নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মুক্তচিন্তার বিকাশ চাই

আমাকে ফেবুতে খুজতে https://www.facebook.com/eislamul

বি, এম, ইমন

বি, এম, ইমন › বিস্তারিত পোস্টঃ

ছোটগল্পঃ অতঃপর

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৪৫

সামনে অর্ধেকটা খোলা দরজা, সময়টা রাত প্রায় ১২ টা। ঘরের ভেতর থেকে হালকা আলোর আঁচ এসে পড়ছে বাইরে। কিন্তু নিলয়ের কেমন কেমন যেন লাগছে। মনে করতে চাইছে না ঘটনাটা কিন্তু মনে পড়েই যাচ্ছে! বারবার মনে পড়ছে জরির কেঁপে কেঁপে ওঠা কান্নার সেই দৃশ্য।



জরি কাঁদতে কাঁদতে বলেছিল, “আমি সত্যিই তোমার জীবন থেকে চলে যাব?”

নিলয় চিৎকার করে উঠেছিল, “হ্যা চলে যাবে।“

“আমি না থাকলে তোমার খেয়াল কে রাখবে?”

নিলয় গোয়ারের মতন বলেছিল, “আমি আমার নিজের খেয়াল রাখতে পারি।“

জরি চোখ মুছতে মুছতে বলেছিল, “আমাকে ছাড়া তুমি থাকতে পারবে?”

নিলয় দাঁতে দাঁত চেপে বলেছিল, “আমাকে প্লিজ মাফ করো। তোমাকে ছাড়াই আমি ভালো থাকব।“



জরিও আর কথা বাড়ায় নি। চলে গেছে চুপচাপ। একবারও পেছনে তাকায় নি। কেন তাকাবে? যাকে জীবন দিয়ে ভালোবেসেছে তার কাছে এমন অপমান, সহ্য করা যায় না আসলে।



নিলয়ের ব্যাপারটা ভিন্ন। তার সমস্যা হচ্ছে সে জরিকে অনেক ভালো তো বাসে কিন্তু রেগে গেলে সহ্য করতে পারে না কিছুই। জরি যখন তার কথায় চলে গেল তখন মন চাইছিল তাকে আটকাতে, পরেও তার মনে হয়েছে মিটিয়ে ফেলে ঝামেলাটা, কিন্তু না। ইগোর কাছে হার মেনেছে বারবার। প্রতিবার জরিই তার কাছে রাগ ভাঙাতে আসলেও, এবার আর আসে নি।



তারপরের সাতটি দিন ছিল নিলয়ের জীবনের সবচেয়ে খারাপ সাতটি দিন। রাতে ঘুম হতো না। শেষ রাতের দিকে ঘুমিয়েছিল সেদিন। হঠাৎ তার মনে হল তার মুখে কেউ পানির ছিটা দিচ্ছে। চোখ খুলে দেখে তার মুখের দিকে খানিকটা ঝুঁকে জরি তাকিয়ে আছে। তার চোখ বেয়ে পানি টপটপ করে নিলয়ের মুখে পড়ছে।

নিলয় নির্বিকার ভঙ্গিতে বলেছিল, “কখন এলে?”

“দুই ঘন্টা আগে”

“ডাকোনি কেন?”

“তোমার ছ্যাক খাওয়া চেহারা দেখছিলাম আর কাদছিলাম।“

নিলয় অবজ্ঞার ভঙ্গিতে বলেছিল, “আমি আর ছ্যাক? হাহ!”

জরি নিলয়ের গেঞ্জির কলার ধরে বলেছিল, “তোমাকে আমি তোমার চেয়ে ভালো চিনি বুঝছো? উঠে আগে শেভ করো।“



নিলয় উঠে বাধ্য ছেলের মত শেভ করলো। শুধু শেভ করার আগে রান্নাঘরে উকি দিয়ে তার মাকে বলল, “মা, আমি জরিকে বিয়ে করবো।“ এমনিতেই সে নিজে মাথাপাগল ছেলে, বলা যায় না কখন আবার কি করে বসে। তাই আগেই মাকে জানিয়ে ফেলল।



এখন যে দরজার সামনে নিলয় দাঁড়িয়ে আছে সেই ঘরে আছে তার নববিবাহিত স্ত্রী, জরি। অনেক নার্ভাস লাগছিল নিলয়ের। অনেক সাহস সঞ্চয় করে দরজাটা ঠেলা দিয়ে ভেতরে ঢুকল সে। ধীর পায়ে জরির পাশে বসে তার ঘোমটা তুলল। কি নিস্পাপ মুখ! জরি অবশ্য মুচকি মুচকি হাসছিল। হাসি দেখেই নিলয়ের গা জ্বালা করে উঠলো!



“এই তুমি হাসছো কেন?”

জরি হাসতে হাসতে বলল, “তুমি তো দরজায় ছিটকিনিই লাগাও নি। যে বাসর ঘরের দরজার ছিটকিনি লাগাতে ভুলে যায় সে নাকি নিজের খেয়াল নিজে রাখবে। হাহ!“



নিলয় ছুটে যেয়ে দরজার ছিটকিনি লাগালো। কি লজ্জার কথা! জরি খেয়াল না করলে তো কেলেংকারিই হয়ে যেত! কিন্তু মেয়েটা ঘোমটার ভেতর থেকে দেখলো কি করে?



নিলয় যখন ঘুরে জরির দিকে তাকালো তখনো সে হাসছিল। কি সুন্দর নিস্পাপ হাসি। আচ্ছা, জরিটা এতো ভালো কেন?

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:০০

স্বপ্নবাজ বাউন্ডুলে বলেছেন: আশা করি খুব জলদি ইমন জেনারেল এবং তারপর সেফ হয়ে যাবে :)

২| ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ২:২৫

বি, এম, ইমন বলেছেন: সেফ তো হই না রে ভাই। আজও আমরা আতঙ্ক ছড়িয়ে ওয়াচেই রয়ে গেলাম।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.