রী মাত্র ৪দিনের মধ্যেই মৃত পরিবারকে ডেকে অর্থনৈতিকভাবে সহযোগীতা করেছে।
- জরুরীভাবে কমিটি করে নতুন আইন প্রস্তাবনা করেছে।
- সরাষ্ট্রমন্ত্রীও সকল দাবী মেনে নেওয়ার ব্যাপারে সাংবাদিক সম্মেলন করে আশ্বাস জানিয়েছেন।
- সড়কমন্ত্রীও সাংবাদিকদের মাধ্যমে এ ব্যাপারে তাদের ইতিমধ্যে উদ্যোগ নেওয়ার ব্যপারে জাতিকে জানিয়েছে।

২) নৌমন্ত্রীর বিশাল শিক্ষা হয়েছে। উনি কয়েকবার ক্ষমা চেয়েছে এবং লজ্জা ভেঙ্গে মৃত পরিবারে গিয়ে সম বেদনা জানিয়ে এসেছে।
৩) এ ছোট সন্তানেরা পুরো জাতিকে তাদের আন্দোলনের ব্যপারে এক করে ফেলতে পেরেছে।
৪) তারা ঢাকা শহরের রাস্তাকে কিভাবে পরিবর্তন করা যায়, প্রতিকীভাবে সেটা করেও দেখিয়েছে যা শুধুমাত্র সরকারের জন্য শিক্ষনীয় নয়, বরং এটা সকল যানবাহনের ড্রাইভারদের জন্য অনেক বড় শিক্ষনীয়।
৫) হিংস্র পুলিশদেরকেও তারা নরম হতে বাধ্য করেছে। পুলিশদেরকেও শিক্ষা দিয়েছে, পুলিশ জনগনের বন্ধু, একজন বন্ধু এবং জাতির সেবক হিসেবে তাদের কিভাবে ভুমিকা রাখা উচিত।

৬) তারা সকল প্রভাবশালী কর্মকর্তাদেরকেও তাদের দায়িত্বগুলো আঙ্গুল দিয়ে শিখিয়ে দিতে পেরেছে। আইন সবার জন্যই সমান, সেটি এ ৩দিনে শিখাতে পেরেছে।
৭) আমরা যারা বড় মানুষ, তাদেরকে শিখিয়েছে গণমানুষের দাবিগুলো নিয়ে আন্দোলন করে সরকার থেকে কিভাবে সেগুলো আদায় করে নেওয়া উচিত।

যেহেতু বিজয় চলে এসেছে, তাই আমার ধারনা এবার আমাদের সন্তানদের ঘরে ফিরে যাওয়া উচিত, বিজয়ে বেশে, গর্ব সহকারে। তারা বড় হলে তাদের যখন সন্তান হবে, তখনও তার গর্বসহকারে এ গল্পগুলো শুনাতে পারবে।
অনেকে হয়ত উস্কানী দিয়ে যাচ্ছে, এ সরকারে উপর বিশ্বাস করা যায়না, পরে সরকারের ঘোষনা পরিবর্তন হতে সময় লাগবেনা।
তাদের জন্য বলবো, এ ইস্যুটা সমাধান করতে পলিটিক্যাললি কিংবা অন্য কোনভাবে সরকারের জন্য মানতে কোনভাবেই চ্যালেঞ্জ না। আর সেজন্যই সরকার হতে এতদ্রুত কোন ধরনের চিন্তা ছাড়াই, ছাত্রদের সকল দাবীগুলো মানার ব্যপারে উপরে বর্নিত উদ্যোগগুলো নিয়ে নিয়েছে। বাকিগুলো রাতারাতি হয়ে যাওয়ার বিষয় না। বাকিগুলো হতে একটা প্রসেসিংয়ের মধ্য দিয়ে যেতে হয়, যেটার জন্য হয়ত সময় লাগে। তার মানে কি সেই সময় পযন্ত আমাদের সন্তানদেরকে মাঠে থাকার জন্য আপনি পরামর্শ দিবেন বা প্রত্যাশা করছেন?
♦সকল কিছু বন্ধ করে দিয়ে আন্দোলন বেশিদিন রাখলে সেটা ক্ষতিকর সবার জন্যই;

এবার একটু চিন্তা করেনতো, রাস্তাঘাট ঠিক করা যেরকম সরকারের কর্তব্য যা এতদিন সরকার পালন করছিলোনা দেখে এ আন্দোলনটি শুরু হয়েছে, এরকম সরকারের কাজও কিন্তু রাস্তাঘাট সচল রাখা, সকল কলকারখান, অফিস, স্কুল সচল রাখা। এ ৩দিনে সেগুলো হিসেব করলেও হয়ত কয়েকশ কোটি টাকা লস হয়ে যাওয়ার কথা। শুধু যদি চিন্তা করি, গার্মেন্টস ব্যবসার কথা। এ ৩দিনের অনেকের হয়ত অনেক ইমার্জেন্সি শীপমেন্ট বাতিল হয়ে গেছে। যার জন্য গার্মেন্টস বিশাল লসে পড়েছে, এমনও হতে পারে হয়ত বড় কোন বায়ারও তারা হারিয়েছে। আর সেই কারনে সেখানের চাকুরিরত গরীব শ্রমিকদের হয়ত এ মাসে বেতনটা হবে না। তাও ঈদের মাস। তখন সেই সব শ্রমিকরাও শুরুতে আন্দোলনে সন্তুষ্ট থাকলেও হয়ত বেশিদিন হয়ে যাওয়ার কারনে এখন তাদের কাছেও বিরক্তির কারন দাড়াবে। তখন তাদের মধ্যেও যাতে আবার অসন্তোষ দানা না বাধে, তখন সরকারের জন্য আন্দোলন দমাতে কঠোর হস্তে উদ্যোগ নেওয়া ছাড়া কোন কিছু করার থাকেনা, কারন সেটিও সরকারের জন্য কর্তব্য।
তাই আমার ধারনা এবার সবার ঘরে ফিরে যাওয়া উচিত। সকল দাবী আদায়ের আগ পযন্ত, আমরা ফেসবুকে কিংবা অন্যান্য মিডিয়াতে আন্দোলনকে জীবিত রাখতে পারি।


এ আন্দোলনের পর শুধুমাত্র সরকার সচেতন হলেই সড়ক দুর্ঘটনা রোধ হয়ে যাবে, ভাবলে ভুল করবেন। আমরাও অপরাধী, আসুন নিজেকেও শুধরে নেই, নয়ত আন্দলন করেও পরিবর্তন আসবে না ।
নিজেকে প্রশ্ন করুনঃ
১. জীবনে ফুট ওভারব্রিজ রেখে যত্রতত্র রাস্তা পার হয়েছেন কত বার?
২. নিজেই রিকশাচালক অথবা গাড়িচালককে রং সাইড দিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন কত বার?
৩. রং সাইড দিয়ে যাওয়া দেখে ও চুপ থেকেছেন কত বার?
৪.নির্ধারিত স্থান ছাড়া রাস্তায় গাড়ি পার্ক করেছেন কত বার?
৫. ফুটপাত দিয়ে সাইকেল /মোটর সাইকেল চালিয়েছেন কত বার?
৬.রোগী নিয়ে যাওয়া এ্যামবুলেন্স দেখেও আগে যাওয়ার সুযোগ দেননি কত বার?
৭.যানজটে থাকা অবস্থায়ও অকারণ গাড়িতে হর্ন দিয়েছেন কত বার?
৮. গাড়িতে সিট বেল্ট না বেঁধে জার্নি করেছেন কত বার?
৯. গাড়ির বৈধতার কাগজপত্র নবায়ন করতে গাফিলতি করেছেন কত বার?
১০. লাইসেন্সবিহীন চালকের হাতে গাড়ি তুলে দিয়েছেন কত বার?
১১. স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, হাসপাতাল ও অন্যান্য স্থানে গাড়ির গতি সীমা লঙ্ঘন করেছেন কত বার?

উপরের অকাজগুলো যদি একবারও করে থাকেন তবে সময় এসেছে নিজেকে শুধরে নেয়ার। নিজে সচেতন হোন,ট্রাফিক আইন মেনে চলুন। আপনার সন্তান কে ,আপনার স্বজন কে ট্রাফিক আইন মেনে চলতে উৎসাহিত করুন। ট্রাফিক আইন মেনে চললে ৮০% দুর্ঘটনা এড়িয়ে চলা সম্ভব।
এ পোস্টটি কষ্ট করে পড়ার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ। ভাল লাগলে বেশি বেশি শেয়ার করবেন।
ভালকে ভাল, খারাপকে খারাপ বললে সেটাকে মেনে নেওয়ার মানুষিকতা থাকা উচিত। আমি শুধুমাত্র আমার চোখে ভেসে উঠা যৌক্তিকতাগুলো তুলে ধরেছি। আমার চিন্তাভাবনা ভুল হতেও পারে, সেজন্য এ পোস্টের বিপক্ষে আপনিও আপনার যুক্তিগুলো কমেন্টে উল্লেখ করুন।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.