![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এলার্ম আসলেই তাদের ছুটতে হয়- পাওয়ার এলার্ম, ফায়ার এলার্ম, হাই টেম্পারেচার, লো ভোল্টেজ ইত্যাদি যেসব এলার্ম বা বিপদ সংকেত মোবাইল কোম্পানির টাওয়ার বা বিটিএস এর জন্য বিপদজনক, সেসব এলার্ম আসলে যে মানুষগুলো সবার প্রথমে ছুটে যায় টাওয়ার থেকে টাওয়ারে তারা মোবাইল ফোন কোম্পানির নীচু তলার কর্মী, টেকনিশিয়ান। দিন রাত যে কোন সময়, শীত বর্ষা বন্যা ঝড় যাই থাকুক তাদেরকে ছুটতে হয়। তারা বিটিএস রুমের মেইন ডিস্ট্রিবিউশান বোর্ডের ইলেক্ট্রিক্যাল মেনটেনেন্স, বিটিএস থেকে বিটিএস এ ঘুরে ঘুরে জেনারেটর চালানো, জেনারেটর সার্ভিসিং, ভারি যন্ত্রপাতি নিয়ে প্রতিদিন অসংখ্যবার সিড়ি বেয়ে বহুতল ভবনের ছাদে উঠা থেকে শুরু করে কয়েকশ ফুট উচু টাওয়ারে উঠে মাইক্রোওয়েভ এন্টেনার ট্রাবলশুটিং ইত্যাদি সকল বিপদজনক,দূরহ, ঝুকিপূর্ণ কাজগুলো মূলত তারাই করে। এদেরকে বিএসএস অফিসার, এনএসএস অফিসার ইত্যাদি গালভরা ডেসিগনেশান বা পদবী দেয়া হলেও বাংলালিংকের কর্পোরেট জগতে কিন্তু তাদের স্থান নেই- তারা অস্থায়ী কর্মী, তাদের চাকুরি কন্ট্রাক্টচুয়াল বা চুক্তি ভিত্তিক। কন্ট্রাক্টচুয়াল হিসেবে রেখে দিয়ে বছরের পর বছর ধরে তাদেরকে প্রাপ্য সমস্ত অধিকার ও সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত করে রাখা হয়, তাদেরকে পার্মানেন্ট করা হয় না। কারণ পার্মামেন্ট করা হলেই এদেরকে ‘বাড়তি’ বেতন দিতে হবে, নানান সুযোগ সুবিধা প্রদান করতে হবে- যার ফলে কর্পোরেট কোম্পানির মুনাফা কমে যাবে।
এত দিন পার হয়ে গেল, অথচ এটা নিয়ে পত্রপত্রিকাতে কিংবা ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় কোন সংবাদ প্রচারিত হলো না। লাখ লাখ টাকা বিজ্ঞাপন দিয়ে তাদেরকে কিনে রেখেছে বাংলালিংকের মতো কর্পোরেট কোম্পানিগুলো। সরকার বা শ্রম মন্ত্রণালয়েরও এ বিষয়ে কোন তদারকি নেই যদিও শ্রম আইন ভঙ্গ করেই কোম্পানিগুলো এই কাজ গুলো করছে।
বাংলালিংক, গ্রামীণফোন ,রবি, এয়ারটেল সহ সকল দেশি বিদেশী মোবাইল ফোন কোম্পানিতেই এই মডেলের শ্রম শোষণ প্রত্যক্ষ করা যায়। মুনাফা সর্বোচ্চ করণের জন্য এরা দক্ষ শ্রমিকদের কন্ট্রাক্টচুয়াল করে রাখে, অদক্ষ বা আধা দক্ষ শ্রমিকদেরকে আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে তৃতীয় পক্ষ বা থার্ড পার্টির কাছ থেকে নিয়োগ দেয়। যেমন: টিবয়, পিয়ন, ক্লিনার, ড্রাইভার, সিকিউরিটি ইত্যাদি পেশার শত শত কর্মীকে অতি সস্তায় কোন ধরণের সুযোগ সুবিধা ছাড়াই স্বল্প বেতনে সেন্ট্রিসিকিউরিটি, ক্লিনকো, হার্জ ইত্যাদি বিভিন্ন কোম্পানির মাধ্যমে নিয়োগ দিয়ে খরচ কমায়, মুনাফা সর্বোচ্চ করে। অথচ বিদেশী কিংবা কর্পোরেট বিনিয়োগের পক্ষে প্রধান যুক্তিই দেয়া হয় এই বলে যে এরা বিপুল মুনাফা দেশের বাইরে পাচার করলেও এরা ভালো বেতনের কর্মসংস্থান তৈরী করে। বাস্তবতা হলো, এরা গুটিকয়েক স্থায়ী কর্মীকে তুলনামূলক ভালো বেতন প্রদান করলেও বেশির ভাগ কর্মীকে সাব স্ট্যান্ডার্ড বেতন দেয় এবং শ্রম আইন লংঘন করে বিভিন্ন অধিকার ও সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত করে রাখে আর রাষ্ট্রের শাসকরা বিদেশী বিনিয়োগের পরিবেশের নামে কমিশনের ধান্দায় এসব দেখেও না দেখার ভান করে।
©somewhere in net ltd.
১|
২৭ শে আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৩:৩৬
সাদা রং- বলেছেন: বড়ই দুঃখের বিষয়।