নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিজের সম্পর্কে কিছু বলা যাবে না। আমার মূল্যায়ন হবে আমার লেখায় আর তা করবে আমার চারপাশের মানুষ

৭ ১ নিশান

দেখি আমি অন্ধ চোখে জগতটাকে

৭ ১ নিশান › বিস্তারিত পোস্টঃ

স্বাধীনতার ৪২ বছর ও আমাদের কিছু মৌলিক অধিকার ও অনান্য বিষয়

২৮ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ১:১৭

আমাদের দেশের সংবিধান বলে আমাদের নাকি অনেকগুলো মৌলিক অধিকার আছে। আমরা সবাই ছোট বেলায় পড়ে এসেছি যে, খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা নাকি মৌলিক অধিকারের ভিতরে পড়ে। প্রথমে জানতে হবে মৌলিক অধিকার কি? যে সকল অধিকার মানুষের জন্মগত অর্থাৎ মানুষ জন্মের পর যে সব অধিকার পাবে তাকে বলে মৌলিক অধিকার। মৌলিক অধিকার হল যে সব অধিকার যা সংবিধান দ্বারা মানুষের জন্য স্বীকৃত। আমাদের সংবিধান বলে উপরের অধিকার গুলো আমাদের নাগরিকদের জন্য প্রযোজ্য।

কিন্তু আদতে আমরা আসলে কি পাই তা কখনো ভেবে দেখেছি কিনা জানি না। স্বাধীনতার উদ্দেশ্য ছিল শোষনহীন অসাম্প্রদায়িক এক সমাজ। আফসোসের বিষয় আজো স্বাধীনতার কোন সুফল বাংলার বৃহত্তর জনগোষ্ঠী এখন ও পাইনি। কেউ যদি বলে এই যে নানা উন্নতির পথে আজ বাংলাদেশ, তাহলে সে বোকার রাজ্যে বসবাস করতেছে বা জেনে বুঝে সত্যকে অস্বীকার করার ব্যার্থ চেষ্টায় আছে।

আজও বাংলার মানুষ পাইনি খাদ্যের নিশ্চয়তা, সারাদিনের ভাত জোগাড় করতে এখন মানুষকে সীমাহীন কষ্ট করতে হয়। আমিও এর মাঝে একজন যে সারাদিন কষ্ট করে দুবেলা ভাতের জন্য। যদি আজও আমাদের কেবল ভাতের পিছনে ছুটে বেড়াতে হয় তাহলে সৃষ্টিশীলতার বিকাশ কিভাবে হবে? পেটে নিয়মিত দুবেলা ভাতের চিন্তা না থাকলে মানুষের দ্বারা অনেক কিছু করা সম্ভব। এখন ও মেয়ে মানুষ ৩০ টাকায় শরীর বিক্রি করে কেবল দুবেলা ভাতের জন্যে এর থেকে লজ্জার কি কিছু আছে বলে মনে হয় না। আর যারা রাতের জগতে লাখ লাখ টাকা কামায় করে তাদের কথা আলাদা। আজ বাজারে গেলে খালি ব্যাগ নিয়ে ফিরে আসতে হয়, দামের সাথে পাল্লা দিয়ে না পেরে মাংশ খাওয়ার অভ্যাস ভুলে তৃণভোজী জীবে পরিণত হতে হচ্ছে আমাদের। আর মন্ত্রী বলেছেন যে বাজারে কম যান। আমরা তো পারলে বাজরে যাই না। কিন্তু বাঁচতে তো আমরাও চাই। কিন্তু এভাবে আমাদের জিম্মি করে না খেতে দিয়ে মেরে ফেলার নাম যদি হয় সংবিধানে খাদ্যের অধিকার তাহলে চাই না সে অধিকার দয়া করে এটা মহান সংবিধান থেকে বাদ দিয়ে দেন। প্রধান মন্ত্রী বলেছেন মানুষ এখন পাঁচ বেলা খাইতেছে। হাসতে হবে বা কাদবে হবে কিনা জানি না। তিনি যে আমাদের দুনিয়ায় নেই তা বোঝা যাই। যে সমাজে মানুষের মৌলিক অধিকারের কোন বাস্তবায়ন নেই আর যাই হোক সে সমাজ নিয়ে কোন দেশ বেশি দূর যেতে পারে না। আগে দেখতাম যে টোকাইরা পথের খাবার কুড়িয়ে খাই এখন বুঝি কেন খাই। সেদিন বেশি দূরে নেই যেদিন মধ্যবিত্তদের ও খাবার নিয়ে কাড়াকাড়ি করতে হবে। আগে সারা বাংলার ভাতের অধিকার তারপর অন্য কিছু ।

এরপর আসব চিকিৎসা, আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ। আমাদের গড় আয় ও খুব একটা ভালো না । প্রান্তিক জনগোষ্ঠী দুবেলা খাদ্যের সংস্থান করতে হিমশিম করছে সেখানে আজ চিকিৎসা কে মৌলিক অধিকার করে সকল সরকার জনগণের সাথে কেবল প্রতারণাই করে এসেছে। আমরা যেভাবে চিকিৎসা সেবা পাই তাকে অন্তত আর যাই বলা হোক মৌলিক অধিকার বলা যায় না। মৌলিক অধিকারের সেবকরা যদি রাজনীতি বা দলবাজি নিয়ে ব্যস্ত থাকে তাহলে মৌলিক অধিকার হয়ে যায় যৌগিক অধিকার। আজ চিকিৎসক দের কেউ ড্যাব বা কেউ সাচিপ করা নিয়ে ব্যস্ত রোগীকে সেবা দেবার সময় কোথায় তাদের। সরকার একজন ডাক্তার তৈরির জন্য ২০ লাখ করে টাকা খরচ করে । জনগণের টাকা খরচ করে তাহলে কেন ডাক্তারি পড়ানো হবে। তারা যদি জনগণকে সেবাদিতে না চাই তাহলে কেন জনগণের টাকায় পড়বে। আমেরিকা থেকে পড়ে আসুক আমরা ভিজিট দিব। বাংলার মাটিতে পড়ে আমাদের সেবা দিবে না আর সরকার বলে বেড়াবে যে স্বাস্থ্য সেবা মৌলিক অধিকার তা কেন হবে।

শহরে কিছু না হোক টাকা দিলে চিকিৎসা মেলে কিন্তু গ্রামে কি চিকিৎসা আছে? আমি বাংলাদেশর অনেক উপজেলা হাসপাতালে গেছি যেখানে কেবল একজন ডাক্তার আছেন যিনি নির্বাহী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন বাকি সবাই দলীয় কায়দায় ঢাকায় চলে আসে আর মানুষ মরে বিনা চিকিতসায়। এর নাম মৌলিক অধিকার। আজ বাংলার গরীব জনগোষ্ঠীর জন্য চিকিৎসা চাওয়া হারাম হয়ে গেছে। রোগ হলে তাদের মরে যেতে হবে। বাহ এর নাম দিয়েছি অধিকার। স্বাধীনতার ৪৩ বছর পর এখন ১০০০ টাকা ফিস না হলে ভালো ডাক্তার রোগীর মুখ দেখেন না। কতজন লোকের সামর্থ্য আছে এই ১০০০ টাকা ও হাজার হাজার টাকার টেস্ট করার(যার অধিকাংশ অকারনে ডাক্তার দেয়)। কি যে অধিকার তা একমাত্র আল্লা খোদাই জানেন। পিজির প্রান প্রান গোপাল তার নিজের চিকিতসার জন্য যান সিংগাপুরে, এখাঙ্কার চিকিতসার উপর তার কোন ভরসা নেই তাহলে বোঝা যায় যে আমাদের দেশের চিকিৎসা সেবা কোন পর্যায়ে চলে গেছে? বাইরের দেশে বীমা আছে তারা বীমার আয়তায় সেবা পাই আমাদের বিমা নেই টাকাও নেই তাই আমাদের চিকিতসাও নেই কি মজা । এর নাম মৌলিক অধিকার। আমি ঘৃণা করি সে সব অধিকার নামের বাল সাল কে যা কেবল সংবিধানে আছে বাস্তবে নেই। হাসপাতেলে গেলে ডাক্তার বলে চেম্বারে আসেন, ওষুধ নিতে গেলে বলে সাল্পাই নেই, আছে কেবল নাপা আর হিস্টাসিন, এক্সরে তে প্লেট নেই, এর নাম সেবা। যেখানে ভেজাল প্যারাসিটামাল খেয়ে অবুঝ শিশু মারা যায় , টিকা খেয়ে দুধের বাচ্চা মারা যায় আর আমরা নির্বিকার হয়ে বসে থাকি , সেখানে চিকিৎসা কে মৌলিক অধিকার বলে ভাল কিছু কেবল আমার মত বোকা লোকই ভাবতে চাইবে . আগে চাই খাদ্যের অধিকার তারপর অন্য কোন কিছু নিয়ে ভাবতে রাজি আছি।

পেটে নেই ভাত শরীরে রোগ বাসা বেধেছে আর আমাদের নাকি শুন্তে হবে তাদের মিথ্যার ফুলঝুরি। যদি দেশ খাদ্যে স্বয়ং সম্পূর্ণ হয়ে যায় তাহলে মাননীয় কৃষি মন্ত্রী দিন না এক মাসের জন্য সকল চাল ডাল আমাদানি বন্ধ করে। স্রেফ দুর্ভিক্ষ শুরু হয়ে যাবে। আমাদের আগে নিজেদের মৌলিক অধিকার সম্পর্কে জানতে হবে ও কথা বলতে শিখতে হবে। আমি কেবল সবার জানা দুইটা বিষয় নিয়ে আলোকপাত করার চেষ্টা করেছি মাত্র। ভুল ভ্রান্তি হতেই পারে ক্ষ্মা সুন্দর ভাবে দেখবেন।

আমাদের তরুণরা নাকি জগে উঠেছে বলে মিডিয়া গান পচিয়ে ফেলে দিল। কিন্তু আসলে কি আমরা জাগতে পেরেছি আর যদি পারি তাহ্লে কতখানি জেগেছি তা সময় ই বলে দেবে। আমরা আসলে জাগতে পারিনি আমরা পারিনি দলীয় পচা রাজনীতির গোলকধাঁধা হতে বের হতে। কিছু মানুশ আমাদের আবেগ কে ব্যবহার করে তাদের পছন্দের একটা দলকে সকল দায় হতে মুক্তি দেবার চেষ্টা করে চলেছে। এটা কোন মতেই গ্রহন যোগ্য হয় না। কিছু রাজাকার বাইরে থাকবে আর কিছু জেলে এটা কি প্রহসন না। আমরা কি পেরেছি এই ৪২ বছরে আমাদের মৌলিক অধিকার গুলো নিয়ে কথা বলতে পারিনি কেন ? কারন আমরা নিজেদের দলের কোন ভুল ই দেখি না। শাহাবাগের তরুণ সমাজ আজ নতুনভাবে জেগেছে আজ তারা সবাইকে বুকে টেনে নিয়ে বলুক বন্ধুরা আমরা যুদ্ধাপরাধীদের বিদায় দিয়ে নতুনভাবে সমাজকে সাজাই যেখানে থাকবে ভাতের অধিকার ও অনান্য সকল নাগরিক অধিকার । দেখি কোন শালা না আসে। যে আসবে না সে শালা বাংলাদেসী ই না । কেবল একটি জিনিস দিয়ে সমাজের উন্নয়ন কোন্দিন সম্ভব না এটা আজ তরুন বলে যারা দাবি করে তারা ভুলেই গেছে। তরুন্দের তো ভুল করলে চলবে না? তাহলে ভুল কি ইচ্ছা করেই করা হচ্ছে? কিতু কেন ভুল করবে তরুন রা এটা প্রশ্ন রেখে দিলাম।

আজ মৌলিক অধিকার বলতে আসলে কিছু আর অবশিষ্ট নেই। বাক স্বাধীনতার কথা মহান সংবিধানে লেখা আছে কিন্তু আজকে আমরা কেউ মন খুলে কোন কথা বলতে পারছিনা। সরকারের কোন সমালোচনা করলেই হয়ে যাচ্ছি রাজাকার কিংবা পুলিশের লাঠি পিঠে এসে পড়ছে। এর নাম যদি হয় বাক স্বাধীনতার অধিকার তাহলে নিকুচি করা উচিত সেই অধিকারকে। যা আমাদের প্রতি পদে বাধা দেয় তা কখন ও মৌলিক অধিকার হতে পারে না। সংবিধানে এত কাটা ছেড়া হয় কই কেউ তো কোন্দিন ৫৪ ধারা বাদ দিল না। এত পচা ধারা কেবল জনস্বার্থের বিরুদ্ধেই ব্যবহার হ্যে এসেছে । এতে মানুশের অধিকার ই কেবল নষ্ট হয় না , সমাজের ক্ষতি হয় দীর্ঘ মেয়াদে।

আমরা আসলে এখনো মুক্তিযুদ্ধের আসল চেতনার ধারে কাছে যেতে পারিনি এটা আমাদের ৪২ বছরের ব্যার্থতা। আমারা আজো সেই শোষনহীন অসাম্প্রদায়িক সমাজ গড়ে তুলতে পারিনি। আজো সংখ্যা লুঘুদের নিজের জীবন এর নিরাপ্ততা নিয়ে ভাবতে হয়। আজো মন্দির কে পোড়াল তা খুজে বের করতে হয়? এই ছিল কি স্বাধীনতার উদ্দেশ্য? ভাতের অধিকার, কথা বলার অধিকার, ধর্মের, তথা মানুশের সকল মানবিক অধিকার কে প্রতিষ্টা করাই ছিল মহান মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ। কোন এক্তা দলের তাবেদারি করা কোনদিন মুক্তিযুদ্ধের উদ্দেশ্য ছিল না। মুক্তিযুদ্ধ কারো বাপ বা স্বামীর না এটা আমাদের সবার ১৮ কোটী বাংলাদেশীর। আমরা আজ ৭১ থেকে অনেক দূরে এসেও বিভক্ত অবসস্থায় দিন পার করছি, সমাজের সবাই আজ নানা ভাবে বিভক্ত এটা আমাদের কাম্য ছিল না কোনদিন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু ও কোনদিন চাননি যে বাংলাদেশ এই রকমভাবে বেড়ে উঠুক। আমরা তার আদর্শ থেকে আজ অনেক দূরে দাড়িয়ে আছি। আমাদের কে নিজেদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন হতে হবে, প্রশ্ন করার চেষ্টা করতে হবে কেন হয়? তাহলে কেউ আমাদের ঠকিয়ে ক্ষমতার মসনদে রাজ করেতে পারবে না আবার একই ভাবে আমরা যদি নিজেদের অধিকার থেকে চাই তাহলে কোন যুদ্ধাপরাধীও আংলার মাটিতে ঠাই পাবে না।

৪২ বছর ধ্রে যা হয়নি তা যে খুব তাড়াতাড়ি হয়ে যাবে এটা ভাবার কোন কারন নেই। এখন যদি আমরা তরুণরা ভুল করি তাহলে বাংলাদেশ আর কোনদিন ই পারবে না। তাই সকল ব্যক্তিকে দলমত ভুলে যেমন যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে দাড়াতে হবে সেভাবে নিজেদের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্টা করার জন্য এক হতে হবে ও সবাইকে দলীয় পাক থেকে বের হয়ে বলতে হবে ভাতের অধিকার চাই? মানুষ হিসাবে বাংলার বুকে বাচতে চাই কোন কীট হয়ে না?

কিন্তু তা কি হবে ?

আমি আশাবাদি যে শাহাবাগ আবার প্রান ফিরে পাচ্ছে , অন্তত যারা মনে প্রানে সোনার বাংলা চাই তারা আবার এক হ্যে দাবি জানাচ্ছে ।

জয় জনতা

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.