![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেখি আমি অন্ধ চোখে জগতটাকে
শুরুর কথাঃ
আসিফ সাহেব মফস্বলের মধ্যবিত্ত লোক, এক ছেলে ও স্ত্রী নিয়ে সংসার। বায়ান্নোর কোঠায় এসে হাই ব্লাড প্রেশার ও মাইনর অ্যাজমা কে নিত্য সংগী করে নিয়েছে। ছেলে ঢাকায় থাকে নিয়মিত দেশের বাড়িতে আসে যায়। বর্ষা বাদলা বা ধূলাবালিতে হাপানি একটু বাড়ে। সেদিন সোমবার বিকালের দিকে আসিফ সাহেব খুব অসুস্থ হয়ে পড়লেন। বলে রাখা ভাল কিছুদিন যাবত আসিফ সাহেবের জ্বর যাচ্ছিল এবং শ্লেষা যুক্ত কাশি উঠছিল। মফস্বলের ডাক্তার রক্ত পরীক্ষা করে বলল সমস্যা নাই সব ঠিক আছে কেবল ইএসআর বেশি। সূর্য বাসায় ফোন দিয়ে সব জেনে নিল ওর চিকিতসা বা রোগ সম্পর্কে ধারনা একদম খারাপ না অন্তত ইন্টারনেট এর কল্যানে. ও বুঝেই পেল না সব ঠিক থাকলে ইএস আর কিভাবে বেড়ে যায়।এদিকে লোকাল ডাক্তার বলে দিল সকাল বিকাল রাত সেপ্ট্রিয়াক্সন ইঞ্জেকশন দিতে হবে ১৪ দিন। অনেক অনুরোধের পরও আসিফ সাহেব ঢাকা আসলেন না, বাড়িতে চালিয়ে গেলেন। চিকিতসা। দুই সপ্তাহ পর কিছুটা সুস্থ হলেন রোগ মুক্তি হল কিনা বোঝা গেলনা তবে এন্টিবায়োটিকের কল্যাণে যে শরীর কিছুটা শক্তি পেয়েছে তা কিন্তু চোখে পড়ার মত। ওই যে বিধি বাম সেই পুরানো লক্ষনগুলো আবারো দেখা দিতে লাগল। আসিফ সাহেবের স্ত্রীর কপালে চিন্তার বলিরেখাগুলো স্পষ্ঠ হতে লাগল। লোকাল ডাক্তার আবারো বলল সব ঠিক আছে কেবল ইএসয়ার টা বেশি......খচ খচ করে কি যেন লিখতে যাচ্ছিল ঠিক এই সময় সূর্য বলে উঠল ডাক্তার সাহেব, কষ্ট করে আর প্রেস্ক্রিপশন লিখতে হবে না। ডাক্তার বলল সে কি চিকিৎসা না নিলে রোগ যে যাবে না। সূর্য বলল ঠান্ডা জ্বর আর হাপানিতো, সমস্যা নেই বর্ষার মাঝে দাড় করিয়ে রাখব জ্বর হলে নাপা খাওয়াব রোগ এন্মিতেই ভাল হয়ে যাবে........
স্বর্নপদক প্রাপ্তি ও রোগ নির্ণয়
অতঃপর সবাই মিলে ঢাকা চলে আসল। প্রথমে প্রস্তুতি নিচ্ছিল দেশের বাইরে চিকিতসা করাবে এবং সে অনুযায়ী প্রস্তুতি চলছি্ এর মাঝে সূর্যের এক ফুপু দেশ সেরা ঢাকা মেডিকেল কলেজের এক ডাক্তারের সন্ধান দিল। বলে রাখা ভাল ডাক্তার মহাশয় স্বর্ন পদক পেয়েছেন। যা হোক ব্যক্তিগত চেম্বারে ২০ মিনিট দেখে ১৮ পদের টেস্ট দিয়ে দিল এম আর আই , সিটি স্ক্যান কোনটাই বাদ গেল না। সূর্য ওর মরা বাপ কে নিয়ে টেস্ট করিয়ে রিপোর্ট ডাক্তারের কাছে দিয়ে ঠাই হয়ে দাড়িয়ে থাকল। ডাক্তার বলল ও কিছু না, সেরে যাবেন ভর্তি হয়ে যান ঢাকা মেডিকেল। ভর্তি হলেন আসিফ সাহেব। কথায় বলে হাসপাতাল, পুলিশ স্টেশন ও জাদুঘর দেখলেই একটা জাতির রুচি ও সমাজের সামগ্রিক অবস্থার বর্তমান চিত্র বোঝা যায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশ মুখেই জাতীয় জাদুঘরের এর বিপরীত পাশেই শাহাবাগ মডেল থানা। শাহাবাগ মোড় ব্যস্ত জায়গা, হাজার মানুষের আসা যাওয়া। জাদুঘরের বিপরীত দিকে রাস্তার পাশে মুখোমুখি দাঁড়িয়ে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও ইব্রাহিম কার্ডিয়াক। এই হল একটা এলাকার বিবরণ। থানা লাগোয়া বটতলায় মানুষের মুতের তীব্র ইউরিক এসিডের ঝাঝালো ঘ্রান আর ময়লার ভাগাড়ের নানা রং ও বর্নের গন্ধ সারাদিন পথিকের নাকে আসছে... মানুষ অভ্যাসের দাস। গন্ধে যেখানে নিশ্বাস নেওয়া দায় মানুষ বসে চা খাচ্ছে ..... রাস্তার অপর প্রান্তে এক বিদেশি ইয়া বড় এক ক্যামেরা দিয়ে এদিক সেদিকের ছবি তুলছে... হয়ত কোন একদিন কোন ম্যাগাজিনে দেখা যাবে এছবি “A National Meusium with its color and object “ শিরোনামে। সূর্য এসব চিন্তা করে মনে মনে হাসল কারন ঢাকা মেডিকেলের ওয়ার্ডের অবস্থাও খুব ভাল না। ঢাকা মেডিকেলের পালমোনারি ইউনিট খুব একটা গোছানো না। ওয়ার্ডের টয়লেট যে নানা সেকেন্ডারি রোগের উৎস তা মনে হয় ডাক্তার নার্স সুইপার জানে না? যা হোক আসিফ সাহেব তার বোনের চেষ্টায় এই ওয়ার্ডে একটি সিট পেলেন। সূর্যের ফুপু প্রতিদিন সন্ধ্যায় খাবার দিয়ে যায় আর সূর্য প্রতিদিন সকালে নিজে হাতে রান্না করে খাবার নিয়ে আসে। ডাক্তার মহাশয় সব রিপোর্ট দেখে বললেন ফুসফুসে ইনফেকশন আছে সাথে আরো কিছু মাইনর সমস্যা আছে সেরে যাবে। সেপ্ট্রোন ৫০০ তিন বেলা সাথে অনেক পদের ক্যাপসুল দিয়ে চিকিৎসা চলতে লাগল আসিফ সাহেবের। এর মধ্যে ইমিউনিটি বাড়ানোর জন্য ইনজেকশন, সেই সাথে নিউমোনিয়া সংক্রামক দূর করার জন্য কিছু বিদেশী ইঞ্জেকশন ও দেওয়া হল।১ম দুই ৩ দিনে কোন উন্নতি বোঝা গেল না, ওষুধের প্রভাবে কয়েকদিন পর জ্বর কমে গেল।সবাই কেবল আল্লাহ আল্লাহ করে যেন এ যাত্রায় আসিফ সাহেব পার পেয়ে যান। কিন্তু কপালে আছে ভোগ তা তো নিতেই হবে। ১৪ দিনের চিকিৎসা পর্বের শেষ দিকে সেই পচা জ্বর আর কাশি দেখা দিল।
ডাক্তার মহাশয় অন্যদের সাথে পরামর্শ করে বললেন অনেক সময় টিবি কে সনাক্ত করা যায় না এবং দীর্ঘ মেয়াদী জ্বর এর প্রাথমিক লক্ষন। হতে পারে আপনার বাবার টিবি হয়েছে যা আসলে সনাক্ত করা যাচ্ছে না। সূর্য মনে মনে চিন্তা করল এ ডাক্তার কি করে স্বর্ন পদক পেল। যে রোগ এর কারন ই ভালো করে বোঝে না সে চিকিতসাই বা দেবে কিভাবে বা ছাত্র পড়াবে কি করে। অনেক গুলো পরীক্ষার পর টিবির কোন লক্ষণই পাওয়া গেল না আসিফ সাহেবের শরীরে এর পরও চিকিৎসকের কথায় আসিফ সাহেব টিবির ঔষুধ খেতে রাজি হলেন। এর মধ্যে সূর্য রোগ ব্যধি সম্পর্কে পড়াশোনা শুরু করে দিয়েছে । ডাক্তারি ফলানোর কোন ইচ্ছা তার নেই তবে ডাক্তারদের সাথে গঠনমূলক আলোচনার জন্য রোগত্তত্ব সম্পর্কে জ্ঞান থাকা উচিত। সোনার পদকজয়ী ডাক্তারসাব রোগীর প্রকৃত চিকিৎসা করতে কেবল ব্যার্থ হয়েছে তা নয় একই সাথে আন্দাজের উপর যক্ষার ওষুধ দিয়ে আসিফ সাহেব কে গিনিপিগ এ পরিণত করছে যা একেবারেই অনাকাংখিত। পড়ালেখা করে সূর্য যা বুঝল তাত সারমর্ম হল "রোগ যদি চিহ্নিত না হয় এবং এন্টিবায়োটিক ইঞ্জেকশন দেওয়া হয় তবে কিছুদিন জ্বর জ্বারি কমে যাবে এবং কিছুদিন পর প্রবলভাবে আবার ফিরে আসবে। দীর্ঘদিন জ্বর থাকলে তা MTB বা XTB এর জন্য হতে পারে এক্ষেত্রে রিপামপিসিন কার্যকর, কিন্তু টিবি হয়নি এমন ব্যক্তি এ ওষুধ খেলে মাথা ঘোরা খিচুনি সহ নানা প্রকার প্বার্শ প্রতক্রিয়া দেখা দিতে পারে এবং হাঁপানি রোগীর ক্ষেত্রে সাইড ইফেক্ট অনেক ক্ষতিকর হয়”। সূর্য নিয়মিতভাবে বাসায় খোজ খবর নিতে থাকল। এভাবে বেশ কিছুদিন কেটে গেল হুট করে বাড়ি থেকে ফোন করে জানালো ওর বাবার জ্বর বাড়ছে সাথে হাপানি ও খিচুনি লক্ষনগুলো শুনে ওর বুঝতে বাকি রইল না যে এগুলো রিপামপিসিন এর সাইড ইফেক্ট, সাত পাচ না ভেবে বলে দিল টিবির ওষুধ এখন খাওয়া বন্ধ করে দাও চলুক নাপা আর সাপোজিটরি.........
সব কিছুতে একটা শিক্ষনীয় ব্যাপার থাকে আর সেটা উপলব্ধি করতে পারা হচ্ছে সঠিক ব্যাপার। চিকিৎসা ও চিকিৎসক সম্পর্কে সূর্যের ধারনা আমূল পাল্টে গেল। ভূল চিকিৎসা রোগ না নির্ণয় করতে না পারা নিয়ে হাজারো কথা শুনেছে কিন্তু সেটা নিজের কারো সাথে ঘটবে সেটা ওর কল্পনাতেও ছিল না। এই যদি হয় মেডিকেল কলেজের মত জায়গায় হাতলে বটতলার রোগ নির্ণয়কারীদের কি দোষ দেবে সেটা সূর্যের মাথায় আসলো না। ডাক্তার একবারের জন্য নিজের ভুল স্বীকার পর্যন্ত করল না। এই হল বাংলাদেশ তুমি রোগী তোমাকে নিয়ে পরীক্ষা নিরিক্ষা হবে ঠিক হলে হবে কিন্তু না হলে ডাক্তারকে কিছু বলতে পারবে না। ডাক্তারদের জবাবদিহিতার আসলে কোন জায়গা নেই এদেশে তারা ড্যাব করে স্বাচিপ করে। রোগী কেবল টেস্ট করে আহাজারী করে। মাঝে মধ্যে মানুষজন কেন হাসপাতাল ভাংচুর করে সে ব্যাপারটা অনুধাবন করতে পারার মত অভিজ্ঞতা সূর্যের হয়ে গেছে।
দিকপাল অধ্যায়
আবার নতুন ডাক্তারের খোজে নেমে পড়ল সূর্য আর পরিবার সেই সাথে চলল দেশের বাইরে যাবার প্রস্তুতি। সূর্যের কিছু নীতি আছে সেগুলো থেকে কখনো বের হতে পারেনি এবারো পারলো না। মেডিকেলের এক বড় ভাইয়ের কথায় ভরসা করে বংগবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক দিকপালের সাথে আলাপ করবে বলে সব ঠিক করল। এদিকে আসিফ সাহেবের শরীর দিনকে দিন খারাপের দিকে যেতে লাগল। সারাদিনে কিছু না হোক এক বালতি কাশি ওঠে সেই সাথে জ্বর আর রাতে না ঘুমুতে পারাতো আছেই। অথচ এই তো বছর খানেক আগেও দিব্যি সুস্থ ছিলেন। নানা ঔষুধের প্রভাবে আসিফ সাহেব কানে কম শোনে তার মাথা ঝিম ঝিম করে।
ডাক্তারের চেম্বারে আসিফ ছেলে সহ উপস্থিত হল, ডাক্তার সাহেব কানে হেডফোন দিয়ে গান শুনছে আর আইফোন এ ফোনিং করছে, দেখে শুনে কথা বলে বেশ লাগল ডাক্তার কে কিন্তু সে একই ফর্মূলা এবারো হাজারো টেস্ট। সূর্য এবারে ডাক্তারের সাথে অনেক কথা বলল আগের ইতিহাস বলল ডাক্তার এবার ই প্রথম সেন্সেটিভিটি নামে নতুন একটা টেস্ট দিল সেই সাথে ব্লাডের অনেকগুলো নতুন পরীক্ষা, এসব দেখে সূর্যের মনে হল হয়ত এবার ভাল চিকিৎসা হবে। রিপোর্ট দেখে ডাক্তার বলল খুব খারাপ ভাইরাস এ ধরেছে; সিউডোমোনাস এর নাম তবে চিন্তার কারন নেই ব্যবস্থা পত্র দিয়ে দিয়ে দিচ্ছি। কেসিন এর সাথে অন্য একটা এন্টিবায়োটিক ইনজেকশন সমন্বয় করে দিয়ে বলল প্রতিদিন ৩ বার দিতে হবে সাথে অনান্য ঔষুধ চলবে। হাতে ক্যানুলা করে আসিফ সাহেব এর ইনজেকশন গ্রহন পর্ব চলতে লাগল ঢাকায় ছেলের বাসায়। ১৪ দিনের পর বাসায় পর্যবেক্ষনে থাকল আসিফ সাহেব । তার স্ত্রী অনেক ধৈ্র্যশীল মহিলা আজকালকার দিনে এমন স্ত্রী লোক দেখা খুব কঠিন। সারাদিন অফিস করে বিকালে বাজার সদাই থেকে শুরু করে স্বামীর সেবা সব এক হাতে করে চলেছেন। তিনি নিজেও অসুস্থ কিন্তু স্বামীর অসুস্থতার কাছে তার অসুস্থতা নশ্যি। কিছুদিন সুস্থ থাকলেন এর পর যা তা সেই আগের মত হয়ে গেলেন। সুর্য তাকে নিয়ে আবার ডাক্তারের কাছে যায় ডাক্তার আবার রক্তের পরীক্ষা করে আবার সেই সিউডোমোনাস সাথে কিলিবিসিলাস এর পর আবার এন্টিবায়োটিক ১৪ দিনের এভাবে ডাক্তার ইমিপেনাম থেকে মেরোপেনাম সব কিছু দিয়েই চেষ্টা করলেন কিন্তু কিছুতেই কিছু হল না কিছুদিন ঠিক থাকে তো এর পর আরো বেশি খারাপ হয়ে যায়। সূর্য বুঝে গেল আর যাই হোক কানে হেডফোন দেওয়া ডাক্তারের চিকিতসাই আসলে কোন কেরামতি নাই আর তার বাবাও আর সুস্থ হবে না এর মাধ্যমে। ডাক্তার নানা কথা বলছে সূর্যকে আর সে লিস্টের এন্টিবায়োটিক দেখছে আর কোনটা বাকি আছে কিনা যা কাজে লাগতে পারে। হতাশ হয়ে দেখল কোন এন্টিবায়োটিক আর বাকি নেই । ডাক্তার বলল অন্যভাবে চেষ্টা করে দেখতে হবে বুঝেছেন আপনার বাবা জটিল রোগী সাথে অনেক পুরানো ব্যাধি। সূর্য এক রকম রেগে প্রায় চিৎকার করে বলল তাহলে এতদিন দিনের পর দিন ইনজেকশন বললেন কেন? টাকা কি আপনি দিছেন? জানেন কত টাকার ইঞ্জেকশন কেনা হয়েছে? আর কেউ দেই নাকি এত এন্টিবায়োটিক ইঞ্জেকশন? দিকপাল কিছু বলল না কেবল বিড়বিড় করে বলার চেষ্টা করলো আমার আরো রোগী আছে বাইরে। সূর্য বলল কেউ কি সুস্থ হয়েছে আপনার চিকিৎসাই? আসলেই রেগে যাবার মত ব্যাপার ছিল। প্রতিবার ৪২ টা করে ৪ বারে ১৬৮ টা উচ্চমাত্রার এন্টিবায়োটিক সাথে ১০০ রকমের ঔষুধ দেবার পরও রোগ মুক্তি না ঘটলে যে কারো রাগ হতে পারে।
সূর্য বুঝে উঠতে পারছিলনা যে আসলে কি করা উচিত দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা আর ডাক্তারদের উপর তার ভরসার বিন্দু মাত্র অবশিষ্ট্য রইল না। দেশের ডাক্তার ভাল না, না পরীক্ষাগার ভাল না, সমস্যা অন্য কোথায় এটা বুঝে উঠতে পারলো না । দিকপাল ডাক্তার কে বলে আসলো আপনার প্রতি আমার কোন অভিযোগ নেই কারন আসলে যে বোঝেই না ডাক্তারি বা রোগ নির্ণয় তার উপর অভিযোগ করে লাভ নেই। তবে এটা মনে রাখেন আমি ফিরে আসব এবং আপনাকে বলে যাব রোগ কি এবং তা কে নির্ণয় করেছে।
পরিত্রাণ পর্বঃ
সূর্যের মা আশা ছেড়ে দিয়েছে আসিফ সাহেবও নিজের উপর বিশ্বাস হারিয়ে ফেলেছেন, বাড়িতে বসে নিয়মিত নাপা আর সাপোজিটরি নিয়ে চলেছেন চরম অসুস্থ কিন্তু ডাক্তারের কাছে যান না। এসব দেখে সূর্য তাদের নিয়ে গেল চেন্নাই এর এপোলো হাসপাতালে। সেখানে এক অভিজ্ঞ ডাক্তারের কাছে আগের সব ইতিহাস খুলে বলল। ৭ দিন টানা বিভিন্ন প্রকার পরীক্ষা নিরীক্ষা করে ডাক্তার সাহেব বললেন আসিফ সাহেব আপনার ব্রংকাইটিস,COPD ও হাঁপানির সমস্যা রয়েছে। এসব আর ভালো হবে না তবে কমে থাকবে এমন ঔষুধ দিয়ে দিচ্ছি। ডাক্তার মশাই কিছু প্রবায়োটিক আর কিছু মুখে খাবার এন্টিবায়োটিক দিয়ে দিল এবং সেই সাথে বাংলাদেশের এক অভিজ্ঞ ডাক্তারের ঠিকানা দিয়ে দিল এবং বলল আর চেন্নাই আসার দরকার নেই ঢাকাতে ওনাকে দেখালেই হবে। ইন্ডিয়া থেকে আসার পর আসিফ সাহেব আবারো অসুস্থ হয়ে পড়লেন। এবার আর ডাক্তার খোজাখুজি না করে সূর্য ভারতের ডাক্তারের কথা মত বক্ষব্যাধির মিঃ এক্স এর কাছে তার বাবাকে নিয়ে গেল। তিনি পরীক্ষা নিরীক্ষার রেজাল্ট দেখে বললেন ব্রংকাইটিস,COPD ও হাঁপানির সমস্যা। ব্যবস্থা হিসাবে দিল দুই তিন পদের ইনহেলার এর মধ্যে বেলজিয়ামের ও সুইজারল্যান্ডের বেক্সিহেলার ও ছিল সাথে কিছু ট্র্যাডিশনাল এন্টিবায়োটিক। এই দেখে সূর্য অবাক হয়ে বলল সিউডোমোনাস এর কি হবে? ডাক্তার এক্স হেসে বলল সিউডোমোনাস সহ এসব রোগ জীবানু সবার শরীরেই বাসা বাধে ইমিউনিটি বাড়লে এরা এমনিতেই চলে যায় এর জন্য ইঞ্জেকশোনের কোন দরকার নেই। সূর্য অবাক হয়ে গেল আর ভাবলো আগের ডাক্তারগুলো কি আসলেই কিছু জানে কিনা? সূর্য অবশ্য ভরসা করতে পারছিলনা মিঃ এক্স এর উপর কিন্তু কিছু করার নেই। কি আশ্চার্য কিছুদিন মিঃ এক্স এর চিকিৎসায় আসিফ সাহেব সুস্থ হয়ে উঠলেন।
আসিফ সাহেব এখন ৬০ ভাগ সুস্থ ব্যক্তি ধুলা বালি বর্ষাতে সমস্যা হয়। সূর্য এটা বুঝেছে ভাল ডাক্তার এখনো বাঙ্গালদেশে আছে এবং তাদের খ্যাতি দেশ নয় বিদেশেও আছে। ব্যাপার হচ্ছে সেই সব ভাল ডাক্তার কে হাজারো অপগন্ডদের মাঝে খুজে পাওয়া অনেক কঠিন। জ্ঞানপাপী অজ্ঞান ডাক্তাররা ডিগ্রীর তকমা যেভাবে ঝুলিয়ে রাখে তাতে সাধারন মানুষের বিভ্রান্ত না হয়ে কোন উপায় নেই। আসিফ সাহেব ডাক্তারদের নাম সুনতে পারেন না। চেষ্টা করেন সুস্থ জীবন যাপন করার যাতে করে চিকিৎসকের শরণাপন্ন না হওয়া লাগে।
১৫ ই আগস্ট, ২০১৭ রাত ১২:০০
৭ ১ নিশান বলেছেন: ভাই নাম বললে এরা আবার মানহানির মামলা করবো............ চিকিৎসা করাইতে গিয়ে ট্যাকা শ্যাষ ......... এখন মানুষ রে সচেতন করতে পারলে খুশী
©somewhere in net ltd.
১|
১৪ ই আগস্ট, ২০১৭ রাত ১১:০৫
বিষাদ সময় বলেছেন: আমাকে নিয়ে তিন, চার বৎসর ধরে চলছে এমন খেলা। একাবারে নিখুঁত বর্ণনা দিয়েছেন এ দেশের ডাক্তারদের চিকিৎসা সেবার। সে জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। সম্ভব হলে আমিও আমার দুভোগ এর ইতিহাস লিখবো।
আপনার কানে হেডফোন লাগানো ডাক্তারকে মনে হয় আমি চিনি। তিনি কি ডাঃ মোশা...........?