নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ইকরাম এর দুনিয়া

আমার ব্লগঃ http://genesisblogs.com/

মোঃ ইকরাম

নেশা, পেশা সব আইটি কেন্দ্রিক

মোঃ ইকরাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ বইটি কেন এত আলোচিত হয়েছিলো?

১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ১২:২৯

ইসলাম নিয়ে নাস্তিকদের উত্থাপিত আপত্তিগুলোর জবাব দেয়ার কয়েকটা সমস্যা আছে। তারা কোনো একক অর্গানাইজড ধর্মের অনুসারী না। তাই দেখা গেলো ইসলামের একটা বিষয় নিয়েই দুজন নাস্তিকের দুইরকম প্রশ্ন। দুজন মুসলিম তাদের জ্ঞানের ভিত্তিতে দুটি প্রশ্নের চার রকম জবাব দেয়। একজন আবার আরেকজনের দেয়া উত্তরে পুরোপুরি সন্তুষ্ট হয় না।
.

আবার উত্থাপিত প্রশ্ন যে যৌক্তিক হতেই হবে এমন কোনো কথা নেই। দেখা গেলো নাস্তিকের এমন একটা বিষয়ে আপত্তি যাকে সে ইসলামের বিধান বলে জানে কিন্তু আদতে তা ইসলামে নেই। এখন ওই প্রশ্ন দিয়ে সে ব্লগ আর বই লিখে একাকার করে ফেলেছে। এখন অযৌক্তিক প্রশ্ন বলে তো আর ফেলে দেয়া যায় না, জবাব তো দেয়াই লাগে।
.
এরকম অবস্থায় কতগুলো স্ট্যান্ডার্ড প্রশ্নের স্ট্যান্ডার্ড জবাব সুচারুভাবে কম্পাইল করাটা অবশ্যই একটা কঠিন চ্যালেঞ্জ। আরিফ আজাদ ভাইয়ের লেখা 'প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ' এই পরিসরে এক প্রশংসনীয় ও সময়োপযোগী সংযোজন।
.
বইটা আস্তিকতার পক্ষে না, ইসলামের পক্ষে। এখন স্বভাবতই সামনে এসে যায় আয়াত আর হাদীস বাদ দিয়ে যুক্তি-বিজ্ঞান-দর্শন দিয়ে ইসলাম প্রচার করা কতটা জায়েয। এখানে বিষয় হলো যতক্ষণ যুক্তি-বিজ্ঞান-দর্শনকে কুরআন-হাদীসের অধীনে রেখে কাজ করা হচ্ছে, ততক্ষণ এটা কোনো সমস্যা না। ইবনুল জাওযি (রহঃ) তাঁর "তালবীসু ইবলীস" গ্রন্থে সেসময়কার অনেক ভ্রান্ত দার্শনিক মতবাদকে রিফিউট করেছেন আয়াত ও হাদীসের ব্যবহার ছাড়াই।
.
একটা জিনিস যত মিথ্যা ও অযৌক্তিকই হোক না কেন, সেটা বারবার বলতে থাকলে চিন্তার জগতে সেটা একটা বিকৃতি আনেই। একজন ব্যক্তি হয়তো অজাচার বা সমকামিতার মতো বিষয়গুলো মাথায়ই আনতে পারে না। কিন্তু মুক্তবুদ্ধি চর্চার নাম দিয়ে তার সামনে এগুলো বারবার আলোচনা করা হলো। তাকে যদি সেসব বিশ্বাস করতে চাপ প্রয়োগ না-ও করা হয়, ওই বারবার বলাটাই তার মনে একটা প্রভাব ফেলে। পরবর্তীতে নিজের বাবা-মা বা সমলিঙ্গের বন্ধুর সাথে চলাফেরা করতে গিয়ে এসব চিন্তা তার মাথায় অস্বস্তিকর একটা স্ট্রাগলের জন্ম দেয়।
.
এই চিন্তার ফীল্ডটা দখল করার কাজটা নাস্তিকরা খুব ভালো মতো পারে। তাদের মিথ্যা বিশ্বাসগুলোকেই বারবার নানাভাবে উপস্থাপন করে মন-মগজে এমন একটা ট্রমা তৈরি করে দেয়।
.
মুসলিমদের মনে এসব ট্রমা সৃষ্টি হলেও তাদের একটা আশ্রয় আছে। প্রতিটা সেজদার সাথে তারা সেসব ট্রমা মাটিতে ফেলে দিতে পারে। কিন্তু অবিশ্বাসীদের ওই আস্থার জায়গাটা নেই। সত্যগ্রহণে প্রস্তুত বুদ্ধিমান অবিশ্বাসীর কথা আলাদা, মূলত এরা এ বই থেকে উপকৃতই হবে। কিন্তু গোঁয়ার অবিশ্বাসীর সামনে একইভাবে আপনি আপনার সত্য বিশ্বাসগুলো তুলে ধরুন, তাদের মিথ্যা যুক্তিগুলো তুলাধুনা করুন, দেখবেন এরা কেমন কুঁকড়ে ছোট্ট হয়ে যায়। অন্ধকার, আশাহীন, স্যাঁতস্যাঁতে, বদ্ধ একটা পৃথিবীতে তারা দেয়ালে মাথা ঠুকে নিরন্তর মারা যেতে থাকে। ভ্লাদিমির-এস্ট্রাগনদের মতো কোনো গডো'র আগমনের আশায় বসেও থাকতে পারে না, মরেও যেতে পারে না। এই বইটাতে সেই কাজগুলো খুব সুচারুভাবে করা হয়েছে।
.
দুইরকম বিশ্বাসের মানুষদের মাঝে নজরকাড়া পার্থক্য রাখার ব্যাপারে লেখক মুন্সিয়ানার ছাপ রেখেছেন। একটা গল্পে সাজিদ নাস্তিক থাকে, সেখানে সে নিজে বিড়িখোর। আর অন্যান্য গল্পে তার আর সে স্বভাব নেই। অন্যদিকে রুবায়েত আজাদ কাশির চোটে পড়ে যেতে যেতেও বিড়ি ফুঁকে, জনাব এম. এম. আলী এক কথোপকথনে এক প্যাকেট ফুঁকে শেষ করে ফেলে। সাজিদের লাইব্রেরি ঘোরাফেরার অভ্যাস। কথাবার্তা মাপা মাপা। অন্যদিকে নাস্তিক চরিত্রগুলোর কথায় সাবস্ট্যান্স কম, অযথাই হাহা হোহো-তে ভরপুর। মফিজুর রহমানের ঠোঁটের কোনায় অসাবধানতাবশতঃ লেগে থাকে চুন। অনেকে পক্ষপাতের অভিযোগ তুলতে পারেন, কিন্তু এগুলোও প্রতিপক্ষের চিন্তার জগতে ডিস্টার্ব্যান্স তৈরি করার অসাধারণ টুলস।
.
লেখক সাজিদ চরিত্রকে দিয়ে একটা কথা একাধিক জায়গায় পরিষ্কার করে বলিয়ে নিয়েছেন যে কুরআন বিজ্ঞানের বই না। বিজ্ঞানের সকল খুঁটিনাটি নির্ভুলভাবে উপস্থাপন করা কুরআনের উদ্দেশ্য না। কিন্তু বিজ্ঞানমনস্কদের মনোযোগ কাড়ার জন্য যথেষ্ট এলিমেন্টস এতে আছে। কুরআনের সব আয়াত থেকে জোর করে বিজ্ঞানের সব তত্ত্ব খুঁজে বের করার যে পরাজিত মানসিকতা অনেকের মাঝে আছে, তা থেকে লেখক মুক্ত।
.
লেখকের আরেকটি অসাধারণ দিক হলো মুক্তিযুদ্ধের কনসেপ্টের ব্যবহার। বইয়ের যে টার্গেট অডিয়েন্স, তাদের কাছে মুক্তিযুদ্ধ খুব গুরুতর একটা ইশ্যু। এই কনসেপ্টের সাথে তুলনা করে বোঝালে অনেক বিষয়ই আমরা বাঙালিরা সহজে বুঝতে পারি।
.
প্রধান চরিত্রের নাম সিলেকশনের ব্যাপারেও লেখক প্রশংসার যোগ্য। সাজিদ- সেজদা করে যে। তবে বইটাতে নিলয়দা এবং নিলুদা নামের দুজন জঙ্গি মাইন্ডসেটের নাস্তিক আছে। একজন নিরীহ শান্তিপ্রিয় মুসলিম হিসেবে আমি এর তেব্র নিন্দা জানাই।

এ বছর ২য় পর্ব প্রকাশিত হলো।এ পর্বটি ও বিক্রির রেকর্ড ভেঙ্গে ফেলেছে।

প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ -১ অর্ডার করার লিংক: http://bit.ly/2BzZqTe
প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ -২ অর্ডার করার লিংক: http://bit.ly/2kxjArJ

মন্তব্য ১৫ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৫) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ১:২১

মা.হাসান বলেছেন: প্রথম পরব খুব ভালো ছিল, আশা করি ২য় পরব কাছাকাছি হবে। লেখক স্বচ্ছ চিন্তার মানুষ। কয়েক দিনআগে প্রি অরডার করেছি।

২| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ৩:১০

নাহিদ০৯ বলেছেন: বই টা সম্পর্কে অনেকের কাছেই শুনেছি। কেনা হয়নি কেন জানি। আপনার পোস্ট পড়ে লিস্টে নিলাম।

৩| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ৩:৪৬

মৃত্যু হবে একদিন বলেছেন: অনেক ভালো মানের বই।

৪| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ভোর ৬:১৬

মোহাম্মাদ ফারহান খান বলেছেন: আরিফ আজাদের বই পড়েছি।আমার কাছে মনে হয়েছে লেখক কাল্পনীক গপ্লের মাধ্যমে সাধারণ মুসলিমদের ঘোল খাওয়াতে চেষ্টা করেছেন।মুসলিমরা সবকিছু অন্ধ বিশ্বাস থেকে করে তাই প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ বই তাদের দ্বিতীয় কুরআন হয়েগেছে আর আরিফ আজাদ জাকির নায়েকের মত ডিজিটাল পীর হতে পেরেছেন।

৫| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সকাল ৭:৪২

রাজীব নুর বলেছেন: বইটা সংগ্রহ করতে হবে।

৬| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সকাল ৯:০৫

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: শুধু এটুকুই বলব, নাস্তিক হতে গেলে ন্যূনতম হলেও পড়ালেখা করতে হয়। পুরনো ধ্যান-ধারণা ঝেঁড়ে ফেলে নতুন মতবাদ গ্রহণ সহজ কথা নয়।
ধর্ম হলো বিশ্বাসের বিষয়, এখানে যুক্তিতর্ক খাটে না। যুক্তিতর্ক তো পাল্টে যেতে সময় লাগে না। ধর্মীয় মতবাদ কি সহজে পাল্টায়? তাহলে দেখা গেল ধর্মটাই হাস্যকর কিছু হয়ে গেল। তাই দুটোকে দুজায়গায় রাখলেই ভালো।

৭| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সকাল ১০:২০

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: এসব ব্যাখ্যা উপমা দিয়ে কয়টা নাস্তিক আস্তিক হয়েছে তা জানা যায় না। আসলে ধর্ম হল বিশ্বাসের উপর। বেশী যুক্তি টুক্তি খোঁজা ঠিক হবে না...

৮| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সকাল ১১:০০

ওসেল মাহমুদ বলেছেন: ফারহান খান ,আরিফ আজাদ কে সমালোচনা না করে নিজে কিছু করুন,নাস্তিকতা ঠেকান ! জাকির নায়েক কি নিজেকে কখনো পীর দাবী করেছেন ? কেনো অপপ্রচার করছেন ?

৯| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সকাল ১১:২৯

প্রামানিক বলেছেন: বইটি কেনার আগ্রহ জন্মাল।

১০| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সকাল ১১:৪৩

বোকা পুরুষ বলেছেন: প্রথম বইটা পড়েছি দ্বিতীয়টাও পড়ার ইচ্ছা আছে

১১| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ১২:০৮

রাজীব নুর বলেছেন: আবার আসলাম।
এসে দেখি মন্তব্যের উত্তর দেন নি।

১২| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ১:৫৯

সনেট কবি বলেছেন: প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ আমার সংগ্রহেও রয়েছে।

১৩| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:৪১

সেলিম৮৩ বলেছেন: এখান থেকে লোড দিয়ে নিয়েছি।
https://www.quraneralo.com/paradoxical-sajid/

১৪| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ১০:১৫

অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য বলেছেন: টি শার্টটা সুন্দর আছে।

১৫| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ১২:৩৮

নূর আলম হিরণ বলেছেন: প্রথম বইয়ের মত এই বইতেও তেমন গুরুত্বপূর্ণ কিছু থাকবে বলে মনে হয় না, টিশর্টটি ফেলে কাজে লাগবে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.