![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেখি আমি অন্ধ চোখে জগতটাকে
ঈশান সারাটা জীবন পার করেছি দুর্দান্ত সব কাজ এর মাঝে , পথ চলতে গিয়ে নানা অনাকাংখিত-কাংখিত ঘটনার মাধ্যমে ঈশান নিজের ঝুলিতে নিয়ে নিয়েছি সময়ের অভিজ্ঞতা। ঈশান ও তার বন্ধুরা যে কেমন ছিলাম তা বলে বোঝান সম্ভব না। ঈশান ক্লাস করা, পরীক্ষা দেওয়া ছাত্র কোন কালেই ছিল না এই জন্য তার সাথে ক্লাসের ভাল ছাত্রদের যোগাযোগ খুব একটা থাকত না তাই পড়ার চাপ ও থাকত না। সারাদিন মেস বাসায় বসে গেম খেলো, বিড়ি টানো , নিরালা মোড়ে আড্ডা মারো এই সব ছিল নিয়মিত রুটিন। এর সাথে যোগ হত রাতের বেলায় হাওয়া খাওয়া, রাস্তা মাপা ও এলাকার ন্যাচারাল রিসোর্স দেখে বেড়ান। তাদের একটা অলিখিত নিয়ম ছিল তা খুব মজার তা হল ভাড়া বাসার আশেপাশের ১০ বাড়ি পর্যন্ত সব কিছুতে তাদের অধিকার থাকবে। এটার প্রবক্তা ছিল মাহামান্য কিহী, মহাকাশীয় স্কেলে যার জ্ঞান এর লেবেল ছিল সর্বোচ্চ ৮, হেন কোন ব্যাপার নেই যেখানে তার চলাচল নেই। ইসলামে বর্ননাক্রিত প্রতিবেশী নিয়মের সাথে মিলিয়ে ১০ ঘর অধিকার আইন বলে দিল আর সবাই মেনে নিল । ঈশান, কবি, রাসু, জেনি, জ্ঞানী নিরালার ২৪৫ নাম্বার বাসার ভাড়াটীয়া, অনেক কষ্ট করে তার এ বাড়ি খুজে বের করেছে। খুলনাতে মালিক মুক্ত বাড়ির যে কি দরকার তা ঈশানরা ভালভাবেই জানে। এ বাড়ি যখন ভাড়া নেই তখন বাড়ির মালকিন এর সাথে ২২-২৩ বছরের একটা মেয়ে এসেছিল, এবং হ্যাবলা করে একটা পোলা ও এসেছিল। বাড়ী ওয়ালীর মেয়েকে দেখে সবাই ফিদা, এর মাঝে রাসু নিজেকে ঢাকাইয়া পরিচয় দিয়ে ভাব জমাবার চেষ্টায় রত হল। আর নাদাবে (নারী দিয়ে বেষ্টিত)কবির কোন বিকার নেই। কবি যাকে বলছি সে জীবনে কবিতা পড়েছে বা লিখেছে ইতিহাসে এধরনের কোন প্রমান আছে বলে ঈশানদের জানা নেই। কিন্তু ব্যাপার হল গ্রুপে একটা কবি চাই তাই সে কবি, যা হোক জ্ঞানী আর রাসুর চাপাবাজিতে বাড়ি ওয়ালী কাত। বাসা ভাড়া নেওয়া হল যে প্রতিমাসে ১০ তারিখে বাড়িওয়ালীর বাসায় ট্যাকা গুনে দিয়ে আসতে হবে। আর এতেই জ্ঞানী আর রাসু আনন্দিত কারন কিছু না হোক মালকিনের মাইয়্যার সাথে টাংকি মারা যাবে , রাসুতো খুলনা শহরে বাড়ির মালিক বনে যাবার চিন্তায় ব্যস্ত। যা হোক এবার আসা যাক কলা কাহিনীতে। ঈশানদের বাসার পিছনে অনেক ফলফলালির গাছ এর মাঝে তারা একদিন আবিষ্কার করে পাশে পাচিল দেওয়া এক বাড়িতে পাকা কলার কাদি পড়েছে, সাথে সাথে সবার মুখে মুখে ১০ ঘর থিওরি আর একটাই ধান্দা কি করে কলা আনা যায়। সারাদিন ছক আকাআকি অবস্থা এমন দাড়াল যে ক্লাস পড়ালেখা বাদ দিয়ে কলা খাওয়া যেন প্রধান কাজ। এর মাঝে পরামর্শদাতা হিসাবে আর্বিভূত হল জ্ঞানীর ভাগ্নে পাভেল মামা। মামা ভাগ্নে দুজন মিলে সারাদিন কেবল জ্ঞান বিতরন করে চলে বিনে পয়সায়। চুরির কাজে তার নাকি অগাধ জ্ঞান সে নাকি নিকট অতীতে ছাগল, ভেড়া, মেয়েদের বস্ত্র, এমনকি সে নাকি মা হরিনের কোল থেকে বাচ্চাচুরি করে এনেছে। এই জ্ঞানে ঈশান তার কাছে গেল পরামর্শ করতে সে বলল ঝড়ের রাতে বর্ষার ভিতর কাজ সারতে হবে, ঈশান জিনিসটা পছন্দ করল। এভাবে এক সপ্তাহ অপেক্ষা করার পর ঝড় এর সাথে বর্ষা। তুমুল ঝড় মানুষ বাইরে থেকে পালিয়ে ফিরছে আর কিছু জ্ঞানী আর অজ্ঞানী মিলে কলা চুরিতে ব্যস্ত। ছাদে রেসকিউ টিম দড়ি নিয়ে বসে আছে এদের মাঝে রাসু আর জ্ঞানী। তাদের কি যে তাড়া বলে বোঝান যাবে না; এত দেরি কেন, আমি হলে হেন করতাম, তেন করতাম কত কি ? যা হোক জেনি আর তার এক বন্ধু বসেছে পাচিলের পর আর কবি আল্লাহর নাম নিচ্ছে। সে ভাল মন্দ সব কাজেই আল্লাহকে ভরসা মানে। মামা পাভেল আর ঈশান কলা কাটতে কলা গাছের কাছে নেমেছে। মামা হাফ প্যান্ট আর ঈশান লুংগি কাছা দিয়ে নেমেছে। এর মাঝে মারা বাট সহ বটি বের করেছে ঈশান রেখে বলল মামা তুমি একটা জাত মূর্খ বাট কেনএর সাথে, মামা বলল খুলতে পারিনি তাই বাট সহ এনেছি। যা হোক ঈশান মাথা ঠান্ডা করে বাট ধরে জোরছে ৪/৫ টি কোপ বসিয়ে দিল কলার কাদিতে। কিন্তূ কলাপ খারাপ হলে যা হয় বটি টাস করে খুলে পাশের ডোবাতে চালান গেল। এর সাথে সাথে ঈশান মামাকে বলল বাল এনেছে যে কাম হয় না। এর রকম হেচড়ে পেচড়ে দুকাদি কলা কাটা হয়েছে। এর মাঝে মালিকের বাড়ির কেউ একজন দেখে চেচিয়ে উঠল কলা চোর কলা চোর বলে সাথে সাথে ঝুপ ঝাপ শব্দে রেসকিউ টিম হাওয়া। মামা হঠাত চিতকার করে উঠল এই কোন শালা বের হবি না বোতল মারব বোতল ঈশান হতবাক মামা কি বলে আবোল তাবোল। মামা ঈশান কে বলল তুমি কলা পার কর আমি বোতল মারছি। মামা বোতল মেরে গেল আর জ্ঞানীর সাহায্য নিয়ে পাকা কলা ২৪৫ চলে এল। সারা গায়ে গু মুত আর কাদা নিয়ে ঈশান আর মামা এলে কবি তাদের ঝাড় ফুক করে ঘরে নিয়ে এল এবং সেই সাথে শুকরিয়া আদায় করল। যা হোক ওরা সবাই পরিষ্কার হয়ে কলা খাওয়ায় মন দিল। নিরালার ৫/৭ টা মেসে রাতেই দাওয়াত দিয়ে এল কলা খাবার। তার ২ টা পর্যন্ত চলল কলা খাওয়া। ঈশানের মনে একটা ভয় ছিল যে কলার মালিক যদি খোজ নিতে আসে তাহলে কি হবে। পরদিন সকালে কলার মালিক গেটের বাইরে এসে বলল কাল এই বাসার কিছু ছেলে তার কলা চুরি করেছে সে নিশ্চিত এবং সে রাতে এলাকার মানুষ নিয়ে এর বিচারে বসবে। ঈশান তাকে বোঝাবার চেষ্টা করল যে তারা কলা খায়না বা চুরি করেনি কিন্তু বেটা মুখের পর বলে দিল সে জানালা দিয়ে দেখেছে যে কলার কাদি রুমে ঝোলান। ঈশান বলল আচ্ছা আপনি সন্ধ্যায় আসেন। সে ব্যস্ত হ্যে কোনার রুমে গিয়ে দেখে রাসু কলার একটা ছোট্ট কাদি ঝুলিয়ে রেখেছে। মাথায় যা আসল ঈশান তা বলে দিল। এর মঝে সে ফোন করে জ্ঞানী , কবি ও জেনিকে ডেকে নিয়ে বলল কি করা যায় ভাবতে। জ্ঞানী বলে কলা খেয়ে ফেলতে হবে, এর মাঝে দাদা এসে হাজির, এসে দুটো কলা খেয়ে গেল, এর পর পাশের এক মেসে থেকে এক ছোট ভাই এসে বলে “ ভাই বাসায় গুড়ো দুধ আছে কলা দেবেন একটা, ঈশান সোজা ঊঠে গিয়ে একটা চড় কোষে দিয়ে এক ফানা কলা দিয়ে বলে দূর হ হতভাগা। জেনি বলে কলা বেচে দিই, কবি বলে দোষ সীকার করে নিই......।, দোষ সীকার করব না আবার বিচারে তালগাছ ও পেতে হবে............... সে সোজা জ্ঞানীকে নিয়ে চলে গেল রুমে এবং দম দিয়ে ফিরে এসে বলল...............
কিন্তু ঈশানের কথা হল কলা খাব , দোষ সীকার করব না আবার বিচারে তালগাছ ও পেতে হবে............... সে সোজা জ্ঞানীকে নিয়ে চলে গেল রুমে এবং দম দিয়ে ফিরে এসে বলল...............
আমি চলবে যাব আর এক মুহূর্ত থাকব না এখানে। সবাইকে অবাক করে দিয়ে সে নিজের ব্যাগ গোছাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ল। সবাই খুব চেচামেচি করে বলতে লাগল শালা নিমক হারাম, ব্যাঞ্চোত, আমাদের বিপদে ফেলে চলে যাচ্ছিস। ঈশান কিন্তু একমনে ব্যাগ গোছাতে ব্যস্ত। সে ব্যাগ গুছিয়ে নিয়ে বাইরে এসে দাড়াল । সবাই যখন রাগে আগুন ঈশান তখন ফ্যাক করে হেসে বলল কই তোরা এখন অ দাঁড়িয়ে আছিস কলা গুলো আমার কম্পিউটারের বাক্সকে ভরে ফেল। আপদ বিদায় করে দিয়ে আসি। সবাই কলা গোছাতে ব্যস্ত। যা হোক ঈশান একটা বিড়ি কিনতে চলে গেল ।কোথায় যাবার আগে একটা বিড়ি সে না খেয়ে যায় না। বাইরে গিয়ে দেখে অগ্নিমূর্তি দাঁড়িয়ে আছে এবং সে দুইজন গার্ডকে ডেকে এনে পাহারা বসিয়েছে। যা হোক ঈশান বাক্স নিয়ে বাইরে বের হয়ে রিকশার জন্য দাঁড়িয়ে আছে দেখে মূর্তি ছুটে এসে বলল কি ব্যাপার এখন কোথায় যাচ্ছেন আপনি ? ঈশান বলে কেন বাড়ি। কলাওয়ালা বলে আপনার বাড়ি তো মাগুরা এখন তো বাস পাবেন না । ঈশান বলে বাহ আপনি দেখছি আমার চোদ্দগুষ্টির খোজ নিয়ে ফেলেছেন। অগ্নিমূর্তি কিছু বলার আগেই ঈশান বলল যে যদি বাস না পাই তাহলে আপনার বাড়িতে রাতে খেয়ে যাব। এই রিকশা যাবা সোনা সোনা সোনা ডাংগা বলে ঈশান এগিয়ে গেল। এদিকে ওদের বাসাতে রুম টুম ধুয়ে মুছে একাকার কারন আজ বাড়ির মালকিন আসবে তার মেয়ে সেই সাথে বিচার ও হবে। রাসুর মনে খুব ফুর্তি বিচার যাই হোক আজ লাড়কি আয়েগা। জেনি ভয়ে বাসা থেকে আগেই চলে গেছে। কবি কাজ শেষে দুরাকাত নফল মেরে দিয়ে এনএফএস মোস্ট ওয়ান্টেড নিয়ে বসে গেছে। এর মাঝে ঈশান কিছু দূর এসে বিভাস নামে এক বন্ধুর বাসায় এসে তাকে বলল দোস্ত বাড়ি যাব তাই সিপিউ এর বক্সটা তোর বাসায় রেখে দে। সে অবাক হইয়ে গেল কারন ঈশানের সাথে তার যোগাযোগ আছে কিন্তু পিসি রেখে যাবে এমন যোগাযোগ নেই । যা হোক সে অবাক হলেও ঈশানের কথা ফেলার সাধ্য তার নেই এবং সে রেখে দিল । ঈশান যেন হাফ ছেড়ে বাঁচল। সময় বিকাল ৫ টা। ঈশানের এখন অনেক কাজ বাকি । সে একটা ভ্যান রিজার্ব করে ছাত্র হলে চলে এল এসেই একটা লুংগি পরে বাজারে গিয়ে এক পরিচিত দোকানে কলা বেঁচে এল । ৩১৪ নম্বর রুমে ফিরে শান্ত হয়ে বসে জিরিয়ে নিল এদিকে মোবাইলে কলের পর কল, মেসেজ । সে একরকম বাধ্য হয়েই মোবাইল অফ করে দিয়ে গোসলে চলে গেল। দারুন একটা আইডিয়া নিয়ে বের হল । সময় খুব বেশি নেই ওর হাতে সে আবার বিচারে যোগ দেবে । এর মাঝে গার্ড ম্যানেজ , কুরিয়ার সিলিপ নেওয়া, কত কি কাজ যে আছে । বিচার শুরু হবার মিনিট দশেকের মধ্যে ঈশান হাজির । ঈশান কে দেখে ভুত দেখার মত চমকে গেল সবাই । ফরিয়াদি মানে কলার মালিক ক্রুদ্ধ হয়ে বলে উঠল এই ছেলেটাই সব থেকে বদমাশ, বেয়াদপ এই কলা কেটেছে। ঈশান ভদ্র ভাবে বলল বাস চলে গেছে তাই যাওয়া হল না চলে এলাম। জিনিসগুলো কুরিয়ার করে দিয়ে এসেছি আংকেল বলে সে কুরিয়ারের স্লিপ এগিয়ে দিল। ছিলের মত ছো মেরে খুটিয়ে খুটিয়ে দেখে ঈশানের হাতে ফেরত দিল। ঈশান বলল ঠিক আছে মেনে নিলাম যে আমি ও আমরা কলা চুরি করেছি তাহলে গার্ড়দের ডেকে রুম চেক করান। বলার সাথে সাথে মালকিন বলল হ্যা তাই করাব বলে রাজিব রাজিব বলে চেচিয়ে উঠল। রাজিব তার ছেলের নাম। রাজিব বাইরে গিয়ে দেখল যে দুই জন গার্ড ঘোরাফেরা করছে, সে তাদের ডেকে নিয়ে এল। গার্ডরা সারা বারি তন্নতন্ন করে খুজে কলা তো দুরের কথা ছোবলা পর্যন্ত পেল না। রাসু খুব ভয়ে পেয়ে বলছে সব রুম কি চেক করার দরকার আছে? আর যাই কোথায় কলাওয়াল শয়তানি এক হাসি হেসে বলে হ্যা খাটের তল থেকে সব জায়গা খুজে দেখ। যা হোক শেষ পর্যন্ত কলা পাওয়া গেল না। সবাই ঈশান্দের সাথে খারাপ ব্যবহার করার জন্য একরকম মাফ চেয়ে নিল। কবি আর রাসু মিলে মালকিনের টাকা দিয়ে দিল। বাড়িওয়ালী ঈশানকে দাঁড়িয়ে জ্ঞান বিতরন করতে থাকল। বাড়ির মালিক কলাওয়ালআকে যা তা বলে কথা শোনাল। বলল আমার ভাড়াটিয়াদের নামে ভবিষ্যতে কোন দুর্নাম যেন না রটায়। বেচার মন খারপ করে বউ বাচ্চা ও মেয়েকে নিয়ে ২৪৫ ত্যাগ করল। ঈশানকে অভিশাপ দিতে দিতে চলে গেল ঈশান ছ্রা কেউ বুঝল না এটা। ঈশান বলে দিল কলাওয়ালাকে খুলনা ইউনিভার্সিটির পোলারা কলাচোর না। আপনাদের মত মানুষরা কলা চুরি করিয়ে অন্যদের ঘাড়ে দোষ দেন। রাসু কি সব বলে যেন খেকিয়ে উঠল। কবি বলল নফল নামাজ আদায় করেছিলাম বলে এযাত্রা বাঁচা। যা হোক জ্ঞানী টাক বলল রাসুর খাটের নিচে একফানা কলা আছে কিন্তু সেটা গার্ড্রা দেখলনা কেন? ঈশান হাসি দিয়ে বলল কি করে দেখব ওখানে যে ১৭৫ টাকা রাখা ছিলরে? সবাই এবার হো হো করে হেসে উঠল? জ্ঞানী বলল তাহলে আজ রাতে হইয়ে যাক ঈশান বলল হয়ে যাক।
রাতের বেলায় ওরা শুনতে পেল কলাওয়ালার চেচামেচি মেয়েকে বলছে খুলনা ইউনিভার্সিটিতে পড়া লাগবে না। তুই কলেজে পড়বি।
©somewhere in net ltd.