![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেখি আমি অন্ধ চোখে জগতটাকে
অনেক দিন যাবত লেখালিখি থেকে বিরত ছিলাম। লিখে আর কি হবে । যারা পাগল ছাগল তারা কেবল লিখে চলে আপন মনে। আমি নিজেও একজন পাগল তাই আজ লিখতে চলেছি। নিজের সময় অপচয় করে রাত জেগে লিখে চলেছি।
আজকাল প্রত্রিকার পাতায় চোখ পড়লেই নারী নির্যাতন ও ধর্ষনের খবর। প্রত্রিকার পাতা খুললেই মনে হয় যে আজকাল ধর্ষনের হার বেড়ে গেছে। আসলে কি তাই আগের সময়ের তুলনায় বর্তমানের দিন গুলোতে ধর্ষকের সংখ্যা বেড়ে গেছে। আসলে ধর্ষকের সংখ্যা বাড়েনি ও আগের তুলনায় নারী নির্যাতন ও ধর্ষনের হার বাড়েনি । যেটা বেড়েছে সেটা হল মিডিয়ার ভুমিকা। এখন এসব নির্যাতন ও নিগ্রহের ঘটনা প্রিন্ট মিডিয়া আমাদের চোখের সামনে তুলে এনে আমাদের কে বিবেকের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে দিতেছে। আগের থেকে আমাদের সচেতনতা অনেক বেড়েছে ও আমাদের মিডিয়া আমাদের সামনে সমাজের নানা জায়গায় ঘটে চলা অনাচারের কথা আমাদের সামনে তুলে ধরছে। এসব দেখলে মনে হয় সমাজটায় পচন ধরেছে। আসলে আমাদের সমাজের পচন ধরেছে মাছের মত। মাছের পচন ধরে মাথায় আমাদের সমাজের মাথায় পচন ধরেছে।
এখন আসি কাজের কথায়, ইদানিং অনেক ব্লগার ধর্ষকদের গুষ্টি উদ্ধার করে চলেছেন, কিন্তু একটা ব্যাপার কেউ লিখছেন না কিভাবে এই সমস্যার সমাধান করা যায়। জেল জরিমানা দিয়ে কখনও সামাজিক সমস্যার সমাধান করা যায়। নারী নির্যাতন ও নারী ধর্ষন একটা সামাজিক সমস্যা তাই এর সমাধান ও সামাজিক ভাবে করতে হবে।
এখন আসি কেন ধর্ষন কেন হয় তার করন বিশ্লেষন ও সমাধান
১ পারিবারিক শৃঙ্খলার অভাবঃ আমাদের সমাজে আজকাল পারিবারিক শৃঙ্খলার খুব অভাব, আমরা এখন খুবই ব্যস্ত সময় পার করছি। ব্যস্ততা মানুষের ভিতরকার মানবিকতা দিন দিন কমে যাচ্ছে। ব্যস্ততার জন্য বাবা-মা তার সন্তানদের খোঁজ খবর কম নেন। আর এই সু্যোগে ছেলে মেয়েরা নষ্ট হয়ে যায়। যদি প্রকৃত ভাবে ছেলে মেয়েরা বাড়িতে পারিবারিক মূল্যবোধের মাধ্যমে বেড়ে ওঠে তাহলে তারা মেয়েদের কে সম্মান করতে শিখবে। ছেলে নষ্ট হয় বাপের দোষে আর মেয়ে নষ্ট হয় মায়ের দোষে। ছেলে শেখে বাপকে অনুসরণ করে আর মেয়ে সব সময় মার পথে যায়। তাই ছোট বাচ্চাদের সামনে এমন কিছু করা যাবে না যাতে তাদের মনে খারাপ কোন কিছুর জন্ম নেই। ছেলে মেয়ে উয়য়কে একে অপরকে সম্মান করতে শিখাতে হবে। অনেকে ধর্মীয় অনুশাসনকে খারাপ চোখে দেখে থাকেন তাদের বলব ধর্মীয় আদব-কায়দা মানুষ কে কিছু না হলেও পাপ থেকে বিরত রাখতে সাহায্য করে। তাই ছেলে মেয়েদের কে ধর্মীয় শিক্ষা দিতে হবে। বাবা-মাকে নিয়মিত তাদের সন্তানদের কার্যক্রমের খোঁজ নিতে হবে। এতে করে তারা নিজেদের ভুল শুধরে নিতে শিখবে ।
২ চলচিত্রের প্রভাবঃ আমাদের সমাজ আজ অনেকটা চলচিত্রের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। অনেকে বলে থাকে যে চলচিত্র হচ্ছে সবচেয়ে বড় গনমাধ্যম। হ্যা আর এর কুপ্রভাব ও অনেক বড়। আর সে কুপ্রভাব আজ সমাজের নানা দিক দেখে আমরা বুঝতে পারছি। আজকাল হিন্দি চ্যানেল দেখলেই আমরা কেবল দেখি উত্তেজক সব নাচের, গানের দৃশ্য যা মোটেও সামাজিক না। আর এসব দেখে মানুষের মন নষ্ট হয়ে যায়। সমাজে কিছু মানুষ থাকে যারা অপরাধ প্রবন আর এই সব মানুষ এসব সেক্সচুয়াল মুভি দেখে আরও নষ্ট হয়ে যায় আর তখনি হয় বিপত্তি। এর আজকাল জামা কাপড় কমতে কমতে এমন এক অবস্থায় চলে এসেছে যে মেয়েরা কাপড় খুলে দিয়ে সিনেমা করতে নেমে গেছে। পারে নাভির নিচে কিছু না পরেই ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে যায়। আর এসব দেখে আমাদের বাংলাদেশের মেয়েরা তাদের কে সেসব পোষাক আশাকে নিজেদের সাজিয়ে তুলছে। কেউ স্বীকার করুক আর নাই করুক এই সব আজে বাজে পোশাক ও আজেবাজে কুরুচি পুরন সিনেমা যে আমাদের সমাজকে ধবংস করে দিচ্ছে তা একদম সত্য। হিন্দি সিমেমায় আজকাল পর্ণ তারকা এনে অভিনয় করান হয় আর আমরা তা দেখে শিখি বাহ এর থেকে ভাল আর কি হতে পারে। তাহলে কেন ধর্ষনের হার বাড়েবে না? কেউ কেউ প্রশ্ন করতে পারেন যে তাহলে গ্রামে কি হয় মেয়েরা কি সর্ট স্কাট পরে তারা কি ওড়না ফেলে দিয়ে রাস্তায় হাটে? আমি বলব না, কিন্তু শহরের জিসম ২ ছবিটা কিন্তু গ্রামের বখাটে ছেলেটাও দেখছে, তার ভিতরে ও কামের আগুন জলে গেছে।
এখন আসি দেশের টিভি নাটকের কথায় আজকাল বেশির ভাগ নাটকে দেখান হয় যে পাড়ার যে ছেলেটা ভো ভো করে ঘুরে বেড়ায় , মেয়েদের ডিস্টার্ব করে বেড়ায় সে হয় নায়ক। এদেখে গ্রামের ও শহরের ছেলেরা মেয়েদের কে প্রেম প্রস্তাব এর নামে ডিস্টার্ব করতে থাকে। সব কিছুত আর ফারুকীর নাটকের মত হয় না। একসময় প্রেমে প্রত্যাখান অবশেষে এসিড নিক্ষেপ, নির্যাতন ও ধর্ষন হয়। কই নাটকে তো কোনদিন দেখলাম না যে পাড়ার ছেলেটা একজন সায়িন্টিস্ট হয়েছে, বা একজন ডাক্তার হয়ে মানব সেবা করছে। এগুলো দেখালে ছোট বয়সের ছেলেরা নিজেদের কে একজন সায়িন্টিস্ট বা ডাক্তার হিসবে কল্পনা করত। তাই আমাদের ভাবতে হবে আমরা কি দেখছি আর কি শিখছি। তাই প্রয়োজনে বিদেশী উত্তেজক মুভিকে নিয়ন্ত্রন আনতে হবে ও সেই সাথে দেশীয় নির্মাতাদের নতুন করে ভাবতে হবে তারা সমাজ কে কি দিবেন।
৩ নেশার অবাধ প্রবাহঃ এটা চির কালের সত্য যে , যেখানে নেশা থাবে সেখানে সেক্স থাকবেই। আমাদের সমাজে আজ নেশা রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে গেছে। তরুন সমাজের বড় একটা অংশই আজ নেশার জালে আটকে গেছে। নেশা এমন এক জিনিস যা মানুষের বিবেক বোধকে হত্যা করে। নাইট ক্লাব গুলোতে নেশায় আস্কত হয়ে যুবক যুবতীরা কামনায় লিপ্ত হয়ে পড়ে। আধুনিক সোসাইটিতে অনেক নারী ধর্ষন আড়ালেই থেকে যায়। কিন্তু গ্রাম ও মফস্বল এলাকা গুলোতে আর আড়ালে থাকে পারে না। যে সব তরুণ নানা মাদকের নেশায় বুধ হয়ে আছে তাদের কোন হিতাহিত জ্ঞান থাকে না। যদি আমার কথা মিথ্য হয় তাহলে ধর্ষকদের কেস স্টাডি দেখলে বুঝবেন যে সবাই কোন না কোন নেশায় আসক্ত, সে হোক গাঁজা, হিরোইন বা ইয়াবা। তাই আপনি আমি যতই এই সব অনাচার দূর করার জন্য গ্লা ফাটিয়ে ফেলি তাহলে লাভের লাভ কিছু হবে না। কারন আমাদেরকে আগে তরুণদের বিপথে যাবার পথে কাটা দিতে হবে। আগে সমাজকে নেশা মুক্ত করতে হবে তারপর দেখবেন যে এইসব অনাচার অনেক কমে যাবে।
৪ শিক্ষার অভাবঃ আমাদের দেশে পাশের হার বেড়েছে এর মানে এই নয় যে আমরা জাতি হিসাবে খুবই মেধাবী হয়ে উঠেছি। আমাদের মানসিক উন্নতি এখনও হয় নি। আর এর ফলে নারীকে আজও ভোগের সামগ্রী হিসাবে দেখা হয়। আর মানুষের স্বভাব ই হলো ভোগ করা সে হোক বৈধ বা অবৈধ উপায়। নৈতিক শিক্ষায় আমরা অনেক পিছিয়ে আছি। শিক্ষার মাধ্যমে আমাদের নতুন প্রজন্মকে শিখাতে হবে যে নারী বা মেয়ে মানুষ কোন খেলনা না বা ভোগের সামগ্রী না তারা আমাদের ই মা,বোন, খালা, ফুপু ও বউ। তাদেরকে সম্মান করতে শিখাতে হবে। এর জন্য দরকার প্রকৃত শিক্ষা যা মানুষকে মানুষের মত মানুষ করে তুলবে।
৫ পতিতালয়ের অভাবঃ সমাজে নানা ধরনের মানুষ বাস করে । কেউ খারাপ কেউ ভালো। সবার ই নানা ধরনের চাহিদা থাকে কারো বেশি কারো কম। সেভাবে কিছু মানুষের যৌন চাহিদা বেশি থাকতেই পারে। আর ে যৌন চাহিদা মেটাবার জন্য যদি কোন জায়গা না থাকে তাহলে ধর্ষনের মত ঘটনা ঘটবেই কেউ মানুক আর নাই মানুক। বাংলাদেশে আজও পতিতাদের খারাপ চোখে দেখা হয়। সরকার এখন ও কোন পতিতাদের লাইসেন্স দেয়নি, সমাজের কেউ এদের ভালো চোখে দেখে না তারপর সামাজিক স্থিতিশীলতার জন্য পতিতালয়ের ভুমিকা অসীম। যদি আমাদের দেশে রেজিস্টার্ড পতিতালয় থাকত তাহলে মানুষ পতিতালয়ে যেয়ে জউন চাহিদা মিটিয়ে আসত । এতে কিছু না হোক এই সব ধর্ষন কিছুটা হলেও কমে যেত। তাই সামাজিক প্রয়োজনে পতিতাদের উপস্থিতি মেনে নিতে হবে ও এখন যে সব জায়গায় পতিতালয় আছে সে গুলোকে থাকতে দিতে হবে।
আইন ও বিচারঃ বাংলাদেশের আইন আজ তামাশাতে পরিণত হয়েছে। শক্ত আইন নেই বলে অনেক ধর্ষক পার পেয়ে যাচ্ছে। আইন বলে যে ধর্সিতকে প্রমান করতে হবে যে তিনি ধর্ষনের শিকার হয়েছেন, এমনকি আলামত পর্যন্ত তাকে রক্ষা করতে হবে। অধিকাংশ সময়ে দেখা যায় আলামত নষ্ট হয়ে গেছে। তাই এসব ঘটনা রোধ করার জন্য কঠিন আইন করতে হবে ও শাস্তিকে উদাহরণ হিসাবে দেখাতে হবে। প্রয়োজনে ধর্ষককে রাস্তায় ফেলে পাথর নিক্ষেপ করে মারতে হবে। এটা অমানবিক হলেও মানুষ অন্তত ধর্ষন করার আগে একবার ভাববে। মেয়েদের জন্য ফ্রেন্ডলি এমন আইন তৈরি করতে হবে। সেই সাথে যারা আইন প্রয়োগ করবেন তাদের ও ভাবতে হবে তারা ধর্ষক বাচাবেন না নিজের বোন কে সম্মান করবেন।
২| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৩ ভোর ৬:১৯
আলাদীন বলেছেন: সহমত
©somewhere in net ltd.
১|
১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৩:২৮
রিফাত হোসেন বলেছেন: ++
পূর্ণ সহমত ।