নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সুদেব চক্র বর্তী

জন্ম ১৯৮৭ সালে সিরাজগঞ্জে। পৈতৃক নিবাস মাগুরাতে। বর্তমানে ঢাকাতে অবস্থান করছি। লেখালেখি করি। এছাড়া- যুক্ত ছিলাম সাংবাদিকতা, গান, থিয়েটার, উপস্থাপনার সাথে। ছাত্র ইউনিয়নের কর্মি ছিলাম। প্রকাশিত গ্রন্থ-‘সংশয়ী প্রার্থনা’।

সুদেব চক্র বর্তী › বিস্তারিত পোস্টঃ

বইমেলা: লিঙ্গবৈষম্য ‍আর সাম্প্রদায়িকতা

০২ রা মার্চ, ২০১৭ বিকাল ৫:২৫

বইমেলাতে ‍আমার ‍এক মেয়ে বন্ধু যখন ঢুকছিলো, পুলিশ তার ব্যাগ তল্লাশি করতে গিয়ে ‍একটা লাইটার পেলো। পুলিশের নির্দেশ ছিল ‍এসব নিয়ে মেলায় ঢোকা যাবে না। অবশ্যই। ‍আমরা ‍আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। অন্তত ‍আমার মেয়ে বন্ধুটি তো বটেই।
কিন্তু প্রশ্ন তুলছি ডিউটিরত ‍ঐ নারী পুলিশের বক্তব্য নিয়ে। পুলিশ প্রথমেই অগ্নিশর্মা হয়ে বলে ‍উঠলো,
‘এসব কী? ‍এটা ‍আপনার ব্যাগে কেন?’ বন্ধুটি বলল, ‘আমি সিগারেট খাই বলে ওটা ব্যাগেই থাকে’।
পুলিশ বলল, ‘আপনি না মেয়ে মানুষ? ‍আপনি কেন সিগারেট খাবেন? অসভ্য...’
তার মানে ব্যাপারটা কোন দিকে গেল! ‍একটা মেয়ে সিগারেট খেলেই জাত গেল!
যাহোক, ‍এবার ‍আসি আরেকটি ঘটনায়।
যে ঘটনা ‍আমাকে বইমেলার বই বই গন্ধের ‍আবহেও তীক্ষ্ণ ফলার মত ‍আঘাত করে যায়। ‍আমার ‍এক বন্ধুপ্রতীম অনুজ কবি সারোক শিকদারকে নিয়ে মেলাতে ঘুরছিলাম। দুপুরে প্রচণ্ড ক্ষুধা লেগেছে। অথচ মেলাতে থাকা বাংলা ‍একাডেমির ক্যান্টিন থেকে খাবার কেনার ‍উপায় নেই।
মানে বুঝলেন না? ‍
এক প্লেট ফুসকার দাম ১০০ টাকা! ‍এক প্লেট নুডলস-এর দাম ২৫০ টাকা!
বাধ্য হয়েই রমনা কালী মন্দিরের দিকে ‍এগোলাম অন্তত দুটো পাউরুটি বা কলা বা বিস্কিট ‍আর ‍একটু চা খাওয়ার জন্য। কিন্তু মন্দিরের গেটে ডিউটিতে থাকা পুলিশের বাঁধা। তারা জানতে চাইলো- ‍আমরা হিন্দু কিনা। সারোক বলল, ‘আমি মুসলিম কিন্তু ‍উনি হিন্দু’।
পুলিশ বলল, ‘মন্দিরে নিরাপত্তার স্বার্থে হিন্দুরা ছাড়া কেউ ‍এদিকে ‍আসতে পারবে না’। ‍
মানে কি! ‍এ ‍আবার কেমন যুক্তি! তারমানে সন্ত্রাসী বা জঙ্গি বলতে কেবল মুসলিমদেরকেই বোঝানো হচ্ছে! তাও ‍আবার টোটাল মুসলিমদেরকে! অথচ ‍এদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন হলে যারা প্রতিবাদে রাস্তায় নামে তাদের বড় ‍একটি অংশ মুসলিম। তাছাড়া কথিত মুসলিম ছেলেটিকে তো আমিই সাথে নিয়ে যাচ্ছি।
যাহোক, পুলিশের কাজ নিরাপত্তা দেওয়া। তারা ‍এজন্য তল্লাশি করছে, স্ক্যানার ব্যবহার করে হিন্দু-মুসলিম সবাইকেই চেক করছে। তাহলে ‍আবার হিন্দু-মুসলিম ভাগাভাগি কেন?
রাগের মাথায় চেঁচিয়ে পুলিশদের ‍উদ্দেশ্যে বলেই ফেললাম, ‘ ভাই, ‍আপনাদের ‍এই যুক্তি শুনে ‍আমার বলতে ‍ইচ্ছে করছে- ‍আই হেট দিস স্টেট, ‍আই ফাক দিস স্টেট’।
সারোক ‍আমাকে বুঝিয়ে ওখান থেকে নিয়ে ‍আসলেও মাথায় ঘুরছিলো দুষ্টু পোকা। মানে ‍আমাকে তো বুঝতে হবে পুলিশের নিরাপত্তা ব্যাবস্থাটা। তো কয়েক ঘণ্টা পর ‍দুটো মুসলিম ছেলেকে পাঠালাম। পুলিশ ওদের পরিচয় জানতে চাইলে ওরা নিজেদের হিন্দু পরিচয় দিলো। ‍আর অমনি পুলিশ ওদের ভেতরে ঢুকতে দিলো।
কী বুঝলেন! এ ব্যাপারে পুলিশের সাথে কথা বললে তারা বলল, ‘ভাই, কোনো মুসলিম যদি নিজেকে হিন্দু পরিচয় দিয়ে মিথ্যা কথা বলে তাহলে সে তার ‍ঈমাণ নষ্ট করলো ‍এবং সে পরকালে তার জবাব দেবে। ‍আমাদের কী করার ‍আছে!’ ‍
আহারে! কী কইলো শুনছেন? ‍এখন ‍আমার জানতে মন চায় হলি ‍আর্টিজানে কিংবা শোলাকিয়াতে হামলাকারীরা কি ‍ঈমাণের চিন্তা করেছিলো?

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা মার্চ, ২০১৭ বিকাল ৫:৩২

চাঁদগাজী বলেছেন:


আপনি ছিদ্র অন্বেষন করে বেড়াচ্ছেন।

২| ০২ রা মার্চ, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:১১

লর্ড অফ দ্য ফ্লাইস বলেছেন: নারী পুলিশদের নৈতিকতা বোধ দেখি পুরুষদের তুলনায় অনেক ভাল।

৩| ০২ রা মার্চ, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:২৮

হাতুড়ে লেখক বলেছেন: অদ্ভুত উটের পিঠে চলেছে স্বদেশ।

৪| ০৩ রা মার্চ, ২০১৭ ভোর ৬:৩৫

পথে-ঘাটে বলেছেন: ভাল লিখেছেন। আসলে অপরাধীর কোন জাত নাই।

৫| ০৩ রা মার্চ, ২০১৭ দুপুর ১২:০৯

টারজান০০০০৭ বলেছেন: যত দোষ মুসলিম ঘোষ কিনা !
উপরে একজন লিখলেন , "আপনি ছিদ্র অন্বেষন করে বেড়াচ্ছেন।"
কার ছিদ্র বুঝলাম না ! :P :D

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.