নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিজের সম্পর্কে কিছু বলা যাবে না। আমার মূল্যায়ন হবে আমার লেখায় আর তা করবে আমার চারপাশের মানুষ

৭ ১ নিশান

দেখি আমি অন্ধ চোখে জগতটাকে

৭ ১ নিশান › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমাদের লোক দেখানো দেশ প্রেম ও কিছু ব্যাপার

২৬ শে মার্চ, ২০১৪ বিকাল ৫:৪৪

দেশ প্রেম কোন সস্তা কোন জিনিস না যা বাজারে কিনতে পাওয়া যায়। দেশ প্রেম হল মানুষের মধ্যে নিজের দেশকে ধারন করে দেশের ও দশের মঙ্গলের কথা চিন্তা করে কাজ করা। রাস্তায় ঢাক ঢোল পিটিয়ে দেশ প্রেম দেখানো যায় না বা দেশ প্রেমের জন্ম দেওয়া যায় না।

বাংলাদেশে আজ দেশ প্রেম দেখানোর খুব হিড়িক পড়ে গেছে, কথায় কথায় এখন দেশ প্রেম নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয় কে দেশ প্রেমিক বা কে দেশ প্রেমিক না বা দেশ বিরোধী। ভাবতে অবাক লাগে ৭১ এ স্বাধীন হবার পর আজো আমাদের কে চিন্তা করতে হয় আমরা কি দেশকে ভাল বাস্তে পারিনি বা ভালবাসতে শিখিনি। আজ দেশপ্রেমের নাম নিয়ে দেশটাকে ভাগে ভাগে ভাগ করে ফেলছে রাজনৈতিক দলগুলো। ভবিষ্যতে হয়ত এর জন্য আমাদের অনেক বড় মুল্য দিতে হবে। ইসলামে বলে দিছে দেশ প্রেম ঈমানের অঙ্গ এবং ১ রাত দেশ পাহারা দেওয়া সারা রাত ইবাদতের চেয়ে মুল্যবান। একন ঈমান্দার ব্যক্তি তার দেশকে ভালবাসবে এবং আমি মনে করি বর্তমানে বাংলাদেশের সবাই দেশকে ভালবাসে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হল আমাদের পচা রাজনীতির জন্য দেশপ্রেম একটা কার্ড হয়ে গেছে। আজ নেতা মন্ত্রীরা একে অপরকে বলে আমি আপনার থাকে বেশী দেশ প্রেমিক লজ্জার কথা। যখন এসব পর্যায় থেকে এমন কথা শুনতে হয় তখন জাতি হিসাবে লজ্জিত না হয়ে কোন উপায় থাকে না।

এখন আসি বর্তমানের দিকে আজ ২৬/৩/২০১৪ তারিখে আমরা জাতীয় সংগীত এর বিশ্ব রেকর্ড করে বিশ্বাসীকে জানিয়ে দিলাম যে আমাদের থেকে দেশ প্রেমিক আর কেউ নেই। বাংলাদেশের মানুষ সব থেকে বেশী দেশপ্রেমিক, যদি তাই হবে তাহলে আজ আমাদের এই দশা কেন। কেন আমাদের নেতা মন্ত্রীরা দেশকে অন্যের হাতের পুতুল করতে দ্বিধা করে না। আজ প্রায় ৩ লাখ লোক এক জাতীয় সঙ্গীত গেয়ে রেকর্ড করে ফেলল, না জানি কি একটা কাজ করে ফেলল সবাই। ৩ লাখ লোকের মাঝে উপস্থিতির হার দেখলে দেখা যাবে সেখানে লাখের উপর পোশাক শ্রমিক ছিল যারা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে পেটেভাতে বেচে আছে। স্কুক কলেজের ছেলে মেয়ে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলে মেয়ে থেকে শুরু করে নানা পেশার মানুষ সেখানে আজ ছিল। হ্যা সবাই যে প্রাণের টানে ছিল তা কিন্তু নয়। আমি পোশাক শ্রমিকদের কথা বলব কিছু কারনে। প্রায় একবছর আগে রানা প্লাজা ধসে বিশ্বের ইতিহাসে সব থেকে বেশী মানুষ মারা গেছে এই রকমের দুর্ঘটনায়। আজ সেই রানা জামিন নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে, আর রানা প্লাজার ভুত আজো তাড়িয়ে ফিরছে সেই সব হতভাগ্য শ্রমিকদের যারা আহত হয়ে জীবনের সাথে যুদ্ধ করে চলেছে, যারা মারা গিয়েছে তাদের কথা বাদ দিলাম কেননা তারা আর ফিরবে না। আজো শুকনা হাড় গোড়ের অস্তিত্ত পাওয়া যায় রানা প্লাজার ইটের তলে। আজো পাইনি মারা যাওয়া শ্রমিকদের স্বজনরা তাদের ক্ষতিপুরন, এমনকি যারা আহত হয়ে বসে আছে তারাও তাদের ক্ষতিপুরন ঠিকভাবে পাইনি। জীবনের মুল্য কখনো টাকায় হয় না। আর আমরা গরীব সেই সব মানুষকে সামান্য টাকা পর্যন্ত দিতে পারছিনা, পারছিনা তাদেরকে একটু বেশী বেতন দিতে । আমরা উন্নয়ন বুঝি জিডিপি বুঝি, প্রবিদ্ধি বুঝি কিন্তু বুঝি না ওদের ও বাচতে হয় ওরাও মানুষ। আমরা দেশপ্রেম এর রেকর্ড বুঝি বুঝিনা মানুষের , দেশের ও দশের উন্নয়ন।

পোশাক শ্রমিকদের নিয়ে সংখ্যা ভারী করে দেশ প্রেমের রেকর্ড হয়ে গেল কিন্তূ আসলেই কি আমরা দেশ প্রেমিক হয়ে গেলাম। আমারা কি একবার ভেবে দেখেছি যে আজ যাদের নিয়ে আমরা মানুষ দেখিয়ে রেকর্ড গড়ে দেশপ্রেম এর সার্টিফিকেট বাগিয়ে নিচ্ছি তাদের অবস্থান কোথায়। আজ এই দিনে তারা কি তাদের প্রাপ্য পেয়েছে না কেবল এক প্যাকেট খাবার দিয়েয় বিদায় করা আর রেকর্ড করে তা বাজারে দেশপ্রেম নামে বিক্রি করায় আমাদের উদ্দেশ্য। বঞ্চিত মানূষদের নিয়ে হয়ত রেকর্ড করা যায় কিন্তু দেশপ্রেম তৈরি করা যায় না। আজ সরকার বলবে যে আমরা এ রেকর্ড করেছি ও রেকর্ড করেছি কিন্তু আসলে সবি শুভঙ্করের ফাকি ছাড়া কিছু নয়।

সব কিছুর মুলে যদি কর্পোরেট বানিজ্য আর রাজণীতি চলে আসে তাহলে সেখানে ভাল কিছু থাকতে পারে না। এর আগে অনেক প্রচার প্রচারনা করে জাতীয় পতাকার রেকর্ড করে ফেললাম আমরা। সেখানে দেখলাম রবি নামের এক মোবাইল কোম্পানি খুব তেলেসমাতি করে বেড়াচ্ছে। পড়ে দেখলাম বিজ্ঞাপন দিয়ে বেড়াচ্ছে ৬০ টাকা রিচার্জ করলে একটা পতাকার ছবি দেওয়া ক্যালেন্ডার দেওয়া হবে, আর যায় কই পাগলা বাংগালী হুমড়ি খেয়ে ৬০ টাকা করে রিচার্জ করে ফেলল এভাবে রবি আমাদের চেতনাকে পুজি করে কোটি কোটি টাকার ব্যবসা করে ফেলল। আমরা দেখলাম বসে বসে কি কাজ আমরা করে এসেছি। চেতনা যখন ব্যবসায়ী ও রাজনীতির হাতিয়ার হয়ে যায় তখন তা বাজারের লাউ বা কদুর মত হয়ে যায় , যে যেভাবে পারে সেভাবে বিক্রি করে ফায়দা নিতে চাই। এখন যেমন নিয়ে চলেছে সরকার ও কিছু বেনিয়া কোম্পানি। আমরা পড়ে আছি পাহাড়ের নিচে।

আমাদের দেশপ্রেম তখন বাতাসে মিলিয়ে যায় যখন আমাদের দেশ ধবংস করে কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র হয় সুন্দরবনে। আমাদের চেতনা তখন কাজ করেনা, আমাদের ভাই বোনেরা যখন মারা যায় সীমান্তে, ধর্ষন হয়, তখন আমরা চুপ করে থাকি, আমাদের কথিত এই চেতনা দেশপ্রেম সিন্ধুকে লোকানো থাকে। কারন ওখানে দেশপ্রেম দেখাতে গেলে যে এক পক্ষের ক্ষতি হয়ে যাবে তাই ভোল পাল্টে অন্য গীত গাইতে হয়। কি দারুন আমরা বিশ্বকে দেশ প্রেম দেখায় আর নিজেরা দেশের ভিতর করে চলেছি দেশ বিরোধী কাজ মানবতার চরম অপমান। হাজার হজার টাকা চুরি করে মানুষ এখানে দেশপ্রেমিক উপাধি পাই সেখানে এই ধরনের লোক দেখানো রেকর্ডের কোন দরকার আছে বলে মনে করি না।

দেশ প্রেম যদি দেখাতে হয় তাহলে আগে সাধারনের নিকট এসে তওবা করে দেশের মানুষের মঙ্গলের জন্য কাজ করলে দেশ প্রেম নিয়ে এত রেকর্ড করা লাগবে না এমনিতেই ২০ বছর পর রেকর্ড হয়ে যাবে। জাতিকে মেকি রেকর্ড এর দিকে না ঠেলে দিয়ে বরং ভাল কিছু করার জন্য এই সব রেকর্ড বানানোওয়ালাদের উচিত নতুন নতুন দেশ প্রেমের উদাহরণ তৈরি করা।

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে মার্চ, ২০১৪ বিকাল ৫:৫৩

শাহ আলম বাদশাহ বলেছেন: দারুণ

২৬ শে মার্চ, ২০১৪ বিকাল ৫:৫৫

৭ ১ নিশান বলেছেন: আমি আজ ইচ্ছা করে যাইনি , কারন আমার কোন ইচ্ছা নেই মেকি কোন কাজ করার.।.।.।।

২| ২৬ শে মার্চ, ২০১৪ বিকাল ৫:৫৪

৭ ১ নিশান বলেছেন: আপনাদের মতামত একান্ত কাম্য সে হোক আমার পক্ষে বা বিপক্ষে

৩| ২৬ শে মার্চ, ২০১৪ রাত ৯:০৯

নেবুলাস বলেছেন: চমৎকার আত্ম সমালোচনা। দারুন লিখেছেন ভাই, এভাবে আত্ম সমালোচনা করেই আমরা আমাদের ভুল ত্রুটিগুলো শুধরে নিতে চাই। মেকি দেশপ্রেম নয়, আসল দেশ প্রেমে উজ্জীবিত হতে চাই।

৪| ২৭ শে মার্চ, ২০১৪ রাত ১:১০

৭ ১ নিশান বলেছেন: ভাইরে আমি আমার মনের কাছে দায়বদ্ধতার জন্য লিখছি....আমি জানি এভাবে লিখলে এক সময়ে আমি রাজাকার বা অন্য কিছু হয়ে যাব কিন্তু সত্য যে বলতে হবে

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.